শনিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
বিশ্বজুড়ে আলোচিত

নিহত নারী সাংবাদিক

তানিয়া তুষ্টি

নিহত নারী সাংবাদিক

চ্যালেঞ্জিং কাজে অংশগ্রহণ যে কারও জন্য সাহসিকতার। সেখানে পুরুষের তুলনায় নারীকে পরিচয় দিতে হয় দ্বিগুণ সাহসের। কারণ পারিপার্শ্বিকতা আর পরিবার কখনো মেয়েদের খুব বেশি ঝামেলায় যেতে দিতে রাজি হয় না। ঘর সামলানো, সাজগোজ করা আর নমনীয় থেকে সংসারের কর্তার হুকুম পালন করাই যেন তাদের আসল কাজ। কিন্তু চিরাচরিত এই রীতির প্রস্তর ভেঙে কিছু নারী ঠিকই চ্যালেঞ্জকে বেছে নিয়েছেন। পরিচয় রেখেছেন সাহসিকতার। তার জন্য অবশ্য খেসারত দিতে হয়েছে অনেক। কখনো বিসর্জন দিতে হয়েছে নিজের জীবন। বিশ্বের এমন ত্যাগ স্বীকারকারী সাহসী কয়েকজন নারী সাংবাদিক নিয়ে আজকের আয়োজন। 

 

কিম ওয়াল, নিউইয়র্ক

ডেনমার্কে সাবমেরিন থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন কিম ওয়াল নামের এক সুইডিশ নারী সাংবাদিক। নিউইয়র্কে বসবাসকারী এই সাংবাদিক নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান এবং ভাইস ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন। ডেনমার্কের প্রযুক্তিবিদ পিটার ম্যাডসেনের বানানো ‘নটিলাস’ সাবমেরিনটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিমালিকানাধীন সাবমেরিন বলে দাবি করা হয়। কিম ওয়াল সেই সাবমেরিন সম্পর্কে প্রতিবেদন লেখার জন্যই পিটার ম্যাডসেনের সঙ্গে ২০১৭ সালের আগস্টে রওনা হন। এরপর দুই মাস ধরে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ঘটনাক্রমে সাবমেরিনটিরও পরিসমাপ্তি ঘটে কোপেন হেগেনের দক্ষিণে সাগরতলে। পুলিশের সন্দেহ, সাবমেরিনেই খুন হন ওই নারী সাংবাদিক। কারণ, ডুবুরিরা সমুদ্রে নেমে একটি প্লাস্টিক ব্যাগে তার দেহের ছিন্নভিন্ন অংশ পান। শরীরের বিভিন্ন অংশ আলাদা আলাদাভাবে প্লাস্টিক ব্যাগে রাখা ছিল। আর ব্যাগটি যাতে ভেসে না ওঠে এ জন্য ভারী ধাতব খণ্ড দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। প্লাস্টিকের ব্যাগে একটি ছুরিও ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এই ছুরি দিয়েই কিম ওয়ালকে খুন করা হয়।

 

আনা পোলিতকোভস্কায়া, রাশিয়া

রাশিয়ান সাংবাদিক ও লেখক আনা পোলিতকোভস্কায়া। ২০০৬ সালের ৭ অক্টোবর তালাবদ্ধ ফ্ল্যাটে তার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। চেচেন স্বাধীনতার পক্ষে লেখা ও সেখানকার নির্যাতনের প্রকৃত তথ্য তুলে ধরতেন তিনি। তার লেখায় উঠে এসেছিল, সেখানে সামরিক কর্মকর্তারা যাকে খুশি তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে রড দিয়ে পেটায়, ইলেকট্রিক শক দেয়, নারী এমনকি পুরুষদেরও ধর্ষণ করে। তার এসব রিপোর্টের কারণে নানাভাবে বিদেশে পালিয়ে যেতে হুমকি দেওয়া হতো। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নেওয়ার সুযোগ থাকলেও তিনি তা না করে রাশিয়ার অন্যায়ের প্রতিবাদ করাকে উপযুক্ত মনে করতেন। এ বিষয়ে পুতিনের সঙ্গে সরাসরি নীতিগত বিরোধ প্রকাশ পেত তার বিভিন্ন লেখায়। ২০০৪ সালে গার্ডিয়ান পত্রিকায় একটি আর্টিকেলে তিনি লেখেন, ‘তুমি যদি সাংবাদিকতা করতে চাও, তবে তা অবশ্যই পুতিনের পক্ষে যেতে হবে। অন্যথায় তা মৃত্যু, বুলেট, বিষপ্রয়োগ অথবা যে কোনো উপায়ে তুমি শেষ হবে। তুমি যতই দেশকে সেবা দাও না কেন, পুতিনের প্রহরী কুকুররা তোমার থেকে বেশি গুরুত্ব পাবে।’

 

ড্যাফনে কারুয়ানা গালিজিয়া, মাল্টা

মাল্টার জনপ্রিয় অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও ব্লগার ড্যাফনে কারুয়ানা গালিজিয়া। বিশ্বজুড়ে বহুল আলোচিত অর্থ পাচারে কুখ্যাত ‘পানামা পেপার্স’ দুর্নীতিতে মাল্টার ক্ষমতাশালীদের যোগাযোগ উন্মোচিত হয় তার করা রিপোর্টে। এরপরই মাল্টার প্রভাবশালীদের চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন তিনি। এই কাজ করে গোটা ইউরোপে খ্যাতিও পেয়েছিলেন। কিন্তু দুঃসাহসিক এমন রিপোর্ট করায় চড়া মূল্য দিতে হয় নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়ে। কারুয়ানা ইউরোপের দ্বীপরাষ্ট্র মাল্টায় স্বামী ও তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। ১৬ অক্টোবর ২০১৭ সালে গালিজিয়া মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান নিজের বাসার কাছে গাড়িবোমা বিস্ফোরণে। ঘটনাস্থলেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যান তিনি। সাংবাদিক গালিজিয়ার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনায় হতবাক হয়ে যান দেশবাসীসহ গোটা বিশ্ব। মৃত্যুর আগে তিনি মাল্টার প্রধানমন্ত্রী জোসেফ ম্যাসক্যাটের কাছের লোকদের দুর্নীতি নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংস্থা আইসিআইজে পানামা পেপার্স ফাঁসের মাধ্যমে বিশ্বের ধনী ও প্রভাবশালীদের একাংশের বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ আনে। এর জের ধরে মৃত্যুর আগে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, তাকে একটি মহল নানাভাবে মৃত্যুর হুমকি দিচ্ছে। শেষমেশ ঘটলও তাই। ঘটনার রাতে ভালেট্টার কাছে স্লেমায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ গালিজিয়ার সম্মানে মোমবাতি মিছিল বের করেন। ইউরোপে ৪ লাখ মানুষের ক্ষুদ্রতম এই দেশের চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ফেসবুক টুইটারে সংহতি জানিয়েছিল বিশ্ব। বিচারে দাবি করেছিল ‘হ্যাশট্যাগ জে সুইস ড্যাফনে’ লিখে।

 

ভেরোনিকা গুইরেন, আয়ারল্যান্ড

অপরাধ বিষয়ক সংবাদ কাভার করে বিশ্বজুড়ে দুঃসাহসী সাংবাদিকদের তালিকায় সবার ওপরে নাম লেখান ভেরোনিকা গুইরেন। তার জীবনী মানুষকে এতটাই সাহস জোগায় যে, এই সাংবাদিকের জীবন নিয়ে নির্মিত হয়েছে হলিউড চলচ্চিত্র। ১৯৫৮ সালে জন্ম নেওয়া ভেরোনিকা গুইরেন পেশা হিসেবে বেছে নেন সাংবাদিকতা। ১৯৯০ সাল থেকে সানডে বিজনেস পোস্ট এবং ১৯৯৪ সাল থেকে আয়ারল্যান্ডের জনপ্রিয় সংবাদপত্র সানডে ইন্ডিপেনডেন্টে কাজ করেন। এ সময় তিনি অনেক বড় বড় অপরাধীর মুখোশ উন্মোচন করেন তার লেখার মাধ্যমে। তার লেখনীতেই প্রথম উঠে আসে অপরাধীদের সঙ্গে আইরিশ পুলিশ ও রিপাবলিকান আর্মির সখ্যতার নানা তথ্য। ততদিনে তিনি অপরাধীদের টার্গেটে পড়ে যান। ১৯৯৬ সালের ২৬ জুন ভেরোনিকার গাড়ি ট্রাফিক সিগনালে দাঁড়ালে খুনিরা ৬ রাউন্ড গুলি দিয়ে তার বুক ঝাঝরা করে দেয়। ভেরোনিকাকে নিয়ে তৈরি চলচ্চিত্রে উঠে আসে এই নারী সংবাদিকের সাহসিকতার নানা কাহিনী। এই সাহসী নারী সংবাদিকের সম্মানে ডাবলিন পার্কে একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে।

 

ভিক্টোরিয়া মারিনোভা, বুলগেরিয়া

ধর্ষণের পর খুন করা হয় বুলগেরিয়ার ৩০ বছর বয়সী সাংবাদিক ভিক্টোরিয়া মারিনোভাকে। ৬ অক্টোবর ২০১৮ তার লাশ উদ্ধার করা হয় বুলগেরিয়ার উত্তর-পূর্ব প্রান্তের শহর রুসের একটি পার্ক থেকে। একটি বিনোদনমূলক টেলিভিশন চ্যানেলের অ্যাঙ্কর মারিনোভা। উত্তর-পূর্ব বুলগেরিয়ার একটি বিনোদনমূলক টেলিভিশন চ্যানেল ‘টিভিএন’-এর জনপ্রিয় অ্যাঙ্কর মারিনোভা। গত মাসেই দুর্নীতি নিয়ে তদন্তমূলক সাংবাদিকতার একটি অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা শুরু করেছিলেন তিনি। অনুষ্ঠানটির নাম- ‘ডিটেক্টর’। ওই অনুষ্ঠানের প্রথম এপিসোডটি দেখানো হয়েছিল। মারিনোভার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় শুরু হয় গোটা ইউরোপে। সত্যকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শিকার হলেন এমন একজন সাহসী সাংবাদিক। মারিনোভার ধর্ষণ ও খুনের সঙ্গে তার সাংবাদিকতা পেশার কোনো যোগসাজশ থাকার কথা অবশ্য মানতে চায়নি বুলগেরিয়া সরকার।

 

ডিকি চ্যাপেল, ভিয়েতনাম

আমেরিকান ফটোসাংবাদিক ডিকি চ্যাপেল জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৯ সালের ১৪ মার্চ। সাহসী এই যুদ্ধসাংবাদিক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে ভিয়েতনাম যুদ্ধ পর্যন্ত রণাঙ্গনের চিত্র তুলে আনেন  নিজের ক্যামেরায়। এ সময় তিনি ওয়ার করেসপন্ডেন্ট হিসেবে কাজ করতেন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল তার জীবনের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। তার মতো প্রচণ্ড রকমের সাহসী নারীর পক্ষেই হয়তো এমন অসাধ্য সাধন সম্ভব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার এই কাজকে যুদ্ধক্ষেত্রে রাখা অসাধারণ ভূমিকা হিসেবে উল্লেখ করে। ডিকি চ্যাপেল প্রথমদিকে ফিদেল কাস্ত্রোর সমর্থক থাকলেও পরবর্তীতে স্পষ্টভাবেই কমিউনিস্টের বিরোধিতা করতেন। আরও দাবি করতেন, সমাজতান্ত্রিক এই চিন্তার জন্যই ভিয়েতনাম যুদ্ধ। তবে নিজের সাহসিকতা বিশ্বজুড়ে যতই প্রশংসার হোক কুটমহল কেড়ে নিয়েছে তার জীবন। ১৯৬৫ সালে ভিয়েতনামের অপারেশন ব্ল্যাক ফেরেটের সময় ৪ নভেম্বর তাকে একটি মেরিন প্লাটুনের চৌকিতে হত্যা করা হয়। চ্যাপেলের গলা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলা হয়, আর দ্রুতই সেখানে তিনি মারা যান।

 

তারা শিকার যৌন হেনস্তার

নিজের দায়িত্ব পালনকালে নারী সাংবাদিকদের হতে হয়েছে শারীরিক ও যৌন হেনস্তার শিকার। আধুনিকতার এই যুগেও বিক্ষোভ-আন্দোলনে অথবা উৎসবের ভিড়ে নারীদেরই প্রথম হতে হয় নিগৃহীত। সামনে চলমান ক্যামেরা, টিভির পর্দায় বিশ্ববাসীর চোখ- সবকিছুকে উপেক্ষা করে হায়েনার দল হামলে পড়ে নারীর ওপর। এমন কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা নিচে তুলে ধরা হলো।

লারা লোগান

মার্কিন টিভি চ্যানেল সিবিএস নিউজের চিফ ফরেন করেসপন্ডেন্ট হিসেবে পরিচিত মুখ লারা লোগান। ২০১১ সালে জানুয়ারিতে কায়রো শহরে পৌঁছান তিনি। উদ্দেশ্য ছিল মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পদত্যাগের খবর কাভার করা। কিন্তু আন্দোলনরত শহরে যেদিন প্রেসিডেন্ট পদত্যাগের ঘোষণা দেন সেদিনই প্রচণ্ডভাবে শারীরিক আঘাত ও মারাত্মক যৌন নির্যাতনের শিকার হন লারা লোগান। ওই দিন লারা লোগান রাজধানী কায়রোর তাহরির স্কয়ারে বিজয়োৎসব কাভার করছিলেন। সিবিএস নিউজের পক্ষে তার অনুষ্ঠানটির নাম ছিল ‘৬০ মিনিটস’। তাহরির স্কয়ারে শুটিং চলাকালে ভয়ঙ্কর একদল লোক লারাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। প্রবল উল্লাসের মাঝে একদল দুষ্কৃতকারী তাকে সবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। জনতার ভিড়ের মধ্যে লারাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয় তা তার সদস্যরা ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। আড়ালে নিয়ে গিয়ে তার ওপর চালানো হয় ভয়াবহ যৌন নিপীড়ন। পরে একদল নারী ও আনুমানিক ২০ জন সেনাসদস্য তাকে উদ্ধার করে। টেলিভিশনের টিম তাকে নিয়ে পরদিনই সকালের ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেন। ক্ষতবিক্ষত লারাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালে।

হুলিয়েত গঞ্জালেস থেরান

চলতি বছর ১৫ জুন রাশিয়ার সারানস্ক শহর থেকে জার্মান সম্প্রচার মাধ্যমে ডয়চে ভেলের স্প্যানিশ সংবাদ চ্যানেলের জন্য খবর সংগ্রহ করছিলেন তিনি। সরাসরি সম্প্রচার চলার সময় এক দর্শক দ্রুত এসে তাকে চুমু খেয়ে চলে যান। ওই সময় গঞ্জালেস একবারের জন্যও সম্প্রচার না থামিয়ে দায়িত্ব পালন করে যান। এ ঘটনা তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে। যখনই সরাসরি সম্প্রচারের কাজ শুরু হয়, তখনই পরিস্থিতির সুযোগ নেন যৌন হয়রানিকারী। কাজ শেষ হওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে তিনি খুঁজে বের করার চেষ্টা করেও পাননি।

জুলিয়া গুইমার

এবারের বিশ্বকাপে ঘটা আরেকটি ঘটনা ঘটে পর্তুগিজ চ্যানেল টিভি গ্লোবো ও স্পোর্টটিভির সাংবাদিক জুলিয়া গুইমারের সঙ্গে। রাশিয়ার ইয়েকাতেরিনবার্গ থেকে তিনি সরাসরি সম্প্রচারে খবর পাঠাচ্ছিলেন। ওই সময় এক লোক ছুটে এসে তাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি খবর পাঠানো থামিয়ে কাত হয়ে ওই লোককে প্রতিহত করেন এবং শাসান। ওই সময় ওই লোক দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর