মঙ্গলবার, ২৬ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রাণহীন করতোয়া

প্রাণহীন করতোয়া

বগুড়ার করতোয়া নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে কেউ এগিয়ে আসছেন না। বাঁচাতে এগিয়ে না এলেও দখল আর দূষণে অনেকেই এগিয়ে গেছেন। নদীর পাড় আর ঘাট দখল করে কেউবা বাড়ি, কেউবা প্রতিষ্ঠান গড়েছেন। নাব্য না থাকায় পানি দূষণ, পলি পড়ে ভরাট, নদীর বুকে চাষাবাদ, অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, ড্রেনের প্রবাহ, ময়লা-অবর্জনা ফেলা, বালু উত্তোলন, কলকারখানার বর্জ্য ফেলাসহ নদীর দুই পার ইচ্ছামতো দখল হওয়ার কারণে বগুড়া শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া নদী এখন শহরের সবচেয়ে বড় ড্রেনে পরিণত হয়েছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ১২২ কিলোমিটার করতোয়া নদীর তীর ঘেঁষে প্রাচীন পুন্ড্রনগরীর গোড়াপত্তন হলেও সেই সভ্যতার সঙ্গে এখন করতোয়া নদীও ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নিতে চলেছে। নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার নিচু জলাভূমি থেকে উৎপত্তি হয়েছে করতোয়া নদী। দিনাজপুরের পার্বতীপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে রংপুরের বদরগঞ্জ, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ হয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় প্রবেশ করেছে। করতোয়া নদী বগুড়া শহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে জেলার শেরপুর উপজেলার চান্দাইকোনা এলাকায় বাঙালি নদীতে গিয়ে মিলেছে। উৎপত্তিস্থল থেকে এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে দখল আর ভরাটের কারণে এখন মরা নদী হিসেবে পরিণত হয়েছে প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকা। স্বাধীনতার পর থেকেই করতোয়া নদীর জায়গা দখল শুরু হয়। বগুড়া শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ১১ কিলোমিটারের নাব্য ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা ফাইলবন্দী হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন যাবৎ। ২০০১ সালে বগুড়া শহরকে মডেল টাউনে পরিণত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সেই মডেল টাউনের প্রধান প্রকল্পটি ছিল বগুড়ার করতোয়া নদীকে দখলমুক্ত করে এবং নদীর দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পাকা সড়ক নির্মাণ করা। কিন্তু প্রভাবশালীদের হাত থেকে দখলমুক্ত করা যায়নি করতোয়া নদী। নদীর দুই পাশ ঘিরে ইচ্ছামতো দখল করা হয়েছে। দখল করা নদীর তীরে নির্মাণ করা হয়েছে শত শত বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিশাল বিশাল ভবন। সময়-সুযোগমতো প্রভাবশালীরা নামে-বেনামে নদীর তীর দখল করে নিচ্ছে। আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

 

সর্বশেষ খবর