বৃহস্পতিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার আগে...

সাইফ ইমন

রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার আগে...

রাষ্ট্রের শীর্ষ আসনে তারা দায়িত্ব পালন করেছেন কিংবা করছেন। পেয়েছেন খ্যাতি, ক্ষমতা। কিন্তু তাদের অনেকেই অন্য ১০ জনের মতো সাধারণ অবস্থান থেকে এই পর্যায়ে পৌঁছেছেন। তাদের জীবনেও রয়েছে নানা সংকট, সংগ্রাম। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে তারা অন্য পেশায় ছিলেন। আয়ও ছিল সামান্য। কেউ ছিলেন বাদাম বিক্রেতা, কেউবা করেছেন পোস্ট মাস্টারের কাজ। কেউবা ছিলেন প্রকৌশলী, আইনজীবী, অধ্যাপক। রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার আগের গল্পগুলো নিয়ে আজকের রকমারি—

 

রোনাল্ড রিগ্যান

প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ছিলেন অভিনেতা ও উপস্থাপক

 

মার্কিন ইতিহাসের ৪০তম প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান। একজন সফল রাজনীতিক এবং অভিনেতা কেমন হতে পারে তার আদর্শ রোনাল্ড রিগ্যান। অভিনয় থেকে কেউ এভাবে রাষ্ট্রক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ করতে পারেন তা প্রমাণ করেছেন রিগ্যান। তার চাকচিক্যময় জীবনের কারণেই ইমেজের দিক থেকে আমেরিকার অন্য সব প্রেসিডেন্টকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। ১৯১১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রতিভাবান ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেন। হলিউডে তার অভিষেক ১৯৩৭ সালে। তিনি ৫০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। বিখ্যাত টেলিভিশন অনুষ্ঠান জেনারেল ইলেকট্রিক থিয়েটার এবং ডেথ ভ্যালি ডেইজের উপস্থাপক ছিলেন তিনি। সিনেমা জগতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ডের সভাপতি হয়েছিলেন রিগ্যান। একজন সফল রাজনীতিক হিসেবে ১৯৬৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়া প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত হন। মার্কিন রাজনীতিতে তার উপস্থিতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তার অসামান্য ব্যক্তিত্ব ও কর্মউদ্দীপনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তিনি একজন সুবক্তা হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

 

বারাক ওবামা

অধ্যাপনাসহ নানা রকম চাকরি করেছেন

 

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে তিনি অনেক রকম চাকরি করেছেন। তিনি তিন বছর কাজ করেছেন একটি ডেভেলপিং কমিউনিটিস প্রজেক্টের ডিরেক্টর হিসেবে। এটি শিকাগোতে অবস্থিত একটি দাতব্য সংস্থা। এ ছাড়াও তিনি ছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শিক্ষক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান এবং নিজ দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচিত ছিলেন তিনি। সন্ত্রাস দমনের জন্য বিশ্বের অন্য দেশগুলো থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে বেশ চাপে থাকতে হয়েছে তাকে। দেশের ভিতরের সমস্যাগুলোকে শক্ত হাতে মোকাবিলা করেছেন। শান্তিতে নোবেল জয়ী বারাক হোসেন ওবামা ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হন এবং ২০০৯ সালে শপথ গ্রহণ করেন। বাল্যকালের স্বপ্ন ছিল প্রেসিডেন্ট হওয়া। ওবামা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের রাজধানী হনুলুলুতে জন্মগ্রহণ করেন।

 

ভ্লাদিমির পুতিন

ছিলেন কেজিবি এজেন্ট

 

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চতুর্থবারের মতো শপথ নিয়েছেন। তার বয়স এখন ৬৫ বছর।

পুতিনের শৈশব কেটেছে এক কঠিন পরিবেশে। সেন্ট পিটার্সবার্গে বেড়ে উঠেন পুতিন। পুতিনের বাবা একটি কারখানায় কাজ করতেন এবং তার দাদা ছিলেন একজন বাবুর্চি। ছোট বয়সে স্থানীয় ছেলেদের সঙ্গে তিনি একবার সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। এরপর থেকেই একটু অন্যরকম হয়ে যান পুতিন। পরবর্তীতে তিনি জুডো খেলা রপ্ত করেন। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার আগেই পুতিনের স্বপ্ন ছিল তৎকালীন  সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে কাজ করার। আইন শাস্ত্রে পড়াশোনা করা পুতিন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করেই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে যোগ দেন। স্নায়ুযুদ্ধের সময় তিনি তৎকালীন পূর্ব জার্মানিতে কেজিবির গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে তার শাসনকালে সাবেক কেজিবির কর্মকর্তারা উচ্চ পদে আসীন হয়েছেন।

 

জিমি কার্টার

ছিলেন একজন চীনাবাদাম বিক্রেতা

 

একজন আমেরিকান রাজনীতিবিদ, লেখক এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য। তিনি ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। প্রথম জীবনে জিমি কার্টার ছিলেন একজন চীনাবাদাম বিক্রেতা। তিনি তার বাড়িতে চীনাবাদামের চাষ করতেন। পরবর্তী জীবনে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট হন। মানবিক অধিকার আদায়ে তিনি ছিলেন ব্যাপক তৎপর। এ জন্য তার জনপ্রিয়তাও ছিল প্রচুর। তিনি কার্টার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৮২ সালে। হ্যাবিট ফর হিউমিনিটি প্রজেক্টের প্রধান ব্যক্তি ছিলেন কার্টার। পরবর্তীতে লেখক হিসেবেও তার আত্মপ্রকাশ ঘটে। তিনি বেশকিছু উল্লেখযোগ্য বই বিভিন্ন বিষয়ে রচনা করেন। চীনাবাদামের ব্যবসা করলেও এর আগে তিনি যোগ দিয়েছিলেন ইউনাইটেড স্টেটস নেভিতে। সেখানে তিনি নিউক্লিয়ার সাবমেরিনে কাজ করেন। হাইস্কুল শেষ করেই নেভিতে যোগ দেন।

 

আব্রাহাম লিংকন

নিজ এলাকায় পোস্ট মাস্টারের কাজ করেছেন

 

আব্রাহাম লিংকন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম প্রেসিডেন্ট। প্রথম জীবনে তিনি নিজ এলাকায় পোস্ট মাস্টার হিসেবে কাজ করেছেন। আমেরিকার রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের পরিত্রাণদাতা নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন এবং আমেরিকার তথা পৃথিবীর ইতিহাসের এক অন্যতম সেরা নেতা এবং এক কিংবদন্তি পুরুষে পরিণত হন। মজার বিষয় হলো আব্রাহাম লিংকনের মদের দোকানের পরিবেশক হিসেবে বৈধ লাইসেন্স ছিল। তার ঘাতক ছিলেন একজন বিখ্যাত অভিনেতা এবং তিনি নিজেও ছিলেন সেই অভিনেতার ভক্ত। এদিকে লিংকনের পুত্র রবার্টকে একবার ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে বাঁচান এডউইন বুথ। তিনি ছিলেন লিংকনের ঘাতক জন উইল্কস বুথের আপন ভাই। আমেরিকার প্রেসিডেন্টদের মধ্যে আব্রাহাম লিংকনই সর্বপ্রথম মহিলাদের ভোট দেওয়ার বিষয়টি অনুধাবন করেন। অন্যদিকে তিনি ছিলেন একজন দক্ষ রেসলার। ৩০০ রেসলিংয়ে অংশ নিয়ে মাত্র একটিতে হেরেছিলেন তিনি। আমেরিকান সিক্রেট সার্ভিসও প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

 

ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট

ছিলেন সিনেটর, নৌবাহিনীর কর্মকর্তা

 

ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট বা সংক্ষেপে এফডিআর ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩২তম প্রেসিডেন্ট। তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ছিলেন একজন সিনেটর, নৌবাহিনীর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি। নিউইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে পৃথিবী যখন অর্থনৈতিক মন্দা ও যুদ্ধের কবলে পড়ে বিধ্বস্ত, এমন সময় রুজভেল্ট পৃথিবীর কেন্দ্রীয় এক চরিত্রে পরিণত হন। একজন ব্যক্তি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুইবার দায়িত্ব পালন করতে পারেন। তবে এর ব্যতিক্রম ঘটিয়েছিলেন ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট। যুক্তরাষ্ট্রের তিনি তিনবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রেসিডেন্টের সুনামের ক্ষেত্রে তাকে পেছনে ফেলতে পারেননি কেউই। এমনকি চতুর্থবারের জন্য মনোনীতও হয়েছিলেন। তবে শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না তার। ১৮৮২ সালের ৩০ জানুয়ারিতে নিউইয়র্ক, হাইড পার্কের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম রুজভেল্টের। বাবা জেমস রুজভেল্ট ও মা সারা অ্যান ডিলানো। মা-বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন তিনি।

 

হাভার্ট হোভার

ছিলেন ভূ-তাত্ত্বিক প্রকৌশলী

 

আমেরিকা দেখেছিল এক অদম্য প্রেসিডেন্ট, নাম হাভার্ট হোভার। যিনি ছিলেন একজন ভূ-তাত্ত্বিক গবেষক। ১৮৯৫ সালে হাভার্ট ভূ-তত্ত্ব বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করেন এবং ডিগ্রিও অর্জন করেন। এরপর গোটা আমেরিকায় ভূ-তাত্ত্বিক হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৯৭ সালে তিনি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সোনার খনিগুলোতে ভূ-তাত্ত্বিক গবেষণা চালিয়েছেন। সেখানে তিনি শুধু একজন গবেষকই ছিলেন না, একজন খনি প্রকৌশলী হিসেবেও বেশ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন। এরপর তিনি মাইন ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ পান। হাভার্ট চীনা ব্যুরো মাইন এবং চীনা মাইন করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সন্স অব গলিয়া, মেনজিজ এবং কুলগার্ডির মতো বিশালাকার সোনার খনিগুলো খনন করেছিলেন। ১৯০৮ সাল পর্যন্ত ভূ-খনন প্রকৌশলী হিসেবে তার কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন। ১৯২৮ সালে তিনি মার্কিন সরকারি ভূ-তাত্ত্বিক খনন পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। এরপর হাভার্ট হোভার ১৯৩১ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়লাভ করেন।

 

কোলিন্দা গ্র্যাবার

প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে কূটনীতিক হিসেবে কাজ করতেন

 

কোলিন্দা ক্রোয়েশিয়ার রিজেক নামক স্থানে ২৯ এপ্রিল ১৯৬৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি  ক্রোয়েশিয়ার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট এবং সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট। ‘জাগরিব বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিষয়ে  কোলিন্দা স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি রোমান ক্যাথলিক চর্চা করেন এবং ঘোষণা দেন ক্রিস্টান ধর্মের আনুগত্য। ১৯৯৬ সালে তিনি জ্যাকভ কিতারোভিকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে দুই সন্তান আছে। তিনি ইংরেজি, পর্তুগিজ ও স্প্যানিশ ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন। এ ছাড়া ইতালিয়ান, ফ্রেন্স এবং জার্মান ভাষা বুঝতে কোন সমস্যা হয় না। ২০১৫ থেকে  ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী এই রাজনীতিবিদ ছিলেন মূলত একজন কূটনীতিবিদ। ন্যাটোতে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। কিছুদিন যুক্তরাষ্ট্রে  ক্রোয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূতও ছিলেন। দেশটির দক্ষিণপন্থি  ক্রোয়েশিয়া ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নের সদস্যও তিনি।

 

উইনস্টন চার্চিল

যুদ্ধসাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন ওয়শিংটন পোস্ট পত্রিকায়

 

দুই আঙ্গুল উঁচিয়ে ভি বা বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে সারা বিশ্বে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন ইংল্যান্ডের দুইবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এবং যুদ্ধকালের সফল রাজনৈতিক নেতা ও শাসক উইনস্টন চার্চিল। ইংল্যান্ডের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম ১৮৭৫ সালের ৩০ নভেম্বর। ইতিহাসের সফলতম এই রাষ্ট্রনায়ক ছাত্র হিসেবে সাফল্য লাভ করেননি। স্কুলের গণ্ডি পেরুতে তাকে তিনটি স্কুল বদলাতে হয়। আর সামরিক জীবনে প্রবেশ করতে পরীক্ষায় পাস করেন তিনবারের প্রচেষ্টায়। অথচ এক সময় তিনিই হলেন ওয়াশিংটন পোস্টের মতো পত্রিকার রিপোর্টার। তিনিই একমাত্র ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, যিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। সামরিক জীবনে চার্চিল যুদ্ধ করেন কিউবা, ভারত, সুদান, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশে। সৈনিক জীবনেই তিনি নিয়মিত সংবাদ পাঠাতেন পত্রিকায়। সেনাজীবন ছেড়ে চার্চিল রাজনীতিতে যোগ দেন এবং  সেখানে লাভ করেন ব্যাপক সাফল্য। ১৯৪০ থেকে ১৯৪৫ এবং ১৯৫১  থেকে ১৯৫৫ এই দুই  মেয়াদে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন উইনস্টন চার্চিল।

 

জাস্টিন ট্রুডো

অংশ নিয়েছিলেন টিভি সিরিজে করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা

 

জাস্টিন ট্রুডো কানাডার লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে ২০১৫ সালে দেশটির ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। জো ক্লার্কের পর তিনি কানাডার দ্বিতীয় কম বয়স্ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার পিতা পিয়েরে ট্রুডোও কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অটোয়ায় জন্ম নেওয়া ট্রুডো কলেজ জিন-দ্যে-ব্রেবুফ এ পড়ালেখা করেন। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৪ সালে এবং ১৯৯৮ সালে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়া থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পিতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় দেওয়া একটি বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি প্রথম জনসম্মুখে নিজের স্বীয় ব্যক্তিত্ব তুলে ধরেন। স্নাতক শেষ করে ট্রুডো ভ্যানকুভারের ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ সালে চাকরি ছাড়ার আগে তিনি মন্ট্রিলের ইকোল পলিটেকনিক থেকে এক বছরের ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম শেষ করেন। দ্য  গ্রেট ওয়ার নামক একটি টিভি মিনি সিরিজে তিনি নিজের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগান। বাবার মৃত্যুর আট বছর পর ট্রুডো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।

 

ইমরান খান

রাজনীতিতে আসার আগে তিনি ছিলেন বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার

 

 পাকিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট দলের একসময়ের অধিনায়ক ইমরান খান এখন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। ১৯৫২ সালের ৫ অক্টোবর লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন ইমরান খান। ১৯৭০ সালে যখন তিনি প্রথম জাতীয় দলে ডাক পান। তিনি বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারদের একজন। তার অধিনায়কত্বে পাকিস্তান ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ জয় করে।

 

ক্রিকেট থেকে আরও অনেকেই রাজনীতিতে এলেও এবারই প্রথম কোনো ক্রিকেটার একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন। ১৯৯৬ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন ইমরান। গঠন করেন তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি। এর আগের নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও এবার অন্যদের পেছনে ফেলে তার দল উঠে এসেছে শীর্ষে। খেলোয়াড়ি জীবনের পরে রাজনৈতিক জীবনেও তরুণদের মন জয় করেন এই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তার ‘নতুন পাকিস্তান’ স্লোগান তরুণ প্রজন্মের মুখে মুখে ফিরছে।

ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও বরাবরই সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ইমরান খান। ৬৫ বছর বয়সে তৃতীয়বার বিয়ে করেন ইমরান। ভবিষ্যদ্বক্তা পীর বুসরা মানেকা তার বর্তমান স্ত্রী, তবে এর আগে ব্রিটিশ সেলিব্রেটি জেমিমা গোল্ডস্মিথ এবং পাকিস্তানি টিভি ব্যক্তিত্ব রেহাম খানও ইমরান খানের স্ত্রী ছিলেন। আমেরিকার সমালোচক হিসেবেও তিনি পরিচিত। সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে আমেরিকার ভূমিকা এবং তাতে পাকিস্তানের অংশগ্রহণের বড় সমালোচক ইমরান। পাকিস্তানের অনেক সমস্যার পেছনে দেশটির আমেরিকাপ্রীতিই বড় কারণ বলে একাধিক বক্তব্যে বলেছেন তিনি।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে বরাবরই সরব ছিলেন ইমরান খান। বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ছিলেন তার আক্রমণের মূল লক্ষ্য। ২০১২ সালে এশিয়া সোসাইটির জরিপে “এশিয়া’স পারসন অব দ্য ইয়ার” নির্বাচিত হন ইমরান খান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর