১৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০৬
গাড়ি বহরে হামলা ও ভাংচুর প্রতিবাদ

আমরণ অনশনের ঘোষণা লতিফ সিদ্দিকীর

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

আমরণ অনশনের ঘোষণা লতিফ সিদ্দিকীর

নির্বাচনী প্রচারণায় হামলার প্রতিবাদে অনশনে থাকা লতিফ সিদ্দিকী। ছবিটি রবিবার রাতে তোলা।

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর নির্বাচনী প্রচারের গাড়িবহরে হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার ও কালিহাতী থানার ওসিকে অপসারণের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেছেন লতিফ সিদ্দিকী। 

এ হামলার ঘটনার ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও প্রশাসন কোন কার্যকরী ভূমিকা না নেওয়ায় গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা রিটানিং অফিসারকে চিঠি দিয়ে তিনি আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন।

রবিবার দুপুর থেকে এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দাবি করে লতিফ সিদ্দিকী জেলা রির্টার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে টাবু টানিয়ে এ কর্মসুচি পালন করছেন।

এর আগে রবিবার কালিহাতী উপজেলার সরাতৈল গোহালিয়া বাড়ি এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী তার নির্বাচনী প্রতিক ট্রাক মার্কায় ভোটের জন্য নির্বাচনী প্রচারনা করছিলেন। এসময় এক দল দুর্বৃত্ত তার গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে বহরের ৪টি গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় তার ৮/৯জন নেতাকর্মী আহত হয়।

এ বিষয়ে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, তিনি একটি সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য যাচ্ছিলেন। পথে তার গাড়িবহরে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এতে চারটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। এসময় তার বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

তিনি আরও জানান, সুষ্ঠ নির্বাচন হবে, প্রধানমন্ত্রীর এ আশ্বাসে তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠ নয়, পরিবেশ ভয়াবহ। যতক্ষন পর্যন্ত এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার না হবে ততক্ষন পর্যন্ত জেলা রির্টার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করবেন বলে তিনি জানান।

জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়কে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন লতিফ সিদ্দিকী জানিয়েছেন, হামলাকারীদের গ্রেফতার ও কালিহাতী থানা ওসিকে প্রত্যাহার করলে অবস্থান কর্মসুচি প্রত্যাহার করবেন। 

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। হামলার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এখানে আমরণের ঘোষণা অবস্থান করায় ও নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় শান্তি শৃংখলা অবনতি হতে পারে। তাই তাকে এখান থেকে সরানো হতে পারে বলে ভাবছে প্রশাসন।

লতিফ সিদ্দিকীর ভাতিজা মোশারফ হোসেন সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তার চাচা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী রবিবার সকালে বাসা থেকে খেয়ে বের হয়েছিলেন নির্বাচনী প্রচারণায়। তারপর থেকে কোন প্রকার খাবার খাচ্ছেন না। এমনকি সোমবার তিনি ওষুধও খাননি। এতে করে তার শারীরিক অবস্থা অবনতি হচ্ছে। 

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাসান ইমাম খান বলেন, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বা আমার কোনও সম্পৃক্ততা নেই।

অপরদিকে, এ হামলার দায় বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারীর উপর দেওয়ায় সোমবার দুপুরে এমপি সমর্থকরা কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় প্রতিবাদ সভা, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর কুশপুত্তলিকা দাহ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিল ও কুশপুত্তলিকা দাহ শেষে লতিফ সিদ্দিকীকে কালিহাতীতে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়। 

সমাবেশে লতিফ সিদ্দিকীকে নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধের হুশিয়ারি দিয়ে বলা হয় অন্যথায় প্রতিহত করা হবে। সমাবেশে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এমএ মালেক ভূঁইয়া, রিয়াজ উদ্দিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল জলিল,উপজেলা যুবলীগ সভাপতি নুরুন্নবী সরকার,সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মোল্লা,উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক মেহেদী হাসান তুহিন বক্তব্য রাখেন।


বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ সিফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর