রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য

মুক্তিযুদ্ধ জাতির সবচেয়ে বড় গৌরবময় অধ্যায়ের নাম। আর এ গৌরবের কথা মনে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য ভাস্কর্য। এই ভাস্কর্যগুলোতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বর্বরতার নানা ঘটনাপ্রবাহ ফুটে উঠেছে সাবলীলভাবে। এগুলো একাত্তরের রক্তিম দিনগুলোর কথা জানান দেয়। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্য নিয়ে আজকের আয়োজন। লিখেছেন— রণক ইকরাম

মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য

জাতীয় স্মৃতিসৌধ

সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ স্বাধীনতা যুদ্ধের একটি ঐতিহাসিক ভাস্কর্য। যেখানে বীর বাঙালি আসেন শ্রদ্ধা জানাতে। এর স্থপতি হলেন সৈয়দ মাইনুল হোসেন। স্মৃতিসৌধটির উচ্চতা ১৫০ ফুট। সৌধটি সাত জোড়া ত্রিভুজাকৃতির দেয়াল নিয়ে গঠিত। দেয়ালগুলো ছোট থেকে বড় ক্রমে সাজানো হয়েছে। এই সাত জোড়া দেয়াল স্বাধীনতা আন্দোলনের সাতটি ভিন্ন পর্যায়কে নির্দেশ করে। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৬ শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ১৯৬২ শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ— এ সাতটি ঘটনা নিয়ে এটি নির্মিত। ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে নবীনগরে স্মৃতিসৌধের শিলান্যাস করেন। ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্মৃতিসৌধটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।  বাংলাদেশ সফরকারী বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানরা নিজ হাতে এখানে স্মারক বৃক্ষরোপণ করে থাকেন।

 

অপরাজেয় বাংলা

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম সেরা একটি ভাস্কর্য অপরাজেয় বাংলা। ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের এই ভাস্কর্যটি ঐতিহ্যে সেরা। এখানে ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের ছাত্রসমাজসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের দৃশ্য। ভাস্কর্যটিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি প্রতীকী রূপ বলা চলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে গর্বের সঙ্গে মাথা উঁচু বন্দুক কাঁধে দাঁড়িয়ে থাকা তিন নারী-পুরুষের ভাস্কর্যটি সবার স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে তারই অনুপম স্মৃতিকাতর ভাস্কর্য ‘অপরাজেয় বাংলা’। ১৯৭২-৭৩ সালে ডাকসুর উদ্যোগে অপরাজেয় বাংলার কাজে হাত দেওয়া হয়। ১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটি তৈরির কাজ শুরু হয় এবং এর শেষ হয় ১৯৭৯ সালে। ৬ ফুট বেদির ওপর নির্মিত। ভাস্কর্যটির উচ্চতা ১২ ফুট, প্রস্থ ৮ ফুট ও ব্যাস ৬ ফুট। ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় এ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করা হয়। বেদিতে দাঁড়ানো তিন মুক্তিযোদ্ধার প্রতিচ্ছবি স্পষ্টতই জানান দেয় সব অন্যায় ও বৈষম্য দূর করে সাম্য প্রতিষ্ঠার কথা।  ভাস্কর্যটি সব শ্রেণির যোদ্ধার প্রতিচ্ছবি। এটি শুধু মূর্তি নয়, সামগ্রিক সংগ্রাম ও ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব প্রতিচ্ছবি।

 

বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ

মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সর্বশেষ মাসটি ছিল ডিসেম্বর। তখন সারা বাংলায় বিজয়ের সুবাস ছড়াচ্ছিল।

আর সে সময়েই ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা ঘৃণ্যতম হত্যাযজ্ঞ চালায়। পূর্ব পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ দেশীয় দোসর-রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনীর সদস্যদের হাতে অপহূত হন অনেক বুদ্ধিজীবী। পরে তাদের নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। জাতি হিসেবে বাঙালিকে পঙ্গু করে দেওয়ার লক্ষ্যেই জাতির সূর্যসন্তানদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।  বাংলাদেশের [তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের] বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছে রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধটি।

 

শাবাশ বাংলাদেশ

আরেকটি বিখ্যাত ভাস্কর্য শাবাশ বাংলাদেশ। এই ভাস্কর্যটি দাঁড়িয়ে আছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যেসব অকুতোভয় শিক্ষক-ছাত্র বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেন তাদের স্মৃতিকে চিরঅম্লান করে রাখার জন্য উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পনার দীর্ঘদিন পর ১৯৯১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের উদ্যোগে শিল্পী নিতুন কুণ্ডুর উপস্থাপনায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজ শেষে ফলক উন্মোচন করেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। প্রায় ৪০ বর্গফুট জায়গার ওপর ভাস্কর্য দাঁড়িয়ে আছে। দুজন মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি এটি। একজন রাইফেল উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে আর তার বাঁ বাহুটি মুষ্টিবদ্ধ করে জাগানো। অন্যজন রাইফেল হাতে দৌড়ের ভঙ্গিতে রয়েছে। তার পরনে প্যান্ট, মাথায় এলোমেলো চুলের প্রাচুর্য যা কিনা আধুনিক সভ্যতার প্রতীক। এর পেছনে ৩৬ ফুট উঁচু দেয়াল দাঁড়িয়ে আছে। দেয়ালের উপরের শূন্য বৃত্ত দেখতে সূর্যের মতোই। ভাস্কর্যটির নিচের দিকে ডান ও বাম উভয়পাশে ৬ ফুট বাই ৫ ফুট উঁচু দুটি ভিন্ন চিত্র খোদাই করা হয়েছে।  মুক্তিযুদ্ধকালীন স্বাধীনতার নানা দৃশ্য নকশায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই শাবাশ বাংলাদেশের দেয়াল।

 

জাগ্রত চৌরঙ্গী

ঢাকার বাইরের এই ভাস্কর্যটি মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের স্মরণে নির্মিত হয়েছিল। এটি গাজীপুর জেলার চান্দনা চৌরাস্তায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের পর সর্বপ্রথম নির্মিত ভাস্কর্য হিসেবে আলাদা একটি কদর রয়েছে জাগ্রত চৌরঙ্গীর। মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের অসামান্য আত্মত্যাগের স্মরণে নির্মিত এই ভাস্কর্যটির ভাস্কর আবদুর রাজ্জাক। এটি ১৯৭৩ সালে নির্মাণ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণায় নির্মিত এটিই প্রথম ভাস্কর্য বলে স্বীকৃত। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চের আন্দোলন ছিল মুক্তিযুদ্ধের সূচনা পর্বে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ। সেই প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয় এখানেই। শহীদ হুরমত উল্লা ও অন্য শহীদদের অবদান এবং আত্মত্যাগকে জাতির চেতনায় সমুন্নত রাখতে জয়দেবপুর চৌরাস্তার সড়কদ্বীপে স্থাপন করা হয় দৃষ্টিনন্দন এই ভাস্কর্যটি।  এক হাতে রাইফেল এবং অন্য হাতে গ্রেনেড ছোড়ার দৃপ্ত ভঙ্গিতে নির্মিত এই ভাস্কর্যটি বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের সশস্ত্র প্রতিরোধের স্মৃতিচিহ্ন হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।

 

 

 

অদম্য বাংলা

এই ভাস্কর্যটির অবস্থান খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভাস্কর্যটি উচ্চতায় প্রায় ২৩ ফুট। এটির স্থপতি শিল্পী গোপাল চন্দ্র পাল। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চমৎকার একটি ভাস্কর্য ‘অদম্য বাংলা’। বলিষ্ঠ ও তেজোদীপ্ত চার মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি আছে এ ভাস্কর্যটিতে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সর্বস্তরের বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের মূর্ত প্রতীক এটি। একটি উঁচু বেদির ওপরে স্থাপিত হয়েছে মূল ভাস্কর্যটি। বেদির চারদিকের পোড়া মাটির প্রাচীরচিত্রে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতি, বধ্যভূমির বর্বরতা ও পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের চিত্র। পুরো মুক্তিযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা রয়েছে ভাস্কর্যটিতে। এর বেদিতে অংকিত মুক্তিযুদ্ধের খণ্ডচিত্রগুলো এক নজরে যে কাউকে পুরো মুক্তিযুদ্ধের সম্যক ধারণা দেয়।  এ ছাড়া ভাস্কর্যটিতে জাতীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিবিম্ব মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বের সুস্পষ্ট চিত্র রয়েছে।

 

 

 

বিজয় ’৭১

বিজয় ’৭১ ভাস্কর্যটি অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। মহান মুক্তি সংগ্রামে বাংলার সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মূর্তপ্রতীক বিজয় ’৭১। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বিজয় ’৭১। পরম আকাঙ্ক্ষিত বিজয়ের এ ভাস্কর্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ অজস্র মানুষের প্রেরণার উৎস। ভাস্কর্যে একজন নারী, একজন কৃষক ও একজন ছাত্র মুক্তিযোদ্ধার নজরকাড়া ভঙ্গিমা বারবার মুক্তিযুদ্ধের সেই দিনগুলোতে নিয়ে যায় দর্শনার্থীদের। কৃষক মুক্তিযোদ্ধা বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরেছে আকাশের দিকে। তার ডান পাশেই শাশ্বত বাংলার সর্বস্বত্যাগী ও সংগ্রামী নারী দৃঢ়চিত্তে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছেন। যার সঙ্গে আছে রাইফেল। অন্যদিকে একজন ছাত্র মুক্তিযুদ্ধে গ্রেনেড ছোড়ার ভঙ্গিমায় বাম হাতে রাইফেল নিয়ে তেজোদীপ্ত চিত্তে দাঁড়িয়ে আছে।  বিখ্যাত ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০০০ সালে।

 

স্বাধীনতার সংগ্রাম

স্বাধীনতার সংগ্রাম মূলত অনেকগুলো ভাস্কর্যের সমষ্টি। এটি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত। এ নামের এই ভাস্কর্যে তুলে ধরা হয়েছে এ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিভিন্ন প্রবাহ। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং ’৭১-এর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক এ ভাস্কর্যের বিষয়বস্তু। প্রতিটি আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন এমন ১৮ জনের ভাস্কর্য দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। এ ভাস্কর্যের সবার নিচে রয়েছে ভাষাশহীদের ভাস্কর্য এবং সবার উপরে আছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। তারও ওপরে রয়েছে লাল-সবুজের বাংলাদেশের পতাকা। ইট, পাথর, রড ও সিমেন্ট ব্যবহার করে এ বিরাটাকৃতির ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। শ্বেতবর্ণের ভাস্কর্যের উচ্চতা ৬০ ফুট। পরিসীমা ৮৫.৭৫ ফুট। একটি গোলাকার ফোয়ারার মাঝখানে এটি উপস্থাপিত। ফোয়ারাটির চারদিকে রয়েছে পাতাবাহার গাছের দৃষ্টিনন্দন গোলাকার সবুজ বেষ্টনী। মূল ভাস্কর্য স্বাধীনতা সংগ্রামকে ঘিরে রয়েছে দেশ-বিদেশের শতাধিক কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক, বিপ্লবী, রাজনীতিক, বিজ্ঞানীর আবক্ষ ভাস্কর্য।  এসব ভাস্কর্যের কোনোটি একক, কোনোটি যুক্ত। ত্রিকোণাকৃতির এ সড়কদ্বীপের তিন কোণে আছে আরও ৩টি ভাস্কর্য।

 

সংশপ্তক

যুদ্ধে নিশ্চিত পরাজয় জেনেও লড়ে যান যে অকুতোভয় বীর সে-ই সংশপ্তক। সংশপ্তক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে আরেকটি বিখ্যাত ভাস্কর্য। সাভারে অবস্থিত এই ভাস্কর্যটিও স্বাধীনতার মহান স্মৃতি আর গৌরবের মহিমায় মহিমান্বিত। ১৯৯০ সালের ২৬ মার্চ নির্মিত হয়েছিল স্মারক ভাস্কর্য সংশপ্তক। এ ভাস্কর্যটির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যুদ্ধে শত্রুর আঘাতে এক হাত, এক পা হারিয়েও রাইফেল হাতে লড়ে যাওয়া দেশমাতৃকার বীর সন্তান। ১৯৯০ সালে নির্মিত  ভাস্কর্যটির ভাস্কর ছিলেন হামিদুজ্জামান খান। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক পায়ে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে ভাস্কর্যটি।  দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করতে সদা জাগ্রত মুক্তিযোদ্ধা ও গ্রামবাংলার আপামর জনতার স্বাধীনচেতা, অকুতোভয় মানসিকতা সাহসী প্রতিবিম্ব এই ভাস্কর্যটি। 

 

 

 

 

চেতনা ’৭১

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত স্বাধীনতার ভাস্কর্য চেতনা ’৭১। ভাস্কর্যটির নকশা করেছেন স্থপতি নৃপল খান। আর নির্মাণ কাজে নিয়োজিত আছে তারই সংগঠন ‘নৃ’ এর স্কুল অব স্কাল্পচার। ভাস্কর্যটিতে বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীদের আদলে ব্যবহার করা হয়েছে। মডেলে ছাত্রের হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উঁচুতে তুলে ধরার ভঙ্গিমা এবং ছাত্রীর হাতে বই, যা বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতীক নির্দেশ করে। খরচের চেয়ে ভাস্কর্যের সৌন্দর্যের দিকে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। একাডেমিক ভবনগুলোর সঙ্গে মিল রেখে বেদির নিচের প্লট ৩টি বানানো হবে সিরামিক ইট দিয়ে। এর মধ্যে নিচের প্লেটটির ব্যাস হবে ১৫ ফুট, মাঝের প্লেটের ব্যাস সাড়ে ১৩ ফুট এবং উপরের প্লেট হবে ১২ ফুট। প্রত্যেকটি আবার ১০ ইঞ্চি করে উঁচু।  প্লেট ৩টির উপরে মূল বেদিটি হবে ৪ ফুট উঁচু, তার উপরে ৮ ফুট উঁচু ফিগার।

সর্বশেষ খবর