শনিবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
রাঙামাটি

চরম ক্ষতির মুখে মালিক-শ্রমিক

চরম ক্ষতির মুখে মালিক-শ্রমিক

দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা বেশিদিন চলতে থাকলে হোটেলের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। এ ছাড়া আর কোনো উপায় দেখা যাচ্ছে না। প্রতি বছর এ সময়ে আমাদের হোটেল ব্যবসা জমজমাট হয়ে থাকত। কিন্তু এবার মৌসুমের শুরুতেই ব্যবসায় প্রচুর আর্থিক শিকার হতে হচ্ছে।

দেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা আর টানা হরতাল-অবরোধের কারণে রাঙামাটি পর্যটনশিল্পে ধস নেমেছে। মুখথুবড়ে পড়েছে রাঙামাটি পর্যটনশিল্প ব্যবসা। রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সসহ পর্যটক নির্ভর হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ ও পর্যটকদের আনন্দ-মনোরঞ্জন জোগানোর আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থানগুলো এখন বিরান ভূমি। প্রতি বছর শীতের এ মৌসুমে রাঙামাটি শহর পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকলেও এবার মৌসুমে ভিন্ন চিত্র। পর্যটকশূন্য রাঙামাটি এখন স্থবির। এমনকি স্থানীয় লোকজনেরও পদচারণা নেই পর্যটন স্পটগুলোতে। চলতি মাসজুড়ে চলছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের টানা অবরোধ। অবরোধের মধ্যে পালিত হয়েছে এ পর্যন্ত একাধিকবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। ফলে মারাত্দকভাবে ধস নেমেছে রাঙামাটির পর্যটনশিল্পে। হোটেল, মোটেল ও পর্যটন পরিবহনগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্য থমকে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন পর্যটন নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক-শ্রমিকরা।

জানা গেছে, চলতি ভরা মৌসুমে রাঙামাটিতে পর্যটকদের বিনোদনের জন্য গড়ে তোলা পর্যটন মোটেলের ঝুলন্ত ব্রিজ, ডিসি বাংলো, নানিয়ারচরে বুড়িঘাটের বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুুর রউফের স্মৃতিসৌধ, জেলা পুলিশের সুখী নীলগঞ্জ ও পলওয়েল পর্যটন, শহরের ভেদভেদীর মিনি চিড়িয়াখানা, রাজবন বিহার, চাকমা রাজার বাড়ি, কাপ্তাই লেকে নৌবিহার, সুবলং ঝরনাস্পট, পেদাটিংটিং স্পট, টুকটুক ইকো ভিলেজসহ সবগুলো পর্যটন স্পট ও স্থাপনা এখন ফাঁকা। রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, মাত্র কয়েক মাস আগে বড় দিন ও ইংরেজি নববর্ষ উৎসবকে ঘিরে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত ছিল রাঙামাটি। আগত পর্যটকদের বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারের বহর ছাড়াও ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে আসা যাত্রীবাহী বাসগুলো ভিড়ে ঠাসা ছিল। কিন্তু এবার দীর্ঘ সময় ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা পর্যটনের জন্য প্রতিকূল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাঙামাটি হোটেল মালিক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক নেছার আহমদ বলেন, দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা বেশিদিন চলতে থাকলে হোটেলের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।

এ ছাড়া আর কোনো উপায় দেখা যাচ্ছে না। প্রতি বছর এ সময়ে আমাদের হোটেল ব্যবসা জমজমাট হয়ে থাকত। কিন্তু এবার মৌসুমের শুরুতেই ব্যবসায় প্রচুর আর্থিক শিকার হতে হচ্ছে।

রাঙামাটি পর্যটন মোটেলের নৌযান ঘাটের ম্যানেজার রমজান আলী জানান, রাঙামাটিতে পর্যটন খাতে এমন খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি আগে। এ অবস্থা কোনোদিন দেখা যায়নি। বর্তমানে আমাদের খুব খারাপ অবস্থা। বেকার বসে থাকা ছাড়া কোনো কাজ নেই।

পর্যটক আসতে না পারায় এখানে নৌযান ব্যবসায় সম্পৃক্ত শ্রমিক ও মালিকরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

এ ব্যাপারে রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সে  ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, এ সময়টা পর্যটকদের জন্য ভরা মৌসুম। কিন্তু এ বছর দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এখন পর্যটন মোটেলের বেশির ভাগ রুম খালি পড়ে আছে।

প্রতি বছর আমরা পর্যটন খাত থেকে সরকারকে আশানুরূপ রাজস্ব দিতে পারি। কিন্তু এবার মৌসুমে পর্যটক শূন্যতার কারণে রাজস্ব আয়ের বদলে লোকসান দিতে হবে প্রচুর।

* ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

 

 

সর্বশেষ খবর