রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

কোটি টাকার ফ্যাশন

কথায় আছে, টাকা হাতের ময়লা! টাকা যাদের কাছে, তাদের কাছে ব্যাপারটা হয়তো তাই-ই। হাজার কোটিপতির লাইফস্টাইল-ফ্যাশনে কোটি টাকা খরচের হাত দেখে এটা মেনে নিতে অসুবিধা হয় না। নিজের জন্য তারা বেছে নেন নিজের পোশাক, প্রসাধনী। দামি, বিলাসবহুল ব্র্যান্ডে অর্ডার দিয়ে তারা তৈরি করেন হীরা-জহরতে মোড়া স্যুট, জুতা, ঘড়ি, সানগ্লাস। কোটি টাকা খরচের হিসাবটা এতটাই সহজ যে, ফেস ট্রিটমেন্টে ৩০ মিনিটেই খরচ করে বসেন কোটি টাকা। হাতে পরেন নীল হীরার আংটি, দু-ফোঁটা পারফিউমের দাম পড়ে অর্ধকোটি টাকা...

তানভীর আহমেদ

কোটি টাকার ফ্যাশন

পারফিউমের প্রতি ফোঁটা লাখ টাকা

প্রতি আউন্স পারফিউমের দাম যদি ৮০ লাখ টাকারও বেশি হয়, তবে চোখ কপালে উঠবে—সেটাই স্বাভাবিক। বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও আকাঙ্ক্ষিত পারফিউমটিকে সংক্ষেপে ডাকা হয় ডিকেএনওয়াই মিলিয়ন। ২০১১ সালে বাজারে এসে পারফিউমটি বিলাসী, অভিজাত ধনকুবেরদের মন কেড়ে নেয়। বিখ্যাত অলঙ্কার ডিজাইনার মার্টিন কার্টজ এই পারফিউমটি নিজস্ব প্রক্রিয়ায় তৈরি করেন। বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পারফিউমের সংমিশ্রণে এটি তৈরি। এ ছাড়া আপেলাকৃতির পারফিউমের বোতলটি যে কারও চোখ ধাঁধিয়ে দেবে। ১৪ ক্যারেট সোনালি ও সাদা সোনায় মোড়ানো ১৮৩টি নীল কান্তমণি, ২ হাজার ৭০০ সাদা হীরা, ১.৬ ক্যারেটের ব্রাজিলিয়ান ফিরোজা, ৭.১৪ ক্যারেটের শ্রীলঙ্কান নীলকান্তমণি, ১৫টি গোলাপি অস্ট্রেলিয়া থেকে সংগ্রহ করা হীরা, চারটি গোলাপ কাটা হীরা, ৩.০৭ ক্যারেটের গোলাকার রুবি, ৪.০৩ পিয়ার সাইজের হীরা, মাথায় ২.৪৩ ক্যারেটের হলদে হীরা বসানো হয়েছে এই পারফিউমের বোতলে। সবমিলিয়ে বোতলের গায়ে মোট ২ হাজার ৯০৯টি দামি পাথর বসানো আছে। এরপরই বলতে হয় ক্লিভ ক্রিশ্চিয়ান নম্বর ওয়ানের কথা। এই পারফিউমের প্রতি আউন্স কিনতে মালিককে খরচ করতে হবে ১০ লাখ টাকারও বেশি। অভিজাত পারফিউম হিসেবে এটি রাজপরিবারে ব্যবহূত হয়ে আসছে। এখনো এর আবেদন কমেনি। বিশ্বের সবচেয়ে দামি পারফিউমের কথা উঠলে এটিকে এড়িয়ে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ২০০৫ সালে মাত্র ১০টি বোতলে বিরল এই পারফিউম ছাড়া হয় বিখ্যাত হ্যারডস স্টোর লন্ডন, যুক্তরাজ্যে ও বার্গডফ গুডম্যান স্টোর নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্রে। তখন বেশ হৈচৈ পড়ে যায়। এই পারফিউমটি যে বোতলে বাজারে ছাড়া হয় তাতে রয়েছে ৫ ক্যারেটের সাদা হীরার প্রলেপ ও ১৮ ক্যারেট খাঁটি সোনার প্রলেপ।

 

হীরা-জহরতে বোনা শাড়ি

 

শুরুতে অল্প অর্থ খরচের হাতের কথা। প্রিয় মানুষের জন্য শাড়ির যে সুন্দর উপহার আর কি হতে পারে? কিন্তু কুয়েতের এক ব্যবসায়ী চাইলেন, তার শাড়িটি হওয়া চাই গোটা দুনিয়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয়। নিজের নাম-পরিচয় গোপন রেখে তিনি হীরা-জহরতের এক শাড়ি অর্ডার করেন। চেন্নাই সিল্কের ডিরেক্টর শিবলিঙ্গম সেই শাড়ি ডিজাইনের কাজ পেলেন। ব্যবসায়ী বললেন, ‘শাড়ি ডিজাইনে আর যাই হোক টাকার চিন্তা করার দরকার নেই। আমার চাই হীরা-পান্না, মণি-মুক্তা খচিত শাড়ি। সোনা দিয়ে বোনা চাই, তাহলে সোনালি আভায় রাজকীয় গাম্ভীর্য ফুটে উঠবে। তার নির্দেশনা পেয়ে ডিজাইনার সেই শাড়ি বুনতে শুরু করলেন। চেন্নাই সিল্ক সংস্থার তৈরি করা শাড়িটির নাম ‘দ্য চেন্নাই সিল্ক’। বিশ্বের সবচেয়ে দামি শাড়ির খেতাব পেল সেটি। প্রায় ৪০ লাখ রুপি দামে সেটি বিক্রি করার কথা গিনেস কর্তৃপক্ষ জেনেছে। সেই হিসাবে, এটি দামি শাড়ির রেকর্ডও গড়ে ফেলে। কোটি টাকার হিসাবটা যার কাছে খুব সহজ, তিনি হয়তো ৪০ লাখ রুপি দামে মনোক্ষুণ্ন্ন হবেন। তবে ঘটনা তা নয়। শাড়িটি আরামদায়ক ও ওজন সহনীয় রাখতে  এতে সোনা-রুপা, হীরা-মুক্তা কম জড়ানো হয়েছে। জানতে চাইতে পারেন, কী আছে শাড়িতে? আট কেজি ওজনের এই শাড়িটিতে ৫৯ গ্রাম ৭০০ মিলিগ্রাম সোনা রয়েছে। হীরা রয়েছে ৩ ক্যারেটের উপরে। এ ছাড়াও ১২০ মিলিগ্রাম প্ল্যাটিনাম, ৫ গ্রাম রুপা, রুবি, পান্না, ক্যাটস আই, টোপাজ, মুক্তার মতো দামি পাথর এবং ধাতু দিয়ে শাড়িটির নকশা তৈরি করা হয়েছে। শাড়িটিতে বিখ্যাত শিল্পী রবি বর্মার আঁকা ছবিও বুনন করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সংস্থার ছত্রিশ জনেরও বেশি কর্মী এক বছর ধরে শাড়িটি তৈরি করেন।

 

১৬ কোটি ৫০ লাখের জুতা!

উপরের লাল টকটকে এই জুতা-জোড়াকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর জুতা। ‘সুন্দরীদের স্বপ্ন’ নামে চেনে সবাই। ডিজাইনার হ্যারি উইটসন রুবি বসিয়ে এই জুতা-জোড়া তৈরি করেন। তার প্রায় দুই মাস সময় লেগেছিল জুতায় রুবিগুলো বসাতে। রোদে এটি আগুনের মতো লাল হয়ে ওঠে। রাতে তারার মতো ঝকমক করে। জুতার দাম প্রায় আড়াই কোটি টাকা। তবে এই দাম পড়ে যায় যখন নিউজিল্যান্ডের ডিজাইনার ক্যাথি উইলসন স্বচ্ছ হীরা দিয়ে মেয়েদের জুতা তৈরি করেন। জুতার দোকানে নয়, সেই জুতা গয়নার দোকানে বিক্রির জন্য রাখা হয়। কয়েকশ হীরায় মোড়ানো সেই জুতার দাম ধরা হয় তিন কোটি ৯০ লাখ টাকা। প্রায় চার কোটি মূল্যের সেই জুতা চাঁদের আলোয় রুপালি বর্ণ ধারণ করে বলে দাবি করেন ডিজাইনার। পূর্ণিমার মতো আলো ছড়ায় বলে, অনেকে এর নাম দেন ‘ফুল মুন’ বা ‘পূর্ণিমা’। অবশ্য জুতার দাম নিয়ে চমকানোর এখানেই শেষ নয়। বিলাসবহুল পণ্য উৎপাদনকারী ব্র্যান্ড বিসিওন স্রেফ খেলার স্নিকার তৈরিতে এ ধরনের অর্থ খরচ করেছে। নীল রঙের সেই জুতায় ১৮ ক্যারেটের সোনা দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। সোনা ছাড়াও তাতে রয়েছে হীরা। নীল-সোনালি বর্ণ ঝরানো জুতার নাম করা হয়েছে ‘ফায়ার মাংকি’। জুতার পেছনে খরচ নিয়ে সর্বশেষ বিস্ময় জাগানো খবরটি খুব পুরনো নয়। গত বছরই দেখা গেছে, ১৬ কোটি টাকার বেশি দামি জুতা। আমেরিকার অন্যতম জনপ্রিয় টিভি শো ‘আমেরিকা গট ট্যালেন্ট’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ক্যানন হীরার তৈরি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে দামি জুতা পরে উপস্থিত হন। ১৪ হাজার হীরা বোনা হয়েছে এই জুতায়। অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত পর্বে সবাইকে চমকে দিতে উপস্থাপক অর্ডার দিয়ে জুতাগুলো তৈরি করান। টিভিতে প্রথমবারের মতো ১৪ হাজার হীরার টুকরো বসানো জুতা দেখে কোটি কোটি দর্শক বিস্ময়ে স্রেফ থ বনে যান।

 

তিন কোটি টাকার সানগ্লাস

আজকাল তরুণ-তরুণীদের চোখে সানগ্লাস খুব দেখা যায়। শীর্ষ ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদেরও চোখে সানগ্লাস খুব সাধারণ একটি দৃশ্য। কিন্তু তাদের চোখের এ সানগ্লাসের দাম শুনলে ব্যাপারটি অনেকের কাছেই ভিরমি খাওয়ার মতো হবে। কারণ এসব সানগ্লাসের দাম শুরুই হয়েছে ৫০ লাখের পর থেকে। বিশ্বের শীর্ষ সানগ্লাস ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে লুগানো, গোল্ড অ্যান্ড উড, বাল্গারি, কার্টায়ার, শিলস, ডোলসে অ্যান্ড গাবানা, চোপার্ড ইত্যাদি। এসব সানগ্লাসে ব্যবহার করা হয়েছে সবচেয়ে নিখুঁত কাচ। ফ্রেমে ব্যবহার করা হয়েছে হীরা ও সোনা। ধনীদের কাছে খুব জনপ্রিয় একটি সানগ্লাস ডোলসে অ্যান্ড গাবানার ২০২৭বি মডেলটি। এটার দাম প্রায় তিন কোটি টাকা। সোনার ফ্রেমের এ সানগ্লাস অনেক তারকার চোখেই দেখা যায়।

নারী সেলিব্রেটিদের চোখে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় চোপার্ড সানগ্লাস। ২৪ ক্যারেট খাঁটি সোনার ৫১টি টুকরোখচিত এ সানগ্লাসের দাম তিন কোটি টাকারও বেশি।

 

ঘড়ির দাম ৪৫৪ কোটি টাকা

ঘড়ি নারী হোক বা পুরুষ, তার আভিজাত্য ফুটিয়ে তোলে। কোটিপতিদের ঘড়ির বেশিরভাগই শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলো। অডেমার্স পিগুয়েট, ভেশেরন কনস্টেইন, প্যাটেক ফিলিপ্পি, ব্লেংকপেইন, চোপার্ড বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল ঘড়িগুলো তৈরি করে। ধনকুবেরদের পছন্দের মডেল ‘প্যাটেক ফিলিপ্পির দ্য গ্র্যান্ডমাস্টার চাইম ওয়াচ’। ১৫ কোটি টাকারও বেশি দাম পড়বে এ হাতঘড়িটির। এতে দুটি ডায়াল ও ২১৪টি যন্ত্রাংশ রয়েছে। তবে সবচেয়ে দামি হাতঘড়ির মডেলটি কিন্তু নারীর জন্য। ‘দ্য গ্র্যাফট ডায়মন্ডস হ্যালুসিনেশন ওয়াচ’ নামের এ ঘড়িকে ঘড়ির চেয়ে হাতের ব্রেসলেট বললেই বোধহয় সুবিধা হয়। ঘড়ির ব্যবসায় নতুন নেমেই ‘গ্র্যাফট জুয়েলারি’ এ ঘড়িটি সবাইকে চমকে দেয়। ৪৫৪ কোটি টাকারও বেশি দাম ঘড়িটির। এ ঘড়িটিতে রয়েছে অসংখ্য ডায়মন্ড ও প্ল্যাটিনাম খণ্ডের সমাহার।

 

 

 

নীল ডায়মন্ডের আংটি

২০১৫ সাল। ওই বছরের নভেম্বরের শেষ দিকের ঘটনা। হাজার কোটিপতি জোসেফ লু কিনে ফেলেন দুর্লভ নীল হীরার আংটি। সবাইকে অবাক করে দিয়ে সেই নীল হীরার আংটির দাম তিনি মিটিয়েছেন প্রায় ৪০০ কোটি টাকায়! হয়ত আপনিও অবাক হচ্ছেন ভেবে, কেন এত দাম হতে যাবে একটি মাঝারি আকৃতির আংটির? অবাক হবেন না। কারণ যে নীল হীরার কথা বলা হচ্ছে, আপাতত এত সুন্দর নীল রঙের হীরা আর নেই। কারও কাছেই নেই। কোথায় আবার এত সুন্দর হীরা পাওয়া যাবে তা কেউ জানে না। এ নীল হীরার আংটির একটি নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ব্লু মুন’। আকাশে নীল চাঁদ যেমন দুর্লভ, এ হীরার আংটিও তাই। এত নিখুঁত নীল আলো ছড়ানো হীরার দেখা এর আগে কে কবে পেয়েছে জানা নেই। জোসেফ লু আংটিটি কার জন্য কিনেছেন জানেন? তার সাত বছর ও ১৩ বছর বয়সী দুই মেয়ের জন্য!

 

মধ্যবিত্তের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড

ব্র্যান্ডের প্রতি মানুষের আগ্রহ রয়েছে। দেশে-বিদেশে কেনাকাটা করতে গেলে অনেকেই চেষ্টা করেন ভালো ব্র্যান্ডের কিছু কিনতে। এ ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ ক্রেতাকে আলাদা সামাজিক মর্যাদা অনুভব করায়। এ ছাড়া স্যুভেনিয়র হিসেবেও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো থেকে কিছু একটা কিনতে চেষ্টা করেন ক্রেতারা। মধ্যবিত্তের পছন্দের ব্র্যান্ডগুলোর পণ্যের দাম একশ থেকে পাঁচশ ডলারের মধ্যে হয়ে থাকে। আট থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে যেসব ব্র্যান্ডের পণ্য ক্রেতাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সেগুলো হলো- মার্ক অ্যান্ড স্পেনসার, গুচি, ডিয়র, প্রাডা, বারবেরি, টিফানিস, কার্টায়ার, হার্মেস, লুইস ভোটন, ভার্সেস, এসকাডা, আরমানি, ফসিল, গিভেনচি, গলফানি, হুগো বস, কেলভিন কেইন, কোল, ফিলিপ লিম। এ ধরনের আরও অন্তত ৫০টি আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড রয়েছে যারা মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে পণ্য বিক্রি করে থাকে। তারা পোশাক, কসমেটিক বিক্রিতেই মনোযোগী। এ ছাড়া গয়না ও ইলেকট্রনিক পণ্যও বিক্রি করে কিছু ফ্যাশন হাউস। তবে মনে রাখা ভালো, ব্র্যান্ডগুলো যখন এক্সক্লুসিভ ডিজাইন ও কাস্টোমাইজ (ক্রেতা পছন্দমতো) পণ্য তৈরি করে বাজারে আনে তখন দামে সবাইকে ছাড়িয়ে যায়। ধনীদের জন্য যেসব পণ্য তারা বাজারে ছাড়ে সেগুলো সব সময় ‘লিমিটেড এডিশন’ হিসেবে আসে। এ পণ্যগুলো সাধারণ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। হাজার ডলার থেকে শুরু করে সেসব পণ্যে দাম মিলিয়ন ডলারে করা হয়। ধনকুবেরদের শৌখিন, বিলাসী পণ্যগুলো কেবল বিশেষ সংস্করণে বাজারে আসে। এসব পণ্য কয়েক পিসই থাকে। এ ছাড়া ধনী ক্রেতারা চাইলে তাদের পণ্যের মডেল আর বাজারে ছাড়া হবে না— এমন শর্তও থাকে। সেক্ষেত্রে দাম আকাশছোঁয়া। ধনী ক্রেতাদের জন্য বাজার তার বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হয়। বিক্রেতাকর্মী ধনকুবেরদের ঘরে পৌঁছে দিয়ে আসেন সে পণ্য। কয়েক বছর ধরে সে পণ্যের দেখভালও করে তারা। নির্দিষ্ট শর্ত মেনে ধনকুবেরদের জন্য এ সুবিধাগুলো তারা প্রদান করে থাকে। তবে ধনীদের কথা বাদ দিলে লাভের মুখ দেখা, শীর্ষ ফ্যাশন হাউসগুলো কিন্তু বাজার ধরে রেখেছে মধ্যবিত্তের ক্রয়ের মাধ্যমে। শৌখিন ব্র্যান্ডগুলোর চেয়ে মধ্যবিত্তের ব্র্যান্ডগুলোই তাই আমাদের কাছে বেশি পরিচিত। এ ব্র্যান্ডগুলো থেকে মানুষ টি-শার্ট, স্যুট, জুতা, ঘড়ি, সানগ্লাস— এ ধরনের পণ্য বেশি কেনে। এ ছাড়া মেয়েদের কসমেটিকও (প্রসাধনী সামগ্রী) বেশ জনপ্রিয়। শ্যাম্পু, সাবান, ক্রিম, ফেসওয়াস— এ ধরনের পণ্য বিক্রি করে কিছু ফ্যাশন হাউস মধ্যবিত্তের মন কেড়ে নিয়েছে।

 

স্পেশাল অর্ডারে কোটিপতিদের স্যুট

স্টুয়ার্ট হিউজ, আলেক্সান্ডার এমোস, ডরমেয়ু, ঝুট, আল্টিমেট ওয়েস্টম্যানকোট, কাভালায়ার রকফেলারের মতো শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর কমপ্লিট স্যুট পরে থাকেন বিশ্বের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা। এসব স্যুটের দাম শুরুই হয় এক কোটি থেকে।

বোতাম, কাটিং স্টাইল, সোনা, হীরা বসানোর ওপর নির্ভর করে এ দাম। ধনকুবেরদের পছন্দমতো ডিজাইনে স্যুটগুলো তৈরি করা হয়। ডিজাইনার ও তার পুরো দলকে এর জন্য কয়েক মাসের বেতন দিতে হয় ক্রেতাকে। তবে সেটা কোনো বিষয় না হাজার কোটিপতিদের। একেকটি স্যুট তৈরি করতে তারা খরচ করেন দুই থেকে ছয় কোটি টাকা। স্টুয়ার্ট হিউজের হীরার স্যুট তৈরি করতে ৩৩ দিন সময় লাগে। হীরা ছাড়াও এতে কাশ্মীরী সিল্ক ও উলের ব্যবহার রয়েছে।

 

 

তিন কোটি টাকার হ্যান্ডব্যাগ

ফিলিপ লিম, দ্য শ্যানেল, জিভেনসি, লুইস ভোটন, কেট স্পেড ব্র্যান্ডগুলোর হ্যান্ডব্যাগের খ্যাতি দুনিয়াজোড়া। স্পেশাল অর্ডারে বিখ্যাত ডিজাইনার ধনকুবেরদের জন্য বিশেষ মডেলে হ্যান্ডব্যাগ তৈরি করে দেন। এগুলোর দাম পড়ে এক থেকে তিন কোটি টাকা। বিশ্বের সবচেয়ে দামি হ্যান্ডব্যাগ নিজের বউকে কিনে দিয়েছেন ফুটবলার ডেভিড ব্যাকহাম। ‘হিমালয়ের সাদা কুমিরের চামড়া দিয়ে তৈরি’— এমন স্লোগান জুড়ে দেওয়া ছিল এ হ্যান্ডব্যাগ প্রস্তুতকারকের। তিন কোটি টাকারও বেশি দামি এ হ্যান্ডব্যাগে ২৪০ টুকরো হীরা, ১৮ ক্যারেটের সোনা ব্যবহার করা হয়েছে। ফ্যাশন কোম্পানি হার্মেস এটি বাজারে আনে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর