রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

সেরা হচ্ছেন কে?

রাশেদুর রহমান

ট্রেন্ট বোল্ট (নিউজিল্যান্ড)

বিশ্বকাপের আগে অনেক ক্রিকেটবোদ্ধারই মত ছিল, এবারের বিশ্বকাপটা হবে গতি তারকাদের। বল হাতে তাদের গতির ঝড় মোকাবিলা করার পাশাপাশি বাউন্সেরও মুখোমুখি হতে হবে ব্যাটসম্যানদের। বোদ্ধাদের ধারণাকে সত্য প্রমাণ করেছেন যে ক'জন বোলার তাদের মধ্যে অন্যতম নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট। প্রতিটি ম্যাচেই আলো ছড়িয়েছেন এই ব্ল্যাক ক্যাপস গতি তারকা। একে একে কুড়িয়ে নিয়েছেন ২১টি উইকেট। ফাইনালে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক। তবে দুটি ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে ট্রেন্ট বোল্ট এগিয়ে আছেন অন্যদের চেয়ে। মেলবোর্নের ফাইনালে বল হাতে জ্বলে উঠতে পারলে এবারের বিশ্বকাপটা হয়তো ব্ল্যাক ক্যাপসরা তাকেই উৎসর্গ করবে! বিশ্বকাপের আটটি ম্যাচে ১৫.৭৬ গড়ে উইকেট সংগ্রহ করেছেন বোল্ট।

মার্টিন গাপটিল (নিউজিল্যান্ড)

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাট হাতে কী ঝড়ই না তুলেছিলেন মার্টিন গাপটিল। ওই একটি ইনিংসই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়ার জন্য যথেষ্ট। তবে গেইলের মতো এক ম্যাচে জ্বলে উঠেই নিবে যাননি গাপটিল। কোয়ার্টার ফাইনালের মতো গ্রুপ পর্বেও বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি (১০৫) করে সেরা নির্বাচিত হন তিনি। দুই সেঞ্চুরি আর এক হাফসেঞ্চুরিতে ৮ ইনিংসে তার রান ৭৬ গড়ে ৫৩২। ফাইনাল ম্যাচে প্রভাব বিস্তারকারী কোনো ইনিংস খেলতে পারলে সেরা ক্রিকেটার হিসেবে তিনিই হতে পারেন বিচারকদের প্রথম পছন্দ।

মিচেল স্টার্ক (অস্ট্রেলিয়া)

অস্ট্রেলিয়ানরা দলীয়ভাবেই বিশ্বকাপ জেতে। ১৯৯৯, ২০০৩ কিংবা ২০০৭ বিশ্বকাপের দিকে তাকালে তো এমনটাই মনে হয়। অবশ্য ২০০৭ বিশ্বকাপে গ্লেন ম্যাকগ্রা ২৬ উইকেট শিকার করে সেরা ক্রিকেটার হিসেবে তালিকায় যোগ হয়েছিলেন। এবার নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সেরা ক্রিকেটার হওয়ার তালিকায় অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী তেমন কোনো প্রতিনিধি নেই। মিচেল স্টার্ক অবশ্য এখনো লড়াইয়ে টিকে আছেন। ফাইনালে দারুণ কিছু করে ট্রেন্ট বোল্টকে ছাড়িয়ে যেতে পারলে হয়তো নির্বাচকরা তাকেই বেছে নিতে পারে সেরা ক্রিকেটার হিসেবে। ৭ ম্যাচে ১০.২০ গড়ে মিচেল স্টার্ক ২০টি উইকেট শিকার করেছেন। এর মধ্যে একটি ম্যাচে নির্বাচিত হয়েছেন সেরা। এ পর্যন্ত মিচেল স্টার্কের নামটাও থাকছে বিবেচনায়।

কোরি অ্যান্ডারসন (নিউজিল্যান্ড)

বিশ্বকাপে সেরা ক্রিকেটার হওয়ার দৌড়ে বেশির ভাগ সময়ই অলরাউন্ডাররা এগিয়ে থাকেন। সনাৎ জয়সুরিয়া (১৯৯৬, ২২১ রান ও ৭ উইকেট), ল্যান্স ক্লুজনার (১৯৯৯, ২৮১ রান ও ১৭ উইকেট) এবং যুবরাজ সিং (২০১১, ৩৬২ রান ও ১৫ উইকেট) অলরাউন্ড নৈপুণ্য দিয়েই জয় করেছিলেন টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার। এ তালিকায় এবার আছেন নিউজিল্যান্ডের কোরি অ্যান্ডারসন। এখনো পর্যন্ত তিনি ব্যাট হাতে ২৩১ রান করার পাশাপাশি বল হাতে শিকার করেছেন ১৪টি উইকেট। একটা ম্যাচে সেরা তারকার পুরস্কারও জিতেছেন তিনি।

কুমার সাঙ্গাকারা (শ্রীলঙ্কা)

বিশ্বকাপে টানা চারটি সেঞ্চুরি করার পর সাঙ্গাকারার সামনে নতজানু হয়ে লঙ্কান অধিনায়কের অনুরোধ ছিল, ক্রিকেটের এই কঠিন আঙিনায় আমাদের একা ফেলে চলে যেও না। তবে জীবনের শেষ বিশ্বকাপে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন তিনি। ইতিহাসের পাতায় নিজের নামটাকেও স্থায়ী করে গেলেন। বিশ্বকাপ তো বটেই ওয়ানডে ক্রিকেটের দীর্ঘ ৪৫ বছরের ইতিহাসে টানা চারটি সেঞ্চুরি করার রেকর্ড কেবল সাঙ্গাকারারই। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে শ্রীলঙ্কা বিদায় নিলেও সাঙ্গাকারার এ অর্জন তাকে টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটার হওয়ার দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে রেখেছে। ৭ ইনিংসে ১০৮.২০ গড়ে ৫৪১ রান এখনো তাকে ব্যাটসম্যানদের তালিকায় রেখেছে সবার উপরে। গ্লাভস হাতে উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে তিনি ৫টি ক্যাচ লুফে নেওয়ার পাশাপাশি স্ট্যাম্পিং করেছেন ৩টি। এ ছাড়াও তিনি জয় করেছেন ম্যাচ সেরার দুটি পুরস্কার।

 

সর্বশেষ খবর