মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০১৫ ০০:০০ টা

মানিকগঞ্জের নদী হারিয়ে বদলে যাচ্ছে মানচিত্র

মানিকগঞ্জের নদী হারিয়ে বদলে যাচ্ছে মানচিত্র

১৩৭৯ বর্গকিলোমিটারের আয়তনের মানিকগঞ্জ যার নদীর দৈর্ঘ্য ২৪১ কিলোমিটার। নদীবেষ্টিত জেলা মানিকগঞ্জ এখন দেখে বোঝার উপায় নেই এগুলো নদী না ফসলি জমি। অপরিকল্পিত বাঁধ, রাস্তা, ব্রিজ কালভার্ট তৈরি ও উজানের পলিতে ভরে গেছে নদী। সময়মতো খনন না করার কারণে নদী ভরাট হয়ে চরাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। কোথাও কোথাও চলছে চাষাবাদ। দ্রুত বদলে যাচ্ছে মানচিত্র। জানা যায় এক সময় জেলার আজিমনগর, লেছড়াগঞ্জ, জাগির, বেইথাঘাট, জাফরগঞ্জ সর্বত্রই নদীবন্দর ছিল এসব এলাকা থেকে বড় বড় স্টিমার, লঞ্চ, নৌকা দেশ-বিদেশে চলাচল করত। এখন এসব কেবলই স্মৃতি। কালের বিবর্তনে মানিকগঞ্জের মধ্যদিয়ে প্রবহমান চারটি নদীই এখন মৃত প্রায়। বর্ষা মৌসুম ছাড়া এ নদীগুলো থাকে পানিশূন্য। নদীর বুকজুড়ে ধুধু বালুচর,কোথাও চাষাবাদ, কোথাও গরু চরানো কিংবা দুরন্তদের খেলাধুলার দৃশ্য চোখে পড়ে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র মতে মানিকগঞ্জ জেলার মাঝ দিয়ে বয়ে চলা ধলেশ্বরী, পুরাতন ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গা, ইছামতি নামে চারটি নদী রয়েছে যার দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪১ কিলোমিটার। ধলেশ্বরী নদী ঘিওর উপজেলার যাবরা থেকে শুরু করে সাটুরিয়ার তিল্লী, বরাইদ হয়ে জাগিরের ভিতর দিয়ে সিঙ্গাইরের শেষ মাথা পর্যন্ত মিশেছে। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ কিলোমিটার। পুরাতন ধলেশ্বরী নদীটি দৌলতপুর উপজেলার মূল যমুনা থেকে শুরু হয়ে ঘিওর উপজেলার যাবরা নামক স্থানে এসে শেষ হয়। এটির দৈর্ঘ্য ২৬ কিলোমিটার। যাবরা থেকে শুরু হয়ে সিংগাইরের ধল্যা পর্যন্ত কালীগঙ্গা নদীর অবস্থান যার দৈর্ঘ্য ৩৫ কিলোমিটার। শিবালয় উপজেলা থেকে শুরু করে উথুলী হয়ে হরিরামপুর পদ্মা নদীর সঙ্গে মিশেছে ইছামতি নদী। এটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ কিলোমিটার। এছাড়া যমুনা নদী দৌলতপুর থেকে পাটুরিয়া ঘাটে এসে শেষ হয়েছে। যাহার দৈর্ঘ্য ৪০ কিলোমিটার। তাছাড়া পদ্মা নদী হরিরামপুরের ৫টি ইউনিয়নকে বেষ্টিত করে রেখেছে। পদ্মা, যমুনা নদী ছাড়া সব নদীই এখন মৃতপ্রায়। দেখে বোঝার উপায় নেই যে এগুলো একসময় গভীর নদী ছিল, জেলা থেকে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার মাধ্যম ছিল এই নদীপথ। কালের বিবর্তনে অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ এবং উজান থেকে চলে আসা মাটি বালুতে নদীগুলো ভরাট হয়ে ধুধু চরাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। নদীগুলো খনন না করার কারণে দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে। ফলে মৎস্যজীবিরা সম্পূর্ণ বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। নদী মরে যাওয়ার ফলে কৃষিতে সেচ কাজ দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

মো. কাবুল উদ্দিন খান, মানিকগঞ্জ

 

সর্বশেষ খবর