বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

অবসরে বেড়িয়ে আসুন

তানভীর আহমেদ

নিঝুম দ্বীপ

সুনসান নীরবতায় আচ্ছন্ন এক দ্বীপ নিঝুম দ্বীপ। শহুরে কোলাহল ছেড়ে প্রকৃতি ও প্রাণীর সান্নিধ্যে নিঝুম দ্বীপ হয়ে উঠতে পারে স্বপ্নিল জায়গা। নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার দক্ষিণে পঞ্চাশ দশকে এই দ্বীপটি জেগে ওঠে। বছরজুড়ে সামুদ্রিক ঈগল, শঙ্খচিল, বকসহ নানা স্থানীয় পাখির দেখা মিলবে। দ্বীপের আশপাশের জঙ্গলেই আছে হরিণ, শেয়াল, বন্যশূকর, নানা রকম সাপ ও বানর। পাখি বা হরিণ দেখতে চাইলে খুব ভোরে উঠতে হবে। হরিণ মূল দ্বীপেই স্থানীয় গাইডদের সঙ্গে গিয়ে দেখে আসতে পারবেন। পাখি দেখতে হলে ট্রলারে পার্শ্ববর্তী দ্বীপগুলোতে যেতে হবে। নিঝুম দ্বীপে বেড়ানোর মূল আকর্ষণ এখানকার বন। ভালোভাবে জঙ্গল দেখতে হলে ‘নামা’বাজারের পাশের খাল ধরে নৌকায় চড়ে যেতে হবে চৌধুরীর খালে। এছাড়া নিঝুম দ্বীপে আছে সমুদ্র সৈকত।

কীভাবে যাবেন

ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চ যায় হাতিয়া। হাতিয়ার তমরুদ্দীন ঘাট পর্যন্ত পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় ১২ ঘণ্টা। হাতিয়া নেমে মাছ ধরার ট্রলারে পৌঁছতে পারেন নামাবাজার। সেখান থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ৫-১০ মিনিটে মেঘনা পার হয়ে পৌঁছবেন নিঝুম দ্বীপে।

 

রোমাঞ্চকর মেরিন ড্রাইভ

একপাশে সাগরের উত্তাল ঢেউ আর অন্যপাশে পাহাড়ঘেঁষা ঝরনার জলধারা। আর তা উপভোগ করা যাবে রোমাঞ্চকর লং ড্রাইভ করে। এই মেরিন ড্রাইভ সড়কটি তৈরির পর থেকেই পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। যেতে যেতে দেখা যাবে পাহাড়, সাগর আর ঝরনার চোখ জুড়ানো দৃশ্য। বিস্তৃত সৈকত, ইনানী পাথুরে সৈকত ও জেলেদের সাগরে মাছ ধরা উপভোগ করা যায় মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে যেতে যেতে। খোলা জিপ, মাইক্রোবাস বা অটোরিকশায় মেরিন ড্রাইভ রোড হয়ে যাওয়া যাবে হিমছড়ি ও ইনানী। সব মিলিয়ে দারুণ উপভোগ্য। তাছাড়া দৃষ্টিনন্দন চিরহরিৎ বন আর ঝাউ গাছের সারি, সুউচ্চ পাহাড় মাতিয়ে তোলে অন্য এক আনন্দে। এছাড়া সি সার্ফিং, স্পিডবোট, ওয়াটার বাইক, প্যারাগ্লাইডিং, মোটরবাইক তো আছেই!

কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে কক্সবাজারে বাস বা বিমানে যেতে পারেন। তাছাড়া ট্রেনে চিটাগাং গিয়ে সেখান থেকে বাসেও কক্সবাজার যাওয়া যায়। ঘোরাফেরা করার জন্য চাইলে অটোরিকশা এবং মাইক্রোবাস ভাড়া করতে পারবেন।

 

সোমেশ্বরীর বিরিশিরি

বিরিশিরি নেত্রকোনা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে। শান্ত-স্বচ্ছ জলে আকাশের প্রতিবিম্ব এখানে মুগ্ধ করবে যে কাউকে। পাবেন বালুকাবেলা। বর্ষায় সোমেশ্বরীর তীরবর্তী বিরিশিরির সৌন্দর্য বেড়ে যায় আরও কয়েক গুণ। দূরের পাহাড় যেন আকাশের সঙ্গে মিলেমিশে ঘুমিয়ে আছে। এখানকার সবুজে ঢাকা পরিবেশ আচ্ছন্ন নীরবতায়। সোমেশ্বরী নদীর বয়ে চলা মনকে দেবে প্রশান্তি। উত্তরের হিমেল হাওয়া এবং সোমেশ্বরীর স্বচ্ছ জলধারা নিমিষেই যেন সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। এছাড়াও দুর্গাপুর থেকে ছয় কিলোমিটার উত্তর সীমান্তে পাহাড়ের চূড়ায় রানীখং গির্জা অবস্থিত। এই পাহাড়ের চূড়া থেকে বিরিশিরির সৌন্দর্য যেন অন্যমাত্রা পায়। এখানে এলে মালাই চা ও বালিশ মিষ্টি খেতে ভুলবেন না। রিকশায় ঘুরে বেড়াতে পারেন গোটা এলাকা।

কীভাবে যাবেন

বিরিশিরি যাওয়ার জন্য মহাখালীর টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি বাস পাবেন। ঢাকা থেকে যেতে সময় লাগে প্রায় চার ঘণ্টা। ময়মনসিংহ থেকে বিরিশিরি পর্যন্ত রাস্তা মাত্র ৩৫-৩৬ কিলোমিটার। সুসং দুর্গাপুর নেমে সেখান থেকে ২-৩ মাইল পথ টেম্পো বা হেঁটে পৌঁছে যাবেন বিরিশিরি।

 

মেঘ ভাসানো সাজেক ভ্যালি

সাজেকের পথে ছুটছে পর্যটকরা। আর ছুটবেই না কেন, এ তো রাঙামাটির ছাদ! চারদিকে উঁচু পাহাড়ের সারি, নীলচে আভা ফুঁড়ে ক্ষণে ক্ষণে ছুটছে মেঘের দল। পাহাড়ের সঙ্গে মেঘের এই লুটোপুটি মন মাতিয়ে দেয়। এতো অপূর্ব সৌন্দর্যের আধার। রাঙামাটির অনেকটা দেখা যায় সাজেক ভ্যালি থেকে। বাঘাইছড়ি উপজেলা  থেকে ৩০ কিলোমিটারের দূরের সাজেকের পুরোটাই পাহাড়ে মোড়ানো পথ। খোলা আকাশের নিচে বিশাল সবুজ বনভূমির সন্ধান পাবেন কেবল এখানেই। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে জুম চাষ হয়। কয়েক রকমের জুম চাষে ভরপুর পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে হেলান দিয়ে এখানে আকাশ ঘুমায়। পাহাড়ের বন্ধনহীন মিলন দেখা যায়। কোথাও কোথাও তুলার মতো দলছুট মেঘের স্তূপ ভেসে বেড়ায় পাহাড়ের চূড়ায়, যেন স্বপ্নরাজ্য।

কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে বিভিন্ন পরিবহনের বাস সরাসরি খাগড়াছড়ি এবং দীঘিনালায় পৌঁছায়। সেখান থেকে চাঁদের গাড়ি রিজার্ভ করে সাজেক ঘুরে আসতে পারেন। পথিমধ্যে আপনার নাম, পরিচয় এবং প্রয়োজনীয় তথ্যযোগ করা হবে। সাজেক যাওয়ার পথে সঙ্গে পর্যাপ্ত খাওয়ার পানি সঙ্গে নেওয়া উচিত।

 

চা পাতার সিঁড়িতে

চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল। পাহাড়গুলো ঢেকে রয়েছে চা পাতায়। এখানে চা বাগানের পাশাপাশি রয়েছে রাবার, লেবু ও আনারসের বাগান। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে শ্রীমঙ্গলের সেরার কাতারেই পড়ে। এখানকার মুক্ত সবুজ স্নিগ্ধ প্রকৃতি এবং নির্মল হাওয়া অবসরকে করে তোলে প্রশান্তিময়। শ্রীমঙ্গলে এলে সাত রঙের চায়ে চুমুক না বসিয়ে যাবেন না। শ্রীমঙ্গলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে ওঠা দেশের একমাত্র চিড়িয়াখানা, শীতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা। এ ছাড়া পর্যটকরা চাইলেই ঘুরে দেখতে পারেন তাদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পল্লী বা বসতি। পর্যটকরা চাইলে শ্রীমঙ্গলের চা কারখানাও ঘুরে দেখতে পারেন। অবশ্যই ঘুরে দেখবেন লাউয়াছড়া উদ্যান। সবুজের এমন সমারোহ চোখ জুড়িয়ে দেবে। বেড়িয়ে আসতে পারেন মাধবপুর লেক।

কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে ট্রেনে যাওয়া সবচেয়ে নিরাপদ ও আরামদায়ক। সিলেটগামী ট্রেনে আপনাকে নামতে হবে শ্রীমঙ্গল স্টেশনে। এ ছাড়াও  ঢাকার সায়েদাবাদ, মহাখালী ও ফকিরাপুল থেকে সারা দিনই বাস সার্ভিস রয়েছে।

 

অপূর্ব বিছানাকান্দি

সিলেটের জাফলং, রাতারগুল আর বিছানাকান্দি ভ্রমণকারীদের কাছে এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জাফলংয়ে পাবেন দূর পাহাড়ে হাতছানি আর স্বচ্ছ শীতল জলে গা ভাসানোর সুযোগ। রাতারগুলে জলে অর্ধেক ডুবে থাকা বনের সঙ্গে রোমান্স জমাতে পারেন। তবে বিছানাকান্দি বুঝি দূর থেকেই ডেকে নিয়ে যাবে আপনাকে। সেখানকার পাহাড় ঘেঁষে দেখা মিলবে রঙিন পাথরের দল। পাহাড়ি ঢল নেমে আসছে, চাইলে গা ভাসিয়ে দিন। স্বচ্ছ ঠাণ্ডা জলের স্রোত আপনাকে আলিঙ্গন করে নেবে। আর রঙিন পাথরের সঙ্গে ভাব করে নিলে তো কথাই নেই। নৌকা করে বিছানাকান্দি আসার পুরো পথটা অসম্ভব সুন্দর ও রোমাঞ্চকর। দেখতে পাবেন কীভাবে পানির নিচ থেকে পাথর তুলে আনছে পাথর শিকারিরা! বিছানাকান্দি মানেই প্রশান্তি।

কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে করে সোজা চলে আসুন সিলেট। সেখান থেকে চাইলে রিজার্ভ সিএনজি নিয়ে চলে যেতে পারবেন হাদারপাড়। এখান থেকে মোটরবোটে করে বিছনাকান্দি। সঙ্গে বাড়তি পোশাক নিয়ে নিন, পাহাড়ি জলে গোসল না করলেই নয়। সময় হাতে থাকলে পান্তমাই থেকেও ঘুরে আসুন।

 

সাফারি পার্কে অ্যাডভেঞ্চার

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। গভীর শাল বনের ভিতর দিয়ে তৈরি ইটের সীমানা প্রাচীর। পিচঢালা পথের দুইদিকেই শাল গজারিতে আচ্ছন্ন পুরো পার্ক। মূলত সাফারি পার্ক বন্য প্রাণীদের এক প্রকার অভয়ারণ্য। সাফারি পার্কে মানুষ থাকে গাড়ির ভিতর বন্দী আর বন্যপ্রাণীরা রয়েছে খোলা বনে। কোর সাফারি পার্ক, সাফারি পার্ক কিংডম, বায়োডাইভারসিটি পার্ক, এক্সটেনসিভ এশিয়ান সাফারি পার্ক ও বঙ্গবন্ধু স্কয়ারসহ মোট পাঁচটি অঞ্চলের সমন্বয়ে, তিন হাজার ৬৯০ একর ভূমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। আপনি পার্কের গাড়িতে চড়ে বেষ্টনীর ভিতরে প্রবেশ করে দেখতে পারেন বাঘ, সিংহ, ভালুুক, আফ্রিকান চিতা, চিত্রা হরিণ, সাম্বার ও গয়াল, হাতি, জলহস্তি, নীল গাই, বারো সিংগা, বন্য  মোষ। এ ছাড়া রয়েছে হাতির আশ্রম ও স্নেক পার্ক।

কীভাবে যাবেন

ময়মনসিংহগামী বাসে ঢাকা  থেকে সরাসরি যেতে পারবেন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঘের বাজার। এখান থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় মাওনা ইউনিয়নে সাফারি পার্কটি অবস্থিত। সুবিধা মতো যানবাহন বেছে নিতে পারেন।

 

ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন

সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন ‘সুন্দরবন’। ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে। সুন্দরবন ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। সুন্দরবনের খ্যাতির অনেকটাই জড়িয়ে আছে রয়েল  বেঙ্গল টাইগারকে নিয়ে। এ বনে এ ছাড়াও দেখা মেলে নানা ধরনের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির ও সাপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী। সুন্দরবনের নদীগুলো নোনা পানি ও মিঠা পানি মিলন স্থান। গঙ্গা থেকে আসা নদীর মিঠা পানির, বঙ্গোপসাগরের নোনা পানি হয়ে ওঠার মধ্যবর্তী স্থান হলো এ এলাকাটি। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে সুন্দরবন অবস্থিত। নৌকা করে বনের ভিতর দিয়ে বেড়ানো পর্যটকদের অ্যাডভেঞ্চারের উত্তেজনা দেয়।

কীভাবে যাবেন

ঢাকার কল্যাণপুর, মালিবাগ ও গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন পরিবহনের বাসে সাতক্ষীরা যাওয়া যায়। সকাল, দুপুর ও রাতের তিনটি নির্দিষ্ট সময়ে গাড়িগুলো ঢাকা ছেড়ে যায়। মংলা দিয়ে যেতে চাইলে খুলনা বা মংলার বাস পাওয়া যাবে এ স্থান থেকে। সেখান থেকে ট্রলার বা বোটে করে যেতে পারেন সুন্দরবন।

 

ঢাকাতেই আনন্দ

ঢাকার ভিতরেই ঘুরে আসতে পারেন মিরপুর চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন। বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, হাতিরঝিল, শাহবাগে জাতীয় শিশুপার্ক, ওয়ারিতে বলধা গার্ডেন, আশুলিয়ার ফ্যান্টাসি কিংডম, নন্দন পার্ক। রাজধানীতে জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, আহসান মঞ্জিল জাদুঘর, লালবাগ দুর্গ। মিরপুর ১২ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে নেমে কিংবা কালশী নতুন রাস্তার মোড়ে নেমে রিকশায় যেতে পারবেন সাগুফতায়। যেতে পারেন উত্তরার দিয়াবাড়ি। উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের দিয়াবাড়িতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরতে আসেন নানাবয়সী লোকজন। বুড়িগঙ্গা ইকোপার্ক যেতে পারেন। বিকালে আড্ডা দিতে আসেন অনেকেই। শহরের কোলাহল ছেড়ে রাজধানীর উপকণ্ঠ শ্যামপুরে প্রায় সাত একর জায়গার ওপর গড়ে উঠেছে পার্কটি।

ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিল

এটি ব্রিটিশ ভারতের উপাধিপ্রাপ্ত ঢাকার নবাব পরিবারের বাসভবন ও সদর কাচারি ছিল। সুরম্য এ ভবনটি ঢাকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থাপত্যের নিদর্শন। বহু ইতিহাসের সাক্ষী এটি। আহসান মঞ্জিল বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে পুরান ঢাকার ইসলামপুর এলাকায় অবস্থিত। বৃহস্পতিবার ও সব সরকারি ছুটির দিনে জাদুঘর বন্ধ থাকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর