মঙ্গলবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

ইঁদুর ধরা

ইঁদুর ধরা

বিলুপ্তপ্রায় পেশাগুলোর প্রসঙ্গ এলেই সবার আগে চলে আসে বহুল প্রচলিত একটি পেশার কথা। এই পেশাটি হচ্ছে ইঁদুর মারার পেশা।

পারমাণবিক অস্ত্র সমস্যা কিংবা গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের হুমকির আগে এ পৃথিবীতে একটি হুমকি ছিল অনেক বড়। হাস্যকর শোনালেও এটাই সত্য যে, রক্তপিয়াসু ইঁদুরের ভয়ে লোকজন একসময় ভীত-সন্ত্রস্ত ছিল। সেই সময় ইঁদুরের যন্ত্রণায় মানুষ দারুণ অসহায় ছিল। আর তখনকার ইঁদুরগুলোও ছিল বিশাল বড় সাইজের। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে গ্রেট ব্রিটেনে অদ্ভুত বড় সাইজের গ্রে বা ছাইরঙা ইঁদুরের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এই ছাইরঙা ইঁদুর এতটাই ভয়াবহ ছিল যে মাঝে মাঝে তারা ছোট শিশুদের হাত-পা পর্যন্ত খেয়ে ফেলত। ফলে সমস্যা এক সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য ইংল্যান্ডের লোকজন ইঁদুর ধরার জন্য অভিজ্ঞ লোক ভাড়া করা শুরু করে। আর ইঁদুর ধরা পেশাজীবীদের প্রতিটি ইঁদুরের জন্য টাকা দেওয়া হতো। এই পেশার সঙ্গে সম্পৃক্তরা সাধারণত সমাজের নিম্নস্তর থেকে উঠে আসত। এসব গরিব লোকেরা ইঁদুর মেরে একদিকে যেমন তাদের ক্ষুধা মেটাতে পারত তেমনি তাদের ক্রোধ দমনের জন্য একটা ভালো উপায়ও খুঁজে পেয়েছিল। তবে গরিব ঘর থেকে উঠে আসা লোকজন সাধারণত একই সহজ পদ্ধতিতে ইঁদুর মারত। ফলে এদের বাইরেও প্রশিক্ষিত একটি শ্রেণি ছিল, যারা ইঁদুর মারার কাজে সাধারণদের চেয়ে অনেক বেশি দক্ষ ছিল। আর দক্ষ র্যাট ক্যাচাররা ইঁদুর মারার জন্য নানা রকম যন্ত্র পর্যন্ত ব্যবহার করত। আর পেশা হিসেবে এটি এতই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল যে জ্যাক ব্ল্যাক নামের একজন 'র্যাট ক্যাচার' রানী ভিক্টোরিয়ার অফিসিয়াল র্যাট ক্যাচারে পরিণত হন। র্যাট ক্যাচারদের কাজ ছিল ইঁদুর খুঁজে বের করে সেগুলোকে ধরে ফেলা। যদিও এ লোকগুলোর ইঁদুরের কামড় ও তা থেকে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি ছিল, তবুও তারা বেশ দক্ষতার সঙ্গেই তাদের দায়িত্ব্ব পালন করত।

 

 

সর্বশেষ খবর