শুক্রবার, ২ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জোটের প্রার্থিতা নিয়ে স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগ-বিএনপি

মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা

জোটের প্রার্থিতা নিয়ে স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগ-বিএনপি

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাতক্ষীরা-১ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেন্দ্রে জোর লবিং-গ্রুপিংসহ নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, মোটর শোভাযাত্রাসহ সভা সমাবেশ করে চলেছেন। তবে রাজনৈতিক মামলার ভয়ে বিএনপি ও জামায়াতের প্রকাশ্যে কোনো দলীয়-কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত না হলেও কৌশলে সংগঠিত হচ্ছে তারা। তবে প্রধান দুই জোটেই মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়া নিয়ে সর্বত্রই চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। কিন্তু আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসনটি ধরে রাখার ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত হলেও বড় সমস্যা মহাজোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে। স্বাধীনতার পর থেকে এ আসনে ৪ বার আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয় লাভ করে। তৃণমূল নেতারা বলছে ভোটের লড়াইয়ে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন না পেলে এ আসনটি বিএনপি-জামায়াতের দখলে চলে যাবে।

সাতক্ষীরার তালা ও কলারোয়া দুটি উপজেলার ২৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ আসন। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৭ হাজার ৮৯১ জন। জেলার সবচেয়ে রাজনৈতিক সহিংসতা প্রবণ এ আসন নিয়ে অনেকটাই চলে আসছে জেলার রাজনীতি। স্বাধীনতার পর থেকে সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে জামায়াতের অ্যাডভোকেট শেখ আনছার আলী ও জাতীয় পার্টির (জাপা) সৈয়দ দিদার বখ্ত একবার করে ও বিএনপির প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব দুইবার জয়লাভ করেন। আর বাকি সময় আওয়ামী লীগের দখলে ছিল এ আসনটি। দশম সংসদে এ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মোস্তফা লুত্ফুল্লাহ।

এ আসনে বিএনপিকে জামায়াতের ওপর ভর করে আর ওয়ার্কার্স পার্টিকে আওয়ামী লীগের ওপর ভর করে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কারণে এ আসনটি হয়ে পড়েছে জোট নির্ভর। তবে আসন্ন নির্বাচনে ২০-দলীয় জোটের বিএনপির প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব মামলা জটিলতা বা কোনো কারণে প্রার্থী হতে না পারলে মিত্র দল জামায়াত তাদের সঙ্গে থাকলে এ আসন থেকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ প্রার্থী হতে পারেন। সে কারণে স্বস্তিতে নেই বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবও।

এ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য গণসংযোগসহ কেন্দ্রে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম, কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন, ওয়ার্কার্স পার্টির বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট মোস্তফা লুত্ফুল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সরদার মুজিব, জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাবেক মাগুরা ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট অনিত মুখার্জি, জাতীয় পার্টির সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখ্ত, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের ওবায়েদুস সুলতান বাবলু।

এদিকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের নাম শোনা যাচ্ছে। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন। তবে বিএনপির মিত্রদল জামায়াতের সঙ্গে জোট না হলে এ আসন থেকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। আওয়ামী লীগের শরিক দল ওয়ার্কার্স পাটির পলিট ব্যুরোর সদস্য বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট মোস্তফা লুত্ফুল্লাহ আবারও মহাজোটের মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এখানকার সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এ আসন থেকে মহাজোটের প্রার্থী আওয়ামী লীগের হলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্য জোট প্রার্থীর যেই হোক না কেন জয়-পরাজয়ের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। আর জাতীয় পার্টি বা ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী হলে মহাজোটের দখলে থাকা আসনটি হারাতে হবে তাদের।

সর্বশেষ খবর