শিরোনাম
বুধবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
MIT Technology Review

২০১৬ সালে প্রযুক্তির বিস্ময়

তানভীর আহমেদ

২০১৬ সালে প্রযুক্তির বিস্ময়

গবেষক ইমানুয়েল কার্পেন্টায়র ও প্রফেসর জেনিফার দোদনা; নির্ভুল জিন সম্পাদনার কৌশল আবিষ্কারে রেখেছেন যুগান্তকারী অবদান

প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে সহজতর করে তোলে।  ২০১৬ সালে বেশ কিছু প্রাযুক্তিক উন্নয়নের দেখা মিলেছে। শত শত সাফল্যের ভিড়ে, বিশেষ করে নির্ভুল জিন সম্পাদনার কৌশল আবিষ্কারের ঘটনা ছিল যুগান্তকারী। আলোচনায় ছিল বাতাসে বিদ্যুৎ সঞ্চালন যন্ত্র। ‘টেকনোলজি রিভিউ ডটকম’ ২০১৬ সালের সেরা প্রাযুক্তিক অর্জনগুলো দিয়ে সাজিয়েছে ‘এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ’। সেই তালিকা ধরেই আজকের রকমারি—

 

সম্ভব নির্ভুল জিন সম্পাদনা

আধুনিক বিশ্বে মানবসভ্যতার সবচেয়ে বড় অর্জন এসেছে ২০১৬ সালে। নির্ভুল ডিএনএ সম্পাদনা, সংযোজন, পরিবর্তনের  কৌশল খুঁজে পেয়েছেন এক দল বিজ্ঞানী। পরিপূর্ণভাবে এই কৌশল বাস্তবায়ন সম্ভব হলে এইডস, ক্যান্সার, ম্যালেরিয়া থেকে যেমন চিরতরে মুক্তি পাবে তেমনি আগামী দিনের খাদ্য সংকট ও বুভুক্ষা থেকে বাঁচবে পৃথিবীবাসী। অঙ্গ প্রতিস্থাপন হবে সহজতর। জিন সম্পাদনা এক ধরনের প্রাযুক্তিক কৌশল। এর মাধ্যমে মানুষের ডিএনএ-তে প্রয়োজনীয় কাটছাঁট করা সম্ভব হয়। চাইলে ডিএনএ কেটে সেখানে বসিয়ে দেওয়া যাবে সিনথেটিক নিউক্লিওটাইড। প্রায় চল্লিশ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সাধনার পর মানুষ এই প্রযুক্তিতে বড় ধরনের সাফল্যের দেখা পেল।

 

ক্যান্সারের টিকা আবিষ্কার

ক্যান্সারের ভয়াবহতা অজানা নেই বিশ্ববাসীর। ক্যান্সারের কারণে প্রিয় মানুষের মৃত্যুর মিছিল মানুষকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করে তোলে— ক্যান্সারের টিকা আবিষ্কারে। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি নয়তো শেষদিকেই মানুষের হাতে পৌঁছবে ক্যান্সারের টিকা। এই আশার বাণী গেল বছর শুনিয়েছেন এক দল বিজ্ঞানী। প্রাথমিক পরীক্ষায় অভাবনীয় সাফল্য ধরা দিয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের হাতে। ২০১৬ সালেই বিশ্ববাসী জানতে পারে ক্যান্সারের টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। এই টিকা শরীরের যে কোনো অংশে ছড়িয়ে থাকা ক্যান্সারের জীবাণু ধ্বংস করবে বলে দাবি করেন গবেষকরা। লন্ডনের বেকেনহ্যাম এলাকার বাসিন্দা ৩৫ বছর বয়সী নারী কেলি পটারের শরীরে প্রথম ওই টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল। জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই নারী। তার শরীরে যখন ক্যান্সারের টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল সে সময় তার ক্যান্সার চতুর্থ পর্যায়ে ছিল। তার লিভার এবং ফুসফুসের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছিল ক্যান্সারের জীবাণু। টিকা দেওয়ার পর তার শরীরে ক্যান্সারের ব্যাপ্তি স্থিতিশীল হয়ে ওঠে। লিভার ও ফুসফুসের মধ্যে জীবাণু ছড়িয়ে পড়াও বন্ধ হয়।

মানুষের শরীরের ডিএনএ-তে প্রয়োজনীয় সংযোজন, প্রতিস্থাপন সম্ভব বলে জানান দেওয়ার পরই মানুষ ক্যান্সারকে পরাজিত করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। সিআরআইএসপিআর-এর বিজ্ঞানী দল সে উপায় খুঁজে পাওয়ার পরপরই ল্যাবরেটরিতে দেখা যায় ক্যান্সার মোকাবিলার সাফল্য। এই টিকা শরীরে প্রবেশ করলে তা ভালো শরীরের কোষগুলোকে অক্ষুণ্ন রেখে ক্যান্সারের ক্ষতিকর কোষগুলোকে খুঁজে বের করে ধ্বংস করতে সক্ষম। ক্যান্সারের টিকার মানোন্নয়নে আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাছাড়া টিকার কার্যকারিতার শতভাগ সফলতার নিশ্চয়তা এখনই বলা যাচ্ছে না বলে আইনি জটিলতার দিকটিও দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

 

মুখের কথা বুঝবে স্মার্টফোন

টাচফোনের কথা মনে আছে? ভুলে যাওয়ারই কথা। কারণ মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে স্কিনটাচ স্মার্টফোন এখন হাতে হাতে চলে এসেছে। অবশ্য তাতেও পুষাচ্ছে না যেন। এখন আঙ্গুলেরও স্পর্শে স্মার্টফোন চাপতে বা কম্পিউটারের মাউসে ক্লিক করতে যাদের ক্লান্ত লাগে তাদের জন্য ‘ভয়েস কমান্ড’ বা ‘স্পিচ কমান্ড’ চলে এসেছে। মুখে বললেই চলবে শুধু। কথা শুনবে স্মার্টফোন, কথা শুনবে কম্পিউটার। আর এই প্রাযুক্তিক সফলতার দেখা করিয়ে দিয়েছে চীন। ২০১৬ সালে চীন সফলভাবে এই ‘স্পিচ কমান্ড’ প্রাযুক্তিক কৌশলের জাদু দেখিয়েছে। চীনের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন ‘বাইদু’-তে এই স্পিচ কমান্ড চালু হওয়ার পর প্রযুক্তি জগতে নতুন করে আলোচনায় আসে এই কৌশলটি। আর যুগটা যে স্মার্টফোনের সেটা অজানা নেই কারও। তাই স্মার্টফোনে ‘ভয়েস কমান্ড’ যোগ হতে শুরু করেছে।

 

আবার জ্বালানি ভরা যাবে রকেটে

প্রতিনিয়ত মহাকাশ বিজ্ঞানীদের প্রয়োজন হচ্ছে আরও দূরের পথে ছুটতে। কিন্তু তথ্য, ছবি সংগ্রহের জন্য যে রকেট এতদিন পাঠানো হতো সেগুলোতে পুনরায় জ্বালানি ভরা সম্ভব হতো না। তাই নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছার পর সেটি ধ্বংস ও পরিত্যক্ত করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। ২০১৬ সালে পুনরায় জ্বালানি ভরা সম্ভব এমন রকেট উদ্ভাবন করতে সক্ষম হন মহাকাশ প্রকৌশলীরা। এই উদ্ভাবনের ফলে এখন মহাকাশে আরও দূরের পথে ছুটতে পারবে পৃথিবীর রকেট। এই রকেটগুলো নির্দিষ্ট গন্তব্যে নামার পর আবারও জ্বালানি ভরার উপযোগী থাকবে। ‘ব্লু অরিজিন’ নামের রকেট পুনরায় জ্বালানি ভরতে সক্ষম বলে ঘোষণা দেওয়ার পর আলোচনায় আসে স্পেসএক্স। তারাও একই বিষয়ে কাজ করছিল। এই রকেটগুলো তৈরি ও জ্বালানি খরচের মূল্য এখনো আকাশছোঁয়া বলে আরও উন্নয়ন জরুরি—বলছেন বিজ্ঞানীরা।

 

রোবট শেখাবে রোবটকে

রিথিংক রোবট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান তৈরি করে বেক্সটার রোবট। বেক্সটার রোবটের বিশেষত্ব হলো, এটি তথ্য নিজেই বিশ্লেষণ করে চুপচাপ বসে থাকে না। অবসরে এটি অন্য রোবটের কাছ থেকে যে তথ্য সংগ্রহ করে সেটিও স্মৃতিভাণ্ডারে জমা করে। এভাবেই এক রোবট অন্য রোবটকে শিখিয়ে পরিয়ে নিতে পারবে। এই অভাবনীয় কৌশল আবিষ্কার করে চমকে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষ কোনো কাজে দক্ষ হতে সময়ের প্রয়োজন হয়। ছোটখাটো বিষয়গুলো শিখতে মানুষের গোটা শৈশবকাল কেটে যায়। রোবটের ক্ষেত্রে সে সুযোগ নেই। তাই এমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করা হয়েছে বেক্সটার রোবটগুলোর ক্ষেত্রে যেগুলো অন্য রোবটের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। তথ্য সমৃদ্ধকরণ ছাড়াও অন্য রোবটের কাছে সেগুলো প্রেরণ করতে পারবে। এভাবে এক রোবট অন্য রোবটকে উন্নততর করে তুলতে পারবে।

 

ডিএনএ অ্যাপ স্টোর

স্যান-ফ্রান্সিসকোভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হেলিক্স মানুষের ডিএনএর তথ্য সংগ্রহ করে একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরির পথে হাঁটছে। প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ তাদের ডিএনএর তথ্য এখানে রাখতে চাইছেন। সামান্য কিছু খরচ মিটিয়েই গ্রাহক জানতে পারবে তার স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা। বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বুঝতে হলে জানা দরকার, মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা ও বৈশিষ্ট্য সবকিছুই ধারণ করে শরীরের ডিএনএ। জিনে থাকা তথ্যগুলো সংগ্রহ করে রাখা সম্ভব হলে সহজেই জানা যাবে সে ব্যক্তিটি কোনো রোগব্যাধিতে আক্রান্ত কিনা। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে রোগের পূর্বাভাস দেওয়াও সম্ভব হবে। হেলিক্স চাইছে, মানুষের ডিএনএর একটি ডিজিটাল ভাণ্ডার তৈরি করে রাখতে। তারপর মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সেই তথ্যগুলো নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে। এবার শত শত ডায়াগনস্টিক টেস্টের ঝক্কি ও খরচ ছাড়াই শরীরের খবর আপনার হাতে।

 

এ যেন দানব সোলার ফ্যাক্টরি

যুক্তরাষ্ট্রের বাফেলো নদী। এর তীর ঘেঁষেই সোলার নির্মিত হচ্ছে সোলার সিটি। আগামী বছরই পুরোদমে কাজ শুরু করবে সোলার প্যানেল নির্মাণকারী এই কারখানা। প্রতিদিন ১০ হাজারটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার প্যানেল তৈরি হবে এখানে। বছরে প্রায় এক গিগাওয়াট বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন হবে তাদের তৈরি সোলার প্যানেলগুলো থেকে। যা এককথায় অভাবনীয়। উত্তর আমেরিকা তো বটেই, বিশ্বের অন্যতম বড় সোলার প্যানেল প্রস্তুতকারী এই কারখানা ২০১৬ সালে প্রযুক্তি খাতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খবর। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবিলা ও আগামী দিনের শক্তির চাহিদা পূরণে সোলার প্যানেলনির্ভর শক্তি উৎপাদনে যুগান্তকারী এক পদক্ষেপ এটি। ইতিমধ্যে ঘরে ঘরে সোলার প্যানেল স্থাপনে ‘সোলার সিটি’ হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। সোলার সিটিকে বলা হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের দানব সোলার ফ্যাক্টরি।

 

মুহূর্তেই বলা যাবে সব কথা

২০১৬ সালের এক পরিসংখ্যান চমকে দেয় গবেষকদের। ৩৭ শতাংশ মানুষ এখন টেক্সট মেসেজ পাঠাতে ও দিনে ১২২টির মতো টুইট করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কর্মক্ষেত্রে পৌঁছে কথাবার্তার চালাচালিতে মেসেজিং আরও বেশি জনপ্রিয়। এ বিশেষ দিকটি বিশ্লেষণ করেই ‘স্ল্যাক’ মোবাইল অ্যাপ বাজারে আসে। একটি নির্দিষ্ট কর্মপ্রতিষ্ঠানে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা চালাচালিতে স্ল্যাক হয়ে ওঠে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ই-মেইল থাকা সত্ত্বেও মেসেজ পাঠানোতে স্ল্যাকের জনপ্রিয়তা বেড়েছেই। কারণ আর কিছুই নয়, এর সফটওয়্যারটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে একটি কর্মপ্রতিষ্ঠানে স্বাচ্ছন্দ্যে কথা চালাচালি দ্রুত ও সহজতর হয়। একটি চ্যাটরুমে প্রবেশ করেই কর্মপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় মেসেজ পাঠানো যাচ্ছে। বারবার ই-মেইল পাঠানোর ঝক্কি, এ-কক্ষ থেকে ও-কক্ষে দৌড়ঝাঁপও কমিয়ে এনেছে এটি।

 

গাড়ি ঠেকাবে ‘গাড়ি দুর্ঘটনা’

গাড়ি দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে চেষ্টার কমতি নেই গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর। ২০১৪ সাল থেকে গাড়ি দুর্ঘটনায় যাত্রীর প্রাণ বাঁচাতে পারে এমন সফটওয়্যার তৈরিতে বড় ধরনের উদ্ভাবনের দিকে হাঁটতে শুরু করে তারা। চালকবিহীন গাড়ি প্রস্তুতির কথাও ফলাও করে প্রচার পায়। এরই মধ্যে শীর্ষস্থানীয় গাড়ি নির্মাতা মার্সিডিজ বেঞ্জ, টেসলা, গুগল ও উবারের মতো একাধিক প্রতিষ্ঠান এ ধরনের প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। গুগলের অটো-পাইলট গাড়ির সুবাদে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনা কমবে বলে দাবি করে এর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। বছরের শেষ ভাগে আলোচনায় আসে ভিটুভি টেকনোলজি। সড়কপথে প্রতিটি গাড়ি যাতে অন্যটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে এই টেকনোলজির মাধ্যমে।

ভিটুভি সেন্সরের মাধ্যমে পেছন থেকে আসা কোনো গাড়ি সামনেরটিকে ধাক্কা না দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে পারবে।

 

বাতাসে বিদ্যুৎ সঞ্চালন

হাওয়া কল বা বাতাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন মোটেই নতুন কিছু নয়। বিগত বছরগুলোয় বাতাসে বিদ্যুতের চলাচল বা ‘এয়ার ট্রান্সফার ইলেকট্রিসিটি’ নিয়ে জোরেশোরেই কাজ শুরু হয়। ২০১৬ সালে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের একদল বিজ্ঞানী এই ধারণাকেই দিলেন চমকপ্রদ রূপ। তারা এমন যন্ত্র তৈরি করে দেখালেন যেটির মাধ্যমে এই প্রযুক্তিতে  রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে শক্তি আহরণ করা হবে। যা পাওয়া যাবে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ও টেলিভিশনের মতো উৎস থেকে। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ক্যামেরার মতো যন্ত্রে যে পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় তরঙ্গাকারে প্রেরিত বিদ্যুৎ যথেষ্ট নয় বলেই এতদিন জানত বিশ্ব। অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত যন্ত্র মানুষের হাতে এসে পৌঁছল। এখন ইন্টারনেট ওয়াই-ফাইয়ের মতো বিদ্যুতের ব্যবহার সম্ভব হবে। চাইলেই ওয়াইফাইয়ের আদলে করে চার্জ করে নিতে পারবেন স্মার্টফোন, ক্যামেরা।

 

চমকপ্রদ

নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রযুক্তি

২০১৬ সালে নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রযুক্তিবিদরা সচেষ্ট ছিলেন। যদিও দু-একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ছিল। বিশেষ করে নারীর মেনেস্ট্রুয়াল তথ্য সংরক্ষণকারী মোবাইল অ্যাপ হ্যাকিংয়ের ঘটনা বিশ্বব্যাপী নিন্দিত হয়। তবে অর্জনও কম ছিল না। ২০১৬ সালেই কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ‘নিডল-ফ্রি ব্রেস্ট কনস্ট্রাকশন’ সুবিধার কথা জানান দেয়। এতে করে অল্প পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাধ্যমে টিস্যু ব্রেস্ট রি-কনস্ট্রাকশন সম্ভব। এ ছাড়া স্যান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক ডট ল্যাবরেটরিজ এন্ডোমেরিওসিসের ডায়াগনস্টিক সহজ ও নির্ভরযোগ্য উপায় পাওয়া যায়। ইউটেরাসের বাইরে টিস্যুর অযাচিত ও বেদনাদায়ক বৃদ্ধির চিকিৎসায় এটি বেশ কার্যকর হয়ে উঠবে বলেই মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। গত বছর উবার ফর বার্থ কন্ট্রোলের যুগান্তকারী সেবা চালু হয়। এর মাধ্যমে গর্ভবতী নারী মোবাইলের মাধ্যমেই ঘরে বসে তার সন্তান প্রসবের যাবতীয় ব্যবস্থা করতে পারবে। সহজ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে মিলবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, অ্যাম্বুলেন্স ও সন্তান প্রসবের পর পুরো তিন মাস ঘরে ওষুধ ও সেবা সরবরাহ। এ ছাড়া টরেন্টোর ইভ মেডিকেল তৈরি করেছে ‘প্যাপস্মিয়ার’। এর মাধ্যমে ঘরে বসেই একজন নারী তার যৌনরোগের পরীক্ষা করিয়ে নিত পারবেন। প্যাপস্মিয়ারটি পরীক্ষাগারে কুরিয়ার করে দিলে তারাই রোগের নির্ভুল তথ্য পৌঁছে দেবেন নারীর ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রেখেই। ২০১৬ সালেই দেখা মেলে নারী গর্ভধারণের সম্ভাবনা নির্ণয়কারী যন্ত্রের। এটির মাধ্যমে একজন নারী তার হরমোনাল তথ্যগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন। তিনি গর্ভধারণে সক্ষম কি-না বা গর্ভধারণ করেছেন কি-না— এই যন্ত্র ব্যবহার করে এমন প্রশ্নেরও সহজ উত্তর মিলবে ঘরে বসেই।

সর্বশেষ খবর