বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

ক্রীড়াঙ্গনে ধনাঢ্য নারীরা

তানভীর আহমেদ

ক্রীড়াঙ্গনে ধনাঢ্য নারীরা

বেতন, সম্মানী, প্রাইজমানি, লাইসেন্সিং, করপোরেট চুক্তি ও বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা পেয়ে থাকেন ক্রীড়াবিদরা। আয় ও বিজ্ঞাপনে কাজ করার হিসাব কষলে নারী ক্রীড়াবিদের তালিকায় বিভিন্ন ক্রীড়ার তারকাদের কথা আলাদা করে বলতে হয়। ফুটবল, টেনিস, রেসিং থেকে শুরু করে রেসলিং- সব ধরনের খেলাতেই তাদের আধিপত্য রয়েছে। আয়ের দিক থেকে টেনিস ও অ্যাথলেট তারকারাই এগিয়ে রয়েছেন। লিখেছেন- তানভীর আহমেদ

 

মারিয়া শারাপোভা

আয় : ২৯.৭ মিলিয়ন

২০১৩ সালে ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে খেলতেই পারেননি শারাপোভা। সে বছর খেলেছিলেন মাত্র একটি ম্যাচ। অবশ্য পরের বছর ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে তাক লাগিয়ে দেন। পঞ্চম গ্র্যান্ডস্লাম শারাপোভাকে আর্থিকভাবে ফুলিয়েফাঁপিয়ে দেয়। ৬.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়ে যান এক গ্র্যান্ডস্লাম জিতে। তারপর এক বছর শুধুই তার গল্প। নাইকি ও হেড থেকে বিপুল অঙ্কের সম্মানী পান বিজ্ঞাপনে কাজ করে। খেলাধুলার পাশাপাশি ফ্যাশন জগতেও আইকন শারাপোভা। অ্যাভন, পোরসে, ট্যাগ, এভিয়েন থেকেও পান মোটা অঙ্কের টাকা। তার এক বছরে আয় গিয়ে দাঁড়ায় ২৯.৭ মিলিয়ন ডলার। এখানে পুরো ২৩ মিলিয়ন ডলার তিনি আয় করেন বিজ্ঞাপন থেকে।

 

কিম ইয়ুনা

আয় : ১৬.৩ মিলিয়ন

সোচি অলিম্পিকে সিলভার জিতেছেন কিম ইয়ুনা। যদিও সবাই আশা করেছিলেন তিনি সোনা জিতবেন। সেটি না ঘটলেও আয়ের কিন্তু ভাটা পড়েনি। তার আয় ১৬.৩ মিলিয়ন। এই অ্যাথলেট সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তার প্রতিদ্ব›দ্বীরা অনেকটাই পিছিয়ে পড়েন বিজ্ঞাপনী আয় থেকে। যে কারণে বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানগুলো তার পেছনে রীতিমতো লাইন ধরতে শুরু করে। কোরিয়ার বিজ্ঞাপনী জগতে তার একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে। এস কে টেলিকম তার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর আয় বেড়ে যায়। বিভিন্ন করপোরেট সংস্থাগুলো তার সঙ্গে চুক্তি বাড়িয়েছে। অ্যাথলেট তারকা হিসেবে তার আয়ের কাছাকাছিও কেউ নেই কোরিয়ায়। আমেরিকায়ও তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।


ডেনসিয়া প্যাটরিক

আয় : ১৩.৯ মিলিয়ন

গাড়ির ইঞ্জিনের শক্তি দিয়ে বাতাস কাঁপানো নারী অ্যাথলেট ডেনসিয়া। রেসিং জগতে তার নাম জানে না এমন ক্রীড়াপ্রেমী নেই বললেই চলে। ২০১৫ সালে এসেই ২৪তম সেরা ফিনিশিং তার দখলে রয়েছে। নাসকার স্প্রিন্ট কার সিরিজে টপটেনে থেকেছেন ছয়বার। যদিও ২০১৫-তে এসেই থামতে চাচ্ছেন। এরই মধ্যে বিশ্বের সেরা ধনী নারী ক্রীড়াবিদের তালিকায় তার নাম লেখা হয়ে গেছে। ১৩.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছেন গত এক বছরেরও কম সময়ে। বেতন ও প্রাইজমানি ৭.৯ মিলিয়ন ও বিজ্ঞাপন থেকে পেয়েছেন ৬ মিলিয়ন। নতুন নতুন গাড়ির স্পন্সরশিপের বড় অফারগুলো তার দিকে ছুটছে। তবে তার সবচেয়ে বড় স্পন্সর গোড্যাডি এ বছরই চুক্তি শেষ করতে যাচ্ছে।

 

রোন্ডা রৌসি

আয় : ৬.৫ মিলিয়ন

রোন্ডা রৌসিকে সবাই শুরুতে দেখেছে রেসলিংয়ের মঞ্চে। সেখানে জিতেছেন নারী চ্যাম্পিয়নশিপ। তার জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে গেছে ইউরোপ থেকে এশিয়ায়। মাত্র এক বছর  বিজ্ঞাপন জগতে এসেছেন। তাকে নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোর। মার্শাল আর্টে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনটি উঁচু বাজেটের সিনেমায় কাজ করার চুক্তিও সেরে ফেলেছেন। বেরিয়েছে তার সর্বাধিক বিক্রীত বই। এরই মধ্যে ক্রীড়া ম্যাগাজিনের কভার ফটোশুট। সব মিলিয়ে আয় করেছেন ৬.৫ মিলিয়ন। এখানে বেতন ছিল ৩ মিলিয়ন ও বাকিটুকু এসেছে বিজ্ঞাপন থেকে। রিবুক, বাফেলো ডেভিড বিটন, মনস্টার হেডফোন তার সঙ্গে বিজ্ঞাপনী চুক্তি সেরেছে।

 

স্টেসি লুইস

আয় : ৬.৪ মিলিয়ন

এলপিজিএ, মহিলা টেনিস তারকাদের উত্থান এখান থেকেই। বিশ্বের সেরা নারী টেনিস ক্রীড়াবিদের মধ্যে সবসময় আলোচনায় থাকেন স্টেসি লুইস। সফল ও ধনী ক্রীড়াবিদ হিসেবেও তার আলাদা সুনাম রয়েছে। ২০১৪ সালে এসে জিতেছেন এলপিজিএ। এটি তার দ্বিতীয় জয় ছিল। ২০০৬ সালের পর থেকে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে এসেছেন ২০১৪ সালে। স্বাভাবিকভাবেই বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো তাকে নিয়ে কাজ করার আগ্রহ বাড়িয়েছে। যে কারণে তাকে স্পন্সর করছে মিজুনো, অ্যান্টিগোয়া অ্যাপারেল, ওমেগা, ম্যানুলাইফ, ব্রাইজস্টোন ও ফুটজয়ের মতো নামিদামি কোম্পানিগুলো। এক বছরে আয় করেছেন ৬.৪ মিলিয়ন। বিজ্ঞাপন থেকেই এসেছে ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

 

অ্যালেক্স মরগান

আয় : ৩ মিলিয়ন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল তারকা অ্যালেক্স মরগান শুধু নারী ফুটবলার হিসেবেই নয়, একজন ফ্যাশন আইকন হিসেবে আয় করে থাকেন বিপুল অঙ্কের টাকা। বিশ্বের শীর্ষ ধনী নারী ফুটবলারদের একজন তিনি। সব মিলিয়ে তার সম্পদের পরিমাণ ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বেতন পেয়ে থাকেন ৪৫ হাজার মার্কিন ডলার। বাকি আয়ের সবটুকুই আসে বিজ্ঞাপন থেকে। অ্যালেক্স মরগান অলিম্পিক গোল্ড মেডেল পেয়েছেন। অর্জনের তালিকায় যোগ হয়েছে ফিফা নারী বিশ্বকাপ জয়ের সম্মানও। ২২ বছর বয়সে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে এগিয়ে গেছেন দ্রুত। ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকের ফাইনালে জয়সূচক গোলটিও আসে তার পা থেকে। এই তারকার আয় তো বাড়বেই।

সর্বশেষ খবর