বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

কেলেঙ্কারি নিত্যসঙ্গী

কেলেঙ্কারি নিত্যসঙ্গী

বিশ্বের প্রভাবশালী মিডিয়াগুলোর মালিক তিনি। তাকে নিয়ে কটুকথা বাজারে ছড়ানো একপ্রকার দুঃসাধ্যই বলা যায়। তবু এই উন্মুক্ত তথ্যের যুগে কেলেঙ্কারি ঢেকে রাখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আর সে কারণেই কেলেঙ্কারিতে জড়ানো মারডক বারবার শিরোনাম হয়েছেন। প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার পর তিনি বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন। তিনি বলেন, প্যারিস হামলার জন্য মুসলমানরা দায়ী। তার এই বিতর্কিত মন্তব্যে বিশ্বে মুসলিমদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

প্যারিসে কথিত হামলার তিন দিন পর ব্যাপকভাবে বিতর্কিত এ মিডিয়াব্যক্তিত্ব তার টুইটার অ্যাকাউন্টে এ মন্তব্য করে কার্যত ফেঁসে যান। তার মন্তব্যে সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোতে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন সবাই। পরে অবশ্য তিনি মানুষের ক্ষোভের কাছে পরাজিত হয়ে এই বিতর্কিত মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেন। শুধু মুসলমানদের দায়ী করা নয়, তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বলে দাবি করেন। এটাই শেষ নয়। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামাকেও ছেড়ে কথা বলেননি। এই মিডিয়া মোগল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা খাঁটি কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নন। এক টুইটার বার্তায় এ কথা বলে মার্কিন দুনিয়ায় তোলপাড় তোলেন। তবে এই বেফাঁস কথা বলেও টিকতে পারেননি। বিতর্কিত সেই টুইটের জন্য ক্ষমা চান মারডক। মূলত রিপাবলিকান প্রার্থী বেন কারসনের সমর্থনেই তিনি এই টুইট করেছিলেন। এই মিডিয়া ব্যক্তিত্বের টুইট ১৩ হাজারেরও বেশি রিটুইট হয় এবং ১২ হাজার টুইটেই তার প্রতি সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শেষে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি আরেকটি টুইট করেন। সেখানে বলেন, ক্ষমাপ্রার্থী, কোনোরকম ছোটো করার উদ্দেশ্যে নয়। ব্যক্তিগতভাবে তারা দুজনই বেশ চমৎকার।

তবে সব কেলেঙ্কারি সামাল দিতে পারলেও হেরে যান ফোন হ্যাকিং কেলেঙ্কারিতে। রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ে ব্যক্তিদের ফোনকল হ্যাকিং করাসহ, বিভিন্ন সময় ফোন হ্যাকিংয়ের অভিযোগে তুলোধুনো করা হয় তাকে। এই অভিযোগে একেবারে পর্যদস্তু হয়ে পড়েন তিনি। পার্লামেন্টে জেরার মুখোমুখি হতে হয় রুপার্ট মারডককে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলে। হ্যাকিং কেলেঙ্কারি সম্পর্কে জেমসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা ছাড়াও এ ঘটনায় রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হয় তদন্তে। শেষ পর্যন্ত টিকতে না পেরে রুপার্ট মারডক নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। ১৬৮ বছর পুরনো ট্যাবলয়েড হারিয়ে যায় এই কেলেঙ্কারির কারণে। দেশে শীর্ষ পত্রিকাগুলোয় এক পৃষ্ঠাজুড়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্ষমা চান রুপার্ট মারডক। ব্রিটেনের সাতটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দিয়ে আড়িপাতা কেলেঙ্কারির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন নিউজ ইন্টারন্যাশনালের মালিক রুপার্ট মারডক। নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড গুরুতর অপরাধ করেছে স্বীকার করেন তিনি। মারডক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞাপনে বলা হয়, যে গুরুতর অনৈতিক ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমরা দুঃখিত। আমাদের কর্মকাণ্ডে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সে জন্য আমরা তাদের কাছে গভীরভাবে দুঃখিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর