বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিরিয়াল কিলার

সিরিয়াল কিলার

হত্যা করাই তাদের নেশা। নেশা মেটাতেই খুনের মতো নৃশংস কাজ অবলীলায় করে বেড়ান। খুনের নেশায় মত্ত এই সিরিয়াল কিলাররা। একের পর এক খুনের পেছনে থাকা মোটিভগুলোও অদ্ভুত, অবিশ্বাস্য! গিনেস বুকে নাম লেখার জন্য কেউ লাশের পর লাশ ফেলে দিয়েছেন। কেউবা রক্তে উল্লাস করতে খুন করে বেড়ান। কেউ খুন করতে ধরেন ছদ্মবেশ। খ্যাপাটে সিরিয়াল কিলারদের খুনের রহস্য নিয়ে লিখেছেন- তানিয়া তুষ্টি

 

 

রিচার্ড ট্রেন্টন চেইস

খুন, রক্তপান, মৃতদেহের সঙ্গে যৌনাচার শেষে খেতেন কাঁচা মাংস।

 

হরর মুভিতে ভ্যাম্পায়ার দেখেছেন নিশ্চয়। বিভিন্ন সোসাইটিতে ভ্যাম্পায়ারের অস্তিত্ব নিয়েও চলে অনেক কানাঘুষা। তবে ছিপছিপে গড়নের রিচার্ড ট্রেন্টন চেইস ছিলেন ভয়ঙ্কর ধরনের বাস্তব ভ্যাম্পায়ার। নানা কায়দা-কানুন করে একের পর এক খুন, রক্তপান, মৃতদেহের সঙ্গে যৌনাচার এবং শেষমেশ মরদেহের কাঁচা মাংসই খেয়ে নিতেন এই ভ্যাম্পায়ার। এগুলো তার কাছে ছিল নেশার মতো। ১৯৭৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় এক মাসে ৬ জনকে হত্যা করেন তিনি। রিচার্ডের হত্যাকাণ্ডের হাতেখড়ি হয় ছোট প্রাণী হত্যা করে। এরপর সেগুলো ব্লেন্ড করে খেতেন রিচার্ড। এ জন্য অবশ্য প্রাণী নিধন আইনে পুলিশের কাছে ধরা পড়েন। পরবর্তীতে মানসিক সমস্যা দেখিয়ে রিচার্ডের কারামুক্তি মেলে। মুক্তির পর রিচার্ডের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় মানুষ। মৃত ব্যক্তির রক্ত দিয়ে স্নান করাও ছিল রিচার্ডের কাছে পছন্দের একটি বিষয়। এই খুনি পুলিশের কাছে ধরা পড়েন ১৯৭৯ সালে। আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিলেও ১৯৮০ সালে জেলেই আত্মহত্যা করেন রিচার্ড।

 

আন্দ্রে ই চিকাতিলো

ধর্ষণের পর ছুরিকাঘাতে হত্যা। পতিতা ও ভবঘুরে ছিল খুনের লক্ষ্যবস্তু।

 

১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে প্রায় ৫৩ জন নারী ও শিশুকে হত্যা করেন আন্দ্রে ই চিকাতিলো। ইউক্রেনে জন্ম নেওয়া এই সিরিয়াল কিলারের প্রথম হত্যাকাণ্ড ছিল ১৯৭৮ সালের ২২ ডিসেম্বর। সেদিন ৯ বছর বয়সী একটি মেয়েকে ধর্ষণের আগে ছুরিকাঘাতে মেরে ফেলেন। আন্দ্রে ই চিকাতিলোর হত্যাযজ্ঞের শুরু এখান থেকেই। তিনি এতটাই নৃশংস ছিলেন যে, বিশ্বে তার পরিচিতি ঘটে ‘বুচার অব রোস্তব’ বা রোস্তবের কসাই নামে। আন্দ্রে ই চিকাতিলোর পরবর্তী প্রতিটি হত্যাকাণ্ডই প্রায় একইভাবে সম্পন্ন হয়। প্রথমে যৌন চাহিদা পূরণ পরে ছুরিকাঘাতে হত্যা করতেন তিনি। হত্যার জন্য লক্ষ্যবস্তু সন্ধানে রেলস্টেশন ও বাসস্টেশনে ঘুরতেন। সেখান থেকে পতিতা ও ভবঘুরে প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের তার সঙ্গে নিয়ে যেতেন টাকা ও মদের প্রলোভন দেখিয়ে। তারপর একটি গোপন স্থানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার পর হত্যা করা হতো। শেষে পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে দোষী সাব্যস্ত হন। ১৯৯২ সালে নৃশংস এই খুনিকে ফায়ারিং স্কোয়াডে হত্যা করা হয়।

 

 

জেফরি ডামার

বাড়িতে ডেকে এনে খুন। ফ্রিজ ও মোমবাতির বেদিতে মানুষের মাথার খুলি।

 

১৮ বছর বয়সী টগবগে কোনো যুবক উপযুক্ত কর্মসংস্থান খোঁজেন। কিন্তু জেফরি ডামার হয়ে উঠলেন কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার। ১৯৬০ সালে জন্ম নেওয়া জেফরি ১৮ বছর বয়সে স্টিভেন হিকস নামের এক যুবককে বাসায় ডেকে এনে খুন করেন। পরবর্তীতে তার হাতে হত্যার শিকার হয় ১৭টিরও বেশি। ১৯৮৮ সালের ২৫  সেপ্টেম্বর প্রথম পুলিশের কাছে গ্রেফতার হন। বিচারে তার এক বছর সাজা এবং  মেন্টাল থেরাপি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু মুক্তির পরই পুনরায় হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠেন। ১৯৯১ সালের ২২ জুলাই এক ভুক্তভুগী ডামারের হাত থেকে কোনোমতে মুক্ত হয়ে পুলিশ ডাকতে সক্ষম হন। তখন পুলিশ ডামারকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় তার বাড়ি থেকে অ্যাসিড পানিতে ভেজানো অনেক মৃতদেহ ও ফ্রিজ থেকে মানুষের অনেক কাটা মাথা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও তার ঘরের মোমবাতির  বেদি থেকে অনেক মাথার খুলি উদ্ধার করা হয়। বিচারে ডামারকে ৯৩৭ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯৯৪ সালের ২৮ নভেম্বর অপর বন্দীর হাতে মারাত্মক পিটুনি খেয়ে মারা যান।

 

জন ওয়েনি গেসি

সমকামী ও সিরিয়াল কিলিং তার নেশা। মাটিচাপা অথবা নদীতে ফেলে লাশ লুকাতেন।

 

প্রতিবেশীদের কাছে একজন মজার ও সম্মানিত ব্যবসায়ী ছিলেন জন ওয়েনি গেসি। কিন্তু ভিতরে ভিতরে লালন করতেন এক ভয়ঙ্কর অমানুষ। ১৯৬৮ সালে দুই যুবককে যৌন নির্যাতনের জন্য  গ্রেফতার হন গেসি। আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। কিন্তু সেখানেও অতি অমায়িক আচার-ব্যবহারের চাতুরীতে মুগ্ধ করেন সবাইকে। তাই মাত্র ১৮ মাসের মাথায় প্যারোলে মুক্তি পান। কিন্তু জেল থেকে বের হয়ে আবারও সমকামী এ সিরিয়াল কিলার হিসেবে নিজের পরিচয় শক্ত করতে থাকেন। বাসা ও গাড়িতে বিভিন্ন তরুণী এবং যুবকদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়াতেন। কাজ শেষে তাদের হত্যাও করতেন। বাসায় কাউকে নিয়ে এলে তাকে খুন করে বাসার আঙ্গিনার মধ্যেই মাটিচাপা দিয়ে রাখতেন। বাসার বাইরে কাউকে খুন করলে মৃতদেহ নদীতে ফেলে দিতেন। এভাবেই তার কিলিং মিশন চলছিল। কিন্তু তার রফা হয় পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে। আদালতে গেসি নিজের  দোষ স্বীকার করেন। ১৯৯৪ সালে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দেওয়া হয়।

 

টেড বানডি

ধর্ষণের পর নির্মম প্রহার অথবা গলা টিপে হত্যা। ছদ্মবেশী হতেন শিকার ধরতে।

১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে আমেরিকায় বহুসংখ্যক তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন টেড বানডি নামের এক সিরিয়াল কিলার। দীর্ঘ এক দশক ধরে তিনি প্রায় ৭০ জনকে হত্যা করেন। ১৯৪৬ সালের ২৪ নভেম্বর আমেরিকায় জন্ম নেওয়া টেড বানডি ইতিহাসে একজন কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার হিসেবে পরিচিত। বানডি শিকারগুলোকে প্রথমে ধর্ষণ করতেন, তারপর তাদের নির্মম প্রহার করে অথবা গলা টিপে হত্যা করতেন। অনেক সময় তিনি  লেক বা বিদ্যালয় থেকে তার শিকার ধরতেন। শিকারদের সামনে তিনি নানা ছলচাতুরী ও ছদ্মবেশে যেতেন। কখনো আহত ব্যক্তি, কখনো পুলিশ, কখনোবা নিজেকে ফায়ার সার্ভিস সদস্য হিসেবে পরিচয় দিতেন। হত্যাযজ্ঞ চালানোর আগে প্রচুর মদ পান করে নিতেন বানডি। কিন্তু শেষমেশ পুলিশের হাতে ধরা দিতেই হয়। ১৯৮৯ সালের ২৪ জানুয়ারি বানডিকে বৈদ্যুতিক চেয়ারে বসিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুর আগে তিনি তার শেষ বাক্য হিসেবে বলেছিলেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসতাম আমার পরিবার ও বন্ধুদের ভালোবাসা ফেরত পেতে’।

 

এলিজাবেথ বিথোরি

৬৪০-এর বেশি খুন। খুনের রক্তে গোসল, তাদের আর্তচিৎকারে উল্লাস।

 

ইতিহাসে এলিজাবেথ বিথোরিকে রক্তপিপাসু পিশাচিনী বলা হয়।

তিনি ব্লাড কাউন্টেস নামেও অধিক পরিচিত। ধারণা করা হয়, এলিজাবেথ খুন করেছেন ৬৪০-এরও বেশি কুমারীকে। হাঙ্গেরিয়ান এই নারীর জন্ম ১৫৬০ সালের ৭ আগস্ট এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। ১৫৭৫ সালের ৮ মে ফ্রান্স  নোডিজডের সঙ্গে এলিজাবেথ বিথোরির বিয়ে হয়। ১৫৭৮ সালে স্বামী হাঙ্গেরির সেনাপতি নিযুক্ত হলে তার সব ব্যবসা ও শাসন কাজে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন এলিজাবেথ। তখন চড়া বেতনে কুমারী গৃহকর্মী আনতেন এলিজাবেথ। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সে সব গৃহকর্মীর আর কখনো ফিরে যাওয়া হয়নি। এলিজাবেথ সে সব কুমারী নারীকে হত্যা করতেন এবং তাদের রক্তে গোসল করতেন। তাদের আর্তচিৎকারে এলিজাবেথ উল্লাস করতেন। সামাজিক অবস্থানের জন্য এলিজাবেথের বিচার হয়নি সত্য কিন্তু বাকি জীবন তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। ১৬১৪ সালে গৃহবন্দী অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

 

 

থিয়াগো

নিজের নাম গিনেস বুকে লেখার জন্য নিজেকে একজন সিরিয়াল কিলার হিসেবে তৈরি করেন থিয়াগো গোমেজ দ্য রোসা। অতি চতুরতার সঙ্গে একে একে ৩৯ জন নিরীহ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন এই ব্যক্তি। একই সঙ্গে ৯০টির বেশি ডাকাতির ঘটনাও ঘটিয়েছেন থিয়াগো। গোয়ানিয়া রাজ্যের রাজধানী গোইয়াসে মায়ের সঙ্গেই থাকতেন তিনি। একজন মোটরবাইকের চালককে খুনের মধ্য দিয়ে তার হত্যাযজ্ঞ শুরু।  বন্দুকের ট্রিগারে চাপ দেওয়ার আগে থিয়াগো চিৎকার করে বলতেন ‘ডাকাত ডাকাত’। চিৎকারে লোকজন জমায়েত হতো। আর এর মধ্যেই ফাঁক বুঝে তিনি হাওয়া হয়ে যেতেন।  গোয়ানিয়া শহরে ঘুরে বেড়ানো বাস্তুহারা অনেক নারী ছিল তার খুনের তালিকায়। ১৪ বছরের কিশোরী মেয়েও সে তালিকা থেকে বাদ যায়নি। একের পর এক হত্যার ঘটনা চালিয়ে যাওয়ায় অতিষ্ঠ সবাই। পুলিশ প্রশাসনও নড়েচড়ে বসে। থিয়াগোকে ধরতে গঠন করা হয় পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। অনেক প্রচেষ্টার পর তাদের হাতে আটক হয় এ দুর্র্ধর্ষ কিলার। অবশ্য পুলিশ যখন তাকে আটক করে তখন তার বিচার চলছিল থালা চুরির অপরাধে। কিন্তু এই বিচার করতে গিয়ে বের হয় খুনের তথ্য। ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর তাকে ধরা হয়। বর্তমানে তিনি ৬৩০ বছরের কারাবন্দী জীবন পার করছেন।

 

রবার্ট হ্যানসেন

ধর্ষণ, খুন ও লাঞ্ছনার অপরাধে ভোগ করছেন ৪৬১ বছরের জেল।

 

শৈশব-কৈশোরে রবার্ট হ্যানসেনকে সবাই শান্তশিষ্ট ও একাকী হিসেবে জেনেছেন। মুখে অতিরিক্ত ব্রণ ও গুরুতর  তোতলামির জন্য স্কুলে বহু পীড়নও সহ্য করেছেন তিনি। ১৯৫৭ সালে হ্যানসেন যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর সদস্য

হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। পরবর্তীতে হ্যানসেন পোচাহন্টাস, আইওয়ার পুলিশ একাডেমিতে একজন সহকারী কসরত প্রশিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি একটি চেইনশোতে চুরির অপরাধে গ্রেফতার হন। কিছুদিন পর ছাড়াও পেয়ে যান তিনি। কিন্তু তারপরই রবার্ট হ্যানসেন হয়ে ওঠেন নৃশংস হত্যাকারী। আলাস্কার প্রায় ৩০ জনেরও বেশি নারীকে ধর্ষিত ও লাঞ্ছিত করেন। কমপক্ষে ১৭ জন নারীকে হত্যা করেন, যাদের সবারই বয়স ১৬ থেকে ৪৬-এর মধ্যে। ১৩ জুন ১৯৮৩ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বর্তমানে তিনি আলাস্কার সেওয়ার্ডের স্প্রিং ক্রিক কারেকশনাল সেন্টারে ৪৬১ বছরের সাজা ভোগ করছেন।

 

জাভেদ ইকবাল

১০০ বালককে যৌন নির্যাতনে হত্যা করে খণ্ডিত দেহ গলান অ্যাসিডে।

 

১৯৯৮ সালে দুই বালককে যৌন হয়রানি ও টাকার দাবি করায় প্রথম গ্রেফতার হন। কিছুদিন পর জামিনে মুক্তি মেলে। কিন্তু না, অপরাধ শুধরে নেননি বরং নিজের ভিতরটা এক দুর্ধর্ষ খুনিতে পরিণত করে ফিরেছেন। তিনি পাকিস্তানের কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার জাভেদ ইকবাল মুঘল। ১৯৫৬ সালে তিনি পাকিস্তানের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রেফতারের অপমানে তিনি এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে, মাত্র ১৮ মাসে ১০০ বালককে খুন করে বসেন। রাস্তা থেকে তাদের ফুসলিয়ে নিজের ঘরে আনতেন। এরপর মদ পান করিয়ে যৌনাচারের পর হত্যা করতেন। শেষে মৃতদেহগুলো খণ্ড-বিখণ্ড করে ডুবিয়ে রাখতেন হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডে। শরীরের টুকরোগুলো অ্যাসিডে তরল হয়ে গেলে ফেলে দিতেন আবর্জনার স্তূপে। বিকৃত এই চর্চা পঞ্চাশে পৌঁছলে জাভেদ মৃত বালকদের ছবি তুলে রাখতেন। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তিনি বলেন, ইচ্ছা করলে ৫০০ বালককেও হত্যা করতে পারতাম। ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর কারাগারে তাকে শ্বাসরোধে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর