শিরোনাম
বুধবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিশ্বের যত বিলাসবহুল ট্রেন

তানিয়া তুষ্টি

বিশ্বের যত বিলাসবহুল ট্রেন

সবচেয়ে বিলাসবহুল রোভোস ট্রেন

১৯৮৯ সালে আফ্রিকান রোহান ভোস নিজ নামে একটি   কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। উদ্দেশ্য ট্রেন বানানো। বেশ কয়েকটি ট্রেন বানিয়েও ফেললেন। সেগুলো সাউথ আফ্রিকা, নামিবিয়া এবং তানজানিয়ায় চলাফেরা করে। তবে এগুলোর মধ্যে রোভোস ট্রেন বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল ট্রেনের খেতার অর্জন করে নিয়েছে। এই ট্রেনে ভ্রমণকারীরা সাধারণ প্রিটোরিয়া থেকে কেপটাউন পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারেন। প্রায় ২ হাজার কিমি. পথ পাড়ি দেওয়া হয় এ সময়। এতে রয়েছে রয়েল স্যুট, ডিলাক্স স্যুট এবং পুলম্যান স্যুট। প্রথম শ্রেণির স্যুটগুলো প্রায় ১৭২ স্কয়ার ফুট যা কিনা পুরো অর্ধেক বগিজুড়ে। এতে রয়েছে একটি মাস্টার বেড, ড্রয়িং রুমের সঙ্গে সোফা এবং একটি ভিক্টোরিয়া ক্লাসের বাথরুম।  ট্রেনের কামরাগুলো কাঠ দিয়ে তৈরি আর প্রতিটা কেবিনে এসি, বাথরুম, বার সবই আছে। একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৭২ জন যাত্রী এই ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারেন। তিনটি কেবিনের মধ্যে রয়েল স্যুট তৈরি করা হয়েছে একটি বগির অর্ধেক জায়গাজুড়ে। আর এটাই সবচেয়ে বড় এবং বিলাসবহুল স্যুট। কেউ যদি রয়েল স্যুটে প্রিটোরিয়া থেকে কেপটাউন পর্যন্ত ভ্রমণ করতে চায়, তবে তাকে খরচ করতে হবে ২ লাখ টাকার কিছু বেশি। তবে এর মধ্যেই তিন বেলার খাবার, পানীয়, বিগ হোল ও ডায়মন্ড মাইন মিউজিয়াম পরিদর্শনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত। ট্রেনটিতে ভ্রমণে রয়েছে সুনির্দিষ্ট ড্রেসকোড। দিনের বেলা আনুষ্ঠানিক ড্রেস পরিধান না করলেও সন্ধ্যার সময় পরতেই হবে। এছাড়া কেউ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চাইলে নিজের কেবিনে বসেই ব্যবহার করতে পারবেন। ভ্রমণের সময় নামিবিয়া ও আফ্রিকার বৃহৎ বনাঞ্চল পাড়ি দিতে হবে। ট্রেনের জানালাগুলো করা হয়েছে বিশেষভাবে অনেক বড় আকৃতির। যার জন্য, সাফরি পার্কের পুরো দৃশ্য বেডরুমে বসে উপভোগ করা যাবে।

 

পাঁচতারকা শিকি-শিমা

প্রতিযোগিতার এই বিশ্বে সবচেয়ে আয়েশি ট্রেনের তকমা হাঁকিয়ে নিয়েছে জাপানের শিকি-শিমা। পূর্ব জাপান রেলওয়ে কোম্পানির সর্বশেষ সংযোজন এটি। ২০১৭ সালের ১ মে চালু হওয়া এই ট্রেনে দক্ষ বাবুর্চি, দামি বাথটাব, ফায়ারপ্লেসের আরামদায়ক উষ্ণতা, প্রযুক্তি সহায়তা থেকে শুরু করে কী নেই? ট্রেনের ভিতরকার পরিবেশ দেখলে মনে হবে, এটি চলমান পাঁচতারকা হোটেল!  ট্রেনটিতে মোট বগি আছে ১০টি। ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলা ট্রেনটিতে পৃথক দুটি পর্যবেক্ষণ বগিও রয়েছে। এতে ৩৪ জন যাত্রী বসতে পারবেন। চলার সময় কোনোরকম ঝাঁকুনি বা শব্দ করবে না এই ট্রেন। শুধু তাই নয়, এই ট্রেন যে লাইনগুলোতে চলবে তার দুই পাশের রাস্তায় নানা ধরনের চিত্তাকর্ষক ফুলগাছ লাগানো হয়েছে। সব মিলিয়ে যেন এক শান্তিময় প্রাকৃতিক পরিবেশে স্বপ্নযাত্রা। ট্রেনটির মূল স্লোগান হলোÑ একটি মসৃণ যাত্রার প্রত্যাশায় শান্তিময় এক ভ্রমণ। ট্রেনটির আকর্ষণীয় দিকগুলো হলো দুই পাশে মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত বিস্তৃত জানালা। আরামদায়ক আসনে বসে যাত্রীদের ট্র্যাকের সঙ্গে দৃশ্যপটগুলো দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে। ট্রেনের বাবুর্চিরা যাত্রীদের পছন্দমাফিক সুস্বাদু সব মৌসুমি খাবার পরিবেশন করবেন। নৈশভোজের পর তারা পানীয়ের সঙ্গে পিয়ানোর সুরে মাতোয়ারা হবেন। চারদিন তিন রাতের অতুলনীয় এই অভিজ্ঞতা দিতে ট্রেন যাত্রাটি শুরু হয় টোকিও থেকে, পৌঁছায় জাপানের সবচেয়ে উত্তরের দ্বীপ হোক্কাইডোতে। ফিরতি ট্রেনের ব্যবস্থাও আছে। শিকি-শিমায় ভ্রমণ উপভোগ করতে চাইলে যাত্রীদের জনপ্রতি সাড়ে ৮ হাজার মার্কিন ডলার গুনতে হবে।  সঙ্গীসহ ঘুরতে চাইলে খরচ হবে আরও ১৭ হাজার মার্কিন ডলার! খরচের কথা শুনেই চমকে গেলেন তাই তো, অথচ টিকিটের দাম চড়া হওয়া সত্ত্বেও যাত্রীর কিন্তু কমতি নেই। ‘শিকি-শিমা’ ছাড়াও জাপানে ২০১৩ সালে কিয়ুশু রেলওয়ে তাদের ‘সাততারকা’ মানের একটি সেবা শুরু করে। সেই ট্রেনে পিয়ানো, পানশালা, বিলাসবহুল স্যুটসহ কোনো কিছুরই কমতি নেই। শুধু তাই নয়, পরবর্তী সময়ে যোগ করা হয়েছে ঘুমানোর উপযোগী অত্যাধুনিক ‘টোয়াইলাইট এক্সপ্রেস মিজুকাজে।’

 

দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহাসিক ব্লু

দক্ষিণ আফ্রিকার বিলাসবহুল ট্রেন এটি। এই ট্রেনটি চালু করা হয় ১৯২৩ সালে। তখন ট্রেনটি জোহান্সবার্গ থেকে ইংল্যান্ডে যাওয়া যাত্রীদের জাহাজঘাট পর্যন্ত বহন করত। বেশিভাগ যাত্রীই থাকত ইংরেজ, তারা ছিল পুরো আফ্রিকার শাসক। তাই ট্রেনটিতে ছিল অসম্ভব রকমের বিলাসিতা। বর্তমানে ট্রেনের মালিক পরিবর্তন হওয়ায় মালিক হয়েছে মেন্ডেলার উত্তরসুরিরা। বর্তমানে ট্রেনটি কেপটাউন থেকে প্রিটোরিয়া পর্যন্ত রুট ব্যবহার করে। প্রায় ১৬০০ কিমি. পথ পাড়ি দেয় এই ভ্রমণে। মূলত দুটি ট্রেন চলে আপ-ডাউন ভিত্তিতে। একটিতে ৩৭টি কক্ষে ৭৪ জন অতিথি অপরটিতে ২৯টি কক্ষে ৫৪ জন অতিথি বহন করে। ট্রেনের ভিতরে যে বিছানা ব্যবহার করা হয়েছে তা অত্যন্ত আরামদায়ক। তৎকালীন আফ্রিকার সম্মানের বিষয় হিসেবে দেখা হতো এগুলোকে। এখনো অনেক ইংরেজের বাসভবনে এই খাটগুলো শোভাবর্ধন করছে।

বিশাল এই স্যুটটির ঠিক অপর প্রান্তে রাখা আছে সোফা আর একটি টেবিল।ম ট্রেনের ভিতরকার ডাইনিংয়ে একসঙ্গে ৪২ জন বসে খেতে পারবে। দিন বদলেছে, আধুনিকতার ছোঁয়া পড়েছে সবখানে কিন্তু ঐতিহ্যবাহী এই ট্রেনের আসবাবগুলো এখনো আগের মতোই রাখা হয়েছে। এর কারণ একটিইÑ পুরনো ঐতিহ্যকে ধারণ করা। ইংরেজদের বিলাসিতা প্রমাণের জন্যও এটি রাখা হয়। লাউঞ্জগুলোতেও একই রকম ব্যবস্থা। তবে এখানে আলাদা কাব কার, লাউঞ্জ কার, এবং একটি কনফারেন্স কার রয়েছে। কাব কারটিতে রয়েছে স্মোকিংয়ের ব্যবস্থা, ড্রিংকস এবং বার-এর সুবিধা। লাউঞ্জ কারটিতে রয়েছে খুব রিচ একটি লাইব্রেরি। যেখানে বসে আপনি অসাধারণ একটি সময় কাটাতে পারবেন। আর কনফারেন্স কারটিতে রয়েছে মিটিং করা এবং ফ্যামিলি পার্টি করার জন্য আলাদা আলাদা সুবিধা।

তবে ট্রেনটি সবসময়ই দক্ষিণ আফ্রিকার দাস প্রথার কথা স্মরণ করায়, অত্যাচারী ইংরেজদের কথা স্মরণ করায় আর স্মরণ করায় নেলসন মেন্ডেলার কথা; যিনি এই সাদা চামরাদের হাত থেকে সত্যিকারের মুক্তি এনে দিয়েছিলেন।

 

ঐতিহ্যবাহী সিম্পলন

শুধু বিলাসবহুলই নয়, পৃথিবীর ঐতিহ্যবাহী  ট্রেনেগুলোর মাঝে সিম্পলন অন্যতম।  ট্রেনটিতে আছে রয়্যাল ট্রাভেলার্স সুবিধা। যার মাঝে অন্তর্ভুক্ত আছে অভিজাত শ্রেণি, আমলা ও কূটনীতিকদের জন্য বিশেষ শৈলীর আপ্যায়ন ব্যবস্থা। ১৮৮৩ সালে যাত্রা শুরু করা এই ট্রেন ভেনিস সিম্পলন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস নামে পরিচিত। এটি গোটা ইউরোপ থেকে প্যাসেঞ্জার তুলে রোমানিয়ায় গিয়ে পৌঁছায়। ট্রেনটি মূলত ছয়টি ভিন্ন দেশ এবং ১০টি পৃথক রেললাইনে চলার পথ অতিক্রম করে। ট্রেনটির রেস্তোরাঁয় ব্যবহার করা হয় চিনামাটি ও রূপার বাসন। ডাইনিং কার সাজানো হয় দুধসাদা লিনেনের কাপড় দিয়ে। সান্ধ্যভোজের সময় রয়েছে আলাদা ড্রেসকোড। ছেলেরা কালো স্যুট আর মেয়েরা ফরমাল গাউন পরেই কেবল সেই ভোজনে অংশ নিতে পারেন।

 

আরামপ্রদ গোল্ডেন ঈগল

পৃথিবীর দীর্ঘতম ট্রেনভ্রমণ হয় সাইবেরিয়ান রেলরোড রাশিয়ায়। টানা ১৫ দিনে পাড়ি দেওয়া হয় রাশিয়ার মস্কো থেকে চীনের রাজধানী পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ৫০০ মাইল পথ। এত দূরের যাত্রায় সবচেয়ে বিলাসিতার ছোঁয়া দেবে গোল্ডেন ঈগল। ট্রেনের ভিতরে রয়েছে স্লিপিং কার, ডাইনিং কার, বার কার, রিক্রিয়েশনাল কার এবং অবজারভেশন কার। ডাইনিং কারে রয়েছে রাশিয়া এবং চীনের বিখ্যাত খাবার।

এই ট্রেনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় হল বিছানা। বিছানাগুলো এমনভাবে সাজানো, যাতে এত দীর্ঘ ভ্রমণেও যাত্রীদের কোনো অসুবিধা হয় না। প্রত্যেকটি কক্ষে রয়েছে একটি টিভি, একটি টেবিল, বসার জন্য সোফা এবং খোলামেলা জানালা। চলতি পথে দেখা মিলবে রাশিয়া এবং চীনের ঐতিহাসিক স্থান, সবুজ বনাঞ্চল এবং দর্শনীয় লেক। এই ট্রেনের টিকিট মূল্য সাড়ে তিন লাখ থেকে ৩২ লাখ টাকা পর্যন্ত।

 

রোমান্টিক ভ্রমণ

ভাবুন তো, পছন্দের সঙ্গীকে নিয়ে ট্রেনে চেপে দূরে কোথাও যাচ্ছেন। পাশে খোলা জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছে দিগন্তবিস্তৃত মাঠ, সুবজে ঘেরা অরণ্য। তারপর ট্রেনটি হয়তো একসময় ধীর স্রোতের নদীর ওপর দিয়ে এগিয়ে চলছে। এমন সময় মৃদু বাতাসে প্রিয় মানুষটির হাত ধরে মুখোমুখি বসে আছেন। ধুর বাস্তবে এটি সম্ভব নাকি, কথাগুলো সিনেমার দৃশ্যে দেখা যেতে পারে। কিন্তু না, আপনি চাইলে বাস্তবের এমন রোমান্টিক ট্রেনযাত্রা করতে পারেন। তুরস্ক আপনার জন্য এমন একটি রোমান্টিক ট্রেনের ব্যবস্থা রেখেছে। তুরস্কের ইস্টার্ন রেলওয়ে এ রোমান্টিক ট্রেনযাত্রার ব্যবস্থা করেছে। এতে নিজের পছন্দমতো কেবিনকে সাজিয়েও নিতে পারবেন। পূর্ব তুরস্কে প্রায় হাজার কিলোমিটার যাত্রা করা যায় এই ইস্টার্ন এক্সপ্রেস ট্রেনে। আর যাত্রাপথে বাইরের মনোরম দৃশ্য যেমন দেখা যাবে তেমন ট্রেনের ভিতরের বিলাসবহুল সব উপকরণও পাওয়া যাবে। ট্রেনটিতে রয়েছে পর্যাপ্ত সুস্বাদু খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থাও। ইস্টার্ন এক্সপ্রেস ট্রেনটি একদিনে ১৩৬৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। ভ্রমণপথে এটি আর্মেনিয়া সীমান্তের কাছাকাছি অঞ্চল দিয়ে বিখ্যাত আনাতোলিয়া অঞ্চল অতিক্রম করে। পথিমধ্যে দেখা মেলে কৃষিভূমি, দারুণ পাহাড়, জঙ্গল, নদী আর দীর্ঘ অন্ধকার টানেল।

 

ভারতের মহারাজা এক্সপ্রেস ও অন্যান্য

প্রতিবেশী দেশ ভারতের সুখ্যাতি রয়েছে যাত্রাপথে ট্রেন ব্যবহারের জন্য। বেশিরভাগ যাত্রী বেছে নেন নিরাপদ ও সাশ্রয়ী এই বাহনকে। কিন্তু সাশ্রয়ের পাশাপাশি দেশটিতে রয়েছে বিলাসবহুল বেশ কয়েকটি ট্রেন। এর মধ্যে রয়েল প্যালেস অন হুইলস, রাজস্থান অন হুইলস, মহারাজা এক্সপ্রেস, ডেকান ওডিসি অন্যতম। ‘প্যালেস অন হুইলস’কে আপনি আস্ত একটি প্যালেস ধরে নিতে পারেন। এর ভিতরের সাজসজ্জা আপনাকে অভিভূত করবে নিশ্চিত। ইন্ডিয়ান রেলওয়ে এবং রাজস্থান টুরিজমের   যৌথ পরিচালনার ট্রেনটি চালু হয় ১৯৮২ সালে। তবে ২০০৯ সালে আবার ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন পরিবর্তন করা হয়। এটি ৭ রাত ৮ দিনের রাউন্ড ট্রিপ পরিচালনা করে। নয়াদিল্লি, জয়পুর, মাধপুর, চিত্তাগড়, উদয়পুর, জয়সালমির, জোধপুর, ভরতপুর, আগ্রা হয়ে আবার দিল্লি  ফেরত আসে। মূল ট্রেনটি ডিজাইন করা হয়েছে গুজারাটের রাজপুত, হায়দ্রাবাদের নিজাম এবং ব্রিটিশ ভাইসরয়দের রাজপ্রাসাদগুলোর ডিজাইনকে অনুসরণ করে। প্রতিটা বগির নাম রাখা হয়েছে তখনকার রাজপুতদের স্টেটগুলোর নাম অনুসারে। প্রতিটি বেডরুম ডিজাইন করা হয়েছে বগির নামের ওই স্টেটের রাজপুতদের বেডরুমগুলো অনুসরণ করে। এখানে আপনি রাজপ্রাসাদের বিলাসিতা পুরোপুরি উপভোগ করতে পারবেন। টিকিট খরচ পড়বে ২.৮ লাখ থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত।

একই কোম্পানির প্রায় একই রুটে চলাচলকারী আর একটি বিলাসবহুল ট্রেন রয়েল ‘রাজস্থান অন হুইলস’। তবে ভিতরকার ইন্টেরিয়র ডিজাইন এবং অন্যান্য সুবিধাদি কিছুটা আলাদা। তবে এই ট্রেনে রাজস্থানের টুরিস্ট স্পটগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০০৯ সালে চালু করা এই ট্রেনও ৮ দিন এবং ৭ রাতের ট্যুর পরিচালনা করে।

বিলাসিতার জন্য আগের দুটি ট্রেনের সাফল্য যখন তুঙ্গে তখন এই সারিতে যোগ হয় ‘মহারাজা এক্সপ্রেস’। ২০১০ সালে চালু হওয়া এই ট্রেনটিতে আগের ট্রেন দুটির সব ভুলত্রুটি সংশোধন করে আরও আধুনিক এবং বিলাসবহুল করা হয়। ট্রেনটিতে সর্বোমোট ২৪টি বগি রয়েছে; যার মধ্যে পাঁচটি ডিলাক্স স্যুট কার, ছয়টি জুনিয়র স্যুট, দুটি নরমাল স্যুট, একটি প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট কার, একটি বার কার, একটি লাউঞ্জ কার, দুটি রেস্টুরেন্ট কার, একটি কিচেন কার, একটি স্টাফ কোচ এবং একটি কোচ রয়েছে শুধু ম্যানেজারদের জন্য। বিশাল এই ট্রেনটি যাত্রী বহন করে মাত্র ৮৪ জন।

প্যালেস অন হুইলসের সঙ্গেই বানানো ‘ডেকান ওডিসি’। প্রায় একইরকম অন্দরসজ্জা রয়েছে এ ট্রেনে। এটি মূলত মুম্বাইকেন্দ্রিক ট্রেন। এর রয়েছে প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট ও নরমাল স্যুট। প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে রয়েছে একটি বেডরুম, এটাচ বাথরুম ও ড্রইংরুম। অপরদিকে নরমাল স্যুটে রয়েছে ডাবল বেড এবং এটাচ বাথ। মুম্বাইয়ের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতি খেয়াল রেখে ডিজাইন করা হয়েছে প্রতিটি স্যুট। দুটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে পেশওয়া-১ ও ২ নামে। দুটি কারই একই ডিজাইন করা এবং একইসঙ্গে ৪২ জন করে যাত্রী খাবার খেতে পারে। এখানকার সব খাবারের মেনু সাউথ ইন্ডিয়ান হয়ে থাকে।

সর্বশেষ খবর