শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
বিজনেস ইনসাইডার-এর চোখে

আমেরিকার শীর্ষ পাঁচ ধনী

আমেরিকার শীর্ষ পাঁচ ধনী

বিশ্বের ক্ষমতাধর ও উন্নত দেশগুলোর একটি যুক্তরাষ্ট্র। ব্যবসা-বাণিজ্যেও তারা বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখে। বিশ্বের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দুতে শেকড় বিছিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার, ই-মার্কেট ও টেকনোলজি ব্যবসা শক্তিশালী বলেই ধনকুবেরদের মেলা ওই দেশে। গত এক দশকে মার্কিন অর্থনীতি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা-সংক্রান্ত অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘বিজনেস ইনসাইডার’-এর প্রকাশিত তালিকা ধরে আমেরিকার শীর্ষ ধনীদের নিয়ে লিখেছেন— তানভীর আহমেদ ও তানিয়া তুষ্টি

 

পৃথিবীর শীর্ষ ধনী বিল গেটস

পৃথিবীর শীর্ষ ধনী বিল গেটসের বয়স এখন ৬১। মোট সম্পদের পরিমাণ ৮৫.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কম্পিউটিং জগতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সূচনা হয়েছে তার হাতেই। মাইক্রোসফটের মাধ্যমে বিল গেটস  গোটা বিশ্বের চেহারাই বদলে দিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের সিয়াটলে জন্ম তার। ১৩ বছর বয়সে বিল গেটস লেকসাইড স্কুলে ভর্তি হন। তখন থেকেই প্রোগ্রামিংয়ের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ পায়। তার আগ্রহ দেখে স্কুলের শিক্ষকরাই প্রোগ্রামিং অনুশীলনের ব্যবস্থা করে দেন। স্কুলেই তিনি প্রথম প্রোগ্রাম তৈরি করেন। লেকসাইড স্কুল থেকে ১৯৭৩ সালে পাস করেন বিল গেটস। তারপর তিনি স্যাট পরীক্ষায় ১৬০০ এর মধ্যে ১৫৯০ নম্বর পেয়ে তার মেধার প্রমাণ দেন। বাবা-মার ইচ্ছা ছিল ছেলে আইনজীবী হবে। কিন্তু পড়াশোনার চেয়ে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের প্রতিই তার আগ্রহ ছিল বেশি। আইন নিয়ে পড়াশোনা ছেড়ে তিনি সময় দিতেন কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে। এরপর তিনি হার্ভার্ড কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু তখন পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। তিনি ড্রপ আউট হন। অবশ্য হার্ভার্ডে পড়ার সময়ই বিল গেটস ও তার বন্ধু পল অ্যালেন ‘বেসিক ফর দ্য ফাস্ট মাইক্রোকম্পিউটার’ নামে একটি কম্পিউটারের ভাষা নিয়ে কাজ শুরু করেন। এখান থেকেই যাত্রা শুরু।  ১৯৭৫ সালে বিল গেটস ও তার বন্ধু মিলে তৈরি করেন মাইক্রোসফট নামে সফটওয়্যার কোম্পানি। মাইক্রোসফট শুরুর দিকে অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করত না। তাদের প্রথম পণ্য ছিল ‘মাইক্রোসফট বেসিক’ নামক প্রোগ্রামিং ভাষা। অ্যাপল ২ এবং কমোডোর ৬৪- ইত্যাদি জনপ্রিয় কম্পিউটারে এই  প্রোগ্রামিং ভাষাটি ব্যবহূত হয়। ১৯৮০ সালে আইবিএমের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ শুরু করে মাইক্রোসফট। উত্তরাধিকারী কোনো সম্পদ ছাড়াই বিল গেটস নিজের যোগ্যতা ও পরিশ্রমে ৩১ বছর বয়সেই বিলিয়নিয়ার হন। এখন তিনি যদি  প্রতিদিন ১০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ করেন তবে তার সম্পদ শেষ হতে ২১৮ বছর লেগে যাবে। শুধু মুনাফা থেকেই বিল গেটস প্রতিদিন আয় করেন ১১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফামের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ২৫ বছরের মধ্যে প্রথম লাখ কোটিপতি পেতে যাচ্ছে বিশ্ব। এ সময়ে বিল গেটসের সম্পদের পরিমাণ ছাড়াবে এক ট্রিলিয়ন ডলার (১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি)। এত বিপুল সম্পদ থাকার পরও তিনি বিলাসী জীবনযাপন করেন না।

বিল গেটস ও তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস ২০০০ সালে ৩৪. দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়ে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্বের খাদ্য, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রের নানা সমস্যা দূর করার জন্য কাজ করে আসছে সংগঠনটি। প্রতিবছরই বিপুল পরিমাণ অর্থ দান করে থাকেন তিনি। বর্তমানে বিল গেটসের বিভিন্ন রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ রয়েছে এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বাইরের বিভিন্ন  প্রতিষ্ঠান যেমন কানাডিয়ান ন্যাশনাল রেলওয়ে, অটোনেশন ইনকরপোরেশন, রিপাবলিক সার্ভিস ইনকরপোরেশন  ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের শেয়ার রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যে অর্থ আসে তা দিয়েই গেটসের দাতব্য খরচ উঠে আসে। বিল গেটস তার দাতব্য প্রতিষ্ঠান বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে ৩ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার দান করেছেন।

তার মৃত্যুর পর এত সম্পদের মালিকানা কে পাবে? এর উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, অঢেল অর্থ-সম্পদের বেশির ভাগই নিজের সন্তানদের না দিয়ে দান করে দেবেন। তার সম্পদ থেকে তিন সন্তান সর্বোচ্চ এক কোটি মার্কিন ডলার করে পাবেন। বাকি সব টাকাই চলে যাবে দাতব্য প্রতিষ্ঠানে।

 

 

ওয়ারেন বাফেট : হকার থেকে ধনকুবের

দরিদ্র পরিবারে জন্ম তার। ছোটবেলা থেকেই টাকা-পয়সা রোজগারের দিকে ঝুঁকেছিলেন তিনি। কাজ করেছেন দাদার মুদি দোকানে। স্কুলপড়ুয়া এই বালক কোমল পানীয় বিক্রি করেছেন, ম্যাগাজিন বিক্রি করেছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিক্রি করেছেন চুইংগাম, চকলেট। এই হকার বালকটিই অর্থ-সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। তিনি ওয়ারেন বাফেট। এই মার্কিন ব্যবসায়ী এখন বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী ব্যক্তি। ৮৬ বছর বয়সী বাফেটের এখন মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৭.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তার ব্যবসা ছড়িয়ে আছে নানা দিকে। বিভিন্ন ব্যবসার শেয়ার কিনে সম্পদের প্রাচুর্যে তিনি নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ এই বিনিয়োগকারী মাত্র দশ বছর বয়সে নিউইয়র্কে এসেছিলেন স্টক এক্সচেঞ্জ ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা পেতে। অনেকেই জেনে বিস্মিত হবেন, ১১ বছর বয়সেই তিনি শেয়ার কিনেছিলেন। হাইস্কুল পড়ুয়া বাফেট বাবার সম্পত্তি কাজে লাগিয়ে একটি খামার কেনেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি একটি পিনবল মেশিন কিনেছিলেন। ব্যবসায় এভাবেই তিনি জড়িয়ে পড়েন। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি পড়াশোনাও চালিয়ে যান। ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা-লিঙ্কন থেকে ব্যবসায়  প্রশাসনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। স্নাতকোত্তর করেছেন কলম্বিয়া বিজনেস স্কুলে। ১৯৫১ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন বাফেট। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৪ পর্যন্ত বাফেট-ফক অ্যান্ড কোম্পানিতে ইনভেস্টম্যান সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করেন। নিউইয়র্কে গ্রাহাম-নিউম্যান করপোরেশনে সিকিউরিটি এনালিস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ পর্যন্ত। এ ছাড়া তিনি বাফেট পার্টনারশিপ লি., বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ইনস্যুরেন্সসহ বিভিন্ন সংস্থায় চাকরি করেছেন। ১৯৬২ সালে বাফেট মিলিয়নিয়ারে পরিণত হন। বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে নামের একটি টেক্সটাইল কারখানার প্রতিটি শেয়ার তিনি ৭.৬০ ডলারে জনগণের মাঝে ছেড়ে দেন। একপর্যায়ে ১৯৬৫ সালে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে কোম্পানি ১৪.৮৬ ডলার দেয়। ১৯৭৯ সালে তার বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে প্রতিটি শেয়ারের জন্য ৭৭৫ ডলার দিয়ে ব্যবসা করতে থাকে। এই শেয়ারের দাম ১৩১০ ডলার পর্যন্ত ওঠে। এ সময়ে তার নিট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬২ কোটি ডলার। ২০০৮ সালে বাফেট বিশ্বজুড়ে চমক হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি মাইক্রোসফট গুরু বিল গেটসকে হটিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী মানুষে পরিণত হন। ফোর্বসের মতে, তখন তার সম্পদের পরিমাণ ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার। ব্যবসায়িক ব্যর্থতা তাকেও ছুঁয়ে গেছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ওয়ারেন বাফেট লোকসান করেছেন ১২০০ কোটি ডলার। এই ধনকুবের আমেরিকার রাজনীতিতেও বেশ প্রভাব রাখেন।

 

অনলাইন ‘শাহেনশাহ’

 

মাত্র এক দিনের জন্য বিশ্বের শীর্ষ ধনী হয়েছিলেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। ২৭ জুলাই ২০১৭ অ্যামাজনের শেয়ারের দাম ২.৫ শতাংশ বেড়ে গেলে তার সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়ায় ৯১.৪ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বের সেরা ধনী বিল গেটসের থেকেও তার সম্পদ বেশি ছিল ১.৪ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু এক দিন পর দুজনই আগের অবস্থানে ফিরে যান। বিজনেস ইনসাইডারের মার্চ মাসে করা এই রিপোর্ট অনুযায়ী তার সম্পদের পরিমাণ ৭৩.১ বিলিয়ন হলেও জুলাইয়ে দাঁড়ায় ৮৪.৭ বিলিয়ন ডলারে। বেজোসের জন্ম ১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি নিউ মেক্সিকোতে। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি তড়িৎ প্রকৌশল ও কম্পিউটার বিজ্ঞানে বিএ পাস করেন। জেফ বেজোস ১৯৮৬ সালে প্রথম চাকরি নেন ফিটেল নামের একটি স্টার্টআপ টেলিকম প্রতিষ্ঠানে। এ ধরনের আরও কিছু চাকরি করার পর ১৯৯৪ সালে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠা করেন। বেজোস জানিয়েছিলেন, বিশ্বের সেরা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের পরিকল্পনা তিনি নিউইয়র্ক থেকে সিয়াটলে গাড়ি চালানোর সময় করেছিলেন। এক দিনের জন্য ধনী হলেও জেফ বেজোস নিয়মিত সেরা ১০০ সিইও বা প্রধান নির্বাহীর তালিকায় থাকেন। বেজোস সবসময় টু পিত্জা রুল অনুসরণ করেন। তার বিশ্বাস, ছোট টিম অনেক বেশি দক্ষ হয়। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন একদম পছন্দ করেন না। এখানে কর্মীরা চার থেকে ছয় পৃষ্ঠার মেমো আকারে তাদের প্রপোজাল দেয়। তিনি নিজে বই পড়তে ভালোবাসেন এবং কর্মীদের বই পড়তে উৎসাহিত করেন। জেফ বেজোস স্পেস ভ্রমণে সবচেয়ে বেশি উৎসাহী। ২০০৩ সালে একটি মারাত্মক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়ে তা ব্যবহার প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের স্বত্বাধিকারী হলেও তিনি কখনো সম্পাদকীয় নির্দেশনায় যুক্ত হবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। সিয়াটলে তার পারিবারিক বাড়ি। সেখানে প্রতিদিন সাড়ে চার হাজার পথচারীকে কলা দিয়ে আপ্যায়ন করেন।

 

ফেসবুক দিয়ে বদলে দিলেন পৃথিবী

অবসরে জমিয়ে আড্ডা, নতুন ও পুরনো বন্ধুর খোঁজ রাখা আর সব ধরনের আপডেট পেতে প্রথমেই আসে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের নাম। ফেসবুকের জনপ্রিয়তা যেমন হু-হু করে বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে এর প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গের সম্পদের পরিমাণ। তিনি একজন আমেরিকান কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও সফটওয়্যার ডেভেলপার। ২০০৪ সালে কয়েকজন বন্ধু মিলে প্রতিষ্ঠা করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। কলেজে পড়াশোনা বাদ দিয়ে ফেসবুকের পেছনে সময় দেওয়া ছিল ১৯ বছর বয়সী এই ছেলেটির কাছে নেশার মতো। মার্ক জুকারবার্গ এখন বিশ্বের চতুর্থ ধনী ব্যক্তি। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ৫৮.৫ বিলিয়ন ডলার। মাত্র ৩২ বছর বয়সে তিনি বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হন। মার্ক ১৯৮৪ সালে নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন। চার ভাইবোনের মাঝে তিনিই বড়। ২০১২ সালে সহপাঠী প্রিসিলা চ্যানকে জীবনসঙ্গী করে নেন। জনহিতৈষী কাজের জন্য তার সুনাম রয়েছে। তিনি তার সম্পদের ৯৯ শতাংশ চ্যারিটিতে দান করার ঘোষণা দেন। ২০১৫ সালে ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দান করেন তিনি। ২০১৭ সালের জুন মাসে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২ বিলিয়ন। নিঃসন্দেহে এটি একটি বিরাট সংখ্যা। সফল এই ব্যক্তি সম্পর্কে মানুষের কতই না জানার আগ্রহ থাকে। সফল এই উদ্যোক্তা অন্য লিজেন্ডদের মতো দীর্ঘ সময় কাজ করেন না। তিনি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মতোই প্রতি সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ ঘণ্টা কাজ করেন। ফেসবুকের বড় পদগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে জুকারবার্গ শুধু নিজের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দেন। এখানে অন্য কারও সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। মার্ক জুকারবার্গ সম্পর্কে একটি মজার তথ্য সবাইকে বেশ চমত্কৃত করে। আর সেটি হলো তিনি বর্ণান্ধ। সে কারণেই অধিকাংশ সময় তাকে ছাই রঙা টি-শার্ট ও নীল জিন্স পরতে দেখা যায়। তার ওয়্যারডোভও ভর্তি শুধু ছাই রঙের টি-শার্ট-নীল জিন্সে। অন্য কোনো রঙের পোশাক পরলে তিনি নাকি দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যান, অফিসে মন দিয়ে কাজ করতে পারেন না।

 

দাপুটে ব্যবসায়ী দুই ভাই

চার্লস কোচ ও ডেভিড কোচ আমেরিকান শীর্ষ ধনী ব্যবসায়ী। বড় ভাই চার্লস কোচের জন্ম ১৯৩৫ সালের ১ নভেম্বর। কোচ ইন্ডাস্ট্রির সহ-মালিক এবং চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ৮২ বছরের চার্লস কোচ। দানবীর হিসেবে ডেভিড কোচের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। লিঙ্কন সেন্টার, নিউইয়র্ক প্রেসব্রাইটান হাসপাতাল, আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রিসহ তিনি বেশ কিছু সামাজিক সংগঠনের তহবিল জোগান। অন্যদিকে তার সহোদর ডেভিড কোচ কোম্পানিটির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট। তার জন্ম ১৯৪০ সালের ৩ মে। দুই ভাইয়ের জন্মস্থান যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস অঙ্গরাজ্যের উইচিতা শহর। ৭৭ বছরের ডেভিড কোচও ভাইয়ের মতো দাপুটে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনিও মানবমিত্র, রাজনৈতিক কর্মী এবং একজন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে দুই ভাই পড়াশোনা করেন। বর্তমানে তারা যুক্তরাষ্ট্রের খনি, জ্বালানি ও রাসায়নিক খাতে কনসালট্যান্টভিত্তিক কোচ শিল্প গোষ্ঠীটির দুই হোতা। কোম্পানির বর্তমান মূল্য ১০০ বিলিয়ন ডলার। চার্লস ও ডেভিড উভয়ে কোম্পানির ৮৪% মালিকানার স্বত্বাধিকারী। ফলে তাদের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৭.৯ বিলিয়নের মতো। দুই ভাই বাবার কাছ থেকে ব্যবসাটি উত্তরাধিকার সূত্রে পান। এরপর সেটিকে আরও বেশি সম্প্রসারিত করেন। বর্তমানে কোচ ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবসায় যোগ হয়েছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ সরঞ্জাম, প্রযুক্তির উন্নয়ন, পলিমার অ্যান্ড ফাইবার, সার, পণ্য ট্রেডিং ও সেবা প্রদান, বন এবং ভোক্তাপণ্য। তাদের পণ্যগুলো বাজারে নামকরা ব্র্যান্ডের গুরুত্ব পায়। যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় প্রাইভেট কোম্পানি এটি। কোচের ব্যবসায় দর্শন হলো বাজারভিত্তিক ব্যবস্থাপনা; ২০০৭ সালে বিশদভাবে তুলে ধরেন তার বই ‘সায়েন্স অব সাকসেস’-এ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর