শিরোনাম
বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

তারা ধনকুবেরের স্ত্রী

তারা  ধনকুবেরের স্ত্রী

মানুষ বলে টাকা ভালোবাসা ক্রয় করতে পারে না। কিন্তু বিশ্বে এমন ব্যক্তিত্ব এবং ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা টাকার পাহাড় তো গড়েছেন সঙ্গে জীবনসঙ্গী করেছেন সুন্দরী রমণীদের। আর সেসব সুন্দরী রমণীও থেমে থাকেননি। ধনী স্বামীর সংস্পর্শে এসে নিজেদের যোগ্যতা বাড়িয়ে নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন বিলিয়নিয়ার হিসেবে। জানাচ্ছেন— তানিয়া জামান ও সাইফ ইমন

 

প্রিসিলা চ্যান

২০১৬ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ফোবর্সের হিসেবে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ৩২ বছর বয়সী মার্ক জুকারবার্গের মোট সম্পত্তি ৫ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। তিনি হার্ভার্ডে ছাত্র থাকাকালীন প্রিসিলা চ্যানের সঙ্গে পরিচিত হন। চ্যান সবসময় জুকারবার্গের কাজে উত্সাহ দিতেন এবং তার সাফল্য অর্জনে বিশ্বাসী ছিলেন। পরবর্তীতে মার্কের সঙ্গে চ্যান ফেসবুক ম্যানেজমেন্ট বিভাগে কাজ শুরু করেন। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল স্কুল থেকে ২০১২ সালের মে মাসে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন্ন করেন চ্যান। একই বছর মার্ক জুকারবার্গ এবং প্রিসিলা বিয়ে করেন। প্রিসিলা চ্যানের বর্তমান নিট সম্পত্তির পরিমাণ ১৪ বিলিয়ন ডলার। এই সম্পত্তি মূলত তার স্বামী ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গের কাছ থেকে পাওয়া। কিন্তু মেডিকেলের ছাত্রী চ্যানের নিজের ক্যারিয়ারের প্রতি ছিল বেশ আগ্রহ। এ কারণে ফেসবুকে অর্গান ডোনার রেজিস্টারের জন্য জুকারবার্গকে অনুপ্রাণিত করেন। গত বছর তাদের মেয়ে ম্যাক্সের জন্মের সময় মোট সম্পদের ৯৯ শতাংশ দাতব্য কাজে খরচের ঘোষণা দিয়েছে এ দম্পতি। জুকারবার্গ ও চ্যান মিলে কাজ করছেন ‘দ্য চ্যান জুকারবার্গ ইনিশিয়েটিভ’ নামের একটি দাতব্য উদ্যোগে। এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে চলতি শতকের মাধ্যমেই এ বিশ্ব থেকে রোগবালাই নির্মূলে ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হচ্ছে। 

 

লরেন্স পাওয়েল জবস

লরেন্স পাউয়েল জবস অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিংশ শতাব্দীর টেকনোলজির সেরা পথপ্রদর্শক স্টিভ জবসের স্ত্রী। নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে স্টিভ জবসকে কোম্পানির প্রসারে ও উন্নয়নে উত্সাহ দিতেন। তিনি শিক্ষা, অভিবাসন এবং পরিবেশ রক্ষায় গঠিত এমারসন কালেকটিভের প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়াও আর্থিক অসচ্ছল কলেজ পড়ুয়াদের সাহায্য করে থাকেন। তার ব্যক্তিগত সম্পত্তির পরিমান ২০.১ বিলিয়ন ডলার। মানুষের মাঝে সংযুক্তি, সহজসাধ্য ও সার্বজনীন যোগাযোগ নিশ্চিত করতে সারা জীবন নিরবচ্ছিন্নভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন স্টিভ জবস। তার অসীম উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও সৃষ্টিশীলতা স্ত্রী লরেন্সকেও করেছে দক্ষ। যোগ্যতায় প্রায় স্টিভ জবসের কাছাকাছি উঠে অসতে তার কষ্ট হয়নি।

২০১২ সালে জবসের মৃত্যুর পর স্ত্রী লরেন্স বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় কোম্পানি অ্যাপলের হাল ধরেন। নিজেদের বাণিজ্যিক পরিকল্পনা ও দক্ষতায় বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায়ও প্রথমদিকেই রয়েছেন লরেন্স পাওয়েল জবস। বিশ্বের বহু দেশে অ্যাপলের প্রোডাকশন লাইন, ডিস্ট্রিবিউশন আউটলেট এবং কয়েক লাখ কর্মী রয়েছে।

 

 

লুসি সাউথওয়ার্থ

সার্চ জায়ান্ট গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের স্ত্রী লুসিন্ডা সাউথওর্থ। লোকে তাকে লুসি সাউথওর্থ নামেই বেশি চেনে। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ভিজিটেড ওয়েবসাইট গুগলের কর্ণধার তিনিও। নভেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত ফোবর্সের হিসাব অনুযায়ী, এই দম্পত্তির মোট সম্পত্তি ৩০ বিলিয়নের বেশি ডলারের বেশি। ল্যারি পেজের এই সাফল্যের পেছনে নাকি সুন্দরী ও বুদ্ধিমতি স্ত্রী লুসি সাউথওর্থ-এর ভূমিকা অনেক বেশি। লুসি সব সময় স্বামীকে ভালো কাজের জন্য উত্সাহিত করতেন। লুসি জন্মগ্রহণ করেছেন ২৪ মে ১৯৭৯ সালে। ২০০৬ সালে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক মাস পরেই বিয়ে করেন। লুসি খুব মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া থেকে। বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরবর্তীতে বায়োমেডিকেল ইনফরমেটিক্স বিষয়ে পিএইচডি করেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তারা নানা ধরনের সামাজিক কাজের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত রেখেছেন। এর একটি অংশ হিসেবে সাউথ আফ্রিকার দেশগুলোতে চিকিত্সা বিজ্ঞানে উন্নয়ন ঘটানো অন্যতম।

 

 

তালুলাহ রিলে

প্রযুক্তি বিশ্বে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত নাম ইলোন মাস্ক। তিনি স্পেস এক্স-এর সিইও, টেসলার সিইও এবং ওপেন এআই-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা। স্পেস রকেট, বৈদ্যুতিক গাড়ি, সৌর ব্যাটারি, কিলার রোবট গবেষণা সব মিলিয়ে তাকে বাস্তব জীবনের টনি স্টার্ক বলা হয়। এই টনি স্টার্কের সঙ্গে ২০০৮ সালের দিকে ইংলিশ অভিনেত্রী তালুলাহ রিলের ডেটিং শুরু হয়। ২০১০-এ এসে তারা বিয়ে করেন। দুই বছর যেতে না যেতেই কোনো কারণ না দর্শিয়ে ২০১২ সালে ডিভোর্স নেন। তারপর আবার ২০১৩ সালের জুলাইয়ে তারা বিয়ে করেন। ২০১৫ সালে আবারও ডিভোর্স দিতে ব্যর্থ হয়ে মাস্ক দম্পতি সংসার করেন। এত টানাপড়েনে থেকেও ইলোন মাস্ক তার নতুন পরিকল্পনা বন্ধ করেননি। সৌর বিদ্যুত্, বৈদ্যুতিক গাড়ি এবং মঙ্গলে উপনিবেশ স্থাপন এবং হাইপারলুপ (যে ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থায় লস এঞ্জেলস থেকে সান ফ্রান্সিসকো যেতে ৩০ মিনিট সময় লাগবে) পরিকল্পনা নিয়ে আছেন। এদিকে তালুলাহ রিলে ২০০৫ সাল থেকে বহু সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বর্তমানে তার আনুমানিক সম্পত্তির পরিমাণ ১১.৯ বিলিয়ন ডলার।

 

 

 

ফেবিয়ানা ফ্লসি

ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত ৩৫ বছরের অসাধারণ সুন্দরী নারী ফেবিয়ানা ফ্লসি। তিনি ৮১ বছর বয়সী বিলিয়নিয়ার বার্নি একস্লেস্টোনের স্ত্রী। ফেবিয়ানা ফ্লসি বার্নির অর্ধেক বয়সের কিন্তু উচ্চতায় প্রায় দ্বিগুণ। তাদের এই বৈশিষ্ট্য অনেকেরই নজর কাড়ে। বার্নি-ফ্লসি দম্পতি ২০১২ সালে সুইজারল্যান্ডে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বার্নি একস্লেস্টোন ফর্মুলা ওয়ান গ্রুপ অব অটো রেসিং ইভেন্টের সিইও। এই দম্পতির বর্তমান নিট সম্পত্তির পরিমাণ ৪ বিলিয়ন ডলার। এর আগে বার্নি ও তার প্রথম স্ত্রী স্লাভিকা একস্লেস্টোনের যৌথ সম্পদের পরিমাণ আরও অনেক ছিল। কিন্তু ২০০৯ সালে প্রথম স্ত্রী তাকে ছেড়ে যান।  ডিভোর্সের কারণে বার্নির সম্পদ বিপুল পরিমাণে কমে যায়। কিন্তু তারপর বার্নি বসে থাকেননি। দ্রুতই নিজের অবস্থানে পরিবর্তন আনেন। ফলশ্রুতিতে ফেবিয়ানা ফ্লসির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। স্বামীর ভেঙে পড়া অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণে সব সময় উত্সাহ দিয়ে পাশে আছেন ফেবিয়ানা। নানা রকম কাজের কৌশলগত যুক্তি বুদ্ধি প্রদানেও ফ্লসির ভূমিকা অনন্য। বার্নি-ফ্লসির তামারা ও পেত্রা নামে দুটি মেয়ে আছে, যদিও তা ফ্লসির গর্ভজাত নয়।

 

 

আন্নে ওজসিকি

আন্নে ওজসিকির স্বামী ব্রেইনের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পরপরই বিখ্যাত বেজবল প্লেয়ার রদ্রিগেজের সঙ্গে প্রণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। হাই প্রোফাইল পরিবার থেকে আসা ওজসিকির বাবা স্টেনফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তার এক বোন ইউটিউবের সিইও আরেক বোন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানী। তিন বোনের মধ্যে ওজসিকি সবার ছোট। ইয়ালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োলজিতে অনার্স শেষ করেন। ওজসিকি ২০০৬ সালে বায়োলজিস্ট লিন্ডা অবয়ের সঙ্গে মিলে প্রতিষ্ঠা করেন ‘টুয়েন্টি থ্রি অ্যান্ড মি’। এই নামের বিশেষত্ব হচ্ছে টুয়েন্টি ত্রি নির্দেশ করে মানুসের দেহের ২৩ জোড়া ক্রেমোজম যা মানব দেহের প্রতিটি কোসে বিদ্যমান। এই প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে জিনোমিকস, বায়োটেকনোলজি ও একই সঙ্গে জেনেটিকস সায়েন্স নিয়ে। ২০০৮ সালে জেনেটিকস সায়েন্স এ সাফল্যের জন্য আন্নে ওজসিকি প্রখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের শিরোনাম হন। আবার তিনি ২০১৩ সালে ‘মোস্ট ডেয়ারিং সিইও’র খেতাব পান। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩৫০ মিলিওন ডলার। আন্নে ওজসিকি বর্তমানে বিশ্বের ষষ্ঠ ক্ষমতাবান নারী।

 

 

মেলেনিয়া ট্রাম্প

আমেরিকার ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ধনকুবের ডোনাল্ট ট্রাম্পের বর্তমান স্ত্রী মেলেনিয়া ট্রাম্প। স্লোভেনিয়ান বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক মেলানিয়া ট্রাম্প পেশায় ছিলেন মডেল। অলঙ্কার ও ঘড়ির ব্যবসা করে খ্যাতিও কুড়িয়েছেন ব্যাপক। এখন তার সবচেয়ে বড় পরিচয় আমেরিকার ফার্স্ট লেডি। অভিষেক ঘটবে আসন্ন ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি। ১৯৭০ সালে জন্ম নেওয়া মেলানিয়া ১৬ বছর বয়স থেকে মডেলিংয়ে আসেন। তারপর পাড়ি জমান ইতালিতে। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং বেশকিছু আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ মডেলও হয়েছেন মেলানিয়া। যা দেখেই মূলত মেলানিয়ায় বিগলিত হন ট্রাম্প। এখানে থেকেই প্রেমলীলা শুরু। যার পরিসমাপ্তি ঘটে ২০০৫ সালে ট্রাম্পকে বিয়ে করার মাধ্যমে। সেই থেকেই ট্রাম্পপত্নী হয়ে এখনো সংসার করে যাচ্ছেন সুন্দরী মেলানিয়া। ব্যারন উইলিয়াম ট্রাম্প নামে তাদের ১০ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। আর শেষ আমেরিকা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের পক্ষে বিভিন্ন প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন মেলানিয়া। মেলানিয়া ট্রাম্পের সম্পত্তি মোট ১১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

 

 

জেরি হল

অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়া মুঘল নামে পরিচিত রুপার্ট মারডকের স্ত্রী আমেরিকান মডেল ও অভিনেত্রী জেরি হল। রুপার্ট মারডক বিশ্বের প্রভাবশালী সংবাদ সংস্থা নিউজ করপোরেশনের চেয়ারম্যান। তার অধীনে টাইমসসহ একাধিক পত্র-পত্রিকা রয়েছে। রুপার্ট মারডকের আনুমানিক সম্পত্তির পরিমাণ ১২.৪ বিলিয়ন ডলার। ৫৯ বছর বয়সের জেরি হলের প্রথম হলেও ৮৪ বছর বয়সী মারডকের চতুর্থ বিয়ে। অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত রুপার্ট মারডক সর্বশেষ ২০১৩ সালে তৃতীয় স্ত্রী ওয়েন্ডি ডেং এর সঙ্গে ১৪ বছরের সংসার জীবনের ইতি টানেন। জেরি হলের নিজস্ব সম্পদের পরিমাণ ১৫ মিলিয়ন ডলার। তিনি নিজের ক্যারিয়ার দাঁড় করান মডেলিংয়ের ওপর। এ কারণে কিম দাওসান মডেলিং এজেন্সিতে তার নামও অন্তর্ভুক্ত আছে। ৬ ফুট লম্বা এই মডেল ১৯৯৭ সালে ইতালিয়ান ভোগ ম্যাগাজিনের কাভার ফটোতে স্থান পান। তার দৈহিক গড়ন, উচ্চতা এবং অঙ্গভঙ্গির কারণে সমসাময়িক অন্যান্য মডেলের চেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পেতেন। মডেলিং অ্যাসাইনমেন্ট থেকে জেরি হল দিনে ১ হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করেছেন।

 

 

 

মেলিন্ডা গেটস

বিল গেটস এবং তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের ক্ষমতাধর দম্পতি হিসেবে পরিচিত। কাজে আন্তরিকতা ও পরিশ্রমী ব্যক্তিত্ব তাদের অপরের অনুকরণীয় করেছে। বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ফোর্বস-এর ২০১৩ ও ২০১৪ সালের ১০০ প্রভাবশালী নারীর মধ্যে তৃতীয় স্থানে আছেন মেলিন্ডা গেটস। তিনি মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা ধনকুবের বিল গেটসের স্ত্রী। ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে জন্মগ্রহণ করেন এই নারী। তার পুরো নাম মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস। ১৯৯৪ সালে বিল গেটসের সঙ্গে বিয়ের আগে থেকেই মাইক্রোসফটে নিজের পেশাজীবন শুরু করেন মেলিন্ডা। এমএস পাবলিশার, এমএস বব, এনকার্টা ও এক্সপিডিয়া প্রকল্পে কাজ করেছেন। তিনি মাইক্রোসফট থেকে ইনফরমেশন প্রোডাক্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করার পর অবসর নেন। মানবতার সেবায় ১৯৯৮ সালে মেলিন্ডা গড়ে তোলেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনে তিনি কো-চেয়ার হিসেবে কাজ করছেন। এ পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে ধনী গেইটসপত্নী মেলিল্ডা প্রায় ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দান করেছেন।

 

 

 

নিকিতা খান

ওরাকল করপোরেশনের সিইও আমেরিকান ধনকুবের লরি এলিসন পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তি। ২০১১ সালে লরির সঙ্গে প্রণয় শুরু হয় সুন্দরী ইউক্রেনিয়ান অভিনেত্রী নিকিতা খানের সঙ্গে। লরির সঙ্গে প্রণয়ের পরেই নিকিতাকে বেশ কিছু হলিউড মুভিতে কাজ করতে দেখা যায়। এর মধ্যে ক্যাচ ফোর্টিফোর মুভিটিতে অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। এই মুভিটিতে নিকিতার সঙ্গে আরও কাজ করেন ব্রুচ উইলস এবং নিকি রিডের মতো অভিনেতারা। ভালোবাসার মানুষের জন্য অনেকেই অনেক কিছু করে পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। পিছিয়ে নন লরি এলিসনও। প্রেমিকা নিকিতা খানের নামে মালাইবুতে তিনি  নিকিতা রেস্টুরেন্ট চালু করেন। প্রেমিকের কাছ থেকে ভালোবাসার এমন বহিঃপ্রকাশে নিকিতাও দারুণ খুশি। তবে নিকিতা খানের সঙ্গে লরির সম্পর্কটা মিডিয়া ভালোভাবে নেয়নি। তার ওপর নিকিতা খানের অতীত রেকর্ডও ভালো নয়। উল্লেখ করার মতো তেমন সম্পত্তি নেই নিকিতার। অনেকেই প্রকাশ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দাবি করেছে শুধু অর্থলোভেই লরির সঙ্গে টিকে আছেন নিকিতা।

 

 

মারিয়া চেরি

বিশ্বে এমন কি কেউ আছে যার অ্যালবামের খ্যাতির সুনাম ২০০ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে! হ্যাঁ, এমনি এক সেলিব্রেটি গায়িকা মারিয়া চেরি। অসাধারণ কণ্ঠের অধিকারী এই আমেরিকান একাধারে একজন সফল গায়িকা, গীতিকার, রেকর্ড প্রযোজক এবং অভিনেত্রী। তার অ্যাপোনিমাস অ্যালবামটি কলম্বিয়ার রেকর্ডসের সর্বোচ্চ বিক্রীত অ্যালবামের তালিকায় যেসব শিল্পীর নাম তার মধ্যে মারিয়া সবার সেরা। তার বিখ্যাত গান ‘ভিশন অব লাভ’ এখনো সবার মনে জায়গা করে আছে। বাল্যকালে দরিদ্রতা নিয়ে বড় হয়েও বর্তমানে মারিয়া গোটা বিশ্বে ধনকুবেরের স্ত্রী বলেই পরিচিত। তার স্বামী অস্ট্রেলিয়ান বিলিয়নিয়র জেমস প্যাকার। টাকার দৌড়াত্ম্যে স্বামীর চেয়ে মারিয়াও কম যান না। ধনাঢ্য স্বামীর পাশাপাশি মারিয়ারও মোট সম্পদের মূল্য প্রায় ৫১০ মার্কিন মিলিয়ন ডলার। তার আয়ের উত্স তার সুরেলা কণ্ঠস্বর। ২০০২ সালে মারিয়া ভার্জিন রেকর্ডের সঙ্গে ৮০ মিলিয়ন ডলারে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। মারিয়া ধনকুবেরদের একজনই নন, তার এসব সম্পদ থেকে তিনি নিউইয়র্কের শিশু সংগঠনেও দান করেন। তার এই অ্যাক্টিভিটি তাকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়।

 

 

সালমা হায়েক

ক্যারিংয়ের সিইও ধনকুবের হেনরি পিনাল্টের সঙ্গে সালমা হায়েক বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হন ২০০৯ সালে। ডেসপারোডো মুভির লাস্যময়ীর কথাই বলছি। সে সময় যারা মুভিটি দেখেছেন কিন্তু সালমা হায়েকের প্রেমে পড়েননি এমন পুরুষ বোধকরি একটাও মিলবে না। সেই তরুণী এখন বয়স পঞ্চাশ পেড়িয়েছেন দোরগোড়ায়। তবু এখনো দর্শক ধরে রাখেন অবলিলায়।

মেক্সিকোর শহর ভেরাক্রুজের কোয়াটজাকোলকোজ নামক স্থানে জন্ম হয় তার ১৯৬৬ সালে। সেই শহর থেকে অভিনয় জীবনে পদার্পণ আর আজকের সালমা হায়েক হয়ে ওঠাও যেন একটি সিনেমার গল্প। সালমা হায়েকের ডাক নাম ছিল জিমেনজ। তবে ছোট বেলায় তার লেবানিজ দাদা নাম রেখেছিলেন সালমা, যার অর্থ শান্তি। মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক সালমা হায়েক মূলত স্প্যানিশ বংশোদ্ভূত। ১৯৯১ সালে মেক্সিকো থেকে লেখাপড়ার উদ্দেশে পাড়ি জমান ক্যালিফোনিয়ার লস অ্যাঞ্জেলসে। খ্যাতির পাশাপাশি সালমা হায়েক অর্থকড়িও করেছের অনেক। তার বর্তমান প্রায় ৮৫ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সম্পত্তি রয়েছে।

 

 

সুসান ডেল

ডেল কম্পিউটারের প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল ডেল ১৯৮৯ সালে বিয়ে করেন সুসান ডেলকে। অক্সিন এবং টেক্সাস দুই জায়গাতেই বাড়ি রয়েছে এই দম্পতির। তাদের ছেলেমেয়ের সংখ্যা চার। দুজনের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্কটা অনেক দৃঢ় শুরু থেকেই। যা এখনো অক্ষুণ্ন রয়েছে। দুজন মিলেই প্রতিষ্ঠা করেন মাইকেল অ্যান্ড সুসান ডেল ফাউন্ডেশন। এটি মূলত সুসান ডেলই পরিচালনা করে থাকেন। এই ফাউন্ডেশন বিশ্বজুড়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কাজ করে। এসব শিশুর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় এই ফাউন্ডেশন থেকে মাইকেল এবং সুসান দম্পতি এখন পর্যন্ত সাড়ে ছয়শো মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ ডোনেট করেছেন। আসছে ২০১৭ সালে টিচিং হসপিটাল চালু করতে যাচ্ছেন এই দম্পতি। তারা ফাউন্ডেশনের কাজের পাশাপাশি ট্রাস্টি হিসেবে কাজ করেন টেক্সাসের চিলড্রেন মেডিকেল ফাউন্ডেশনের সঙ্গে। এ ছাড়াও সুসান ‘কুপার ইনস্টিটিউট’-এর বোর্ড মেম্বার। মাইকেল অ্যান্ড সুসান ফাউন্ডেশনটিকে সুসান নিজের সন্তানের মতোই ভালোবাসেন। সুসানের মোট সম্পত্তি রয়েছে ২২ বিলিয়ন ডলার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর