বুধবার, ২৭ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

হারিয়ে যাচ্ছে নবগঙ্গা

হারিয়ে যাচ্ছে নবগঙ্গা

স্বাধীনতার পরেও লোহাগড়ার নবগঙ্গা নদীতে চলেছে স্টিমারসহ বড় বড় নৌযান। আজ সেখানেই চলছে চাষাবাদ, গড়ে উঠেছে বসতভিটা। অপরিকল্পিত প্রকল্প আর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় হারিয়ে যেতে বসেছে এই অঞ্চলের অন্যতম এই নদীটি আর বিরূপ প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপর। বৃহৎ পর্যায়ের খনন অথবা নদীর শ্রেণি পরিবর্তন করে একসনা বন্দোবস্তের মাধ্যমে সরকারের আয় বৃদ্ধি ছাড়া আর কোনো উপায়ই নেই বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। বাংলাপিডিয়া সূত্রে দেখা যায়, চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা মোহনা হতে সৃষ্টি হয়ে ঝিনাইদহ, মাগুরা হয়ে নড়াইলের ওপর দিয়ে মহাজন বাজারে মধুমতি নদীর সঙ্গে মিশেছে ২৩০ কি.মি. দৈর্ঘ্যের নবগঙ্গা। কিন্তু উত্তরে মাগুরা শহরের স্লুইচ গেটে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে আর দক্ষিণে মহাজন বাজারের কাছের মধুমতীর মিলনস্থল বন্ধ হয়ে কালের স্রোতে মরে গেছে নদীটি। বর্তমানে লোহাগড়া উপজেলা সদরের লক্ষ্মীপাশা থেকে দক্ষিণে মহাজন পর্যন্ত প্রায় ২০ কি.মি. নদীটি নালায় পরিণত হয়েছে। কোথাও কোথাও পানি ছাড়া শুধু কাদামাটি। পানির অভাবে আবার কোনো কানো স্থানে নদীর মধ্যখানে সেচযন্ত্র দিয়ে মাটির গভীর থেকে পানি তুলে চলছে চাষাবাদ। বিগত কয়েক বছর ধরে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করেছে, পরিকল্পনাহীনভাবে নদী ভরাট করে তৈরি হয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প ও গুচ্ছগ্রাম, নদীর ভিতরে তৈরি করা হয়েছে পাকা ঘাট, মসজিদ, শ্মশান, ঈদগাহ ও বসতবাড়ি। এ ছাড়া যে যার ক্ষমতা মতো নদী দখল দিয়ে ঘের বানিয়ে মৎস্য চাষসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহার করে চলেছে। ২০১০ সালের এপ্রিল ও মে মাসে মধুমতী নদীর সংযোগস্থল উপজেলার তেলকাড়া থেকে দীঘলিয়া পর্যনত্দ ৮ দশমিক ৬৮কি.মি. অংশ খনন করা হয়।

এ জন্য বরাদ্দ ছিল দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আর্থিক সহায়তায় নদী খনন প্রকল্পটির তত্ত্বাবধান করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। পরবর্তী সময়ে মহাজন থেকে মলি্লকপুর পর্যন্ত প্রায় ১৬ কি.মি. নদী খননকাজ এ প্রকল্পের আওতাভুক্ত ছিল। কিন্তু তা আর হয়নি। যেটুকু স্থানে কাজ হয়েছে সেটুকুতেও ব্যাপক অনিয়ম হওয়ায় খনন প্রকল্পে কোনো প্রকার লাভই হয়নি। নদীতে পানি না থাকায় লোহাগড়ার বেশিরভাগ এলাকার চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। মৎস্য অফিস ও মৎস্যজীবীরা জানান, পানি না থাকায় নেই মাছ। আর মাছের অভাবে এই এলাকায় সবসময় পার্শ্ববর্তী যে কোনো এলাকা থেকে মাছের দাম বেশি, বেকার হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। সাজ্জাদ হোসেন, নড়াইল

 

 

সর্বশেষ খবর