মঙ্গলবার, ৪ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

২৮ লাখ টাকায় বাতাস-গাছ!

২৮ লাখ টাকায় বাতাস-গাছ!

দেখতে অবিকল গাছের মতোই কিন্তু কাছে গেলেই টের পাওয়া যায় আসলে এটা কী। দূর থেকে দেখতে গাছের মতো মনে হলেও আসলে এটা একটি পাওয়ার জেনারেটর। এই অদ্ভুত কৃত্রিম গাছটির দামও কম নয়, ২৮ লাখ টাকা! অবাক হওয়ারই কথা; যদি বাজার থকে একটি জেনারেটর কেনা হয় এবং সেই জেনারেটর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চান তাহলে কম করে হলেও বেশ কয়েকটা হ্যাপা পার হতে হবে। প্রথমত, প্রচুর তেল পুড়বে, দ্বিতীয়ত, জেনারেটরের গগনবিদারী শব্দে কান ঝালাপালা হওয়ার জোগার। তাহলে কীভাবে মিলবে এই সমস্যার মুক্তি। মানুষের এই যন্ত্রণা লাঘবে ফরাসি কোম্পানি 'নিউউইন্ড' তৈরি করেছে বাতাস-গাছ নামের একটি উঁচু জেনারেটর। যার উচ্চতা তিন মিটার। নগরজীবনের সংকীর্ণতার কথা মাথায় রেখেই জেনারেটরটির নকশা করা হয়েছে। কোনোরকম শব্দ ছাড়াই সারাদিন চলবে এই বাতাস-গাছ। এটা প্রায় তিন দশমিক এক কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। তবে এই অল্প বিদ্যুৎ দিয়ে কোনো ভারী কাজ করা না গেলেও ছোট পরিবারের জন্য এটাই যথেষ্ট। নগরজীবনে যেহেতু বেশ জোরে বাতাস সচরাচর বয় না, তাই অল্প বাতাসেও যেন এই বাতাস-গাছের ক্ষুদ্র টারবাইনগুলো ঘুরতে পারে সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আর এই বাতাস-গাছটির আবিষ্কারক জুলিয়া রেভুজ। তার মতে, 'এই টারবাইনগুলো ঘুরতে খুব অল্প বাতাস দরকার। আর এই অল্প বাতাসেই তিন কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। একটি ঘরকে উষ্ণ রাখতে কিংবা একটা আস্ত ইলেকট্রিক গাড়িকে চার্জ দিতে এই বিদ্যুৎই যথেষ্ট।' কয়েক বছর আগে জেরোম মিখুদ লারভিরে নামের ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে এই প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেন। বাতাস-গাছটি দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন এই যন্ত্র তৈরিতে। কিন্তু বাতাস-গাছ তৈরি করার সময় তিনি আগাগোড়াই খেয়াল রেখেছিলেন যেন এই গাছ তৈরি করতে গিয়ে প্রকৃতির বিরুদ্ধে কোনো উপাদানের ব্যবহার না হয়। তাই তিনি প্রকৃতিবান্ধব উপাদান দিয়েই তৈরি করেছেন এই বাতাস-গাছ। আগামী মার্চের ১২ তারিখ প্যারিসের একটি জনপ্রিয় উদ্যানে পরীক্ষামূলকভাবে এই বাতাস-গাছ স্থাপন করা হবে। এখন পর্যন্ত এই পাঁচ টন ওজনের যন্ত্রটির দাম রাখা হচ্ছে ৩৫ হাজার ডলার বা ২৮ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের মাঝামাঝি আবিষ্কৃত 'বাতাস-গাছ' বাণিজ্যিকভাবে বাজারে বাজারজাতকরণ করা হবে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ফ্রান্স এবং ইউরোপের বেশ কিছু দেশ আগ্রহ দেখিয়েছে এই আবিষ্কারের প্রতি। বিশেষ করে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরাই এই যন্ত্রটিকে ব্যবহার করতে চাইছেন বাড়তি বিদ্যুৎ চাহিদা মোকাবিলার জন্য।

 

 

সর্বশেষ খবর