পূজা তো আসছে কিন্তু রোদের তাত কিংবা গরম মোটেই কমছে না! তাই বলে কি ফ্যাশনে আপস করবেন? একদমই নয়। নতুন পোশাকে বেরিয়ে গরমে নাজেহাল না হয়ে বরং বেছে নিন এমন জামাকাপড় যাতে ফ্যাশনও হয়, স্বস্তিও মেলে...
শরতের শুরু থেকেই চারদিকে পূজার আমেজ পাওয়া যায়। নীল আকাশ, ভোরে ঝরে পড়া শিউলি ফুল আর নদীর ধারের কাশফুল- এই সবকিছুর সঙ্গে যোগ হয় পূজার আনন্দ। আর কিছুদিন পরেই শুরু হয়ে যাবে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মহালয়া থেকে চলে পূজার আনুষ্ঠানিকতার যাত্রা। এরপর ষষ্ঠী থেকে শুরু হয়ে দশমীতে বিসর্জনের মাধ্যমে হয় পূজার সমাপ্ত। মন্ডপে মন্ডপে প্রতিমা দেখা, ঘোরাঘুরি, ঢাকের বোল, লুচি-পায়েশ, নাড়ু খাওয়া এসবের মধ্য দিয়ে ভীষণ আনন্দে কেটে যায় এই পাঁচ দিন। এই আনন্দমুখর দিনগুলোতে সবাই চান বিশেষভাবে নিজেকে সাজাতে।
তবে মহোৎসবের সময়টাও যে গরমে আচ্ছাদিত থাকে বাংলার পরিবেশ। কেননা, ভাদ্র-আশ্বিনের গরম জানান দেয়, গরম মোটেই কমছে না! তাই বলে কি ফ্যাশনে আপস করবেন? একদমই নয়। বছর ধরে অপেক্ষায় থাকেন বাঙালি রমণীরা দুর্গাপূজার দিনগুলোর জন্য। কয়েক দিনের সাজ নিয়ে পরিকল্পনাও থাকে যথেষ্ট। নতুন পোশাকে বেরিয়ে গরমে নাজেহাল না হয়ে বেছে নিন এমন জামাকাপড়, যেন ফ্যাশনও হয়, সঙ্গে স্বস্তিও মেলে।
গরম থেকে রেহাই পেতে সঠিক কাপড়ের পোশাক, সঠিক রং বেছে নেওয়াটা খুবই জরুরি। তবে পোশাকের ধরন যেমনি হোক, কাপড়টা যেন আরামদায়ক হয়। তাই হালকা সুতির পোশাক এই মরসুমে ঘোরাঘুরির উপযোগী। চোখের শান্তি বলে একটা কথা আছে। যে পোশাকটা দেখতে ভালো লাগে, সেটা পরেও আরাম। তাই এ সময়ের পোশাকের রং হবে হালকা। হালকা নীল, সাদা, গোলাপি, লেবু রং, হালকা বেগুনি, আকাশি এসব রঙের পোশাকই গরমে আরামদায়ক।
কেমন পোশাক বাছবেন
শাড়িতে থাকুক স্বস্তি : ফ্যাশনবোদ্ধারা ১২ হাতের শাড়িতে নকশার পাশাপাশি বিবেচনায় রাখেন কাপড়ের ধরনের বিষয়টি। যেহেতু পূজায় মন্ডপ ছাড়াও বাইরে ঘোরাঘুরি হয় ব্যাপক, তাই অনেকে খোঁজেন সাদাসিধে পোশাক। ষষ্ঠী ও সপ্তমী- দুই দিন সাধারণত সবাই হালকা স্নিগ্ধ সাজপোশাক বেছে নিতে ভালোবাসেন। অষ্টমীর সকালে মন্ডপে অঞ্জলি দিতে যাওয়ার সময় পরতে পারেন হালকা কোনো শাড়ি। সন্ধ্যায় ভালো লাগবে সিল্কের নকশা করা মিষ্টিরঙা পোশাক। অষ্টমী ও নবমীর অঞ্জলিতে পরতে পারেন বেনারসি, কাতানের মতো ভারী শাড়ি। আর দশমীতে সবাই মেতে ওঠে সিঁদুর খেলায়। এদিন বেছে নিতে পারেন গাঢ় রঙের কোনো শাড়ি।
বাটিক ও হ্যান্ডলুমের শাড়ি : পূজার সাজে শাড়ি বরাবরই এক নম্বরে। গরমে আরামের খোঁজে বাটিক অত্যন্ত ভালো একটি অপশন। বাটিক প্রিন্ট কখনোই ‘আউট অব ফ্যাশন’ হয় না এবং খুব নরম কাপড়, যা গরমে কষ্ট দেয় না। এ ছাড়া সুতি বা খাদির ওপরে হাল্কা হ্যান্ডলুম শাড়িও রাখতে পারেন তালিকায়।
সুতির কুর্তি, টপ ও র্যাপার : শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, সুতির পোশাকই ভরসা। সুতির কুর্তি মানে একেবারেই সাদামাটা নয়। আজকাল নানা রকম ফ্যাশনেবল সুতির কুর্তি বা টু-পিস, থ্রি-পিস পাওয়া যায়, যা খুব আরামদায়ক। সুতির শর্ট কুর্তি বা টপের সঙ্গে পরতে পারেন।
লং ফ্রক বা মিডি ড্রেস : পূজার সময়ে জিন্স-টপের বদলে অনেকেই ড্রেস জাতীয় পোশাক পরতে পছন্দ করেন। তাঁরা অনায়াসেই এ ধরনের ঢিলেঢালা সাজ বেছে নিতে পারেন। ড্রেস কিন্তু এখন ফ্যাশনে ট্রেন্ডিং।
ক্রপ টপ বা ট্যাঙ্ক টপ : এই ধরনের ছোট ঝুলের টপের সঙ্গে ইচ্ছামতো যে কোনো ধরনের প্যান্ট বা স্কার্টই মানানসই।
পালাজো প্যান্ট : আজকাল বাড়িতে, বাইরে, কলেজে, অফিসে সব বয়সি মেয়েরাই পালাজো পরতে স্বচ্ছন্দ। সুতি, লিনেন, সিল্ক, চিকন, ডেনিম ইত্যাদি নানানরকম ফ্যাব্রিকের পালাজো বাজারে সহজলভ্য। সঙ্গে ম্যাচ করে ক্রপ টপ বা সুতির কুর্তি পরতে পারেন।
ব্যাগি জিন্স : যারা সবসময় ডেনিম পছন্দ করেন, তারা আঁটোসাঁটো প্যান্টের বদলে বেছে নিন লুজ ফিটেড ব্যাগি জিন্স। জগার জিন্স বা ডেনিম পালাজোও পরতে পারেন।