রবিবার, ১৫ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

কোচের কাছে পাত্তা পাননি এমবাপ্পে!

কোচের কাছে পাত্তা পাননি এমবাপ্পে!

মাত্র ১৯ বছর বয়সে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ফাইনালে নামবেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। মোনাকোর হয়ে যখন তার অভিষেক ঘটে তখন বয়স ছিল ১৬। দুই বছর বাদেই নিজেকে বিশ্বের কাছে দামি কিশোর ফুটবলার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। তিন বছরের মাথায় বিশ্বকাপে তার উত্তাপ দেখে দেশ-বিদেশের ফুটবল মহলে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। অথচ মেজাজের গতি মাঝে মাঝেই ব্রেকফেল করেছে এমবাপ্পের। সে জন্য ক্যারিয়ারের গোড়ার দিকে বার বার বিপাকে পড়তে হয়েছে তাকে। কিন্তু ফুটবলের প্রতি তার দক্ষতা সব প্রতিকূলতাকে রুখে দিয়েছে। ২০১৫-১৬ মৌসুমের একটি ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে। মোনাকোর যুবদলে এটি তার শেষ মৌসুম। কোচ লিওনার্দো জাহজিম কেন যেন তাকে সিনিয়র দলের সম্ভাব্যদের মধ্যে রাখেননি। কোচের কাছে তিনি পাত্তাই পাননি। এর কারণ অবশ্য বুঝেই উঠতে পারেননি এমবাপ্পে। জাহজিম হয়তো তার প্রতি আশ্বস্ত হতে পারেননি।

২০১৫ সালের নভেম্বরে অবশ্য দৃশ্যপট পাল্টে যায়। ‘লিওনার্দোর সঙ্গে কিলিয়ানের প্রথম প্র্যাকটিস সেশন শুরু। তার মাঝে লিওনার্দো খুঁজে পেলেন অন্য আলো। তিনি বলেছিলেন, ‘এই বাচ্চা ছেলেটাকে আর যুবদলে পাঠিও না। ও আমাদের সঙ্গে থাকুক। সুযোগ পেলে মনে হয় দাঁড়িয়ে যাবে।’ তত দিনে এমবাপ্পেকে হারানোর আশঙ্কা ঘিরে ধরেছে ক্লাবকে। লিভারপুলের মতো ক্লাব প্রস্তাব দিতে শুরু করে দিয়েছে। আর্সেন ওয়েঙ্গার নিজে এমবাপ্পের সঙ্গে দেখা করে ক্লাবে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু মোনাকোতেই থেকে যান এমবাপ্পে। তখনকার দিনে মোনাকোর টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ক্যাম্পাস বলেন, ‘আমি ওর মায়ের সঙ্গে দেখা করে ৪০ মিনিট কথা বলেছিলাম। বুঝিয়েছিলাম, ছোট দলের খেললে ড্রেসিংরুমে সবাই ওকে আপন করে নেবে। বড় দলে অন্যান্য ফুটবলারদের অহংবোধের সঙ্গে শুরু থেকেই লড়াই করতে হবে।’

এমবাপ্পের প্রতিভা নিয়ে অবশ্য খুব একটা আশ্বস্ত ছিলেন না ফ্রান্সের যুবদলের কোচ জঁ ক্লদ জিউতিনি। অনাস্থার কারণে ২০১৫ সালের যুব ইউরো কাপে তাকে দলেই রাখেননি। উল্টো সমালোচনা করেছিলেন। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফ্রান্স। তবে ফ্রান্সের অনূর্ধ্ব ১৯ কোচ লুদোভিচ বাতেল্লি এমবাপ্পেকে খেলানোর সিদ্ধান্ত নেন। ১৭ বছর বয়সেই এমবাপ্পে হয়ে ওঠেন দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। অনূর্ধ্ব ১৯ ইউরো কাপের যোগ্যতা অর্জনকারী পর্বের শেষ ম্যাচে গোল করে জেতান এমবাপ্পে। যেটা আবার ফ্রান্সের কাছে বাঁচা-মরার ম্যাচ ছিল।

তারপর পাঁচ ম্যাচে ৫ গোল করে দেশকে অনূর্ধ্ব ১৯ ইউরো চ্যাম্পিয়ন করান। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অনেকে মনে করেন, জঁ ক্লদের উপেক্ষাই এমবাপ্পের জেদ বাড়িয়েছিল। উনিশের তারকাকে ঘিরেই দ্বিতীয়বার বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছে ফরাসিরা।

সর্বশেষ খবর