শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

জলতলে এ সময়ের বিস্ময়

জলতলে এ সময়ের বিস্ময়

আশ্চর্য জাদুঘর

সমুদ্রের নীল জলরাশি। পানির নিচে ডুব দিয়েছে শখের ডুবুরি। সাঁতার কেটে চলছে সে। হঠাৎ চমকে যেতে হবে সারি সারি মানুষের প্রতিমূর্তি দেখে। মূর্তিগুলোর কোনোটি শুয়ে আছে, হাতে হাত ধরে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একদল নারী, কেউ আবার চালাচ্ছে সাইকেল। কিছু বৃদ্ধ বসে আছে কালো মুখ করে। আবার দাঁড়িয়ে আছে সন্তানসম্ভবা অনেক নারী। টেবিলে রাখা টাইপ মেশিনে টাইপ করে চলেছে অনেকে, কেউ আছে টেবিলে শুয়ে আবার কেউ আছে দাঁড়িয়ে। এভাবেই সাজানো হয়েছে পানির নিচে আশ্চর্য একটি জাদুঘর। এই আশ্চর্য জাদুঘরটির নাম কানকুন মেরিন পার্ক। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০ মিটার নিচে যেন এক মায়াবি ভুবন এই জাদুঘর। এখানে রয়েছে ৪০০ মানুষের প্রতিমূর্তি। এ ছাড়া সমুদ্রের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য তো রয়েছেই। নীল পানির নিচে ঘুরে বেড়াচ্ছে সমুদ্রের নানা প্রজাতির মাছ। বিরল এই জাদুঘরটি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত ভাস্কর জেসন দ্য ক্লেয়ার্স টেইলর। পানির নিচে তৈরি আধুনিক সভ্যতার সবচেয়ে আকর্ষণীয় জাদুঘর এটি। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে জাদুঘরটি দেখতে। মেক্সিকোর দ্য মিউজিও সাব একুয়াটিকো ডি আর্ত নামক একটি প্রতিষ্ঠান এই জাদুঘর তৈরির জন্য সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করে। উপকূলের প্রবাল প্রাচীরগুলো আবার ফিরিয়ে আনতে ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য এই জাদুঘরের নির্মাণ শুরু হয়। কানকুন মেরিন পার্ক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাদুঘরটি সাজানো হয় জেসনের তৈরি ভাস্কর্য দিয়ে। অন্যান্য ভাস্কর্যের চেয়ে একেবারে ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি করা হয়েছে এগুলো। কেননা সমুদ্রের পানির উপরে কখন কতটা আলো পড়ছে তার ওপর নির্ভর করে পানির নিচে ভাস্কর্যের রং বদলে যায়। আর এর ধরনও পানির উপরের ভাস্কর্যের চেয়ে আলাদা। ভাস্কর্যগুলো তৈরির জন্য জেসন ব্যবহার করেছেন বিশেষ এক ধরনের সিমেন্ট। এ সিমেন্ট সাধারণ সিমেন্টের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী ও প্রবাল-বান্ধব।

এ সিমেন্ট দিয়ে ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে যাতে এগুলোতে সহজেই প্রবাল দানা বাঁধতে পারে। কাজের প্রথম অবস্থায় প্রায় ২০০ ভাস্কর্য স্থাপনের কথা ভেবেছিলেন টেইলর। কিছুদিন পর তার এ ধারণা বদলে যায়। তিনি ভাস্কর্যের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি করার চিন্তা করেন। অবশেষে ৪০০টি ভাস্কর্যে সেজেছে কানকুন মেরিন পার্ক। সমুদ্রের নিচে বিভিন্ন আঙ্গিকে বসানো হয়েছে ভাস্কর্যগুলো।

বিশেষ ধরনের শক্ত ফাইবার গ্লাসের সাহায্যে মূর্তিগুলো পানির নিচে দাঁড় করানো হয়েছে। সেটিও তৈরি হয়েছে ভাস্কর্যে ব্যবহৃত উপাদানগুলো দিয়েই।

 

 

সর্বশেষ খবর