সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

আরো কিছু ভয়ংকর

সোভিয়েত ইউনিয়নের আসগাবাত

১৯৪৮ সালের ৬ অক্টোবর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের আসগাবাত অঞ্চলে ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে প্রায় দুই লাখ মানুষ মারা যায়। আসগাবাত সংলগ্ন বেশ কয়েকটি শহরের মারাত্দক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

পাকিস্তানের কাশ্মির

২০০৫ সালের ৮ অক্টোবর কাশ্মির অংশে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে প্রাথমিক ধাক্কাতেই ৮৫ হাজার মানুষ নিহত হন। আর এতে আহত হন কমপক্ষে ৬৯ হাজার মানুষ। জম্মুতে এই ভূমিকম্পের কারণে মারা যায় ১৪ হাজার মানুষ। চীনের একাংশ এবং তাজাকিস্তানেও এই ভূমিকম্প আঘাত হানে।

রাশিয়ার কামকাটকা

এটি ছিল বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম কোনো ৯ মাত্রার ভূমিকম্প। ১৯৫২ সালে রাশিয়ার কামকাটকা উপদ্বীপে এটি রেকর্ড করা হয়। এর ফলে কোনো হতাহতের ঘটনা না হলেও হাওয়াইতে এক মিলিয়ন ইউএস ডলারের ক্ষতির শিকার হয়। কামাকাটকায় অনেক সক্রিয় আগ্নেগিরি ছিল এবং এখানে ১৯২৩ সালে ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাত হেনেছিল।

জাপানের ফুকুশিমা

২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রের দুর্ঘটনার দুঃসহ চিত্র এখনো অনেকের স্মৃতিতে তাজা। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার এ ভূমিকম্পের পর সৃষ্ট সুনামিতে ১৮ হাজার ৯০০ লোক মারা যায়। ফুকুশিমার দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধসে ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয়ের জন্ম দেয় এ ভূমিকম্প। সুনামির পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক আবারও সামনে চলে আসে। সমুদ্রতলের এ ভূমিকম্পে জাপানের মতো প্রযুক্তি শক্তিসম্পন্ন দেশের প্রায় সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।

হাইতি

২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি ক্যারিবীয় দ্বীপদেশ হাইতির ভয়াবহ ভূমিকম্পে আড়াই লাখের বেশি মানুষ মারা যায়। রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার এ ভূমিকম্পে আহত হয় আরও ৩ লাখের বেশি লোক। এই ভূমিকম্পটিকে বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে সবচেয়ে বড় এবং ভয়াবহ ভূমিকম্প বলে মানা হয়।

চীন

২০১০ সালের ১৪ এপ্রিল চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কিনহাই প্রদেশে সংঘটিত এক ভূমিকম্পে তিন হাজার মানুষ মারা যায়। ২০০৮ সালে দেশটির সিচুয়ান প্রদেশে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ৮৭ হাজার মানুষ মারা যায়। এছাড়া ১৯৭৬ সালের ২৮ জুলাই দেশটির হাবেই প্রদেশে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে সরকারি হিসাবেই মারা যায় ২ লাখ ৪২ হাজার মানুষ।

ইরান

২০০৩ সালে ইরানের বাম শহরে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ৩১ হাজারের বেশি নিহত ও ১৮ হাজার লোক আহত হন।

ভারত

২০০১ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতের গুজরাট রাজ্যে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ২৫ হাজার লোক নিহত ও দেড় লাখের বেশি আহত হয়। এর আগে ১৯৯৩ সালে মহারাষ্ট্রের এক ভূমিকম্পে সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষ হতাহত হয়। ১৯৯১ সালের ২০ অক্টোবর উত্তর প্রদেশে ৬ দশমিক শূন্য মাত্রার ভূমিকম্পে মারা যান আরও ৭৬৮ জন।

নেপাল

জাপানের মতো ভৌগোলিকভাবেই নেপাল ভূমিকম্পপ্রবণ। ১৯৮৮ ও ১৯৩৪ সালে দেশটিতে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। এসব ভূমিকম্পে ১৫ হাজারের মতো লোক হতাহত হয়। সর্বশেষ গত শনিবারের ভূমিকম্পেও ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে।

এছাড়াও ইতালির ক্যালাব্রিয়া, ইরানের রুদবার, তুরস্কের ইজমিত, জাপানের নানকাইদো এবং আজারবাইজানের শেমাখা অঞ্চলেও প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। প্রত্যেকটি ভূমিকম্পেই বিপুল সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তবে এযাবৎ যতগুলো দেশেই ভূমিকম্প হয়েছে, সেই দেশগুলোকে ভূমিকম্প পরবর্তীতে অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। মানবিক বিপর্যয় এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে অনেকটা সময়ে লেগেছে ওই দেশগুলোর। আর পৃথিবীর ইতিহাস ঘটালে আরও অনেক অনেক ছোট-বড় ভূমিকম্পের ঘটনা খুঁজে পাওয়া যাবে। এসব ঘটনার ক্ষয়ক্ষতি বিশ্লেষণ করলে যে কারোরই গা শিউরে উঠবে।

 

 

সর্বশেষ খবর