বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

আফ্রিকার অবহেলিত যত দেশ

আবদুল কাদের

আফ্রিকার অবহেলিত যত দেশ

বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র মহাদেশ হিসেবে আফ্রিকার পরিচিতি। যেখানে ধনীর চেয়ে গরিবের সংখ্যাই বেশি। যদিও আফ্রিকার মাটির নিচে রয়েছে অসংখ্য খনিজ সম্পদ, রয়েছে শক্তিশালী জনবল। তারপরও পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্র দেশের তালিকার প্রথম ১০টি দেশই আফ্রিকার। এর পেছনেও রয়েছে যথেষ্ট ইতিহাস। জড়িয়ে আছে সাম্প্রদায়িকতা, দাঙ্গা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসবাদ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, গৃহযুদ্ধ, উদ্বাস্তু সংকট, অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও সন্ত্রাসবাদের কবলে পড়ে আফ্রিকা মহাদেশ আজ দুর্দশাগ্রস্ত।

 

বিচিত্র মহাদেশ আফ্রিকা। বিচিত্র জাতির বিচিত্র ভাষা। আফ্রিকার অনেক গ্রাম্য জীবন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে রয়েছে একই। কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে অনেক শহরে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। আফ্রিকাতে মোট ৫৪টি দেশ রয়েছে। দেশগুলোর নাগরিকদের ইতিহাস ও সংস্কৃতিগত দিক থেকে একতা বলতে তেমন কিছুই ছিল না। কোথাও সহিংস যুদ্ধ, আবার কোথাও বা ধীর সংস্কারের আফ্রিকা মহাদেশের অনেক দেশের যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা এখনো অনুন্নত। অনেক দেশের সাধারণ মানুষ এখনো লড়াই করে চলেছে দারিদ্র্য ও ক্ষুধার বিপরীতে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সন্ত্রাসবাদ ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। যেখানে দারিদ্র্য ও ক্ষুধাকে জয় করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সন্ত্রাসবাদ দেশগুলোর অগ্রগতির পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে উন্নত দেশগুলো সার্বিক অবস্থা মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও সফলতার মুখ দেখেনি অনেক রাষ্ট্র। এখনো অনেক দেশে বিদ্রোহীদের হামলা তৈরি করছে যুদ্ধক্ষেত্র। ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে শরণার্থী ক্যাম্পে। সেখানে তাদের দিন কাটছে অনাহারে। ম্যালেরিয়া আর ডায়রিয়ায় মারা যাচ্ছে শিশুরা। নেই খাবার পানি। অনেকেরই মাথার ওপর ছাউনি নেই। বৃষ্টিতে ভিজতে হয় রাতভর। পুরোপুরি অস্থির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। খাবার এবং স্বাস্থ্যসেবা খুবই সীমিত থাকায় অনেক মানুষের কাছে তা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এমনই হৃদয়বিদারক প্রতিবেদন তৈরি করেছে নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি)। তারা এ জন্য দায়ী করছেন বিদ্রোহ আর বিরাজমান নানা সংঘাতকে। জার্নালটিতে আরও জানানো হয়, ‘মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের সংঘাতকে বিশ্বের সবচেয়ে অবহেলিত উদ্বাস্তু সংকট। এমনটাই দাবি আন্তর্জাতিক এই সংগঠনটির। সম্প্রতি উদ্বাস্তু সংকটের বার্ষিক সূচক প্রকাশ করে মানবিক সাহায্য সংস্থাটি। নরওয়েভিত্তিক সংস্থাটি তাদের পর্যবেক্ষণে জানায়, এখানকার লোকদের যখন বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কোনো কর্ণপাত নেই। নেই কোনো নজরদারি। এটি একদিকে যেমন শান্তির আশাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে, অন্যদিকে সংঘর্ষ আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করছে। এনআরসির নতুন প্রকাশিত এই সূচকে মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের পরেই আছে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, সুদান, দক্ষিণ সুদান, নাইজেরিয়া, ইয়েমেন ও সোমালিয়া। কমপক্ষে এক লাখের বেশি লোক উদ্বাস্তু শরণার্থী হয়ে আছে। এনআরসির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তালিকার শীর্ষে থাকা দেশগুলো পর্যাপ্ত অর্থ ও গণমাধ্যমের পর্যাপ্ত দৃষ্টির অভাবে মানবিক সাহায্য পাচ্ছে না। এই সংকট সমাধানে রাজনৈতিক সদিচ্ছারও অভাব রয়েছে। সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল জ্যান ইগিল্যান্ড বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সমস্যাকে শুধু ভুলেই যায়নি, বরং কখনো এ সমস্যা সমাধানে যথেষ্ট আগ্রহ দেখায়নি। মানবিক সংকট দূর করতে অবশ্যই প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক সহায়তা দিতে হবে। এনআরসির সিনিয়র উপদেষ্টা রিচার্ড স্ক্রেটবার্গ বলেন, ‘মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর মতো সংঘাতগুলো অব্যাহত থাকলে তা আরও বেশি লোককে মিলিশিয়া গ্রুপগুলোতে জড়াতে সাহায্য করবে। উদ্বাস্তুদের সমস্যা নিরসনে সূচকে স্থান পাওয়া দেশগুলোতে সবচেয়ে বড় সংকট অর্থের।

অন্যদিকে জাতিসংঘের তিন সংস্থা— ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে দক্ষিণ সুদানের কিছু অংশ দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাগুলো জানায়, ‘আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অর্থ হচ্ছে, সেখানে ইতিমধ্যে মানুষ খেতে না পেয়ে মারা যাওয়া শুরু হয়েছে। তিন বছর আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বর্তমান সময়েই সেখানকার ক্ষুধা পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। নাইজেরিয়া, সোমালিয়া ও দক্ষিণ সুদানে শিশুরা চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগছে বলেও জানায় সংস্থাটি।’ এদিকে তীব্র খরার কারণে সোমালিয়ার প্রায় এক লাখ ৮৫ হাজার শিশু দুর্ভিক্ষের শিকার। অন্যদিকে অশিক্ষা, কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামির জাঁতাকলে আফ্রিকার অনেক নারীই পিষ্ট। আফ্রিকার এমনো অনেক স্থান রয়েছে যেখানে আদিম অনাচার এখনো প্রচলিত। যার বলি হচ্ছেন এখন নারীরা। তা ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতি ২৬ সেকেন্ডে একজন নারী বা শিশু ধর্ষিত হয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। শুধুই যে ধর্ষিত হয়েই রক্ষা মেলে এমনটাও নয়। বঞ্চনার শিকার হতে হয় সর্বত্র। স্কুল-কলেজে ধর্ষিতা সমালোচিত হচ্ছে। সবার সামনেই ধর্ষিতা বলে ডাকা হয়। নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি) এবং জাতিসংঘের এমন প্রতিবেদনে বোঝাই যাচ্ছে আফ্রিকা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ক্রান্তিকালে অবহেলিত হচ্ছে অসহায় ও দরিদ্র মানবজাতি। ক্ষুধার যন্ত্রণায় মারা যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে চলছে দুর্ভিক্ষ। ইথিওপিয়ার অধিকাংশ মানুষ চাষাবাদ করে জীবনযাপন করেন। গরু-বাছুর পুষে একটি পরিবারের পেট চলে। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে এখানে খরা দেখা দিয়েছে। পানি নেই, মাঠে ঘাস নেই। মরছে জন্তু-জানোয়ারও। ইথিওপিয়া বা জিম্বাবুয়ের মতো মালাউয়িও দুর্ভিক্ষে দিন পার করছে। রাজধানী লিলংওয়ের বাজারে ভুট্টার দানার মতো খাদ্যশস্যের দাম চড়েছে অভূতপূর্বভাবে। ফসল খারাপ হওয়ায় খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়েছে। দাম এমনভাবে বেড়েছে যে, স্থানীয় মানুষের সামর্থ্যে কুলোচ্ছে না। এমনি সব তথ্য তুলে ধরেছে এপি, এএফপি এবং রয়টার্সের মতো বিখ্যাত জার্নাল। ২০১৬ সালে কঙ্গোতে যে পরিমাণ ত্রাণসহায়তা দরকার তার মাত্র ৩৮ শতাংশ সহায়তা পেয়েছে জাতিসংঘ। কিন্তু এনআরসি তাদের রিপোর্টে বলেছে, কঙ্গোর অর্ধেকের বেশি মানুষ নিরাপদ খাদ্যের অভাবে আছে। প্রতিদিন এক বেলার বেশি খেতে পায় না এই মানুষ। নিরাপদ পানি পাচ্ছে মাত্র ৩৫ শতাংশ মানুষ। মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের প্রতি পাঁচজনে একজন উদ্বাস্তু। চলতি বছরে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ দেশ ছেড়েছে। যা কিনা সিরিয়া ও ইরাকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি।

 

অস্থিতিশীল এক মহাদেশ

আফ্রিকার অনেক দেশেই চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। কোথাও কোথাও সেই অস্থিরতা যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ পর্যন্ত গড়িয়েছে। আবার কোথাও কোথাও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জঙ্গিবাদের উত্থান আফ্রিকার বিভিন্ন রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। জঙ্গিবাদের থাবায় এসব রাষ্ট্র হারিয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য।

সোমালিয়া : সোমালিয়ায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে আল-শাবাব। তারা প্রতিবেশী দেশগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। জাতিসংঘ এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের সেনাদের সহায়তায় সোমালিয়া সরকার আল-শাবাবকে ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তবে এখনো সে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি বড় অংশ জঙ্গিগোষ্ঠীর দখলে রয়েছে। এ ছাড়াও দেশটিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতাদর্শের বিরোধে উত্তপ্ত। 

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক : দেশটি খ্রিস্টান এবং মুসলিমদের মধ্যে ঐক্য নেই। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের (সিএআর) লাখ লাখ মানুষ এখন সার্বক্ষণিক মৃত্যু ঝুঁকির মধ্যে বাস করছে। ইতিমধ্যেই মোট জনসংখ্যার শতকরা পাঁচ ভাগ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। যদিও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দাবি আরও বেশি।

মালি : মালিতে উগ্র ইসলামপন্থিরা ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। ২০১২ সালে সে দেশের উত্তরাঞ্চলের একটা বড় অংশ তাদের দখলে চলে যায়। ফলে মালি সরকারকে যুদ্ধে সহায়তায় এগিয়ে আসে ফ্রান্স। এরপর পিছু হঠতে বাধ্য হয় উগ্র ইসলামপন্থিরা। বর্তমানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মালিতে শান্তি রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে। এখনো দেশটিতে বিভিন্ন জঙ্গি এবং আত্মঘাতী হামলার খবর মাঝে মাঝেই শোনা যায়।

নাইজেরিয়া : উগ্র ইসলামপন্থি জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম নাইজেরিয়ায় শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। লক্ষ্য পূরণে সে দেশের খ্রিস্টান এবং মধ্যপন্থি মুসলমানের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে গোষ্ঠীটি। 

লিবিয়া : কয়েক দশক ধরে আফ্রিকার লিবিয়ায় চলছে অস্থিরতা। গৃহযুদ্ধ বেঁধে যাওয়া, ন্যাটোর সঙ্গে সংঘর্ষ পেরিয়ে লিবিয়া এখন ব্যর্থ রাষ্ট্র। তবে আগে থেকেই লিবিয়ায় স্থানীয়, আঞ্চলিক, উপজাতিগত, ইসলামপন্থি ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা ছিল। গাদ্দাফির পতনের পর লিবিয়ায় একটি হ-য-ব-র-ল অবস্থার তৈরি হয়। দেশের দক্ষিণ অঞ্চল এখন সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্য।

সুদান : গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে দারফুর অঞ্চলে বসবাসকারী আফ্রিকার বিভিন্ন গোষ্ঠী সরকারি বাহিনী ও তাদের অনুসারীদের সঙ্গে লড়াই করছে। যুদ্ধের কারণে কয়েক লাখ মানুষ ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছে এবং অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।

দক্ষিণ সুদান : ২০১৩ সাল থেকে দক্ষিণ সুদানে গৃহযুদ্ধ চলছে। সে দেশের ভাইস-প্রেসিডেন্টের পক্ষের সেনারা প্রেসিডেন্সিয়াল ফোর্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিবেশী দেশ সুদানের দুটি রাজ্যে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গেও সম্পৃক্ত রয়েছে দক্ষিণ সুদানের সেনারা।

কঙ্গো : ১৯৯০ সালে শুরু হওয়া যুদ্ধ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। কিভু-তে সেনাবাহিনী নিয়মিত এম-২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। যদিও ২০১৩ সালের শেষের দিকে সরকার বিদ্রোহীদের দমনে সক্ষম বলে ঘোষণা দেয়। বাস্তবে এখনো বিদ্রোহীরা সক্রিয়।

তা ছাড়া ইথিওপিয়া, বুরুন্ডি, জিবুতি, কেনিয়া, উগান্ডা, সিয়েরা লিয়ন, ঘানা এবং নাইজেরিয়ায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

 

অপরাধের কেন্দ্র

দক্ষিণ আফ্রিকাকে ধর্ষণের রাজধানী মনে করা হয়। শুধু দক্ষিণ আফ্রিকাতেই নয়, গোটা আফ্রিকা মহাদেশে ধর্ষণ মহামারীতে রূপ নিয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা তো বটেই কোমলমতি শিশুরাও রেহাই পায় না এই যৌন নিপীড়ন থেকে। আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় সংঘর্ষ, সহিংসতায় ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ‘আফ্রিকান সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স’-এর হিসাব অনুযায়ী, বছরে কমপক্ষে এক লাখ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ইথিওপিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ঘানা, জিম্বাবুয়ে, নাইজেরিয়া, মরক্কো, সেন্ট্রাল আফ্রিকা, পূর্ব আফ্রিকায় শিশু ধর্ষণের মতো ঘটনাও দেখা যাচ্ছে। শুধু দক্ষিণ আফ্রিকাতে ৪০০০ নারীর ওপর এক জরিপে দেখা যায়, তাদের প্রতি তিনজনের একজন বিভিন্নভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার। Medical Research Council (MRC)-এর এক জরিপে দেখা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় ২৫ ভাগ পুরুষ জীবনে একবার হলেও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, ‘সোমালিয়ায় অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া সুদান, আইভরি কোস্ট, নাইজেরিয়া, লাইবেরিয়াও আছে বিশ্বের ২০ ধর্ষণের তালিকায়।’

 

সোমালিয়ায় শিশুযোদ্ধা!

জলদস্যুর দেশ সোমালিয়া। লড়াই শুধু দরিদ্রতা ও ক্ষুধার বিপরীতে নয়, সঙ্গে রয়েছে সন্ত্রাসবাদ ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাও। দেশটিতে শিশুমৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। রয়েছে শিশুদের দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও শিশুদের যুদ্ধে পাঠানোর মতো ঘৃণিত অভিযোগ। যা পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করে ভয়ঙ্কর জঙ্গিগোষ্ঠী আল শাবাব। তাতেই নড়েচড়ে বসে বিশ্বমিডিয়া। যে বয়সে পড়াশোনা আর খেলনা নিয়ে খেলার কথা, সেই বয়সে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মারণাস্ত্র। পাঠানো হয় যুদ্ধ প্রশিক্ষণে। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে সন্ত্রাসীগোষ্ঠী আল শাবাবের উত্থান হয় এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে সোমালিয়াকে। এমনিতেই দেশটি খরা, দুর্ভিক্ষে জর্জরিত; তার ওপর জঙ্গিগোষ্ঠীর নারকীয় হামলা দেশে গৃহযুদ্ধ তৈরি করেছে। সরকারবিরোধী যুদ্ধে শাবাবের জঙ্গিরা শিশুদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এদের কবল থেকে পালিয়ে আসা এক শিশুযোদ্ধা জানায়, সে ১০০ সহপাঠীর সঙ্গে যুদ্ধে যায়। সবাই মারা যায়। অপহরণের পর জঙ্গি প্রশিক্ষণের অভিযোগ এদের বিরুদ্ধে। আফ্রিকান হিউম্যান রাইটস জানায়, ‘অপহরণ করা শিশুদের বন্দী করে রাখা হয় এবং পরবর্তীতে যুদ্ধ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে পাঠানো হয়।’

 

কম আয়ুর দেশ

সুন্দর পৃথিবীতে বেঁচে থাকাই যেন সার্থকতা। কিন্তু সব আশাই তো আর পূরণ হওয়ার নয়, মানুষের বর্তমান গড় আয়ু বেড়ে প্রায় ৬৫-৭৫ বছর। আমাদের দেশে বর্তমান গড় আয়ু প্রায় ৬৯’রের কোঠায়। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে কম আয়ুর দেশ আফ্রিকা মহাদেশের চাদ। দেশটির মানুষের গড় আয়ু ৪৯ বছর। চাদে জন্মহারের চেয়ে মৃত্যু হার বেশি। এর মূল কারণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং অপুষ্টি। প্রাকৃতিক নানা বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত দেশটি। বিষয়টিকে আরও জটিল করেছে প্রতিবেশী দেশ সুদান। সাম্প্রতিক কালের যুদ্ধে হাজার হাজার উদ্বাস্তু নিরাপত্তার সন্ধানে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চাদে ভিড় জমাচ্ছে। চাদকে বিধ্বংসী উদ্বাস্তু সংকট তৈরি করেছে সুদান। এর আগে দেশটি এখনকার মতো খারাপ ছিল না। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর ছিল দেশটি। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশের যুদ্ধবিগ্রহে দেশটিতে পরিণত হয়েছে উদ্বাস্তু নগরীতে। এ ছাড়া এইডস মহামারীর পরিমাণ এখানে দিনকে দিন বাড়ছে। স্বল্প গড় আয়ুর পেছনে দূষিত পরিবেশ, পুষ্টিহীনতা, রাসায়নিক ব্যবহার বৃদ্ধিসহ আরও অনেক কারণ বিদ্যমান। দেশটির মানবসম্পদ রক্ষার্থে জাতিসংঘ আশপাশের রাষ্ট্রগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায়।

 

ভয়াবহ নারী নির্যাতন

আফ্রিকা মহাদেশের বহুদেশ এখনো নানা কুসংস্কার ও বিচিত্র্য রীতিনীতিতে বিশ্বাসী। অনেক রীতি সংস্কৃতি এতটাই ভয়াবহ যা কল্পনাকেও হার মানায়। যেমন—আফ্রিকায় এক আজব রীতি প্রচলিত আছে। মেয়েদের খতনা। খতনার যন্ত্রণা ভোগ করা নারীর সংখ্যা ২০ কোটিরও বেশি। প্রাচীন রীতি মেনে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে নারীদের খতনা করানো হয়। কখনো অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মেয়েরা মারাও যায়। পশ্চিম আফ্রিকার মালি, বারকিনা ফাসো, মৌরিতানিয়া, গিনি, আইভরি কোস্ট, সিয়েরা লিয়নসহ অনেক দেশে এ পদ্ধতি চালু রয়েছে। আইভরি কোস্টের মানুষ মনে করে নারীর খতনা দিলে সতীত্ব রক্ষা পায়। এখানে নারীর খতনাকে সামাজিক সম্মান ও পূর্ণ যৌবন প্রাপ্তির প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। এদিকে দক্ষিণ সুদান, কেনিয়া, মালি, আইভরি কোস্টে এটাকে ধর্মীয় আচারও মনে করে থাকে। ক্যামেরুন, নাইজেরিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বেশকিছু সম্প্রদায়ের মেয়েকে ব্রেস্ট আয়রন করানো হয়। বয়ঃসন্ধিকালে মেয়ের স্তনের ওপর কয়লার উপর রাখা পাথর, হাতুড়ি চেপে ধরা হয়। এতে ব্রেস্ট টিস্যুগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তাদের বিশ্বাস, মেয়েদের স্তন যদি বৃদ্ধি না পায়, তাহলে দেশে ধর্ষণ কমবে।

 

দরিদ্রতার শীর্ষে

আফ্রিকা মহাদেশকে খনিজ সম্পদের আস্তানা বলা হয়। আফ্রিকা মহাদেশে সোনা ও হীরার খনি রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে বিপুল প্রাকৃতিক ও বনজ সম্পদ। সঠিক তদারকি আর দুর্নীতির কারণে গরিব দেশের শীর্ষ দশের সবকটিই আফ্রিকা মহাদেশের। এক নম্বরে থাকা মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের মাথাপিছু আয় মাত্র ৬৫৬ ডলার। শীর্ষ দশে থাকা বাকি দেশগুলো হলো—কঙ্গো, বুরুন্ডি, লাইবেরিয়া, নাইজার, মালাউই, মোজাম্বিক, গিনি, ইরিত্রিয়া ও মাদাগাস্কার। এর মধ্যে কঙ্গোর মাথাপিছু আয় ৭৮৪ ডলার; বুরুন্ডির ৮১৮, লাইবেরিয়ার ৮৮২, নাইজারের ১ হাজার ১১৩, মালাউইর ১ হাজার ১৩৯, মোজাম্বিকের ১ হাজার ২২৮, গিনির ১ হাজার ২৭১, ইরিত্রিয়ার ১ হাজার ৩২১ ও মাদাগাস্কারের ১ হাজার ৫০৪ ডলার। বিশ্বব্যাংক উন্নয়ন সূচকের করা আরেকটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আফ্রিকার আরও কিছু গরিব রাষ্ট্রের নামের তালিকা। এসব দেশের মাথাপিছু গড় আয় একেবারেই কম। এমন তথ্য বিশ্বব্যাংক তো বটেই গোটা বিশ্বকেও ভাবিয়ে তোলে। আফ্রিকার এসব দেশ যথাক্রমে চাদ, তানজানিয়া, লেসোথো, জিম্বাবুয়ে, কমোরোস, বেনিন, সিয়েরালিয়ন, মালি, বুরকিনা ফাসো, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, টোগো, মোজাম্বিক, গিনি বিসাউ, ইথিওপিয়া, গাম্বিয়া এবং সোমালিয়া। এর মধ্যে চাদের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৫৩ ডলার, তানজানিয়ার ৯৯৮, লেসোথোর ৯৯৫, জিম্বাবুয়ের ৯৩৫, কমোরসের ৮৬০, বেনিনের ৮২৫, সিয়েরা লিয়নের ৭৭৮, মালির ৭৬৫, বুরকিনা ফাসোর ৭২০, উগান্ডার ৬৭৭, রুয়ান্ডার ৬৫২, টোগোর ৬৪৬ মার্কিন ডলার। দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা এসব দেশের মানুষ দিনের পর দিন কাটান অনাহারে।

মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র : আয়তনে ৬ লাখ ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার। রাজধানী বাঙ্গুই। জনসংখ্যা ৪৭ লাখ। খনিজ সম্পদে ভরপুর ও প্রচুর আবাদযোগ্য জমি থাকা সত্ত্বেও বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র এক নম্বরে। সামরিক শাসন, গৃহযুদ্ধ ও দাঙ্গার অন্যতম কারণ।

গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র : আয়তন ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৪০৯ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ৮ কোটি। রাজধানী কিনসাসা। দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে কঙ্গো দ্বিতীয় স্থানে। দেশটি অর্থনীতিতে পিছিয়ে থাকার কারণ হলো রাজনৈতিক হানাহানি, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি।

বুরুন্ডি : আয়তন ২৭ হাজার ৮৩৪ বর্গ কিলোমিটার। রাজধানী বুজুম্বুরা। আফ্রিকার তথা পৃথিবীর তৃতীয় দরিদ্র দেশ। গুপ্তহত্যা, ধর্মীয় হানাহানি, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে অবিশ্বাস দেশটিকে দরিদ্র করে রেখেছে।

মালাবি : আয়তন ১ লাখ ১৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা ১ কোটি ৬৪ লাখ। রাজধানী লাইউঙ্গ। দেশটি পৃথিবীর চতুর্থ দরিদ্র দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৬৪ সালে স্বাধীনতা অর্জন করার পরও হানাহানি ও দাঙ্গা দেশটিকে দরিদ্র করে রেখেছে।

লাইবেরিয়া : আয়তন ১ লাখ ১১ হাজার ৩৬৯ বর্গ কি.মি.। জনসংখ্যা ৪৫ লাখ, রাজধানী মনরোভিয়া। আফ্রিকার এই সুন্দর দেশটি পৃথিবীর পঞ্চম দরিদ্র দেশ। ধর্মীয় হানাহানি, আদিবাসী দ্বন্দ্ব এর জন্য দায়ী।

 

ফিরছে সুদিন

আফ্রিকা পৃথিবীর অন্যতম খনিজ সম্পদে স্বয়ং সম্পূর্ণ মহাদেশ হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ব অর্থনীতিতে আফ্রিকা বেশ পিছিয়ে। এই পিছিয়ে থাকার পেছনে রয়েছে গণহত্যা ও প্রাকৃতিক নানা দুর্ভিক্ষ। কালো-সাদার মারামারি ও বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলা গোটা আফ্রিকাকে দারিদ্র্য থেকে বের হতে দিচ্ছে না। আফ্রিকা বিশ্বের দরিদ্রতম মহাদেশ। বর্তমানে আফ্রিকার ৫৪টি  রাষ্ট্রে মোট প্রায় ৮৯ কোটি লোকের বাস। এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ কৃষিকাজ করেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে সেই আদিকাল থেকেই। এক সময় আমেরিকানদের কয়েক প্রজন্ম আফ্রিকাকে কেবল দয়াদাক্ষিণ্যই দেখিয়েছিল। যদিও মহাদেশটির অংশবিশেষ বিগত কয়েক বছরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে সেই দয়াদাক্ষিণ্যকে দূরে ঠেলে দিয়েছে। জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন রিপোর্টের ১৭৫টি দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন স্থানে অবস্থান করছে আফ্রিকার ২৫টি দেশ। এর মূল কারণ ছিল রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সন্ত্রাসী হামলা। আফ্রিকা উপনিবেশকরণের পর ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয় এবং বিভিন্ন দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। তাতেই পুরো আফ্রিকার অর্থনীতি খারাপের দিকে মোড় নেয়। রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতি আফ্রিকার অর্থনীতির দৈন্যতায় ইন্ধন জুগিয়েছে। এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর তুলনায় আফ্রিকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মাথাপিছু আয় এবং অন্য সমস্ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিমূলক সূচকে হয় থেমে আছে নয় পিছিয়ে পড়েছে। দরিদ্রতার কারণে আয়ু কমে গেছে, সহিংসতা ও অস্থিরতা বেড়ে গেছে এবং অর্থনীতি আরও পিছিয়ে  পড়েছে। বিগত বছরগুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে আফ্রিকান দেশগুলোর উন্নতির বহু উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেগুলো ব্যর্থ হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক তথ্য থেকে দেখা যায়, মহাদেশের অংশবিশেষ, বিশেষ করে সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা, বাকি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জন শুরু করেছে। ২০০১ থেকে ২০১০—এ সময় বিশ্বের সেরা ১০টি দ্রুত বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির ৬টিই ছিল এ মহাদেশের। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলছে, ২০১১ থেকে ২০১৫, এ সময়ে সেরা দ্রুত বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির তালিকায় আফ্রিকান প্রতিনিধিদের সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াবে সাত। আফ্রিকার সবচেয়ে দ্রুত প্রবৃদ্ধিশীল অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার বিশ্ব গড়ের চেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি। ২০০৭ সালে সবচেয়ে দ্রুত প্রবৃদ্ধিশীল অর্থনীতিগুলোর মধ্যে আছে মৌরিতানিয়া। কিন্তু এখনো দুর্নীতি, নিপীড়নমূলক শাসন এবং ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে প্রতিযোগিতা না থাকায় তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যকে সম্প্রসারিত করতে পারছে না আফ্রিকা। বিশ্ব ব্যাংকের ২০১৩ সালের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, সোয়াজিল্যান্ডে একটি কোম্পানি খুলতে গেলে সম্পন্ন করতে হয় ১২টি প্রক্রিয়া এবং সে জন্য সময় লাগে কয়েক বছর। তথাপি আফ্রিকার প্রায় দেশ উঠে পড়ে লেগেছে ব্যবসায় পরিবেশ সৃষ্টির। রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও ইথিওপিয়া ও রুয়ান্ডা জনগণের স্বাস্থ্য ও জীবনমান উন্নয়নে বেশ ভালো কাজ করছে। হয়তো এক সময় পুরোনো এই দরিদ্রতা এবং অবহেলিত জীবনকে পেছনে ফেলে আফ্রিকাও এগিয়ে আসবে বিশ্বের সাবলম্বী দেশের তালিকায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর