বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
থাইল্যান্ডে গুহার চার কিলোমিটার ভিতরে ১৭ দিন আটকে থাকা ১৩ জন

বেঁচে থাকার অবিশ্বাস্য গল্প

বেঁচে থাকার অবিশ্বাস্য গল্প

বন্ধুর জন্মদিনের পার্টি করতে ১২ কিশোর ও তাদের কোচ গিয়েছিল অন্ধকার গুহার ভিতরে। হঠাৎ পানির ঢল এসে বন্ধ হয়ে গেল ফেরার পথ। গুহার ভিতরেই আটকে পড়ল তারা। ৯ দিন পর বিস্ময়করভাবে খোঁজ মিলল তাদের। সবাই বেঁচে আছে! তাদের উদ্ধারে একজোট হলো বিশ্বসেরা ডুবুরি দল। কয়েক দিন ধরে চলা শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের প্রতিটি মুহূর্ত যেন হলিউডের সিনেমাকেও হার মানায়। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় পেরিয়ে গেল ১৭ দিন! অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে থাকা সেই কিশোরদলকে উদ্ধার অভিযানের গল্প জানাচ্ছেন— তানভীর আহমেদ ও আবদুল কাদের

 

দুর্ধর্ষ সেই অভিযান...

১২ কিশোর ফুটবলার, তাদের কোচ গুহার গভীরে আটকে ছিল ১৭ দিন।  অভিযানের শেষ তিন দিন ছিল ভয়াবহ। শ্বাসরুদ্ধকর ৭২ ঘণ্টা অভিযানের পর উদ্ধার করা হয় আটকেপড়া ফুটবলার ও কোচকে। সব শেষে বেরিয়ে আসেন ৩ নেভি সিল এবং এক চিকিৎসক। আর তাতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল সমগ্র বিশ্ব। শিহরিত এই ঘটনা আসলে কোনো অ্যাডভেঞ্চার মুভির নয়, সম্প্রতি থাইল্যান্ডে ঘটে যাওয়া ঘটনা। দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় থাইল্যান্ডের ‘থাম লুয়াং’ গুহার দিকে তাকিয়ে ছিল কোটি কোটি উদ্বিগ্ন ও কৌতূহলী চোখ। দেশ ও জাতি নির্বিশেষে সবাই এক প্রার্থনা করেছিল। সবার চাওয়া ছিল নিষ্পাপ শিশুগুলো যেন নিরাপদে মায়ের কোলে ফিরতে পারে। সৃষ্টিকর্তাও হয়তো এটাই চেয়েছেন। কোনো ক্ষতি ছাড়াই নিরাপদে ফিরে এসেছে আটকেপড়া কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচ। শেষ পর্যন্ত স্বস্তি পেল সবাই।

এর আগে থাই আবহাওয়া ক্রুদ্ধ হতে শুরু করে। আশঙ্কা হচ্ছিল প্রবল বৃষ্টির। গুহার ভিতরে পানির উচ্চতা বাড়তে থাকলে উদ্ধার কাজ করা কঠিন হবে এই আশঙ্কায় রবিবারই উদ্ধার অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেই কথা সেই কাজ, প্রথম দিনই চারজনকে উদ্ধার করা হয়। দ্বিতীয় দিন সোমবার আরও চারজন এবং তৃতীয় দিন উদ্ধার করা হয় বাকি চারজন খুদে ফুটবলার এবং তাদের কোচকে। এটি ছিল আন্তর্জাতিক মানের অভিযান। আর এখানে থাই নৌসেনা ছাড়াও ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়াসহ অনেক দেশের উদ্ধারকারী ও বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। অবিশ্বাস্য সেই অভিযান নিয়ে বিশ্ব মিডিয়ারও কৌতূহলেরও কমতি ছিল না। কেননা অন্ধকার গুহায় অনেক চড়াই-উত্রাই পেরিয়ে ডুবুরিরা যখন তাদের খুঁজে পান তখন গুহার বেশিরভাগ অংশই ছিল পানিতে ঠাসা। প্রবল বৃষ্টি আর বন্যার কারণে উদ্ধার কাজ বারংবার ব্যর্থ হচ্ছিল। গুহায় ঠাসা পানিতে হামাগুড়ি দিয়ে সেই পথ পেরোতে বেগ পেতে হচ্ছিল ডুবুরিদের। অভিযান যখন শেষ দিকে তখন আটকেপড়া খুদে কিশোরকে নিয়ে আশঙ্কা ঘনীভূত হয়। মাত্র ১১ বছরের সেই খুদে ফুটবলার ছিল অত্যন্ত দুর্বল। সে কি পারবে ডুবুরির সঙ্গে প্রতিকূলতাকে পেরিয়ে আলোর দেখা পেতে? অবশেষে উৎকণ্ঠা আশার বাণী নিয়ে আসে শেষ বেলায়। অন্ধকারের বুক চিরে এক উদ্ধারকারী বেরিয়ে এসে বলেন— ‘মিশন সাকসেস’। শ্বাসরুদ্ধকর সেই অভিযানে এক ডুবুরি তো অক্সিজেনের অভাবে প্রাণই হারান। এমতাবস্থায় সবাই শঙ্কায় ছিল যে, আদৌ কিশোর ফুটবলার এবং তাদের কোচকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে কি না! চেষ্টার কমতি রাখেননি থাই উদ্ধারকারীরা। ২৩ জুন থেকে চলা অভিযান শেষ হয় ১০ জুলাই। পরিকল্পনামাফিক চলছিল উদ্ধারকাজ। একটু এদিক-সেদিক হলেই যাবে প্রাণ। এমনই রুদ্ধশ্বাস অভিযানের বর্ণনা দেন অস্ট্রেলীয় এক উদ্ধারকারী। তিনি বলেন, তিনটি চেম্বার করে গুহার পানি সেচের কাজ চলছিল তখন। হঠাৎ দেখি দ্বিতীয় চেম্বারের পাম্পটি কাজ করছে না। ততক্ষণে আমরা ১২ ফুটবলার এবং তাদের কোচকে উদ্ধার করে ফেলেছি। কিন্তু তখনো কয়েকজন উদ্ধারকারী ভেতরে আছেন। এমন অবস্থায় গুহার পানি বাড়তে শুরু করেছে। আর পানি যেভাবে বাড়তে শুরু করেছিল তাতে করে অক্সিজেন না থাকলে নির্ঘাত মৃত্যু। এমনিতেই অক্সিজেন বসাতে গিয়ে থাই নেভি সিলের এক সদস্য সামান কুনানের প্রাণ গিয়েছে। সবশেষ উদ্ধার এবং উদ্ধারকারীদের নিরাপদে অন্ধকার পেরিয়ে আলোর দেখা পাওয়াতে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন সেখানকার উদ্ধারকারী, প্রশাসন এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। উদ্ধারকারীদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং সবাই সুস্থ আছেন বলেও জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। থাই প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, উদ্ধারকারীরা সুস্থ হলে অবিশ্বাস্য এই উদ্ধারকাজে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাসভবনে ডেকে ভোজের আয়োজন করবেন। শুভেচ্ছা এসেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেও।

 

যেভাবে উদ্ধার করা হয় তাদের

৯ দিন পর গুহার ভেতরে কিশোরদলের সন্ধান পান দুই ব্রিটিশ ডুবুরি। তাদের উদ্ধার অভিযানে ৯০ ডুবুরি জান বাজি রাখেন। তাদের মধ্যে ৫০ জন বিদেশি এবং ৪০ জন থাইল্যান্ডের। শুরুতে চার মাস সময় নিয়ে তাদের উদ্ধারের কথা থাকলেও বৃষ্টির পানি বাড়তে থাকায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয় আগেভাগেই। এক ডুবুরি অক্সিজেন স্বল্পতায় প্রাণ হারান। আবহাওয়া অফিস থেকে আরও ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে গুহায় আরও পানি ঢুকে কিশোর দলটির প্রাণ হারানোর ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।  কিশোরদের উদ্ধার করতে গিয়ে গুহার পানি সেচ দিয়ে স্থানীয় কৃষকদের ফসলি জমিতে ফেলা হয়। চূড়ান্ত উদ্ধারকারী দলে ১৩ জন বিদেশি ও থাইল্যান্ড নৌবাহিনীর পাঁচজন ডুবুরি অংশ নেন। ঝুঁকি নিয়েই ৮ জুলাই প্রথম কিশোরকে বের করে আনা হয়। ১০ জুলাই নতুন করে উদ্ধার অভিযানে সবাইকে নিরাপদে নিয়ে আসতে সক্ষম হন ডুবুরিরা। উদ্ধারে অংশ নেওয়া সহস্রাধিক কর্মী, চিকিৎসক, পুলিশ সদস্য, দেশি-বিদেশি সাংবাদিক, নিখোঁজ পরিবারের লোকজন মিলিয়ে যেন পুরো এক শহর গড়ে ওঠে গুহা মুখের কাছে।

 

ভালো আছে তারা

‘ওয়াইল্ড বোয়ার’ নামে এক কিশোর ফুটবল দলের ১২ কিশোর ও তাদের কোচ আটকা পড়েছিলেন উত্তর থাইল্যান্ডের চিয়াং রাই এলাকায় অবস্থিত ‘থাম লুয়াং নাং নন’ গুহায়। দলের এক সদস্যের জন্মদিন উদযাপন করতে গুহার ভিতরে ঢোকে তারা। গুহায় প্রবেশের পর সেখান থেকে বাইরে বেরিয়ে আসার আগেই গুহার ভেতর এমনভাবে পানি ঢুকে পড়ে যে তাদের পথটি পুরোপুরি ডুবে যায়। গুহার ৪ কিলোমিটার গভীরে ১৩ জনের ফুটবল দলটি একটি শুকনো কার্নিশের মতো জায়গায় আশ্রয় নেয়। আটকে পড়ার ৯ দিন পর তাদের প্রথম খোঁজ পাওয়া যায় এবং ১৭ দিনের মাথায় সবাইকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এখন তারা সবাই সুস্থ আছে। উদ্ধার হওয়া ১৩ জন হলো— চানিন ভিবনরুনগ্রুয়াং, পানুমাস সাংদি, দুগানপেত প্রমতেপ, সামপং জাইওয়ং, মংকল বুনিয়াম, নাত্তাউত তাকামরং, একারাত ওংসুকচান, আদুল স্যাম-অন, প্রাজাক সুথাম, পিপাত ফো, পনচাই কামলুয়াং, পিরাপাত সোমপিয়াংজাই ও এক্কাপোল জানথাওং। ২৫ বছর বয়সী কোচ এক্কাপোল ছাড়া বাকি সবার বয়সই ১১ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে।

 

গুহা হবে ‘জীবন্ত জাদুঘর’

গুহায় আটকেপড়া কিশোরদের পাশে ছিল গোটা বিশ্ব। থাম লুয়াং গুহাকে ‘জীবন্ত জাদুঘর’ বানানোর পরিকল্পনা করছে থাইল্যান্ড সরকার। ১৭ দিনের ভয়াবহ অভিযান এবং তার সাফল্যকে স্মরণীয় করে রাখতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ১০ জুলাই যখন গুহা থেকে সব শিশু এবং তার প্রশিক্ষককে উদ্ধার করা হয়, তখনই সিনেমা বানানোর একটি স্ক্রিপ্ট খসড়া করে ফেলেন দুই হলিউড ছবি নির্মাতা। এই খুদে শিশুদের বিশ্বকাপ ফাইনালে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ফিফা প্রেসিডেন্টও।

 

থাম লুয়াং গুহার রূপকথা

থাই রূপকথার জুড়ি নেই। থাম লুয়াং গুহায় ১২ কিশোর আটকেপড়া আর তাদের উদ্ধারের গল্প সব রূপকথাকেই ছাড়িয়ে গেছে। অবশ্য অনেকেই জানেন না, থাম লুয়াং গুহার আরও একটি রূপকথা আছে। এই গুহাটির পুরো নাম থাম লুয়াং নং নান। বাংলায় এর মানে দাঁড়ায়— যে গুহার গভীরে এক নারী ঘুমিয়ে আছে। রূপকথা বলছে, এই গুহার কাছেই আশ্রয় নিয়েছিল দক্ষিণ চীনের রাজকন্যা চিয়াং রুং। এক অশ্বারোহীর সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়া এই রাজকন্যা গর্ভবতী হয়ে পড়লে এই গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। সমাজের রোষানল থেকে বাঁচতে এ ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। প্রেমিককে নিয়ে নতুন জীবন সাজানোর সে চেষ্টা বৃথা যায়। প্রেমিক তাকে রেখে খাবারের সন্ধানে বের হলে রাজার সৈন্যরা তাকে ধরে ফেলে, হত্যা করে। রাজকন্যা প্রেমিকের অপেক্ষায় দিন গুনছিলেন গুহার অন্ধকারে। প্রেমিক আর ফিরে আসেনি। বুঝতে বাকি রইল না তার ভাগ্যে কী ঘটেছে। পেটে চুলের ক্লিপ ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করেন রাজকন্যা। তার রক্তের স্রোত জন্ম দিল এক নদীর, নাম মায়ে সাই। থাম লুয়াং গুহায় সেই রাজকন্যা এখনো ঘুমিয়ে আছেন— এ বিশ্বাস স্থানীয়দের।

 

যেভাবে আটকা পড়েছিল তারা

২৩ জুন। সকাল ১০টায় ফুটবল প্র্যাকটিস করতে ন্যাশনাল পার্কে যায় ১২ কিশোর ও তাদের কোচ। পার্কের একজন কর্মী দুপুর তিনটার দিকে লক্ষ করেন থাম লুয়াং গুহার সামনে ১১টি সাইকেল রাখা।  পার্কের ওই কর্মী ধারণা করেছিল, হয়তো গুহার ভেতরেই ঘুরতে গিয়েছে তারা। ততক্ষণে কিশোরদের বাবা-মায়েরাও তাদের সন্তানদের খোঁজ করতে শুরু করেছেন। পরদিন ঘটনা জানাজানি হয় এবং ২৫ জুন তাদের নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ সবখানে ছড়িয়ে যায়। তাদের  খোঁজ পেতে গুহার ভিতরে প্রবেশ করেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, কিশোর ফুটবল দলের এক সদস্যের জন্মদিনের পার্টি উদযাপন করতে তারা গুহার ভিতরে ঢুকেছিল। তাদের সঙ্গে ছিল সামান্য কিছু খাবার। এ খবর পাওয়া যায় ওই ফুটবল দলের আরেক সদস্যের কাছ থেকে, শরীর ভালো না থাকায় সে ১২ কিশোর ও কোচের সঙ্গে গুহায় যায়নি। ফুটবল দলটি গুহার ভিতরে ঢোকার পর থেকেই প্রচুর বৃষ্টি হতে শুরু করে। বাধে বিপত্তি।

বৃষ্টির পানির সঙ্গে জঙ্গলের পানিও ঢুকে যায় গুহার ভিতরে। যে কারণে গুহার মুখ পানিতে ডুবে যায়। গুহার ভিতরে পানি বাড়তে থাকায় প্রবেশ করা কিশোর দল আস্তে আস্তে গুহার আরও ভিতরে ঢুকতে বাধ্য হয়। গুহার ভিতরে পানির উচ্চতা আরও বাড়তে থাকলে তারা হাঁটতে হাঁটতে উঁচু জায়গার খোঁজ করতে শুরু করে। এভাবে আড়াই কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় তারা। গুহার ভিতরে পানি ঢুকে ততক্ষণে তলিয়ে গেছে পুরোটা পথ। ফেরার আর কোনো রাস্তাই থাকল না। পানি যত বেড়েছে তারা প্রাণ বাঁচাতে গুহার আরও ভিতরে ও উঁচু জায়গায় পৌঁছেছে। এক পর্যায়ে গুহার দুর্গম অঞ্চলে তারা আশ্রয় নেয়। গুহামুখ থেকে সেটা প্রায় ৪ কিলোমিটার গভীরে!

 

১৭ দিন কী খেয়ে বেঁচেছিল তারা?

একবেলা না খেয়ে থাকার যন্ত্রণাই অনেকের সহ্য হয় না। সেখানে টানা ১৭ দিন গুহার অন্ধকারে সুস্থ-স্বাভাবিকভাবেই বেঁচে ছিল ১২ কিশোর ও তাদের তরুণ বয়সী কোচ। স্থানীয় ফুটবল দলের ১২ শিশু নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর তাদের কোনো খোঁজই মিলছিল না। গুহার ভিতরে ডুবুরি দিনের পর দিন খুঁজে চলেছিলেন যদি কোনো সন্ধান মেলে। এক সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার পর অনেকে ভেবেছিলেন তারা হয়তো আর বেঁচে নেই। মৃতদেহ স্বজনদের হাতে পৌঁছে দেওয়াটাই তখন একমাত্র চেষ্টা। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ৯ দিনের মাথায় দুই ব্রিটিশ ডুবুরি ১২ কিশোর ও তাদের কোচকে দেখতে পান। শান্ত ও সুস্থ দেহে তাদের দেখতে পেয়ে বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে যান দুই ব্রিটিশ ডুবুরি। সেই ভিডিও চিত্র ধারণ করে যখন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয় বিশ্ববাসী বিশ্বাস করতে পারছিল না! তখনই প্রথম জানা যায় যে, তারা থাম লুয়াং নামের ওই গুহার আড়াই মাইলেরও বেশি গভীরে আটকা পড়ে আছে। এই ৯ দিন তারা পাহাড়ের ভেতরে চুইয়ে পড়া ফোঁটা ফোঁটা পানি পান করেছিল। ফুটবল দলের একজন সদস্যের জন্মদিন উপলক্ষে তারা যে শুকনো খাবার সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিল সেসব খেয়ে এবং মেডিটেশন বা ধ্যান করেই তারা এতদিন নিজেদের জীবন রক্ষা করেছে। এই কিশোর ফুটবলারদের কোচ বাচ্চাদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার কমে যাওয়ার আশঙ্কায় গুহার ভেতরে এসব খাবার খেতে রাজি হননি। তাই গুহার ভিতর ব্রিটিশ ডুবুরিরা দেখেন, শারীরিকভাবে সবচেয়ে দুর্বল ছিলেন কোচ একাপল। ব্রিটিশ ডুবুরিরা ফেরত আসার পর গুহায় আটকে পড়ার ১০ দিনের মাথায় বাইরে থেকে খাবার পাঠাতে শুরু করেন। এসব খাবারের মধ্যে ছিল, সহজে হজম হয় এরকম খাবার, শক্তিদায়ক খাদ্য যেগুলোতে মিনারেল ও ভিটামিন মেশানো হয়।

সর্বশেষ খবর