রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মানুষ নাকি রোবট!

সাইফ ইমন

মানুষ নাকি রোবট!

শেষকৃত্য সম্পন্ন করবে

মানুষের মৃতদেহকে প্রথা মেনে বিদায় জানাতে হয়। এই কাজে প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে জাপানিরা। তারা এমনই এক রোবট তৈরি করেছেন যা মানুষের শেষকৃত্য সম্পন্ন করবে। চীন বা জাপানের মানুষের কাছে রোবট বহুকাল থেকেই সঙ্গীর মতো আছে। বাড়ির কিংবা অফিসের কাজের জন্য তারা হরহামেশাই রোবট ব্যবহার করছেন। এবার সেই তালিকাতেই নতুন যুক্ত হলো নতুন হিউম্যানয়েড রোবট ‘পেপার’।

 

সুন্দরী মডেল কন্যা হিউম্যান সাইবারনেটিক 

হিউম্যান সাইবারনেটিক এইচআরপি রোবটটি অবিকল মানুষের মতো দেখতে। এর মুখায়ববে জাপানি মেয়ের চেহারা নিখঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যাকে দেখে আপনার মনে হতে পারে ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী কোনো মেয়ে। এটি সুন্দর মুখায়বব এবং কাঁধ পর্যন্ত চুলের অধিকারী এক অপরূপ সুন্দরী নারী রোবট। এই রোবটটির বিশেষত্ব হচ্ছে এটি একটি মডেল কন্যা। শুনলে অবাক হবেন যে, এই মডেল রোবট নানা রকম ড্রেস পরে মোট ৪২ রকমের স্টাইলে ক্যাটওয়াক করতে পারে। এর ব্যবহার অনেকটা স্বাভাবিক মানুষের মতো।

এই ধরনের রোবটের মতো আরও কিছু রোবট রয়েছে যারা দেখতে শুধু সুন্দরীই নয় বরং কেউ ওদের বিরক্ত করলে বা বাজে ব্যবহার করলে সঙ্গে সঙ্গে ইলেকট্রিক শক দেয় এবং প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ পর্যন্ত জানাতে পারে।

 

 

হোমসেপিয়ান বনাম রোবথ্যাসপিয়ান

রোবট এখন কথা বলতে পারে, কথোপকথন করতে পারে মানুষের সঙ্গে। এমনকি মানুষের সঙ্গে যৌনমিলনও করতে পারে সেক্স রোবট। কিছু রোবট তো এখন অবিকল মানুষের মতোই। লন্ডনের বিজ্ঞান মিউজিয়ামে যদি যান আপনার সঙ্গে দেখা হবে ‘রোবোথেসপিয়ান’ নামের অভিনেতা রোবটের সঙ্গে। স্বয়ংক্রিয় অভিনেতা রোবোথেসপিয়ান অবিকল মানুষের মতো দেখতে একটি ‘হিউম্যানয়েড’ রোবট। সে সবাইকে বলে, ‘যন্ত্র মানবের মুখোমুখি হতে চিরকালই একটু ভয় করে। কয়েক শতক ধরে প্রত্যেক প্রজন্মের নিজস্ব অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে নতুন ধরনের রোবট তৈরি হয়েছে। রোবটদের সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা না থাকার একটা অস্বস্তি আমাদের, মানে আপনাদের মধ্যে কাজ করে।’ লন্ডনের বিজ্ঞান মিউজিয়ামে শুধু ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ‘রোবট’ নামের একটা আস্ত প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। একশ’রও বেশি রোবট সেখানে উপস্থিত। প্রদর্শনীর কিউরেটর অ্যানা ড্যারন বলেন, ‘বিশেষ করে বিনোদনের জন্য হিউম্যানয়েড রোবট কাজে লাগানোর তাগিদ দেখা যায়। এদিকে তৈরি হচ্ছে সেক্স রোবটও।’ রোবটিক্স বিশেষজ্ঞ ড. রিচার্ডসন বলেন, ‘রোবট শিল্পে এখন ক্রমবর্ধমান হারে নজর দেওয়া হচ্ছে সেক্স রোবটের দিকে। এগুলো দেখতে কেমন হবে, কী কাজ সেগুলোকে দিয়ে করানো হবে তার নকশা তৈরি করা হচ্ছে, যা খুবই পীড়াদায়ক’। অ্যাবিস ক্রিয়েশনস নামে একটি প্রতিষ্ঠান পুরুষ ও নারীদের ‘সেক্স টয়’ বিক্রি করে তারা তাদের পণ্যকে যান্ত্রিক করে তুলতে শুরু করেছে। এদিকে ড. রিচার্ডসন বলছেন, ‘এর ফলে নারীদের সম্পর্কে প্রাচীন সেই ধারণাটিই পোক্ত হবে যেখানে নারীদেরকে যৌন-সঙ্গী বলে আর কিছুই মনে করা হয় না।’

আর রোবট হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন একটি প্রোগ্রাম বিশেষ যার পরিবেশ বুঝে কাজ করার ক্ষমতা আছে এবং যা দক্ষভাবে সুনিয়ন্ত্রিত চলন প্রদর্শন করতে পারে। এ রকম হিউম্যানয়েড রোবটের মধ্যে সর্বশেষ সংযোজন হলো ‘সোফিয়া’। এটি এমন এক ধরনের রোবট যা এর চোখ, মুখ, ঠোঁট, গাল ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের বাহ্যিক অনুভূতিগুলো ফুটিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারে। 

 

অলিম্পিক উইন্টার গেমসে রোবট

২০১৮ অলিম্পিক উইন্টার গেমসে ১১ ধরনের ৮৫টি রোবট ব্যবহার করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। ১১ ধরনের রোবটের মধ্যে একটি ছিল হিউম্যানয়েড। হাঁটার পাশাপাশি অলিম্পিক মশাল বহন করবে এই রোবট। খেলা চলাকালীন মাঠের দেয়ালে চিত্র এঁকেছে কিছু রোবট। আর কিছু মাঠে সরবরাহকারী এবং ফিশিং রোবট দেখা গেছে। এ ছাড়া কথা বলতে পারে এমন রোবটও ছিল উইন্টার অলিম্পিকসে। সময়সূচি, যাতায়াত ব্যবস্থা এবং দর্শনীয় স্থান বা বস্তু নিয়ে তথ্য দেবে এই রোবটগুলো। কোরিয়ান, চাইনিজ, জাপানিজ এবং ইংরেজি ভাষায় কথা বলেছে এগুলো। অলিম্পিক গেইমসে দেশটির স্থানীয় ইলেক্ট্রনিক পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এলজিও রোবট ব্যবহার করতে যাচ্ছে। চলতি বছরের শুরুতে দুটি রোবট উন্মোচন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে সিউলের ইঞ্চেওন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে রোবটগুলোর পরীক্ষা চালাচ্ছে এলজি। এর মধ্যে একটি পরিষ্কারক রোবট এবং অন্যটি এয়ারপোর্ট গাইড রোবট। অন্যদিকে পরবর্তী সামার অলিম্পিকসের আগে পুরো একটি ‘রোবট ভিলেজ’ বানানোর আশা করছে জাপান।

 

হোম সিকিউরিটি রোবট

এ ধরনের রোবটগুলো ঘর পাহারা দেওয়ার কাজে ব্যবহূত হয়। এতে রয়েছে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা। প্রয়োজনে কোনো বিপদ দেখলে এরা সাবধান করে দিতে পারে। এটি চালানোর জন্য ব্যাটারির প্রয়োজন হয় এবং প্রয়োজনের সময় এটি নিজেই নিজের চার্জের ব্যবস্থা করতে পারে। গোয়েন্দাগিরির কাজেও এ ধরনের রোবটগুলো বিশেষভাবে পারদর্শী।

 

চাকরি হারাবে কোটি কোটি মানুষ!

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ম্যাকিনজি গ্লোবাল ইনস্টিটিউট’-এর একটি গবেষণা রিপোর্টে আশঙ্কা করা হয়েছে যে, আসছে ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্ববাজারে চাকরির এক-পঞ্চমাংশ চলে যাবে রোবটের দখলে। মানুষ কাজ হারাবে ৭৫ মিলিয়ন। তবে সৃষ্টি হবে ১৩৩ মিলিয়ন নতুন কাজ। যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮ শতাংশ মানুষের চাকরি আজ হুমকির মুখে। ২০২৫ সালের মধ্যে এখনকার অর্ধেক কাজ করবে রোবট। প্রযুক্তির উন্নয়নে জৈবিক মানুষের চাকরি আজ হুমকির মুখে। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন ভবিষ্যতের পৃথিবীতে সব কাজই করবে মানুষ। এখনো নানা কাজে রোবট পারদর্শী। যেমন ঘরের কাজে সাহায্য করার জন্য রয়েছে নানা রকম হিওম্যানয়েড রোবট। এরা আপনাকে ঘরের কাজে সাহায্য করবে, চা বানিয়ে দিবে, এমনকি রান্নাবান্নার কাজেও এ ধরনের রোবটগুলো বিশেষভাবে উপযোগী। এরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজেও ব্যবহূত হয়। ‘কিসমত’ শব্দটির উৎপত্তি আরবি, তুর্কি, হিন্দি, উর্দু ও পাঞ্জাবি ভাষা থেকে। যার অর্থ ভাগ্য। কিসমত নামের একটি রোবট বানানো হয়েছে। যেটি বিশেষ ধরনের এক রোবট। এই রোবটটি মানুষের মুখের অনুভূতিকে নিজের মাঝেও ফুটিয়ে তুলতে পারে। এই রোবটটিতে তৈরিতে খরচ হয়েছে ২৫ হাজার মার্কিন ডলার। এটি বিজ্ঞানীদের একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার বলে ধরা হয়। হামবুর্গের মার্টিনি ক্লিনিকে সারা দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রস্টেট অপারেশন করা হয়। এই অপারেশন করেন নামকরা শল্য চিকিৎসকরা। এমনিই একজন প্রফেসর আলেক্সান্ডার হ্যেজে প্রস্টেট অপারেশনের স্পেশালিস্ট। এ ছাড়াও একটি রোবট আছে তাদের দলে। তার সহকারী কিন্তু একটি ব্যতিক্রম। কারণ সে হলো একটি রোবট। এই রোবটই প্রফেসর হ্যেজেকে শরীরের একটি ক্যান্সারগ্রস্ত অংশ পুরোপুরি কেটে বাদ দিতে সাহায্য করে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, নয়তো আবার নতুন করে মেটাস্টাসেস তৈরি হতে পারে। রোবটটির নাম ‘দ্য ভিঞ্চি’। এই রোবট আর সার্জন মিলে এ যাবৎ মোট ৭৫০টি অপারেশন করেছেন।

ভবিষ্যতে রোবট মানুষের জায়গা দখল করে নেবে এ রকম আশঙ্কা নিয়ে বিজ্ঞানীরা বেশ চিন্তিত। আর মানুষকে খুন করার মতো কাজও করতে পারবে রোবটরা। বা তাদের দিয়ে করানো হতে পারে বলে মনে করছেন অনেক বিজ্ঞানী। ইতিমধ্যেই প্রায় ২ হাজার বিজ্ঞানী, তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং গবেষক রোবটের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করে প্রচারণা শুরু করেছেন। তাদের মধ্যে আছেন স্টিফেন হকিং, ইলোন মাস্ক, স্টিভ ওজনিয়াক প্রমুখ। এর সঙ্গে একমত পোষণ করতে সম্পৃক্ত হয়েছেন রোবট নিয়ে উদ্বিগ্ন আরও প্রায় ১০ হাজার মানুষ। প্রচারণার অংশ হিসেবে ‘ফিউচার অফ দ্য লাইফ ইনস্টিটিউট’ থেকে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে। এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ওজনিয়াক, স্টিফেন হকিং, গুগলের পিটার নরভিগসহ আরও অনেকে।

 

রোবট চালিত ব্যাংক

প্রযুক্তির অন্যতম এক শাখা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দ্রুতগতিতে নিজের বিকাশ ঘটাচ্ছে। উন্নত বিশ্বের ছোট-বড় যে কোনো কাজেই ব্যবহূত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধির প্রযুক্তি। মানুষের কষ্ট লাঘব করতে মানবদেহের বাইরে লালিত এই বুদ্ধির প্রয়োগ দিন দিন বাড়বে এটাই অবশ্য স্বাভাবিক। দিন দিন পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে আমাদের পারিপার্শ্বিক অবকাঠামো। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে যেমনভাবে সহজ করেছে, তেমনি করেছে আরামদায়ক। মানুষ এখন সহজ থেকে জটিল যে কোনো কাজের জন্য নির্ভর করছে মেশিন বা রোবটের ওপর।

অদ্ভুত হলেও সত্যি যে, চীনের একটি ব্যাংকে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে একদল রোবট কর্মকর্তা। চীনের ‘চায়না কনস্ট্রাকশন ব্যাংক (সিসিবি)’ তাদের সাংহাই শাখাটি সম্পূর্ণভাবে পরিচালনা করছে কিছু অত্যাধুনিক যন্ত্রমানব বা হিউম্যানয়েড রোবট দ্বারা। এই শাখাটি পরিপূর্ণভাবেই প্রযুক্তিনির্ভর। এটি পরিচালিত হয় ভার্চুয়াল রিয়ালিটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মুখমণ্ডল শনাক্তকরণ পদ্ধতিসহ ইত্যাদি অভিনব প্রযুক্তির সহায়তায়। এই ব্যাংকে প্রবেশ করলেই দেখা মেলবে কিছু বন্ধুসুলভ রোবটের। যাদের সঙ্গে আপনি সরাসরি কথা বলতে পারবেন, বলতে পারবেন আপনার প্রয়োজনের কথা। তারা আপনার কথা শোনে আপনাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে। 

আপনাকে সাহায্য করার জন্য সর্বদাই প্রস্তুত রয়েছে। ব্যাংক হিসাব খোলা, অর্থ স্থানান্তর, বৈদেশিক লেনদেনসহ ব্যাংকিং সেক্টরের নানা কাজ করে দিতে পারে এই রোবটরা। অন্যান্য ব্যাংকগুলোর মতো এখানে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় না। এই রোবট ব্যাংক কর্মকর্তারা তুলনামূলক দ্রুত সেবা দিতে সক্ষম।

 

প্রথম রোবট পুলিশ

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে পুলিশে যুক্ত হয়েছে  রোবট। বিশ্বে পুলিশ বাহিনীতে রোবটের ব্যবহারের ঘটনা এটাই প্রথম। এই পুলিশের কোনো ভিসা, মেডিকেল ইন্স্যুরেন্স কিংবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রশিক্ষণের দরকার নেই। তারা দুবাইয়ের বাসিন্দা ও অসংখ্য পর্যটকের সঙ্গে রাস্তায় নামতে পুরোপুরি প্রস্তুত। রোবট পুলিশ ২১ মে রবিবার দাফতরিকভাবে কর্মস্থলে যোগ দেয়। তবে দুবাইতে চতুর্থ উপসাগরীয় তথ্য নিরাপত্তা মেলা ও সম্মেলনের অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানোর মধ্য দিয়ে ২৩ মে আনুষ্ঠানিক কর্মযাত্রা শুরু হয় এই পুলিশের। স্বয়ংক্রিয় এ রোবট পুলিশ লম্বায় পাঁচ ফুট পাঁচ ইঞ্চি। এটির ওজন ১০০ কেজি। এতে একটি ইমোশন ডিটেক্টর সংযুক্ত আছে, যা ব্যবহার করে এই রোবট তার চার পাশে দেড় মিটার দূরত্ব পর্যন্ত কোনো সংকেত অনুধাবন করতে পারবে। এটি মানুষের আবেগ ও মুখের অভিব্যক্তি বুঝতেও সক্ষম। মানুষের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখের অনুভূতি অনুধাবন করে সেই অনুযায়ী আচরণ করবে এই রোবট। রাস্তায় টহলকালে রোবটটি ইন্টারনেট, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত থাকবে। এটি  মুখ শনাক্তকরণ সফটওয়্যার ব্যবহার করে অপরাধীকে চিহ্নিত করতে ও ধরতে পুলিশকে সহায়তা করবে। এমনকি এটি লাইভ ভিডিও ফুটেজ পাঠাতেও সক্ষম।

 

চলচ্চিত্রের নায়িকা

ছবিতে নায়ক-নায়িকা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সুন্দরী নায়িকার সঙ্গে নায়ক প্রেম করবে, কথা বলবে, আবার মাঝে মাঝে একটু রোমান্স তো থাকবেই। তবে এবারও নায়ক রোমান্স করবে ঠিকই কিন্তু যার সঙ্গে করবে সেই নায়িকা নাকি রক্ত-মাংসের মানুষ নন। কথাটা শুনে একটু অবাক হলেও ঘটনাটি দেখা যাবে একটি জাপানি ছবিতে। ছবির নায়িকা এখানে অ্যান্ড্রয়েড রোবট। নাম জেমিনয়েড এফ। আর ছবির নাম ‘সায়োনারা’। এই প্রথম কোনো মানুষ নায়কের বিপরীতে রোবট নায়িকাকে দেখা যাবে ছবিতে। জাপানের পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ নিয়ে ছবি এগিয়েছে রোবট ও তানিয়া নামের এক মহিলার সম্পর্ক নিয়ে। রোবটের সংস্পর্শে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন তানিয়া। এর আগে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ওপর স্পেশাল এফেক্টসে ছবিতে তৈরি হয়েছে রোবট। তবে জেমিনয়েড এফ বা লিওনা কোনো মানুষ নয়। পরিচালকের কথা শুনে কৃত্রিম বুদ্ধির সাহায্যে কাজ করে লিওনা। জাপানি পরিচালক কোজি ফুকাদা, নাট্যকার ওরিজা হিরাতা এবং ওসাকা ইউনিভার্সিটির ইন্টেলিজেন্ট রোবোটিকস ল্যাবরেটরির অধ্যাপক হিরোশি ইশিগুরো এই ছবি তৈরি করেছেন। ২০১৫ সালের ২৮তম টোকিও ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দেখানো হয়েছে ছবিটি। মুক্তি পেয়েছে ২০১৬ সালে। ছবিটি যথেষ্ট উপভোগ্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর