বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ট্রাম্পের অপেক্ষায় হোয়াইট হাউস

তানভীর আহমেদ

ট্রাম্পের অপেক্ষায় হোয়াইট হাউস

১৬ জুন, ২০১৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন ট্রাম্প

 

১ মার্চ, ২০১৬

প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা দৌড়ে এগিয়ে যান তিনি। সুপার টুইসডেতে সাতটি অঙ্গরাজ্যে জয়ী হয়ে জনসমর্থনের প্রমাণ দেন।

 

২১ জুলাই, ২০১৬

প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেন

 

৮ নভেম্বর, ২০১৬

যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। হিলারিকে পরাজিত করে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ট্রাম্প

 

রিয়েল এস্টেট সম্রাট

ট্রাম্পের বাবা ছিলেন ধনকুবের ব্যবসায়ী। তার প্রেরণাতেই রিয়েল এস্টেট ব্যবসাতে নাম লেখান ট্রাম্প। বাবার দেওয়া ধারের টাকা দিয়ে ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু তার। এরপর ব্যাংক লোন নিয়ে ম্যানহাটনে এসে ভাগ্য গড়েন ট্রাম্প। ১৯৪৬ সালে  জন্ম নেওয়া ট্রাম্প পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। তার বাবা ছিলেন জার্মান অভিবাসী। দুরন্তপনা ও চঞ্চলতার কারণে ট্রাম্পকে সামরিক বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি করা হয়। ১৯৬৮ সালে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হোয়ার্টন স্কুল অব বিজনেস থেকে তিনি স্নাতক সম্পন্ন করে বাবার ব্যবসায় যোগ দেন। ব্যবসায়ী হিসেবে নাম কুড়ানো ছাড়াও তিনি মিস ইউনিভার্সের স্পন্সর ছিলেন দীর্ঘদিন। এই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অর্থ ঢেলে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন। এপ্রেনটিস্ট নামের একটি রিয়ালিটি টিভি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ছিলেন ট্রাম্প। মিডিয়ার চোখ যায় তখন তার ওপর। কিছুটা জনপ্রিয়তাও তৈরি হয়। এ ছাড়া রেসলিং ম্যাচ উপস্থাপনা করেছেন। ব্যবসায় নেমে হোঁচটও খেয়েছেন বেশ কয়েকবার। নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করেও আলোচনায় এসেছেন। কিন্তু আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন তিনি। বর্ণ বিদ্বেষের অভিযোগে মামলা ঠুকেছেন এবং মামলা খেয়েছেন। রাজনীতিতে আনাড়ি ট্রাম্প ব্যবসায়িক হিসেবে অন্য উচ্চতায় রয়েছেন। এখন তার রয়েছে ৫৮ তলা একটি বহুতল ভবন (ট্রাম্প টাওয়ার),  স্পোর্টস ক্লাব, শেয়ারবাজারে পুঁজি। সবমিলিয়ে ৯০০ কোটি ডলার সমপরিমাণ সম্পদের মালিক তিনি। তার বার্ষিক বেতন প্রায় ২৭ কোটি ডলার।

 

সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজক

ধনকুবের ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজক হয়ে আলোচনায় আসেন। ১৯৯৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এ প্রতিযোগিতার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠানের হাতে। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই  বেরিয়ে আসে মিস ইউএসএ। সুন্দরী মডেলদের সঙ্গে তার প্রেম ও অন্তরঙ্গতাও মিডিয়ার আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রচারণায় নামার পর এগুলো নিয়ে সমালোচনা হয়। মিস ইউনিভার্সের সঙ্গে কথা চালাচালির এক পর্যায়ে তাকে টুইটারে গালিও দিয়ে বসেন। সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজক হিসেবে নারীদের নিয়ে প্রায়শই কটূক্তি করেছেন।

 

যেভাবে বাবার ব্যবসায়

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাবা ছিলেন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী। মধ্যবিত্তে সাধ ও সাধ্যের মধ্যে অ্যাপার্টমেন্ট বানাতেন তিনি। বাবা ফ্রেডরিক ছিলেন ধনী। টাকার অভাব ছিল না তাদের। ট্রাম্পের মা ছিলেন স্কটিশ বংশোদ্ভূত নারী। স্কুলে থাকতেই আগ্রাসী আচরণের জন্য সবার চোখে পড়েছেন তিনি। পড়াশোনার মাঝেই বাবার ব্যবসাতে মন দেন তিনি। শুরুর দিকে তার হাতে তেমন টাকা ছিল না। বাধ্য হয়েই বাবার কাছ থেকে ১০ লাখ ডলার ধার করেন। তিনিও রিয়েল এস্টেট ব্যবসাতেই টাকা ঢালেন। তার আরেক ভাই ফ্রেড অবশ্য বাবার ব্যবসাতে মন দেননি। সে পাইলট হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলে ট্রাম্পের হাতে বাবার ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই চলে আসে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে উদ্যমী ছিলেন ট্রাম্প। নিজের ব্যবসার সঙ্গে বাবার ব্যবসা মিলিয়ে রিয়েল এস্টেট ব্যবসাতে আধিপত্য তৈরি করেন। এরই মধ্যে গ্রাজুয়েশন শেষ করেন তিনি। ব্যবসা আরও ছড়িয়ে দিতে ব্যাংক লোন নেন তিনি। ১৯৭১ সালে ট্রাম্প কোম্পানির নাম বদলে ফেলেন। তখন নাম রাখা হয় ‘ট্রাম্প অর্গানাইজেশন’। ১৯৯৯ সালে ট্রাম্পের বাবা মারা যান। ডোনাল্ড সে সময় বলেছিলেন, বাবাই ছিল তার অনুপ্রেরণা। বাবা নেই। ব্যবসায়িক গুরুদায়িত্ব চলে আসে ট্রাম্পের ঘাড়ে। পারিবারিক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ বুঝে  নিয়েই তিনি ব্রুকলিন ও কুইন্স থেকে প্রকল্প সরিয়ে ম্যানহাটনে বড় বড় ভবন নির্মাণে জোর দেন। এই সিদ্ধান্তই তাকে আরও ব্যবসায়িকভাবে বড় হতে সাহায্য করে। এখানে এসে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠতে থাকে। ম্যানহাটনের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা আঁচ করতে পেরে সেখানে বিনিয়োগ বাড়ান ট্রাম্প। চমৎকার নির্মাণশৈলী ও জনগণের আস্থার কারণে সেই কাজগুলোই পরে তাকে বিপুল মুনাফা এনে দেয়।

ব্যবসায়িক এই যাত্রায় তাকেও বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। ১৯৭৩ সালে রাজ্য সরকার ট্রাম্প, তার বাবা ও তাদের কোম্পানির বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষের অভিযোগ আনে। অভিযোগে বলা হয়, ট্রাম্পের কোম্পানি ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে জাতিগত বৈষম্য করছে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ১৯৭৫ সালে ট্রাম্পের কোম্পানির সঙ্গে রাজ্য সরকারের একটি সমঝোতা হয়। ট্রাম্প তার কর্মচারীদের ফেয়ার হাউজিং অ্যাক্টের ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়ার এবং তাদের অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে ফেয়ার হাউজিং প্র্যাকটিস নিয়ে প্রচার চালানোর শর্ত মেনে নেন। ট্রাম্প এর পর একের পর এক বড়  নির্মাণে হাত দেন। নির্মাণ করেন গ্র্যান্ড হায়াত হোটেল। ১৯৭৯ সালে ট্রাম্প ম্যানহাটনের ফিফথ এভিনিউয়ের বিখ্যাত জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান টিফানি অ্যান্ড কোম্পানির অফিস সংলগ্ন এলাকায় জমি ইজারা নিয়ে ২০ কোটি ডলারের ৫৮ তলা ট্রাম্প টাওয়ার নির্মাণ করেন। ১৯৭৭ সালে নিউ জার্সিতে জুয়ার ব্যবসা আইনি বৈধতা  পেলে সেখানে টাকা ঢালেন ট্রাম্প। ১৯৮০ সালে তিনি আটলান্টিক সিটিতে জমি কেনেন। হলিডে ইন করপোরেশনের অংশীদারিত্বে ১৯৮৪ সালে  সেখানে নির্মাণ করেন ২৫ কোটি ডলারের ট্রাম্প প্লাজা। কিছুদিন পর হলিডে ইনের শেয়ার কিনে নেন এবং ওই প্লাজায় নির্মাণ করেন হোটেল ও ক্যাসিনো। অল্প সময়ের মধ্যে ট্রাম্পের হাতে আসে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো হোটেল তাজমহল।

 

ইতিহাস গড়ে মেলানিয়া ফার্স্ট লেডি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গেই আলোচনায় চলে আসেন ফার্স্ট লেডি। ডোনাল্ড ট্রাম্প এ পর্যন্ত তিনটি বিয়ে করেছেন। তার বর্তমান স্ত্রী মেলানিয়াই হলেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি। তবে তিনিও গড়েছেন ইতিহাস। আমেরিকার ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন কুইন্সি অ্যাডামস (১৮২৫-২৯)। তার স্ত্রী লুইজা অ্যাডামস ছিলেন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত। এরপর আর কোনো ফার্স্ট লেডি আমেরিকার বাইরে  থেকে এসে স্বামীর হাত ধরে হোয়াইট হাউসে থাকার সুযোগ পাননি। মেলানিয়া নাউস ট্রাম্প ১৮৭ বছরের সেই খরা ভেঙে আবারও হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন। মেলানিয়া পেশায় মডেল। তিনি বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ মডেল হয়েছেন। অলঙ্কার ও ঘড়ির নকশা করেও খ্যাতি কুড়িয়েছেন তিনি।

 

যেভাবে রাজনীতিতে জড়ালেন

রাজনীতিতে আনাড়ি বলে তাকে কটাক্ষ করেছিলেন তার দলের শীর্ষ নেতারা। রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে চান এমনটি জানার পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা চোখ কপালে তুলেছেন। কেউ কেউ হাসির রোলও তুলেছেন। ট্রাম্প হুট করেই আমেরিকান রাজনীতিতে বড় ফ্যাক্টর হয়ে ওঠেন। তবে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু ১৯৮৭ সালের দিকে। মূল ধারার রাজনীতিতে আসেন আরও পরে। ১৯৯৯ সালে ক্যালিফোর্নিয়া প্রাইমারিতে রিফর্ম পার্টির হয়ে নির্বাচন করেন তিনি। সেবার শোচনীয় পরাজয় সঙ্গী হয় তার। তাই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে ব্যবসাতেই আবার মন দেন। এরপর সেভাবে আর মিডিয়াতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য আলোচিত হননি। ২০০৮ সালে বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ‘বার্থার’ আন্দোলন জমে ওঠে। সে সময় জনপ্রিয় মুখপাত্র হিসেবে ট্রাম্পের নাম আবার উচ্চারিত হয়। ওই আন্দোলনে ওবামার জন্মস্থান নিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রশ্ন তুলে সবার কাছে আলোচিত হয়ে ওঠেন। সেই অভিযোগ এতটাই জমে ওঠে যে বারাক ওবামা শেষ পর্যন্ত নিজের জন্মসনদ দেখিয়ে পরিস্থিতি সামলান। এছাড়া খুব একটা আলোচনায় আসেননি তিনি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প লড়াই করতে যাচ্ছেন সেটি সবার সামনে আসে ২০১৫ সালের জুনে। ট্রাম্প রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থিতা চেয়ে বসেন। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার মনোনয়ন দৌড়ে শামিল হয়ে তিনি বেশ চমক সৃষ্টি করেন।  সে সময় মিডিয়ার কাভারেজ পান ট্রাম্প। কীভাবে তিনি এত বড় একটি পদে নিজের নাম তুললেন? এটা জানতে চোখ ফেরাতে হবে পেছনের দিকে। ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দেওয়া ট্রাম্প কিন্তু দলের সবচেয়ে বড় দাতা ও তহবিল সংগ্রাহক হিসেবে নিজের আলাদা গুরুত্ব তৈরি করেন। দলের ভিতরে তো বটেই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তিনি প্রভাব বিস্তার করেন। সেখানে তার ২ কোটি ৫০ লাখের বেশি অনুসারী জানান দেয় তার জনপ্রিয়তা বাড়ছেই। ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের প্রাইমারির পরপরই ট্রাম্পের প্রার্থিতা নিশ্চিত হয়ে যায়। ওই সময়ের মধ্যে রিপাবলিকান দলের নেতা টেড ক্রুজ আর মার্কো রুবিওর মতো প্রার্থীরাও তাদের নাম প্রত্যাহার করে নেন। আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পকেই প্রার্থী ঘোষণা করে রিপাবলিকান পার্টি। তিনি মনোনয়ন দৌড়ে দলীয় প্রার্থীদের টপকে নিজের নাম যখন চূড়ান্ত করলেন তখন হতবাক হয়ে যান খোদ বিশ্লেষকরাই। ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’— স্লোগানে তিনি নির্বাচনী প্রচারে নামেন। প্রতিটি নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি তার স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখেন। কটাক্ষ ও আগ্রাসী মন্তব্যে সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হন ট্রাম্প। অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার স্বপ্ন দেখিয়ে তিনি ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করেন। উল্টোদিকে হুমকি দেন নির্বাচনে জয়লাভ করলে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তুলবেন, মুসলিম অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বন্ধ করবেন। এছাড়া নারীদের নিয়েই অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে নির্বাচনী মাঠ গরম করে ফেলেন তিনি। তার কথায় বিরক্ত হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সাধারণ মানুষ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখায়। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিকে নারী যৌন কেলেঙ্কারিতে তার নাম জড়িয়ে পড়ে। নির্বাচনের  দেড় মাস আগে ফাঁস হয় একটি অডিও টেপ। ওই টেপে শোনা যায় ট্রাম্প নারীদের বিষয়ে আপত্তিকর কথা বলেছিলেন। এসব বিতর্কের কারণে ট্রাম্পের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেন অনেক প্রভাবশালী রিপাবলিকান সিনেটর। এরপর নির্বাচনী প্রচারণায় আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন তিনি। জনমত জরিপগুলো বরাবরই হিলারির জয়ের কথা বলছিল। তিন ধাপের বিতর্কেও পিছিয়ে ছিলেন ট্রাম্প। শেষ পর্যন্ত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনের পর জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি। তিনিই নির্বাচিত হলেন আমেরিকার ৪৫তম প্রেসিডেন্ট।

 

 

স্ত্রী মেলানিয়া ও সন্তানের সঙ্গে ট্রাম্প

 

বিজয় প্রার্থনায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা

 

ট্রাম্পের বিজয়ের পর নিউইয়র্কের রাস্তায় সমর্থকের উল্লাস

 

দেউলিয়া ট্রাম্প

১৯৯১ সালের দিকে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়েন ট্রাম্প। আটলান্টিক সিটিতে ১০০ কোটি ডলারের ট্রাম্প তাজমহল ক্যাসিনো চালু করার এক বছর পর ট্রাম্পকে ব্যাংক দেউলিয়া ঘোষণা করে। ঋণের বোঝা কাটিয়ে উঠতে ওই সময় ট্রাম্প ক্যাসিনোতে তার অর্ধেক অংশীদারিত্ব ছেড়ে দেন। শুধু তাই নয়। অর্থনৈতিক বিপর্যয় সমলাতে বিক্রি করে দেন তার ব্যক্তিগত প্রমোদতরি ও উড়োজাহাজ। দেউলিয়াত্বের এটাই শেষ ঘটনা হয়। আটলান্টিক সিটির সম্পদের জন্য ২০০৯ সালের আগে নিউইয়র্কের এই বিলিয়নিয়ারকে আরও তিনবার ব্যাংকের দেউলিয়াত্ব ঘোষণা শুনতে হয়েছে।

 

ট্রাম্প বাণী

‘‘ আমার আইকিউ সাধারণের চেয়ে অনেক  বেশি। দুঃখিত, এ নিয়ে আপনাদের দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই। কারণ, এতে আপনাদের কোনো হাত নেই।

 

ট্রাম্পের তিন বিয়ে কাণ্ড

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম স্ত্রী ছিলেন ইভানা ট্রাম্প। এককালে ইভানা যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় মডেল ছিলেন। প্রেমের সূত্র ধরেই ধনকুবের ট্রাম্পকে বিয়ে করে সবাইকে বেশ অবাক করে দেন ইভানা। এর আগে  আলফ্রেড উইঙ্কলমায়ার নামের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছিলেন ইভানা। ১৯৭৭ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে বিয়ের পর ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ভালোই কেটেছিল ইভানার সংসার। ১৫ বছরের সংসার জীবনে ট্রাম্প ও ইভানার ঘরে আসে তিন সন্তান। তারা হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র, এরিক ট্রাম্প এবং কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প। ১৯৯২ সালে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর ডোনাল্ড ট্রাম্প বিয়ে করেন মারলা ম্যাপলসকে। ইভানা যেমন সুন্দরী ছিল, মারলাও তাই। মার্কিন মিডিয়া কাঁপানো এই সুন্দরীও ট্রাম্পের খ্যাতি ও প্রেমে হাবুডুবু খান। হলিউড সুন্দরীকে বেশ জাঁকজমক আয়োজনে বিয়ে করেন ট্রাম্প। ১৯৯০ সালের দিকে ট্রাম্পের প্রেমে পড়েন ম্যাপলস। ঘরে প্রথম স্ত্রী রেখে চুটিয়ে প্রেম করেন ট্রাম্প। তবে ইভানার সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে প্রেমের পরিণতি দেন তিনি। ট্রাম্পের তৃতীয় ও বর্তমান স্ত্রী মেলানিয়া নাউস স্লোভেনিয়ান বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। ট্রাম্পের তৃতীয় স্ত্রী মেলানিয়াও পেশায় মডেল। অলঙ্কার ও ঘড়ির নকশা করেও খ্যাতি কুড়িয়েছেন তিনি। ২০০৫ সালে ট্রাম্পকে বিয়ে করে সংসার করছেন তিনি।

সর্বশেষ খবর