শিরোনাম
শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

আরব্য রজনীর মহানায়ক (১৪তম পর্ব)

গোলাম মাওলা রনি

আরব্য রজনীর মহানায়ক (১৪তম পর্ব)

প্রচণ্ড অস্থিরতা, আবেগ, ভয় আর উৎকণ্ঠায় বারবার ঘুম ভেঙে যাচ্ছিল রাজকুমারী অলিম্পাসের। রাজা দ্বিতীয় ফিলিপের অবস্থাও প্রায় একই রকম। দুটো ভিন্ন বিছানায় শুয়ে তারা শুধু এপাশ-ওপাশ করছিলেন আর আধো আধো ঘুমে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে বিড়বিড় করে কি যেন বলছিলেন। ঘুমের মধ্যে রাজা ফিলিপের হঠাৎ কি যেন হলো। তিনি প্রচণ্ড গরম অনুভব করলেন। নিজের শরীরে হাত বুলিয়ে বুঝলেন, সারা শরীর ঘামে ভিজে যাচ্ছে। কামরার মধ্যে অদ্ভুত এক গোঙানির শব্দ শুনতে পেলেন। সতর্কতাস্বরূপ নিজের বিছানায় রাখা তলোয়ারটির দিকে হাত বাড়ালেন। শত চেষ্টা করেও হাতখানা তলোয়ারের দিকে নিতে পারলেন না। মনে হলো শরীরই যেন অবশ হয়ে পড়েছে। রাজা চোখ মেললেন। তিনি স্পষ্ট বুঝতে পারলেন কামরার মধ্যে মহাজাগতিক কোনো শক্তি ঘোরাফেরা করছে। এক ধরনের সবুজ আলোর রশ্মি পুরো কামরাটির মধ্যে ঢেউ খেলে যাচ্ছে। তিনি ঘ্রাণ নিতে চেষ্টা করলেন। অদ্ভুত সুন্দর এবং অপার্থিব এক সৌরভে চারদিক মৌ মৌ করছে। তিনি অনুভব করার চেষ্টা করলেন যে রাজকুমারী কেমন যেন ছটফট করছে এবং দুর্বোধ্য ভাষায় গোঙাচ্ছে। রাজা প্রথমে চেষ্টা করলেন উঠে বসার জন্য। কিন্তু পারলেন না। তারপর চেষ্টা করলেন পাশ ফিরে শোয়ার জন্য। নাহঃ সেটাও পারা গেল না। তিনি চিৎ হয়ে শুয়েছিলেন এবং মনে হচ্ছিল তার পুরো শরীরে শত সহস্র পেরেক মেরে বিছানার সঙ্গে গেঁথে দেওয়া হয়েছে। তিনি শত চেষ্টা করে ঘাড়টিও ফেরাতে পারলেন না।

রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ অনুধাবন করলেন, ডেলফির মন্দিরের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী আজ রাতে এমন কিছু ঘটছে যা কিনা পার্থিব জীবনের যুক্তিতর্ক, কার্যকরণ কিংবা বাস্তবতার সঙ্গে মেলানো যাবে না। নিজের অসহায়ত্ব সম্পর্কে আন্দাজ লাভের পর তিনি সাধ্যমতো চেষ্টা করলেন শান্ত থাকার জন্য। কিন্তু তিনি শান্ত থাকতে পারলেন না। কারণ রাজকুমারীর গোঙানি এক সময় ভয়ানক আর্তচিৎকারে রূপ নিল। তারপর ধীরে ধীরে সবকিছু কেমন যেন নীরব, নিস্তব্ধ ও নিথর হয়ে গেল। রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ টের পেলেন তার শরীরের ওপর দিয়ে শীতল ও ভারী কি যেন অতিক্রম করে গেল। মনে হলো রাজকুমারীর পোষা অজগরটিই বোধহয় তার শরীরের ওপর ভর করেছে। ভয়ে তার সারা শরীর কাঁটা দিয়ে উঠল। তিনি আগের মতোই শরীরের অবশতা অনুভব করলেন। ফলে কিছুই করতে পারলেন না। সাপটি শরীর থেকে নেমে যাওয়ার পর তিনি লক্ষ্য করলেন তার শরীরের গরম গরম ভাব দূর হয়ে গেছে। এক ধরনের আরামদায়ক শীতলতা তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলল। তার দুই চোখে ভর করল রাজ্যের ঘুম। রাজা আর কোনো কিছুই চিন্তা করতে পারছিলেন না। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে তিনি নিদ্রা দেবীর প্রতি নিজেকে সঁপে দিলেন।

ঘুমের ঘোরে রাজা স্বপ্নে দেখলেন, রাজকুমারী অলিম্পাসকে নিয়ে তিনি একই বিছানায় শুয়ে আছেন। তিনি রাজকুমারীর সব পরিধেয় বস্ত্র একে একে খুলে ফেললেন। তারপর উদোম রাজকুমারীকে চিৎ করে শুইয়ে দিলেন। স্বামীর এহেন কর্মে রাজকুমারী কোনো বাধা দিলেন না। তিনি বরং হালকা করে মুচকি হাসি দিয়ে রাজার চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে রইলেন। রাজা চেষ্টা করলেন কামাতুর হওয়ার জন্য। কিন্তু নববিবাহিতা সুন্দরী স্ত্রীর উদোম দেহ তার মনে সামান্যতমও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করল না। তিনি ভাবলেন, তাহলে কি আমি নপুংসক হয়ে গেছি। হঠাৎ রাজা লক্ষ্য করলেন ঊরুসন্ধির ভিতর থেকে অনেকটা বেলুনের মতো রাজকুমারীর গর্ভাশয় বেরিয়ে এলো। রাজা আনমনে নিজের রাজকীয় সিলটি সেই গর্ভাশয়ের ওপর মেরে দিলেন। আর অমনি সেটা যে পথ দিয়ে বের হয়ে এসেছিল ঠিক সেই পথ দিয়ে চোখের পলকে ঢুকে পড়ল। রাজার মন-মস্তিষ্ক কেমন যেন অথর্ব হয়ে পড়ল। তিনি রাজকুমারীকে ছেড়ে পাশ ফিরে শুয়ে রইলেন। এটা গেল রাজার স্বপ্নের ইতিবৃত্ত। অন্যদিকে রাজকুমারীর স্বপ্নও কম তাৎপর্যপূর্ণ ছিল না।

বাসররাতে রাজকুমারীও ঘুমিয়ে পড়েছিলেন যথারীতি। ঘুমের ঘোরে হঠাৎ মনে হলো তার সর্প দেবতা কামরার মধ্যে প্রবেশ করল। তারপর হেলেদুলে তার দিকে এগিয়ে এলো। তিনি সাপটির মাথায় হাত রাখা মাত্র সেটির শরীর অদ্ভুত রূপ ধারণ করল। দেবতা জিউস উলঙ্গ শরীরে তার বিছানার কাছে চলে এলো। রাজকুমারী আগে থেকেই বিবস্ত্র হয়েছিলেন। তিনি চিৎ হয়ে মাথাটা খানিকটা উঁচু করে পিঠ এবং ঘাড় দিয়ে একটি বালিশের ওপর হেলান দিয়েছিলেন। দেবতা জিউস কাছে এসে তার দুই পা ফাঁক করে বাম পা-টি নিজের পিঠের ওপর তুলে নিল। এরপর বাম দিক দিয়ে তার মুখটি উপরে তুলে ধরে আশীর্বাদের ভঙ্গিতে তাকিয়ে রইল। রাজকুমারী দেবতা জিউসের পেশিবহুল শরীরের দিকে লক্ষ্য করলেন এবং আরও লক্ষ্য করলেন দেবতার মহা হৃষ্টপুষ্ট এবং পেশিবহুল পুরুষ দণ্ডটির দিকে। দেবতার পুরুষাঙ্গটির নিচে গিয়ে পায়ের আকৃতি সাপের লেজের মতো হয়ে আছে। আর সেই লেজটি অাঁকাবাঁকা হয়ে কুণ্ডলী পাকিয়ে উঁচু হয়ে আছে। ভীতসন্ত্রস্ত রাজকুমারী অসহায়ভাবে আশপাশে তাকাতে লাগলেন। দেখলেন অদ্ভুত এবং কিম্ভূতকিমাকার দুটো পাখি কামরার মধ্যে উড়ছে। দেবতা জিউস এবং রাজকুমারীর অভিসার চুপিসারে দেখার জন্য এক বয়স্ক লোক দরজার ফাঁকে মাথা ঢুকিয়ে উঁকি দিলো। আর অমনি কামরার মধ্যে উড়ন্ত পাখি দুটির একটি এগিয়ে গিয়ে বয়স্ক লোকটির দুই চোখ অন্ধ করে দিল। এই দৃশ্য দেখে রাজকুমারী চিৎকার করে উঠলেন। তার চিৎকারের ধ্বনি বাতাসে মিলিয়ে যাওয়ার আগেই দেবতা জিউস অদৃশ্য হয়ে গেলেন। রাজকুমারী কম্পিত হস্তে যেই না নিজেকে আচ্ছাদিত করতে যাবেন অমনি লক্ষ্য করলেন যে একটি বজ্র উল্কার গতিতে ধেয়ে এসে তার গোপনাঙ্গ ভেদ করে একেবারে জরায়ুর কাছাকাছি পৌঁছে গেল এবং প্রচণ্ড শব্দ করে জরায়ুর ওপর পতিত হলো। রাজকুমারী ভয়ে আবারও চিৎকার দিলেন। এরপর লক্ষ্য করলেন তার জরায়ু থেকে অদ্ভুত দীপ্তিময় এক আলো বের হয়ে এলো এবং সারা দুনিয়া আলোকিত করল।

পরদিন সকালে যথারীতি রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ এবং রাজকুমারীর ঘুম ভাঙল। উভয়ের চোখে একরাশ ক্লান্তি, উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। তারা শুধু প্রাতঃকালীন শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন কিন্তু কোনো কথা বললেন না। তাদের স্বপ্নের বিষয়টি তারা কিছুতেই পরস্পরকে বলতে চাইছিলেন না। রাজা কিছুক্ষণের জন্য কামরা থেকে বের হয়ে গেলেন এবং ঘণ্টাখানেক পর আবার ফিরে এলেন। তিনি নববধূ রাজকুমারী অলিম্পাসের সামনে গিয়ে বললেন, তৈরি হয়ে নাও। আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই ডেলফির মন্দিরের দিকে রওনা হব। কারণ মন্দিরের পূজারীর পরামর্শ ছাড়া আমাদের বোধহয় একপা-ও এগুনো ঠিক হবে না। রাজকুমারী কোনো উত্তর না দিয়ে ডেলফির মন্দিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে আরম্ভ করলেন। মন্দিরে পৌঁছার পর পূজারী রাজা ও রাজকুমারীকে আলাদা আলাদা ডেকে তাদের স্বপ্ন বৃত্তান্ত শুনলেন। রাজকুমারীকে বললেন, তুমিই সেই ভুবন বিজয়ী বীরের গর্ভধারিণী জননী হতে চলেছ। বিধাতার আনন্দ ভুবনে তাই তোমায় স্বাগতম। তোমার সন্তানের সঙ্গে তোমার নামও স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে কেয়ামত পর্যন্ত। তোমার সন্তানকে বলবে সে যেন কোনো অবস্থাতেই দেবতার সঙ্গে নাফরমানি না করে। আর ভুলক্রমেও তোমার স্বামীর জীবিতকালে না তোমার সন্তানের কাছে কিংবা স্বামীর কাছে আমাদের কথাবার্তা, স্বপ্নের ইতিবৃত্ত এবং সন্তান জন্মের কাহিনী প্রকাশ করবে না। যদি প্রকাশ করো তাহলে হয় তোমার স্বামী তোমার সন্তানকে মেরে ফেলবে নয়তো সন্তান মেরে ফেলবে তার পিতাকে। তবে সন্তান যখন সিংহাসনে আসীন হয়ে বিশ্ব বিজয়ে বের হবে তখন তুমি ইচ্ছা করলে সবকিছু তার কাছে খুলে বলতে পার যদি সে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তোমার কাছে তার জন্মবৃত্তান্ত জানতে চায়। কিন্তু সে যদি জানতে না চায় তবে কোনো কিছু প্রকাশ করা ঠিক হবে না।

পূজারী এবার রাজা দ্বিতীয় ফিলিপকে ডাকলেন তার স্বপ্নের বৃত্তান্ত শোনার জন্য। রাজার সব কথা শোনার পর পূজারী বললেন- তোমাকে স্বাগতম। তোমার ধর্মস্ত্রীর গর্ভেই বিশ ্ববিজয়ী বীর পয়দা হতে যাচ্ছে। তুমি ঠিকমতো তাকে লালন কর, তার হাতে সিংহাসনের ভার ন্যস্ত কর এবং নিয়মিত দেবতাদের সন্তুষ্টির জন্য পূজা দিও। এ কথা বলে পূজারী রাজাকে চলে যেতে বললেন। কিন্তু রাজা মুখ ভার করে দাঁড়িয়ে রইলেন। পূজারী প্রশ্ন করলেন, তোমার কি আরও কিছু জানার আছে? রাজা বললেন, শিশুটি কি আমার ঔরসে পয়দা হবে নাকি দেবতার ঔরসে। পূজারী গম্ভীর কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার মনে এরূপ প্রশ্নের উদ্রেক হওয়ার কি কারণ। রাজা বললেন, মহাত্দন! গত রাতের স্বপ্ন এবং আনুষঙ্গিক কিছু আলামত আমার মনকে ভীষণ অস্থির করে তুলেছে। তন্দ্রাবস্থায় আমি আমার স্ত্রীর গোঙানি এবং চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম। আমি অনুভব করতে পারছিলাম যে, আমাদের কামরায় তৃতীয় কোনো শক্তির আগমন ঘটেছে। সেই শক্তি যে অলৌকিক এবং অশরীরী তাতে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। অন্যদিকে, স্বপ্নে দেখলাম- আমার মনে হচ্ছে আমার স্ত্রী গত রাতেই গর্ভধারণ করেছে। আমি সেই গর্ভে রাজকীয় সিল বসিয়ে এ কথাই প্রমাণ করছি যে, সন্তানটি সমাজে আমার পুত্র বলেই পরিচিতি লাভ করবে এবং ভবিষ্যতে আমার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হবে। রাজার কথা শুনে পূজারী খুব ধীরস্থির এবং শান্ত গলায় বললেন- বৎস! মানুষের জ্ঞান খুবই সীমিত। তোমার এই সীমিত জ্ঞান নিয়ে সীমা অতিক্রম কর না। যাও! আপন রাজ্যে ফিরে যাও এবং নিজের সৌভাগ্যের জন্য দেবতার প্রশংসা করতে থাক।

আমরা যাকে মহামতী আলেকজান্ডার বা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট বলে ডাকি তাকে কিন্তু প্রাচীন গ্রিকের মানুষজন ডাকত ম্যাসিডোনিয়ার তৃতীয় আলেকজান্ডার। ৩৫৬ খ্রিঃ পূর্বাব্দের ২১ জুলাই তারিখে তিনি ম্যাসিডোনিয়া রাজ্যের রাজধানী পেল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। এরপর বহু ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্যে তিনি মাত্র ১৪ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৮ বছর বয়সে ৪০ হাজার সৈন্যের নেতৃত্ব দিয়ে যুদ্ধে জয়লাভ করেন এবং ম্যাসিডোনিয়ার রাজা হিসেবে ২০ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন। তারপরের ইতিহাস তো কেবল জয় আর বিজয়ের-

আমার প্রিয় জুবায়দা! আলেকজান্ডার সম্পর্কে এত কথা শুনতে শুনতে তুমি হয়তো ভুলেই গেছ কেন আমি তার প্রসঙ্গ আনলাম। আমি মূলত তোমাকে বলতে আরম্ভ করেছিলাম আমার গর্ভধারিণী মা সম্পর্কে। সেটা বর্ণনা করতে গিয়ে চলে এলো আমার জন্মভূমি রে নগরীর কথা। পারস্যের রে নগরীর বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছিলাম ক্যাসপিয়ান গেট বা আলেকজান্ডার গেটের কথা। আলেকজান্ডার যে স্থান দিয়ে পারস্যে প্রবেশ করেছিলেন সেই স্থানের বর্ণনা করতে গিয়ে বলতে শুরু করেছিলাম কেন এবং কীভাবে তিনি পারস্য অভিযানে উৎসাহী হয়েছিলেন। ম্যাসিডোনিয়ার রাজপথ থেকে কয়েকজন পারস্যবাসী পর্যটককে গ্রেফতার করে তিনি তার সাগর তীরের বিনোদন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সাধারণ সম্রাটের সঙ্গে অসাধারণ সম্রাটের পার্থক্য হলো- তিনি এক মুহূর্তের দৃষ্টিতে যা চিনতে পারেন, অন্যরা তা যুগ যুগ ধরে সাধনা করেও বুঝতে পারেন না। সম্রাট আলেকজান্ডার পর্যটকদের হাঁটাচলা এবং গায়ের রং দেখেই বুঝতে পারলেন যে তারা কোনো সাধারণ মানুষ নন। কোনো সুবিশাল সাম্রাজ্যের উচ্চপদস্থ সামরিক কর্তা হবেন নিশ্চয়ই। তাই কৌশলে তিনি পর্যটকদের কাছ থেকে জানতে আগ্রহী ছিলেন তাদের দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি এবং ধনভাণ্ডারের খবর। এ জন্য তিনি তাদের বিনোদন কেন্দ্রে পাঠিয়ে তাদের চিত্তকে প্রফুল্লময় করে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে সবকিছু আদায়ের ব্যবস্থা করেন। সন্ধ্যার পরপর সম্রাট স্বয়ং বিনোদন কেন্দ্রে উপস্থিত হলেন। পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে তিনি দেখতে থাকলেন পর্যটকদের কর্মকাণ্ড। তারা সংখ্যায় ছিল তিনজন। বয়স হয়তো বড়জোর ৩৫-৩৬ বছর হবে। তারা সবাই ছিল অতিশয় সুদর্শন এবং সুঠাম স্বাস্থ্যের অধিকারী। বিনোদন কেন্দ্রের একটি কামরার মেঝেতে বিছানো কার্পেটে তারা কোলবালিশে হেলান দিয়ে ইউরোপের সর্বোত্তম মদ পান করছিলেন এবং তিনজন স্বর্ণকেশী সুন্দরী ললনার সঙ্গে রং তামাশা করছিলেন। পর্যটকরা জীবনে হয়তো কোনো স্বর্ণকেশীকে দেখেননি। তাই তারা ললনাদের চুলের মধ্যে আঙ্গুল ঢুকিয়ে বার বার পরীক্ষা করছিলেন সেগুলো চুল না অন্যকিছু। ললনারা পর্যটকদের মুখের ভাষা না বুঝলেও শরীরের ভাষা বুঝতে পারছিল। তারা পুরুষ তিনটিকে নানারকম রং ঢং করে উত্তেজিত করে তুলল। পর্যটকরা ললনাদের কবলে পড়ে কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে যেই না ওদের গোপন অঙ্গে হাত দিতে গেল অমনি কামরাটিতে প্রবেশ করল একজন ঊর্ধ্বতন গ্রিক সেনাপতি। (চলবে)

 

 

সর্বশেষ খবর