বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা
উকাওশ গ্রোনিওশ

দাস হিসেবে লেখেন প্রথম আত্মজীবনী

দাস হিসেবে লেখেন প্রথম আত্মজীবনী

নাইজেরিয়ার প্রত্যন্ত এক গ্রাম। সেই গ্রামেরই ছেলে গ্রোনিওশ। ছেলেবেলায় সবারই জানার আগ্রহ থাকে অনেক বেশি। গ্রোনিওশেরও ছিল। তবে আর দশজনের চাইতে অনেকটা বেশিই ছিল যেন সেটা। আর তাই যখন তাকে বলা হলো পানির ওপরে হেঁটে চলা পাখাওয়ালা বাড়ি দেখবে কিনা, দ্বিতীয়বার ভাবার কথা মনেও আসেনি তার। আর এভাবেই খুব সহজে দাস ব্যবসায়ীদের হাতে ছোটবেলাতেই ধরা পড়ে গ্রোনিওশ। ব্যবসায়ীরা তাকে নিয়ে আসে নিউইয়র্কে। সেখানেই দাস হিসেবে বিক্রি হয়ে যায় গ্রোনিওশ থিওডোর ফ্রিলিঙ্ঘুইসেন নামের এক সাদা চামড়ার মানুষের কাছে। এমনিতে মনিব হিসেবে বেশ ভালো ছিলেন থিওডোর। তিনি দাস হওয়া সত্ত্বেও গ্রোনিওশকে ধর্মীয় শিক্ষা দেন। উপযুক্ত করে তোলেন নানাভাবে। সেখানেই থিওডোর আর তার পরিবারের সেবা করে চলে গ্রোনিওশ জীবনের বেশ কয়েকটা দিন। তবে পুরো ব্যাপারটা থেমে যায় মনিবের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে। থিওডোর মারা গেলে গ্রোনিওশ মুক্ত হয়ে যান। তবে মুক্তি পেয়েই সরে পড়েননি তিনি। নৈতিক দায়িত্বের জায়গা থেকে মনিবের পরিবারের দিকে খেয়াল রাখতে শুরু করেন তিনি। সেবা করে যেতে থাকেন তাদের। তবে পরবর্তীতে তারাও মারা গেলে গ্রোনিওশ একা হয়ে পড়েন। সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ডে চলে যাওয়ার। সেখানেই এক সাদা চামড়ার মহিলার সঙ্গে বিয়ে হয় তার। নিজেদের পরিবার আর সন্তানদের মানুষ করতে প্রচণ্ড পরিশ্রম করতে হতো গ্রোনিওশ দম্পতিকে। আর তাই খানিকটা বাড়তি আয়ের পথ হিসেবে ১৭৭২ সালে নিজের আত্মজীবনী- অ্যা ন্যারাটিভ অব দ্য মোস্ট রিমার্কেবল পার্টিকুলার্স ইন দ্য লাইফ অব জেমস অ্যালবার্ট উকাওশ গ্রোনিওশ, অ্যান আফ্রিকান প্রিন্স- নামক বইটি লেখে গ্রোনিওশ। ইতিহাসে দাস হিসেবে প্রথম আত্মজীবনী লেখার দায়িত্ব নেওয়া মানুষটাকে যদিও খুব কম মানুষই চেনে এখন।

 

সর্বশেষ খবর