বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

সার্কাস ইতিহাসে ভয়ঙ্কর যত দুর্ঘটনা

সাইফ ইমন

সার্কাসের পশুপাখি আর মানুষগুলোর জীবন কতটাইনা রোমাঞ্চে পরিপূর্ণ! কিন্তু বাইরে থেকে যেমনই মনে হোক আসলে তা ঠিক ততটাই বিপজ্জনক। একেকটি সার্কাসের তাঁবু মানেই সাধারণের মনে যেমন অসীম আগ্রহ ঠিক তেমনি সার্কাসের কর্মচারীদের জন্য তা জীবন আর মৃত্যুকে দেখা। যা বিভীষিকাময় ইতিহাসও হয়ে যায়। বিশ্বজুড়ে নানা সময় ঘটে গেছে সার্কাসকেন্দ্রিক নানা ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এমনই কিছু ঘটনা নিয়ে আজকের রকমারি—

 

ফাঁসির দড়িতে হাতি

১৯১৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর ইতিহাসে বিরলতম ও ন্যক্কারজনক একটি ঘটনা ঘটে। এ দিন মানব সভ্যতার ইতিহাসে প্রথম এবং শেষ কোনো হাতিকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ঘটনাটি ঘটে আমেরিকার শহর টেনিসে। সেখানকার এক সার্কাস দলে কাজ করত মেরি নামের এক হাতি। মেরি সার্কাসে দুর্দান্ত সব কসরত করে মানুষকে অভিভূত করে রাখত। মেরিকে একনজর দেখতেই সার্কাসে ভিড় হতো অনেক বেশি। আর এই সার্কাস দলের নাম ছিল চার্লি স্পার্কস। হাতি সব সময়ই তার মাহুতের কথামতো চলে। চার্লি স্পার্কস দলের মালিক হাতিদের পুরনো মাহুতকে অপসারণ করে নতুন কর্মচারী রেড এল্ড্রিক্সকে নিয়োগ দিয়েছিলেন হাতিদের দেখাশোনা করতে। এই মাহুতই হাতিদের নিয়ে সার্কাস দেখাতেন। রেড এল্ড্রিক্স হাতিদের বিষয়ে অতটা অভিজ্ঞ ছিলেন না। এ ছাড়া নতুন কর্মচারী হওয়ায় তিনি হাতিদের আচরণ-ইচ্ছা এসবও ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারেননি তখনো। ফলে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। একদিন খেলা চলার সময় রেড এল্ড্রিক্স মেরির উপরে বসে সার্কাস দেখাচ্ছিলেন। সবকিছু তখনো ঠিকঠাকই চলছিল। মেরি দুই পা তুলে পেছনের পায়ে ভর দিয়ে দর্শকদের মনোরঞ্জন করে যাচ্ছিল। কিন্তু মাহুত রেড এল্ড্রিক্স অযথাই মেরির কানে লোহার শিক দিয়ে আঘাত করে যাচ্ছিলেন। এক সময় এতে হাতি মেরি ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক সময় মেজাজ বিগড়ে যায়। তারপর মেরি রেড এল্ড্রিক্সকে টেনে নিচে নামিয়ে পা দিয়ে পিষে মেরে ফেলে। হঠাৎ এ ঘটনায় সমগ্র সার্কাস প্রাঙ্গণ এবং শহরজুড়ে মেরিবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। তখন সবাই এক অদ্ভুত দাবি নিয়ে এ আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সবার দাবি হত্যাকারী অবুঝ হাতিকে সাজা দিতে হবে। তা না হলে আন্দোলন থামবে না। একটি হাতি থেকে একজন মানুষের মূল্য অনেক বেশি। কিন্তু কারও একবারও মনে হয়নি এ কারণে তাকে সাজা দেওয়া যায় না। কারণ হাতির নিশ্চয়ই মানুষের মতো ভালোমন্দ বিচার করার ক্ষমতা নেই। কেউই চার্লি স্পার্কস-এর কোনো শো দেখতে যাচ্ছিল না। সার্কাস দলটিই এক সময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। সার্কাস মালিক কোনোমতেই জনগণকে বোঝাতে পারছিলেন না রেড এল্ড্রিক্স হত্যায় মেরির দোষ যতটা তার চেয়ে বেশি রেড মেরিকে রাগিয়ে দেওয়া। হাতি  মেরি একটি অবলা প্রাণী তার দোষ থাকতে পারে না। কিন্তু সে সময়কার মানুষ তা বুঝতে চাইল না। শেষে বাধ্য হয়ে সার্কাস মালিক সিদ্ধান্ত নেন মেরিকে হত্যা করার। কিন্তু বিশালদেহী এশিয়ান এই হাতি এতই বড় ছিল তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা মোটেই সহজ ছিল না। শেষে সিদ্ধান্ত হয় মেরিকে ক্রেনে ঝুলিয়ে ফাঁসি দেওয়া হবে। মেরিকে অবশেষে বিশাল এক চেইন দিয়ে ক্রেনের হুকে বাঁধা হলো। ক্রেন যেই চালু করা হয় মুহূর্তেই ক্রেনের চেইন পড়ে যায়। তার মেরুদণ্ড ও পা ভেঙে যায়, গলা কেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। পরে আবারও মেরিকে ক্রেনের চেইনের সঙ্গে বেঁধে ফাঁসি দেওয়া হয়। ফাঁসির চেইনে ছটফট করেই মারা যায় মেরি।

 

হঠাৎ সিংহের আক্রমণ

একজন বিখ্যাত ও সাহসী লায়ন টেমার ছিলেন থমাস ম্যাকার্ট। এ কাজটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। হিংস্র বন্য পশুকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ কাজ নয় মোটেই। তবুও মানুষকে আনন্দ দেওয়ার জন্য কেউ কেউ এ কাজটি করেন। এমনই একজন ছিলেন থমাস ম্যাকার্ট। ১৮৭২ সালের ৩ জানুয়ারি তিনি একজন লায়ন টেমার হিসেবে জীবনের শেষ পারফর্মটি করেন ল্যাঙ্কাশায়ারের বল্টনে। তখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিলেন এই থমাস ম্যাকার্ট। সার্কাসে পারফরম্যান্সের সময় থমাসের টাইরেন্ট নামের একটি সিংহ হঠাৎ করেই তাকে আক্রমণ করে বসে। এ সময় প্রায় পাঁচ হাজার দর্শক পারফরম্যান্সটি দেখছিলেন। টাইরেন্টের দেখাদেখি সেখানে উপস্থিত আরও তিনটি সিংহও উত্তেজিত হয়ে থমাসকে ঘিরে ধরে আক্রমণ করে। দর্শক সারিতে বসা সবার সামনে থমাসের মাথার খুলি তার শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে সিংহের দল। তিনি শো চলাকালীন সময়েই মৃত্যুবরণ করেন।

 

ছিল না সেইফটি বেল্ট!

‘দ্য ফ্লাইং ওলেনডাস’ সার্কাস ইতিহাসের অন্যতম প্রবীণ ও জনপ্রিয় সার্কাস পার্টি। ১৯৬২ সালে ফ্লাইং ওলেনডাস সার্কাস দল এক বিভীষিকাময় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। তাদের একটি পারফরম্যান্সের নাম হচ্ছে ‘সেভেন পারসন চেয়ার পিরামিড’। এই সার্কাস পার্টির কর্ণধার কার্ল ওলেনডাস তার স্ত্রী হেলেন ও ভাই হেরমানসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে পারফর্ম করতেন।  যেখানে সাতজন মানুষ মাটি থেকে ৩২ ফুট উপরে শূন্যে একটি শক্ত দড়ির ওপর পারফর্ম করেন কোনো প্রকার সেইফটি বেল্ট ছাড়াই। সেদিন পারফরম্যান্সের সময় দলনেতা হুট করেই তাল হারিয়ে ফেলেন এবং তিনজন পারফর্মার নিচে পড়ে যান। কার্ল ওলেনডাসের মেয়ের জামাই এবং ভাতিজা সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে মারা যান আর তার দত্তক নেওয়া এক ছেলে ছিল যার কোমর ভেঙে যায় সারা জীবনের জন্য। এই বিভীষিকাময় দুর্ঘটনা তাদের পুরো পরিবারকে একদম মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করে দেয়। একই পরিবারের সদস্য হওয়ায় তখন দুর্ঘটনাটি ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছিল সবাইকে।

 

দ্য ডুলথ লিনচিংস কলঙ্কিত অধ্যায়

১৯২০ সালে সার্কাস ইতিহাসের সবচেয়ে ন্যক্কারজনক দুর্ঘটনাটি ঘটে। এটা শুধু সার্কাসের দুর্ঘটনাই নয়, বরং গোটা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসেই একটা কলঙ্কিত অধ্যায়ের সূচনা করে এ দুর্ঘটনা। ১৯২০ সালের ১৪ জুন ডুলথ মিনেসোটাতে জেমস রবিনসন সার্কাসের আইরিনি তাস্কেন নামে এক মেয়ে অভিযোগ করে তাকে বন্দুকের মুখে রেখে সার্কাসের ছয়জন আফ্রিকান-আমেরিকান কর্মচারী ধর্ষণ করেন। সেই অভিযোগের ফলে তত্ক্ষণাৎ ছয়জন কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এই ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই পাঁচ থেকে দশ হাজার লোকের একটি দল গঠন করে জেল ভেঙে সেই ছয়জনকে বের করে আনা হয়। তাদের বেধড়ক পিটিয়ে পরবর্তীতে ল্যাম্পপোস্টে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। অথচ পরবর্তীতে জানা যায় ওই মেয়ের সঙ্গে কোনো ধর্ষণের ঘটনাই ঘটেনি। ডাক্তারি পরীক্ষায় কোনো প্রকার ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি।

 

হার্টফোর্ড সার্কাসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

১৯৪৪ সালের ৬ জুলাই। অন্যসব দিনের মতো সার্কাস দেখানোর প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু হুট করেই ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেল। এক তাঁবুর ভিতরে ছোট পরিসরের সেই আগুন মুহূর্তেই চারপাশ ছেয়ে ফেলল। আগুন! আগুন!

চিৎকার আর কালো ধোঁয়ায় আতঙ্কিত মানুষ যে যার জীবন নিয়ে দৌড়াতে শুরু করল। সাত হাজার মানুষের এই সমাবেশ চোখের পলকে ভয়ার্ত মানুষের কোলাহলে পরিণত হলো। আগুনের ভয়াবহতা এতটাই বিশাল ছিল যে, এতে ১৬৯ জন মারা যান এবং ৭০০ মানুষ আগুনে দগ্ধ হন।

 

 

ট্রেনের চালক ঘুমে!

১৯১৮ সালের ঘটনা। হেজেনব্যাক-ওয়ালেক সার্কাস চলছিল ইন্ডিয়ানার পথে। কৌতূহলী দর্শকদের অপেক্ষা ছিল তাদের সার্কাস দেখার জন্য। কিন্তু রাত ৪টার দিকে সব এলোমেলো হয়ে গেল। সার্কাস দলের ট্রেন থামল এই মাঝরাতে। কাঠের সেই ট্রেনে সার্কাসের সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। সেই সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন ট্রেনের চালকও! চালক যখন ঘুমে তখন দুর্ঘটনার দূত জেগে উঠতে দেরি করেনি। ট্রেন রাতের আঁধারে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল। সামনে সতর্কবার্তা থাকলেও চালক ঘুমিয়ে থাকায় তা কোনো কাজেই এলো না। ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়ে সার্কাস দলের ৮৮ জন মারা যান। আহত হন ১২৭ জন।

 

দেসি ইস্পানার মৃত্যু

সার্কাস দুর্ঘটনার ইতিহাসে দুঃখজনক একটি ঘটনা হলো দেসি ইস্পানার মৃত্যু। ৩০ ফুট উঁচু থেকে নিচে কংক্রিটের ফ্লোরে পড়ে গিয়ে মারা যান। দেসি ইস্পানা বুলগেরিয়ান আমেরিকান শিফন অ্যাক্রোবেট পারফর্মার। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বুকে তার নাম রয়েছে। অসাধারণ কলাকৌশলে দর্শকদের মোহিত করতেন তিনি। এখনকার অনেক অ্যাক্রোবেট পারফর্মারদের আইকনও দেসি ইস্পানা। ২০০৪ সালে তিনি রিংলিং ব্রাদার্স অ্যান্ড বারনুম অ্যান্ড বেইলি সার্কাস শোতে পারফর্ম করছিলেন। এমন সময় ঘটে যায় দুর্ঘটনা। ইস্পানা ৩০ ফুট উঁচুতে এরিয়াল অ্যাক্ট করার সময় টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে নিচে পড়ে যান। তার মাথা নিচের দিকে থাকায় মারাত্মকভাবে আঘাত পান। কংক্রিটের ফ্লোরে পড়ে তার মাথা ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাকে হাসপাতালে দ্রুত স্থানান্তর করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। হাসপাতালেই মারা যান দেসি ইস্পানা।

 

 

ট্রেনের ব্রেক ফেল!

সার্কাস ইতিহাসের আরও একটি করুণ দুর্ঘটনা ওয়ালাস ব্রাদার্স ডিজাস্টার। ১৯০৩ সালে ওয়ালাস ব্রাদার্সের পৃথক দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অনেক সার্কাস কর্মী ও পশুপাখির জীবনের ইতি ঘটে।

সার্কাস ট্রেনটি যখন রেললাইন ধরে এগিয়ে আসছিল তখন দ্বিতীয় ট্রেনটির চালক তা দেখতে পান, কিন্তু তার কিছুই করার ছিল না। ট্রেনের ব্রেক কাজ করছিল না। ফলে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এ ঘটনায় ৩০ জন সার্কাস কর্মী নিহত হন এবং আরও ২৭ জন মারাত্মকভাবে আহত হন। দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় সার্কাসের বেশ কিছু প্রাণী। এদের মধ্যে ছিল আরবীয় ঘোড়া, বিগ ডেন যা বড় প্রজাতির কুকুরের জাত, উট এবং মোড নামের একটি হাতি।

 

 

ভয়াবহ যান্ত্রিক ত্রুটি

সার্কাসে ট্র্যাপিজ সবচেয়ে চমকপ্রদ একটি খেলা। একই সঙ্গে এটি সার্কাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর দুঃসাহসিক ও বিপজ্জনক খেলা। এই খেলার জন্য  পূর্বশর্ত হচ্ছে অসীম শারীরিক শক্তি ও ফ্লেক্সিবিলিটি। ফ্রেড লিজিলি ও বিলি মিলসন এই খেলায় ছিলেন বিশেষ পারদর্শী।

১৮৭২ সালের সেপ্টেম্বরে দুজন বিখ্যাত ট্র্যাপিজ শিল্পী পারফরম্যান্স চলাকালীন যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে নিচে জর্জ নামের আরেকজন শিল্পীর ওপর পড়ে যান। তিনজন সার্কাস আর্টিস্টই মারাত্মক আঘাত পান। তবে লিজিলি কিছুটা কম ক্ষতিগ্রস্ত হন। কিন্তু বিলির পাঁজর ভেঙে যায় এবং জর্জের অবস্থা ছিল সবচেয়ে বর্ণনাতীত।

 

 

 

আগুনের কবলে ক্লিভল্যান্ড সার্কাস দল

সার্কাস দলের কোনো সদস্যের মৃত্যু না ঘটলেও বিশ্বে অন্যতম ভয়ানক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল ক্লিভল্যান্ড সার্কাস দল। সার্কাস দেখাতে গিয়ে নয়, সার্কাস দলের প্রশিক্ষিত প্রাণীরাই এই দুর্ঘটনার কারণ হয়। অজানা এক কারণে আগুনের তাপ ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে সার্কাস দলের প্রাণীদের আস্তাবলে।

আগুনের সূত্রপাত হয় রিংলিং ব্রাদার্স অ্যান্ড বার্নাম ও বেললি সার্কাস দলের ম্যানেজারের তাঁবুতে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় সব প্রাণীকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব ছিল। ৯টি খাঁচায় ছিল সিংহ, বাঘ, জেব্রাসহ অন্যান্য প্রাণী। প্রায় ২৬টি প্রাণী আগুনে দগ্ধ হলেও কোনোটিই মারা যায়নি।

সর্বশেষ খবর