শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

কবির বাড়ি

কবির বাড়ি

কবির স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির একাংশ

যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি। যশোর থেকে ৩৫ কিলোমিটারের পথ কেশবপুর। কেশবপুর থেকে সাগরদাঁড়ি ১২ কিলোমিটার। এই পথটুকু যেতে হবে সবুজ অরণ্যের সৌন্দর্যের ফাঁক গলে। রাস্তার দুই ধারে সারি সারি খেজুরগাছ আর সবুজ অরণ্য। মধুসূদনের বাড়ির আঙিনায় চোখ পড়বে মধুসূদনের আবক্ষমূর্তি। কবির স্মৃতি ধরে রাখতে মধুসূদনের পৈতৃক বাড়ি ঘিরে গড়ে উঠেছে মধুপল্লী। এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের একটি প্রতিষ্ঠান। গ্রিক ধাঁচে তৈরি বাড়ির মূল ভবনের উঁচু পিলার। চারদিকে প্রাচীর আর মাঝে বিশাল উঠান। মূল ভবনের সামনেই বিশাল মধুমঞ্চ। এ মঞ্চেই প্রতিবছর ২৫ থেকে ৩১ জানুয়ারি মধু জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। মঞ্চের ডান দিকে রয়েছে মধুসূদন মিউজিয়াম। অনেকগুলো কক্ষ নিয়ে সাজানো এ মিউজিয়াম। মিউজিয়ামে রয়েছে_ মধুসূদনের স্মৃতিবিজড়িত কাঠের টেবিল, দেশজ ঐতিহ্যবাহী দা, কাঠের বাক্স, স্টিলের বাক্স, কাঠের আলমারি, কাঠের সিন্দুক, টুপি রাখার পাত্র, গ্রামোফোন, পাথরের থালা, কাঠের খাট, দেরাজ যুক্ত কাঠের আলনা, লোহার সিন্দুক, টিফিন ক্যারিয়ার এবং কবির ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্যাদির লোহা ও পোড়া মাটির ভাঙা অংশ। কবির পত্নীর ছবি, কবির হস্তলিপি, কলকাতা রোডে আবক্ষ ব্রোঞ্জমূর্তির ছবি, মধুসূদনের কিছু চিত্র, কিছু মুদ্রিত লেখার ফটোকপিসহ আরও দর্শনীয় মহামূল্যবান ব্যবহৃত জিনিস সংরক্ষণ করা আছে। রাস্তা ধরে কপোতাক্ষ নদের দিকে এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে মধুকবি রচিত সমাধিলিপি। কবি লিখেছেন_ দাঁড়াও, পথিক-বর, জন্ম যদি তব বঙ্গে তিষ্ট ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে...। কপোতাক্ষ নদে কবির শৈশবকালের বিভিন্ন স্মৃতি রয়েছে। কবি কপোতাক্ষ নদ নিয়ে লিখেছেন_ সতত হে নদ, তুমি পড় মোর মনে/সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে/সতত তব কলকলে জুড়াই এই কান আমি ভ্রান্তির ছলনে/বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ-দলে কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে। এই কবিতাটি কপোতাক্ষ নদের পাশে মর্মপাথরে খোদাই করা আছে। মধুসূদন এ নদের স্রোতধারার তুলনা করেছিলেন দুগ্ধ-স্রোতরূপী বলে। কপোতাক্ষ নদের সেই রূপ আগের মতো নেই।

কীভাবে যাবেন : সাগরদাঁড়ি যেতে চাইলে প্রথমে যশোর যেতে হবে। ঢাকা থেকে সড়কপথে যশোর যাওয়া যায়। ঢাকার গাবতলী, কল্যাণপুর, কলাবাগান থেকে বিভিন্ন পরিবহনের বাস সার্ভিস রয়েছে। যশোর নেমে বাসে করে কেশবপুর। কেশবপুর থেকে জিপ, অটোরিকশা অথবা মোটরবাইকে সাগরদাঁড়ি যেতে পারেন।

 

সর্বশেষ খবর