শুক্রবার, ২৬ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ

এক কীর্তিমান ভাস্কর

এক কীর্তিমান ভাস্কর

সদ্য প্রয়াত সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ (জন্ম ১৯৪৫, সিলেট—মৃত্যু ২০ মে ২০১৭) ছিলেন বাংলাদেশের একজন স্বনামখ্যাত ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত অপরাজেয় বাংলার ভাস্কর। শিল্পকলা ও ভাস্কর্যে গৌরবজনক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৪ সালে শিল্পকলা পদক এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন।

আবদুল্লাহ খালিদ সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস (বর্তমান চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে চিত্রাঙ্কন বিষয়ে স্নাতক এবং পরে ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিত্রাঙ্কন ও ভাস্কর্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। আবদুল্লাহ খালিদ তার কর্মজীবন শুরু করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কর্য বিভাগে শিক্ষকতা দিয়ে। ১৯৭২ সালে সেখানকার লেকচারার থাকাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর উদ্যোগে কলা ভবনের সামনে নির্মিতব্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মারক অপরাজেয় বাংলার নির্মাণের দায়িত্ব পান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অন্যতম প্রতীকী ভাস্কর্য ‘অপরাজেয় বাংলা’। অপরাজেয় বাংলার ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ। এর নির্মাণ কাজ ১৯৭৩ সালে শুরু হলেও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর মৌলবাদীদের বিরোধিতার কারণে বারবার কাজ বন্ধ থাকায় অপরাজেয় বাংলার নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর। ভাস্কর্যটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মরণে নিবেদিত একটি ভাস্কর্য যা তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে চিত্রায়িত করেছে। ৬ ফুট বেদির ওপর নির্মিত এর উচ্চতা ১২ ফুট, প্রস্থ ৮ ফুট ও ব্যাস ৬ ফুট। ভাস্কর্যটির বিষয় মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের প্রতীকী চিহ্ন।

এই ভাস্কর্য ছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্রের সামনের ম্যুরাল ‘আবহমান বাংলা’ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের টেরাকোটার ভাস্কর্যও তার তৈরি। তার কাজের মধ্যে রয়েছে ‘অঙ্কুর’, ‘অঙ্গীকার’, ‘ডলফিন’ এবং ‘মা ও শিশু’।

মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত খালিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর