শিরোনাম
শনিবার, ৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
অপরাধ-জেল-সাজা

তারকাদের কারাজীবন

এরা প্রত্যেকেই রঙিন দুনিয়ার মানুষ। খ্যাতির শিখরে থেকেও অনেকেই কাটান এলোমেলো জীবন। পর্দায় নানা চরিত্র এবং সেলিব্রেটি হলেও বাস্তব জীবনেও এরা রীতিমতো জেল খাটা আসামি। নাম লিখিয়েছেন অপরাধের খাতায়।

আবদুল কাদের

তারকাদের কারাজীবন

প্যারিস হিলটন

অপরাধী যতই প্রভাবশালী হোক না কেন আইনের কাছে সবাই সমান। এটাই আইনের মূল কথা। আর তাই তো অপরাধ করে আইনের চোখ ফাঁকি দিতে না পেরে কয়েদির পোশাক জড়িয়েছেন অনেক তারকা সেলিব্রেটিও। দুর্নীতি, অপহরণ, ধর্ষণ, মাদক বহন আর অবৈধ অস্ত্র বহনের মতো মামলায় ফেঁসে যাচ্ছেন তারকারা। কেউ অহেতুক হয়রানির শিকার, কেউবা অনিচ্ছাকৃত ভুলে জড়িয়ে পড়ছেন পুলিশি ঝামেলায়।

 

কারাগারে যখন কোনো সেলিব্রেটি বা কোনো তারকার কথা মনে করব, তখন আমাদের চোখের সামনে কার ছবি ভেসে উঠবে? লিন্ডসে লোহান, আমান্ডা বেনিস, প্যারিস হিল্টন কিংবা অন্য কোনো সেলিব্রেটি? আসলে তারকারা রঙিন দুনিয়ার স্বপ্নের মানুষ। এমন তারকাও আছেন যারা অপরাধ করে গায়ে জড়িয়েছেন কয়েদিদের পোশাক। নাম লিখিয়েছেন জেল খাটা আসামির তালিকায়। অনেকের বাবা অথবা মা অথবা দুজনই রীতিমতো জেল খাটা আসামি। অনেকে ভালো পরিবেশে থেকেও এলোমেলো জীবন কাটান। আবার এমনও আছেন যারা আদর্শ পরিবারে বেড়ে উঠেও খ্যাতির আদিখ্যেতায় অপরাধ জগতে পা বাড়ান। জড়িয়ে পড়েন দুর্নীতি, অপহরণ, ধর্ষণ, মাদক বহন আর অবৈধ অস্ত্র বহনের মতো বিভিন্ন মামলায়।

প্যারিস হিলটনের কথাই ধরা যাক, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর দায়ে ২০০৭ সালে ৪৫ দিন লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি জেলে কাটাতে হয়েছিল তাকে। এর ২৩ দিন পরই আরেকটি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন হিলটন। যদিও সে সময় জেলে কাটাতে হয়নি। গেল বিশ্বকাপ ফুটবলেও হুলুস্থূল কাণ্ড ঘটিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। পুলিশ তাকে আটকে রাখে। অভিযোগ মাদক রাখা। যদিও পরে সে অভিযোগ থেকে মুক্তি পান। ২০০৪ সালেও এমন একটি ঘটনার উদ্ভব ঘটিয়েছিলেন প্যারিস হিলটন। যদিও পরবর্তীতে এক দম্পতি তাকে জেল থেকে জামিন করিয়ে নেন। কিন্তু এতে জরিমানা গুনতে হয়েছিল ৫৪০ মার্কিন ডলার। যদিও আইনজীবীর মাধ্যমে প্যারিস তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এক বছরের স্থগিতাদেশও বের করে ফেলেন। এরপর ২০১০ সালে আবারও তার বিরুদ্ধে মারিজুয়ানা বহনের অভিযোগ ওঠে। লাস ভেগাসে গাড়ি তল্লাশি চালিয়ে কোকেন মেলে। যদিও প্যারিস ওই কোকেন বন্ধুর বলে দাবি করেন। এভাবেই বেশ কয়েকবার পুলিশের হাতে ধরা পড়েন প্যারিস হিলটন। বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও মাদক গ্রহণের অভিযোগে আমান্ডা বেনিসকেও কয়েকদিন কাটাতে হয়েছে পুলিশ হেফাজতে। মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন, আর্থিক জরিমানা এবং প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে কারাবাসের বাইরে আসতে হয়েছিল আমান্ডা বেনিসকে। দুজনই মূলত গ্রেফতার হয়েছিলেন মাদক গ্রহণ করার কারণে। হলিউডের ফ্যান্টাসি জগতে এমন ঘটনা অহরহই ঘটছে। জ্যাকি চ্যানের ছেলে জেসি চ্যান। মাদক রাখার দায়ে কুংফু তারকা জ্যাকি চ্যানের ছেলেকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে চীনের একটি আদালত। ২০১৫ সালে জেসি চ্যানের বেইজিংয়ের বাসা থেকে ১০০ গ্রাম মারিজুয়ানাসহ আটক করা হয়। ‘হাঙ্গার গেমস’-এর ফায়ার গার্ল কাটনিসের প্রশিক্ষকের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে অনেক প্রশংসা কুড়িয়েছেন উডি হ্যারিসন। তার বাবা চার্লসের জীবনটা সিনেমার কাহিনীর মতো। তিনি ছিলেন পেশাদার খুনি।

১৫ বছরের জেল হয় তার। ২০০৭ সালে জেলে বাবা চার্লস মারা গেলে হ্যারিসনও মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। যার মধ্যে ব্যাংক ডাকাতি এমনকি প্রতিবেশীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও রয়েছে। এরকম অসংখ্য ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে হলিউড পাড়ায়। আর সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি বলিউড পাড়াও। ১৯৯৩ সালের মুম্বাই হামলার দায় ও অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে সঞ্জয় দত্তকে অভিযুক্ত করা হয়। মুম্বাইয়ের সেই হামলায় অন্তত ২৫৭ জনের মৃত্যু ঘটে। যদিও পরবর্তীতে সঞ্জয়ের নামে হত্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিয়ে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে গ্রেফতার দেখিয়েছিল ভারতের আদালত। সঞ্জয় দত্ত এখনো পাঁচ বছর মেয়াদে জেলবাস করে যাচ্ছেন। যদিও চূড়ান্ত রায়ের আগে দেড় বছরের জেলবাস করেছিলেন তিনি। শাইনি আহুজা বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতাদের একজন। বলিউডে ২০০৩ সালে যাত্রা করলেও ‘গ্যাংস্টার’ ছবির মাধ্যমেই বাজিমাত করেন শাইনি। তারপর একে হুঁ লামহে, লাইফ ইন এ মেট্রো এবং বুলবুলাইয়ার মতো ব্যবসায়িক ছবিতে কাজ করেন তিনি। কিন্তু ২০০৯ সালে গৃহপরিচারিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে শাইনির বিরুদ্ধে মামলা হলে কিছুটা কোণঠাসা অবস্থার মধ্যে পড়েন এই অভিনেতা। ধর্ষণ মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। প্রায় পাঁচ মাস কারাবন্দী শেষে জামিনে মুক্তি পান তিনি। সালমান খানের বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে গাড়ি চাপা দিয়ে মানুষ মারা মামলায় পাঁচ বছরের জেলের রায়ে হাই কোর্ট স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন অনেকে। ২০০২ সালের গাড়ি চাপা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় সালমানের। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শর্ত সাপেক্ষে জামিন নিয়ে বাড়ি ফেরেন এই অভিনেতা। ২০১৫ সালের ৮ মে দুই দিনের জামিন শেষে এক মাসের জন্য রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় উচ্চ আদালত। এ রকম অসংখ্য ঘটনার জন্ম দিয়েছেন রঙিন দুনিয়ার তারকারা। অনেকে অপরাধ করে এখনো কারাগারে বন্দী আছেন। অনেকেই জামিন নিয়ে মামলা চালিয়ে যাচ্ছেন। রঙিন দুনিয়ার এসব তারকা ও সেলিব্রেটিও অপরাধ করে পান না কোনো ছাড়!

 

ও জি সিম্পন

ওরেন্থাল জেমস ছিলেন বাফেলো বিলস ও সান ফ্রান্সিসকো ৪৯-এর জনপ্রিয় বেসবল খেলোয়াড়। তার অসংখ্য রেকর্ড ও সাফল্য থাকলেও তিনি এখন জেলখাটা আসামি। ১৯৯৫ সালে তার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ ওঠে। ১৯৯৭ সালে গোল্ডম্যান ও ব্রাউন মিথ্যা হত্যা মামলা করা হয়। মামলায় গোল্ডম্যানের পরিবারকে ৩ কোটি ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণও দিতে হয়। ২০০৭ সালে সিম্পনসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে ক্রীড়া স্মারক চুরির অভিযোগ ওঠে। তিনি তা স্বীকার করে নেন, কিন্তু বন্দুক দেখিয়ে নেননি বলেই জানান। মারণাস্ত্র ব্যবহার, অপহরণ, ডাকাতির মামলায় আবারও তাকে গ্রেফতার করা হয়। আদালত তাকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেন।

 

ড্যানি ত্রেজো

সম্ভবত অপরাধমূলক জীবন ব্যবস্থার কারণেই ড্যানি ত্রেজোকে হলিউডে ভয়ঙ্কর খলনায়ক হিসেবেই চেনে। স্পাই কিডস, ওয়ানস আপন এ টাইম ইন মেক্সিকো ও মাচিতি মুভিগুলো দেখলে আরও ভালো চেনা যাবে।

ত্রেজোকে ক্যালিফোর্নিয়া কারাগারের বাসিন্দাই বলা চলে। অনেকবার জেল খেটেছেন তিনি। ১৯৬০ সালে ত্রেজো মাদক পাচার এবং অস্ত্র ডাকাতির মামলায় জড়িয়ে পড়েন। আদালত তাকে ১১ বছর কারাদণ্ড দেন। কারাগারে ১১ বছর কাটান এবং জেলে থাকাকালীন ত্রেজো বক্সিং চ্যাম্পিয়ন হন। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ত্রেজো কোনো এক মাধ্যমে এরিক রবার্টের কাছে মুভির সিনের জন্য বক্সিং প্রশিক্ষণ নেন এবং হলিউডে ক্যারিয়ার শুরু করেন।

 

 

মার্থা স্টিওয়ার্ট

মার্থা স্টিওয়ার্ট একাধারে একজন লেখক, টিভি ব্যক্তিত্ব এবং ব্যবসায়ী। ২০০৪ সালে তার বিরুদ্ধে ইমক্লোন স্টক ট্রেডিং মামলার অভিযোগ ওঠে। তখন মার্থা ৫ মাস ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার অ্যাল্ডারসন কারাগারে ছিলেন। এজেন্সির কাজে বাধা দেওয়ায় ষড়যন্ত্র করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। জেলের ভিতরে মার্থা মেঝে ও দেয়াল পরিষ্কার করে সময় পার করেন। কারাগার ঘুরে ঘুরে এবং রাতের শারীরিক কসরতের ক্লাস করেও সময় পার করতেন। এমনকি তিনি তখন বাগানও করেছিলেন। মার্থা একজন ব্যবসায়ী হওয়া সত্ত্বেও তার শখই হলো ইনডোর প্লান্ট এবং বাগান তৈরি, ফুল বাছাই, ছবি আঁকাসহ সিরামিকের পিস এবং ক্রিসমাস তৈরি করা।

 

টম সিজমর

টম সিজমর শুধু অভিনেতাই নন, প্রযোজক হিসেবেও তার সুনাম রয়েছে আমেরিকায়। ১৯ শতকের পেসেঞ্জার ৫, ট্রু রোমান্স এবং হিট মুভিগুলোর মূল আকর্ষণে ছিলেন তিনি। ২০০৩ সালে বান্ধবী হেইডি ফ্লিসকে আক্রমণের কারণে তাকে জেলে যেতে হয়। ওই অপরাধে সিজমরকে ৬ মাসের কারাবাস করতে হয়েছিল। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সিজমর ড্রাগে জড়িয়ে পড়েন। ড্রাগ পরীক্ষায় ব্যর্থ এবং পরীক্ষাকালীন ঝামেলা করায় ২০০৭ সালে তাকে ১৬ মাসের জন্য আবারও জেলে যেতে হয়েছিল। যদিও এখন তিনি জেলের বাইরে আছেন। কিন্তু এখনো মাঝে মধ্যে তার বিরুদ্ধে সেল ফোন চুরির অভিযোগ ওঠে। এখন দেখার বিষয় হলো তিনি আবারও জেলে যান কিনা!

 

শেলি মালিল

ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকার স্টেজ এবং ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা শেলি মালিল। ৪০ বছর বয়সের ভার্জিন চরিত্রের কারণে শেলি অধিক পরিচিত। সাফল্যের ঝুলিতে রয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস ওভেশন অ্যাওয়ার্ড এবং মিড সামার নাইট ড্রিমসের সেরা অভিনেতার পুরস্কার অর্জন। মালিল অভিনয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্য ছিল ২০০৮ সালে তার সাবেক বান্ধবীকে ২৩ বার হত্যার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পূর্ব-পরিকল্পনা এবং অস্ত্রের মুখে শারীরিকভাবে আহত করে সাবেক বান্ধবীকে হত্যার অভিযোগ তোলা হয় তার বিরুদ্ধে। মামলায় ২০১০ সালে মালিল দোষী সাব্যস্ত হন এবং আদালত তাকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

 

সঞ্জয় দত্ত

বলিউডের দাপুটে অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত ব্যক্তি জীবনেও প্রভাব ও প্রতিপত্তির কমতি রাখেননি বলা চলে। তবে তা অধিকাংশ সময় প্রকাশ পেয়েছে অন্ধকার জগতের ডন হিসেবে। শেষবারের মতো ২০১৬ সালে ৪২ মাস জেল খেটে তিনি মুক্তি পেলেন। এর আগে ২০০৭ সালে বেআইনি অস্ত্র রাখার দায়ে কারাভোগ করতে হয় তাকে। বলিউড এই ডনের কারাভোগের ইতিহাস শুরু আরও আগের। ১৯৯৩ সালে অস্ত্র মামলা, ১৯৯৪ সালে একই মামলায় জামিনে থেকেও গ্রেফতার ও ২০০৬ সালে অস্ত্র মামলায় তাকে জেলে যেতে হয়।

 

 

মনিকা বেদি

২০ বছর ধরে বলিউড কাঁপানো আবেদনময়ী অভিনেত্রী মনিকা বেদি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আন্ডারওয়ার্ল্ডের গ্যাংস্টার আবু সেলিমের সঙ্গে অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন বলিউড তারকা মনিকা বেদি। ফলাফল নামযশ সবই খোয়ান। ২০০২ সালে অবৈধভাবে পর্তুগালে অনুপ্রবেশের কারণে পর্তুগাল পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। ২০০৬ সালে জাল পাসপোর্টের জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মনিকা বেদি গায়ক গুলশান কুমার খুনের মামলাও জড়িয়ে পড়েন। জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী মোট ৮ বছর জেল খাটেন।

 

 

লিন্ডসে লোহান

তিনি হলিউডের হিট অভিনেত্রী। জড়িত নানা স্ক্যান্ডালের সঙ্গে। মাদকাসক্তের জন্য ২০১০ সালে ৯০ দিনের জেল-জরিমানার আদেশ দেন আদালত। পরবর্তীতে তা কমিয়ে ১৪ দিন ধার্য করা হয়। জেল থেকে মুক্তির পরই আদালত লোহানকে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে পুনর্বাসনের নির্দেশ দেন।

এর বাইরেও কম দামি জিনিসপত্র চুরির রেকর্ডও রয়েছে তার নামে। লোহান নিজে কতবার জেলে গেছেন তার হিসাব নিজেই নাকি ভুলে যান! এমন বক্তব্যের কারণেই তিনি অনেক বিতর্কের মুখে পড়েন।

 

 

 

অ্যালেক্সিস নায়ার্স

হলিউডের বহু সুন্দরী বিশ্ব মাতিয়েছেন। অ্যালেক্সিস নায়ার্স তাদেরই একজন। জনপ্রিয় টিভি তারকা।

আবেদনময়ীও বটে। কিন্তু কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি এই সেলিব্রেটি ডাকাতিতে অংশ  নেবেন। ‘ব্লিং রিং’ ডাকাতির অভিযোগে তিনি গ্রেফতার হন।

আদালত তাকে ১৮০ দিনের কারাদণ্ড দেন। ১৯ বছর বয়সী এই সেলিব্রেটি জেলের সাধারণ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসার আবেদন করেন। চিকিৎসা শেষে মাত্র ৩০ দিন জেল খাটেন এবং শেষ ৫ দিন লিন্ডসে লোহানের সঙ্গে ছিলেন।

 

 

 

সালমান খান

২০০২ সালে মদ্যপ হয়ে গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যার পর ১৮ দিনের জন্য সালমানকে হাজতবাস করতে হয়েছিল। তখনই নাকি কারাজীবনের বিভীষিকা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন তিনি। ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় বলিউড নায়ক সালমান খানের। তখন ভক্তদের মাঝে দারুণ উৎকণ্ঠা দেখা যায় প্রিয় নায়কের জন্য। এমনকি পরিচালকদেরও মাথায় হাত পড়ে নায়কের এমন পরিণতিতে। ২০১৫ সালের এই রায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শর্ত সাপেক্ষে জামিন পান তিনি। এর আগে ১৯৯৮ সালে রাজস্থানে একটি শুটিংয়ে গিয়ে বিরল প্রজাতির হরিণ শিকারের অভিযোগে তার নামে করা অস্ত্র আইনের মামলা ঝুলে থাকে দীর্ঘদিন। তবে শেষমেশ তিনি অব্যাহতি পান ২০১৭ সালে।

 

টিম অ্যালিন

জনপ্রিয়তার আগে ছিলেন টিম টেইলর। গ্যালাক্সি কোয়েস্টে ছিলেন জ্যাসন নেস্মিথ এবং দ্য টয় স্টোরি ট্রায়োজিতে যিনি টিম অ্যালিন নামেই পরিচিত। টিম অ্যালিন একজন জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা। ১৯৭৮ সালে ২ অক্টোবর মিশিগানের কালামাজো এলাকা থেকে টিম গ্রেফতার হন। তখন তার কাছে ১.৪ পাউন্ড কোকেন পাওয়া যায়। মাদক পাচারের অপরাধে আদালত তাকে ৩-৭ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। তবে টিম অপরাধ কবুল করে আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এরপর অন্য পাচারকারীদের নাম দিয়ে সহযোগিতা করলে আদালত তার দণ্ডিত সাজাও কমিয়ে আনেন। তবুও জনপ্রিয় এই তারকার মাদক পাচার আইনে ২ বছর ৪ মাসের সাজা হয়েছিল।

 

ফ্লাক্সিকো বারেস

অপরাধে কারাবাসের তালিকা থেকে বাদ যাননি প্রাক্তন এই সুপার বোল্ট তারকা ফ্লাক্সিকো বারেসও। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা হয় এবং শুনানি শেষে অবিলম্বে আদালত ২ বছরের কারাদণ্ড দেন। নিউইয়র্কের নাইট ক্লাবে নিজের বন্দুক থেকে নিজের দিকে বেপরোয়া গুলি ছোড়েন। যদিও বারেস ঘটনাটিকে নেহাত দুর্ঘটনা হিসেবেই দাবি করেন। তবে, বারেসের বন্দুকটির লাইসেন্স ছিল না। এমন ঘটনায় তিনি নিজে লজ্জাবোধ করেন। কারাবাসের সময় তাকে রাজকীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। কয়েদিদের সঙ্গে প্রথমে রাখা হলেও পরবর্তীতে তার জন্য আলাদা সেলের ব্যবস্থা করে। তার ভালো আচরণে মুগ্ধ হয়ে ২ বছরের সাজা কমিয়ে ২০ মাসের কারাদণ্ডের পর মুক্তি দেয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।

 

জয় ফ্রান্সিস

ফ্রান্সিস আমেরিকান চলচ্চিত্র প্রযোজক। তার সবচেয়ে ভালো পরিচিতি তিনি গার্লস ওয়াইল্ড বিনোদন ভিডিও সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। কিন্তু আইন অবমাননার অভিযোগে তার ৩৫ দিনের কারাদণ্ড দেন আদালত। ফ্রান্সিসকে পানামা শহরের ফ্লোরিডা জেলে পাঠানো হয়। সেখানে তার বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ ওঠে। ফ্রান্সিস পানির বোতলের জন্য কারাগার রক্ষীকে ৫০০ ডলার ঘুষের প্রস্তাব করে। তার পরিচিতদের সঙ্গে দেখা করায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আদালতের নির্দেশে ফ্রান্সিস সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ রাখতে পারতেন। সে সময় ফ্রান্সিসের বিরুদ্ধে পতিতাবৃত্তি, শিশু নির্যাতন, যৌন হয়রানি, জোর করে বন্দী করে রাখার মতো জঘন্য অপরাধের অভিযোগও ওঠে।

 

টি. আই

তার আসল নাম ক্লিফোর্ড জোসেফ হ্যারিস জুনিয়র। জনপ্রিয়তা এবং পেশাদারিত্বের খাতিরে টি. আই নামেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। তিনি একাধারে একজন র‌্যাপার, হিপ হপ গানের রেকর্ডিং তারকা এবং অভিনেতা। হ্যারিস মার্কিন অস্ত্র আইন এবং ড্রাগের কারণে দুইবার জেলে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে ২০১১ সালের নভেম্বরে মাদক গ্রহণ এবং সরবরাহের জন্য তার ১১ মাসের কারাদণ্ড হয়েছিল। দ্য ব্যাড বয় খ্যাত র‌্যাপার হ্যারিস আর্কান্স প্রিজনেই কাটিয়েছেন এই সময়। যেখানে তাকে কিছু আলাদা সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। বিশেষত তার স্ত্রী দেখা করতে এলে তাদের নিরিবিলি রুমে দেখা করতে দেওয়া হতো। তিনি কারাগারের ফোন ও ই-মেইলও ব্যবহার করতে পারতেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর