বুধবার, ৮ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

এক অশুভ ডাইনির নজর রয়েছে আমাদের ওপর

এক অশুভ ডাইনির নজর রয়েছে আমাদের ওপর

রবিনসন স্ট্রিটে কঙ্কালকাণ্ডে ডায়েরিতেই রহস্যের চাবিকাঠি রয়েছে বলে দাবি করেন তদন্তকারী পুলিশ। খুঁজে পাওয়া ডায়রিতে গত কয়েক মাসে নানা অজানা তথ্য পার্থ লিখেছেন। ঠাকুরমা, মা, বাবা ও দিদি সবার কথাই আছে সেখানে। পুলিশ ডায়েরি ঘেঁটে দেখেছে সেখানে পার্থ লিখেছেন, 'এক অশুভ ডাইনির নজর রয়েছে আমাদের ওপর। সে কারণেই এত সমস্যা। কিন্তু সবাই ভালো থাকার চেষ্টা করছি। ঠিক ঘুরে দাঁড়াব আমরা।'

এরকম একাধিক লেখায় প্রতিটি লাইনের তথ্য মিলিয়ে দেখে ৩ নম্বর রবিনসন স্ট্রিটের ওই বাড়ির রহস্য উদ্ধার করতে চাইছে শেঙ্পিয়র সরণি থানার পুলিশ। এই রহস্যের সমাধানে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে চাইছেন তদন্তকারীরা। বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া পার্থ দে-র দিদি দেবযানীর কঙ্কালটি ডিএনএ পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের দুই সারমেয়র হাড়গোড়গুলোও পরীক্ষা করা হয়। এদিকে পাভলভে নিয়ে যাওয়া পার্থ দে-কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী অফিসাররা। ডিসেম্বর দেবযানীর মৃত্যুর পর ছয় মাস ধরেই তার কঙ্কাল রয়েছে বাড়িতে। দিদির কঙ্কালকে খাবারও দিতেন পার্থ। এক অলৌকিক পরিবেশ বিরাজ করত ঘরের মধ্যে। পিতা অরবিন্দবাবু আত্মহত্যাই করেছেন বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই উল্লেখ রয়েছে। এদিকে, এক ভাড়াটিয়ার দাবি, গত ১৫ বছরে ওই বাড়ির বাইরে দেবযানীকে দেখা যায়নি। তাহলে কী দেবযানী কার্যত ঘরবন্দী ছিলেন? 'আমরা অনেক সমস্যায় আছি, পরে আমাদের পরিবার স্বর্গের ফুলে বাগান হয়ে উঠবে'

পার্থ দে'র লেখা ডায়েরিগুলো পড়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে রহস্যের সমাধান করতে চাইছে পুলিশ। প্রাথমিক অনুমান কোনো অন্ধবিশ্বাস থেকেই দিদি দেবযানী দে ও প্রিয় দুই পোষ্যের কঙ্কাল ঘরে রেখে দিয়েছিলেন পার্থ। তবে এই ঘটনার সূত্রপাত পার্থ দে'র মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই বলে অনুমান গোয়েন্দাদের মায়ের মৃত্যু কোনোভাবে মেনে নিতে পারেননি পার্থ ও দেবযানী।

দুজনই কর্মক্ষেত্র ছেড়ে ঘরমুখী হয়ে যান। পরিবর্তনের শুরু তখন থেকেই তবে এই সময় কোনো তান্ত্রিক বা ওঝার কুমন্ত্রের কবলে এই ভাইবোন পড়েছিলেন কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ আরও দুটি বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছে, সম্পত্তি নিয়ে ভাই অরুণ দের সঙ্গে বিবাদ ও প্রোমোটিং চক্র। অরবিন্দবাবুর ভাই অরুণ দের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে রবিনসন স্ট্রিটের বাড়িটি ভেঙে ফেলে সেখানে প্রোমোটিং করার কথা বলেছিলেন অরবিন্দবাবু কিন্তু তাতে রাজি ছিলেন না অরুণবাবুরা তাহলে কি প্রোমোটারের কোনো চাপ ছিল। সে দিকটিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ ছাড়া কালো জাদুর কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা তাও দেখা হবে।

 

সর্বশেষ খবর