বুধবার, ১ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

দক্ষিণাঞ্চলেও সম্ভাবনা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

দক্ষিণাঞ্চলেও সম্ভাবনা

রকারি সহযোগিতা ছাড়াই উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিবছর আহরণ ও রপ্তানি হচ্ছে কাঁকড়া। এর পরিমাণও কম নয়। বতর্মানে শুধু দক্ষিণাঞ্চল থেকেই কাঁকড়া রপ্তানির মাধ্যমে প্রতিবছর প্রায় ২০০ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসছে। সারা দেশ থেকে এ রপ্তানি আয়ের পরিমাণ বছরে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।

দক্ষিণাঞ্চলে কাঁকড়া চাষ ও মোটা তাজাকরণ সমপ্রসারণ নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন মৎস্য অধিদপ্তর (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) খুলনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আবদুর রাশেদ। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চিংড়ি চাষে অনেক পুঁজি ও জায়গা প্রয়োজন। কিন্তু কাঁকড়া চাষ অল্প জায়গা ও নামমাত্র পুঁজিতেই সম্ভব। মাত্র এক শতাংশ জমিতে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা বিনিয়োগ করে বছরে গড়ে ৩০০ কেজি কাঁকড়া উৎপাদন করা সম্ভব, যার মূল্য এক থেকে দেড় লাখ টাকা। রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। খাদ্যও পাওয়া যায় বেশ সস্তায়।

রাশেদ বলেন, প্রতিবছর উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে শত শত টন কাঁকড়া জন্ম নেয়, যার শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ আহরিত হচ্ছে। বাকি কাঁকড়া বছর শেষে আপনা-আপনি মারা যাচ্ছে। কিছু পদ্ধতিগত পরিবর্তন ও চাষিদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মারা যাওয়া কাঁকড়ার অর্ধেকটা আহরণ করে রপ্তানি করতে পারলে এ খাতটি বিদেশি অর্থ আয়ের আরেকটি শক্ত ভিত রচনা করে দিতে পারে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের বিশাল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আয়ের উৎস হতে পারে কাঁকড়া চাষ। বাংলাদেশ লাইভ অ্যান্ড চিল্ড ফুড এঙ্পোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব গাজী আবুল কাশেম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, '২০১০ সালের শেষের দিকে আমাদের অ্যাসোসিয়েশন সরকারি নিবন্ধন পাওয়ার পর থেকে প্রতিবছর কাঁকড়া রপ্তানি বেড়েছে। বর্তমানে বছরে সারা দেশ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার কাঁকড়া রপ্তানি হচ্ছে। এর মধ্যে ২০০ কোটি টাকার কাঁকড়া রপ্তানি হয় খুলনা থেকে। সরকারি পূর্ণ সহযোগিতা পেলে এ রপ্তানি আয় এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা সম্ভব। তিনি বলেন, সরকারি পূর্ণ সহায়তা নিয়ে ইন্দোনেশিয়া শুধু কাঁকড়া রপ্তানি করে বছরে হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করছে। অথচ সেখানকার তুলনায় বাংলাদেশে কাঁকড়াসম্পদ অনেক বেশি। একই সঙ্গে যারা কাঁকড়া রপ্তানি করছে তাদের কোনো ইনসেনটিভ দেওয়া হয় না। আবার রপ্তানি ছাড়পত্র পেতে দীর্ঘসূত্রতায় প্রতিবছর ৫০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় রপ্তানিকারকদের।

 

সর্বশেষ খবর