বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভয়ঙ্কর নারী জলদস্যু

ভয়ঙ্কর নারী জলদস্যু

সমুদ্রযাত্রায় নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি নাবিকদের আতঙ্কের কারণ ছিল সমুদ্রের জলদস্যুরা। ভয়ঙ্কর আর নিষ্ঠুরতায় পিছিয়ে ছিল না নারী জলদস্যুরাও। ভয়ঙ্কর নারী জলদস্যুরা নেতৃত্ব দিয়েছে, তৈরি করেছে আক্রমণ কৌশল, সামনের সারিতে থেকে যুদ্ধ করেছে। নিজ হাতে চালিয়েছে অস্ত্র। লুটপাট, হত্যা ও নৃশংসতায় তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল গভীর সমুদ্রে। যুগে যুগে তাদের হিংস্রতার কথা ভেবে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন গভীর সমুদ্র পথ ধরে চলা নাবিক ও ব্যবসায়ীরা। লিখেছেন— সাইফ ইমন

 

ডাকাতি আর অপহরণের রানী চ্যাঙ ই সাও

চ্যাঙ ই সাও ভয়ঙ্কর নারী জলদস্যুদের একজন। চীনের এক পতিতালয়ে দিন কাটত তার। ১৮০১ সালে জলদস্যু সর্দার চ্যাঙ তাকে বিয়ে করে। সেই সর্দারের সঙ্গেই সমুদ্রে যায় চ্যাঙ ই সাও। এই দস্যু দম্পতির তৈরি করা দস্যুদল পরিণত হয় পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী দলে। তাদের দখলে প্রায় একশর বেশি জাহাজ, শত শত নৌকা এবং প্রায় ৫০ হাজার জলদস্যু ছিল। ১৮০৭ সালে স্বামী চ্যাঙের মৃত্যুর পর তার স্থলাভিষিক্ত হয় চ্যাঙ ই সাও। সেই সঙ্গে দলের ওপর একক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় তার। নারী নেতৃত্বে দস্যু দলটি শক্তিশালী হয়ে আরও ভয়ঙ্কর রূপে আবর্তিত হয়। চীনের নৌবাহিনী অনেকবার চেষ্টা করেও এই বাহিনীর সঙ্গে পেরে ওঠেনি। উল্টো বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীও এ জলদস্যু দলটির কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছে অনেকবার। তাদের ডাকাতির হাত থেকে বাদ যেত না কিছুই। মাছ ধরার নৌকা থেকে শুরু করে পণ্যবাহী জাহাজ—সব কিছুই লুট করে নিয়ে যেত চ্যাং ই সাওয়ের বাহিনী। তারা বিদেশি জাহাজে ডাকাতি এবং অপহরণ করেও মুক্তিপণ আদায় করত। ফলে সমুদ্রে চ্যাং ই সাও রীতিমতো আতঙ্কে পরিণত হয় সবার কাছে। ১৮৪৪ সালে ভয়ঙ্কর এই নারী দস্যু মৃত্যুবরণ করে।

 

ছলনাময়ী র‌্যাচেল ওয়াল

ধারণা করা হয়, র‌্যাচেল ওয়ালই প্রথম আমেরিকান নারী জলদস্যু। কিশোরী বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল। সে সময় জর্জ নামে এক জেলেকে বিয়ে করছিল র‌্যাচেল। এই দম্পতি ১৭৮১ সালে একটি ছোট নৌকা কিনে। দরিদ্র কয়েকজন নাবিককে নিয়ে তারা একটি দল গঠন করে। এ সময় তারা নিউ ইংল্যান্ডের উপকূলীয় এলাকায় বিভিন্ন জাহাজে ডাকাতি শুরু করে। তাদের পদ্ধতি ছিল চমকপ্রদ কিন্তু নির্মম। উপকূল দিয়ে ঝড় বয়ে গেলে তারা নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়ত। তারাও দুর্যোগে আহত এমন অভিনয়ে পৌঁছত অন্য জাহাজের কাছে। সুন্দরী র‌্যাচেল তাদের নৌকার পাটাতনে গিয়ে দাঁড়াত এবং পাশ দিয়ে যাওয়া জাহাজগুলোর কাছে সাহায্য কামনা করত। দুর্যোগে আক্রান্ত ভেবে তাকে সাহায্যের জন্য কাছে আসতে দিত অন্য জাহাজের নাবিকরা। জাহাজ কাছাকাছি ভিড়তেই রূপ বদলে যেত দস্যু র‌্যাচেলদের। কোনো জাহাজ তাদের সাহায্যে এগিয়ে এলে র‌্যাচেল ও তার বাহিনী অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ত। তারা ওই জাহাজে লুটপাট চালাত। যাত্রীদের অত্যন্ত নির্মমভাবে খুন করত। তবে ১৭৮২ সালে ভাগ্যও র‌্যাচেলের সঙ্গে এক নির্মম খেলা খেলে। ঝড় একদিন সত্যি সত্যি তাদের নৌকা ধ্বংস করে দেয়। ১৭৮৯ সালে এক বোস্টন মহিলাকে আক্রমণ করার সময় র‌্যাচেলকে গ্রেফতার করা হয়। তখন র‌্যাচেল বিচারের মুখোমুখি হয়েছিল।

 

প্রতিশোধের নেশায় সাইয়্যেদা হুরার

ভূমধ্যসাগরের সবচেয়ে ক্ষমতাবান জলদস্যু ছিলেন রানী সাইয়্যেদা আল হুরার। তার জন্ম ১৪৮৫ সালে। তৎকালীন গ্রানাডা সাম্রাজ্যের প্রসিদ্ধ মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এ তেজস্বিনী নারী। ১৪৯২ সালে খ্রিস্টানদের স্পেন অধিগ্রহণ করার ফলে তার পরিবারকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়। পরবর্তীতে তার পরিবার চলে আসে মরক্কোর চাওয়েনে। ১৫১৫ সালে তার প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর তৎকালীন মরক্কোর রাজা আহমেদ আল ওয়াতাছির সঙ্গে পরে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। ফলে বিশাল সম্পদের মালিক বনে যান সাইয়্যেদা আল হুরার। কিন্তু নিজ মাতৃভূমি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া সব সময়ই পীড়া দিত তাকে যা তিনি কখনো মেনে নিতে পারেননি। সেই ক্ষোভ থেকেই জলদস্যুতে পরিণত হন সাইয়্যেদা আল হুরার। খ্রিস্টানদের জাহাজ লুট করে করে নিজের ক্ষোভ মেটাতেন এই দস্যুরানী। এভাবেই একসময় ক্ষমতাবান জলদস্যু রানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। আবার কোনো জাহাজ জলদস্যু দ্বারা লুট হলে তিনি মধ্যস্থতাকারীরূপে আবির্ভূত হতেন। এভাবে প্রচুর সম্পদ গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে তিনি নিজের মেয়ের জামাই দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত হয়।

 

যুদ্ধবাজ জেনি অব ক্লিসন

জেনি লুইস অব বেলিভিল নামে জন্ম নেন ব্রিটেনের এক পরিবারে। সময়টা ১৩০০ সাল। ৩০ বছর বয়সে অলিভার অব ক্লিসন নামে এক ধনী ব্যক্তিকে বিয়ে করেন সুন্দরী জেনি। ফ্রান্স কর্তৃক ভেনাসের পতন হলে ক্লিসনের স্বামীকে আটক করে প্যারিসে নিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় রাজা ফিলিপ ষষ্ঠর আদেশে। স্বামীর এমন পরিণতি মেনে নিতে পারেননি জেনি। প্রতিশোধ স্পৃহায় প্রায় উন্মাদ হয়ে যান এই নারী। জমি বিক্রি ও ধনীদের কাছে নিজের দেহের বিনিময়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে তিনটি যুদ্ধজাহাজ ক্রয় করেন। যাদের চিহ্ন ছিল কালো রঙের মাঝে লাল পাল। মনের ক্রোধ নিয়ে সাগরে নামেন জেনি অব ক্লিসন। এই যুদ্ধজাহাজগুলো প্রচুর ফরাসি যুদ্ধজাহাজকে পরাস্ত করে ও কিছু লোককে জীবিত ফেরত পাঠায় রাজা ফিলিপ ষষ্ঠর কাছে হুমকি স্বরূপ। ১৩৫০ সালে রাজার মৃত্যু ঘটে। এরপরও জেনি অব ক্লিসন থেমে যাননি। তার আক্রমণ চলতেই থাকে। পরে ১৩৫৬ সালে সব কিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে নিজ মাতৃভূমিতে বসবাস শুরু করেন তিনি।

 

শিশু অপহরণে গ্রেস ওমেলি

দুর্দান্ত সুন্দরী গ্রেস ও’মেলির জন্ম আয়ারল্যান্ডে। সময়টা আনুমানিক ১৫৩০ সালের দিকে। লর্ড অব আয়ারল্যান্ডের অষ্টম লর্ড হেনরি গ্রেস ও’মেলির পিতাকে নিজেদের প্রাসাদ থেকে বিতাড়িত করে। দুর্ভাগ্যের শুরু সেখান থেকেই। পরবর্তীতে ও’মেলির স্বামীর মৃত্যুর পর তাদের প্রাসাদও বেদখল হয়ে যায়। পরে অনেক সংগ্রাম করে নিজস্ব বাহিনী দ্বারা প্রাসাদ পুনঃদখল করেন। আইরন রিচার্ড নামে একজনকে দ্বিতীয় বিয়ে করলেও সংসার করতে পারেননি বেশি দিন। এক বছরের মাথায় তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। তিনি রকফ্লিট প্রাসাদ দখলের পর তার পিতার দায়িত্ব হিসেবে সেখানকার উপকূলীয় জেলেদের কাছ থেকে কঠোর হস্তে কর আদায় করতে থাকেন। এ সময় হিংস্রতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে ও’মেলি চরিত্রে। তিনি অতিক্রান্ত জাহাজ থেকে নিরাপত্তার নাম করে প্রচুর ধনসম্পদ আদায় করেন। এ ছাড়াও স্কটিশ ও আইরিশের বড় পরিবারগুলোর বসতে আক্রমণ চালিয়ে ধনসম্পদ লুট করেন। এমনকি তিনি শিশু অপহরণেও কুখ্যাত হয়েছিলেন। তিনি তাদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করেন।

 

অপ্রতিরোধ্য দস্যুরানী টিইউটা

ইতিহাসে আছে মহাপরাক্রমশালী রোমান বীরদের বীরত্বগাথা। সে সময় হাতেগোনা কয়েকজন ছিলেন যারা রোমানদের সঙ্গে পেরে উঠেছিলেন। এই ছোট্ট তালিকায় অন্যতম একজন ইলিরিয়ার দস্যুরানী টিইউটা। খ্রিস্টপূর্ব ২৩১ অব্দ থেকেই আরডিয়েই রাজত্বে টিইউটা বসবাস করতে থাকেন। পার্শ্ববর্তী শত্রুদের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য দেশীয় জলদস্যুদের হাত করেন টিইউটা। পরে জলদস্যুদের সহায়তায় আর দস্যুরানী টিইউটার তীক্ষ বুদ্ধির ফলে ইলিরিয়ানরা ডাইরাচিয়াম ও ফোনিচ শহর দখল করতে সক্ষম হয়। এরপরই টিইউটা রোম ও গ্রিসের ব্যবসায়ীদের গুদামগুলো দখল করেন। দিন দিন রোমানদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠছিলেন টিইউটা। তার হতে বন্দী ছিল দুই রোমান প্রতিনিধি যাদের মধ্যে একজনকে হত্যা করা হয়। এরপর রোম সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করে। ২০০ নৌবহরে প্রায় ২০ হাজার সৈন্য নিয়ে রোমানরা ইলিরিয়ার উদ্দেশে রওনা করে। বিশাল রোমান বাহিনীর সঙ্গে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করে যান টিইউটা।

 

রহস্যময়ী জ্যাকুইটি ডায়লাভ

অনিন্দ্য সুন্দরী জলদস্যু জ্যাকুইটি ডায়লাভ। হাইতিতে জন্ম নিলেও জ্যাকুইটির বাবা ছিলেন ফরাসি। ক্যারিবিয়ান সমুদ্রে এই নারী ছিল রীতিমতো আতঙ্কের নাম। নিজের চারপাশে এক রকম রহস্যের পর্দা তৈরি করে রাখতেন সব সময়। অত্যন্ত একগুঁয়ে আর বদরাগী স্বভাবের ছিলেন এই নারী জলদস্যু। তার অতীত সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায়নি। তবে ছোটবেলা অনেক কষ্টে কাটে জ্যাকুইটির। তার ছোট ভাইয়ের জন্মের সময় তার মা মারা যান। তার বাবাকে হত্যা করা হয়। অসহায় জ্যাকুইটি ছোট ভাইকে নিয়ে পালিয়ে যায় ক্যারিবিয়ান দ্বীপে। সেখানে গিয়ে বনে যান জলদস্যু। ১৬৬০ সালের পর সরকার জ্যাকুইটির ওপর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। চতুর জ্যাকুইটি নিজের মিথ্যা মৃত্যু সংবাদ প্রচার করে আত্মগোপনে চলে যান। এ সময়ে পুরুষের ছদ্মবেশে জীবনযাপন করেন জ্যাকুইটি। ফলে সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরেই ছিলেন এই রহস্যময়ী নারী। তার শেষ পরিণতি জানা যায়নি। তার জীবনে পরবর্তীতে কী ঘটে তা আজও রহস্যবৃতই রয়ে গেছে।

 

দুর্ধর্ষ অ্যান বোনি

সবচেয়ে হিংস্র আর দুর্ধর্ষ নারীদস্যু অ্যান বোনি। অস্ত্র আর বন্দুক চালনায় এই নারী ছিলেন সিদ্ধহস্ত। আইরিশ বংশোদ্ভূত এই নারী জন্ম পরিচয় নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। সতেরোশ’ শতাব্দীর শুরুর দিকে এই নারীর জন্ম। ১৭১৮ সালে অ্যান বোনি আমেরিকায় পাড়ি জমায়। সেখানে এক নাবিকের সঙ্গে প্রেমে জড়ান তিনি। পরে তারা বিয়েও করেন। বিয়ের পর বাহামা দ্বীপপুঞ্জের এক নির্জন দ্বীপে চলে যান তারা। এটি ছিল জলদস্যু অধ্যুষিত একটি এলাকা। সেখানে র‌্যাকম্যান নামের এক জলদস্যুর সংস্পর্শে আসেন এবং স্বামীকে ত্যাগ করেন। এই নারী পরবর্তীতে র‌্যাকম্যানের বাহিনীর সঙ্গে ক্যারিবিয়ান সাগরে দস্যুবৃত্তি শুরু করেন এবং র‌্যাকম্যানকে বিয়ে করেন। ঘটনাক্রমে ম্যারি রিড নামের এক নারী র‌্যাকম্যানের বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়। অ্যান বোনির সঙ্গে সখ্যতা ঘড়ে উঠে ম্যারি রিডের। কিছুদিনের মাঝেই এই দুই নারী জলদস্যুর হিংস্রতা হার মানায় পুরুষ জলদস্যুদেরও। র‌্যাকম্যানের বাহিনী ধরা পড়ার পর র‌্যাকম্যানের ফাঁসি হলেও অন্তঃসত্ত্বা থাকায় অ্যান বোনি বেঁচে যান।

 

পুরুষ ছদ্মবেশে ম্যারি রিড

ম্যারি রিড জলদস্যু হিসেবে জীবন শুরু করেননি। তবে ১৬০০ শতাব্দীর শেষের দিকে ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ম্যারি রিডের ছোটবেলা থেকেই ছিল অভিযানের নেশা। তাই বেছে নেন সৈনিক জীবন। কিন্তু তখন নারীদের সৈনিক হিসেবে কাজ করার প্রচলন না থাকায় ম্যারি রিড পুরুষের ছদ্মবেশ নেন। পরবর্তীতে নাবিক হয়ে ব্যবসা শুরু করেন। একবার তার জাহাজে জলদস্যু র‌্যাকম্যান বাহিনী আক্রমণ করে এবং অচেতন ম্যারি রিডকে ধরে নিয়ে যায়। জ্ঞান ফিরলে নিজেকে দস্যুদের জাহাজে আবিষ্কার করেন ম্যারি রিড। এক সময় তিনি নিজেই হয়ে ওঠেন দুর্ধর্ষ জলদস্যু। র‌্যাকম্যানের স্ত্রী অ্যান বোনির সঙ্গে দারুণ বন্দুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অ্যান বোনির কাছেই প্রথম নিজের নারী পরিচয় ফাঁস করেন। কাকতালীয়ভাবে রকম্যান তার দলবল নিয়ে ধরা পড়লে সবার যখন ফাঁসি হয় তখন অ্যানের মতো রিডও অন্তঃসত্ত্বা ছিল। এ কারণে রিডও বেঁচে গিয়েছিলেন ফাঁসির দড়ি থেকে। পরবর্তীতে জেলে বন্দী থাকা অবস্থায়ই এক অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ম্যারি রিড।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর