শুক্রবার, ২ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে বীরেণ বিএনপিতে নিতাই রায়

রাশেদ খান, মাগুরা প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগে বীরেণ বিএনপিতে নিতাই রায়

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মাগুরা-২ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এলাকায় বিভিন্ন সভা সমাবেশে যোগদানের মাধ্যমে ভোটারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতা মনোনয়ন পেতে এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ, লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন ও মাঠ পর্যায়ে গণসংযোগের পাশাপাশি ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার লাগিয়ে নিজেদের প্রার্থিতা প্রচারের জানান দিয়ে যাচ্ছেন। এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহ-সভাপতি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট বীরেণ শিকদার মনোনয়ন পাবেন বলে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা মনে করেন। এ আসনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী বিশিষ্ট শিল্পপতি কাজী সালিমুল হক কামালের জিয়া অরফানেজ দূর্নীতি মামলায় সাজা হওয়ায় নিতাই রায়ের আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই বলে নেতা-কর্মীরা মনে করেন। তবে বিএনপিতে রয়েছে তীব্র অন্তর্কোন্দল।

মাগুরা-২ নির্বাচনী এলাকা মহম্মদপুর, শালিখা ও মাগুরা সদর উপজেলার ৪ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে মহম্মদপুর উপজেলার আটটি, শালিখা উপজেলার সাতটি, সদর উপজেলার চারটিসহ মোট ১৯টি ইউনিয়ন রয়েছে। আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত মাগুরা-২ আসনে অ্যাডভোকেট আছাদুজ্জামান পরপর পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুর পর ১৯৯৪ সালের ২০ মার্চ বিতর্কিত উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে এই আসনের সংসদ সদস্য হন জেলা বিএনপির সেই সময়কার নতুন মুখ শিল্পপতি কাজী সালিমুল হক কামাল। এ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপক ভোট ডাকাতির অভিযোগ ওঠে। ১৯৯৬ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ৩ বার বীরেণ শিকদার বিজয়ী হয়েছেন। এ আসনে তার প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত বলেই জানা গেছে। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন—বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও প্রাক্তন যুক্তরাজ্য ম্যানচেস্টার বাংলাদেশ দূতাবাসের কনস্যুলার ড. ওহিদুর রহমান টিপু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন এবং মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান অন্যদিকে বিএনপি থেকে মোজাফফর হোসেন টুকু মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেণ শিকদার নিজ নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘এলাকার জনগণের সঙ্গে সব সময়ই আমি সম্পৃক্ত আছি। জনগণের সুখ-দুঃখে সময় দেওয়াসহ বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছি। মহম্মদপুরবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন মধুমতী নদীর ওপর শেখ হাসিনা সেতু নির্মাণসহ শালিখা উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে। মহম্মদপুর উপজেলাসহ সদরের চার ইউনিয়নকে ৮৫ ভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। শালিখা-মহম্মদপুরকে সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রায় শতভাগ সমৃদ্ধ করেছি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটিয়েছি। গোটা জেলার ক্রীড়া উন্নয়নে আধুনিক স্টেডিয়াম নির্মাণসহ একাধিক মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর যতবার আস্থা রেখেছেন, ততবার আমি সেই আস্থা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে আবারও এ আসনটি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারব বলে আশা করি।’ অন্যদিকে এ আসনে গত ২০০৮ সালের নির্বাচনের ৪ দলীয় জোট প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন কেন্দ্রের পাশাপাশি এলাকায়ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমি অল্পকিছু ভোটের ব্যবধানে হেরেছি। এবার দল যদি নির্বাচনে যায় সেক্ষেত্রে বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। যেহেতু আমি মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য সেক্ষেত্রে নিজের মনোনয়ন নিয়ে আমি কখনো চিন্তা করি না।’ মাগুরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ আলী করিম বলেন, ‘দলের প্রয়োজনে দেশনেত্রী যাকেই মনোনয়ন দিক না কেন সবরকম ভেদাভেদ ভুলে এ আসনটি পুনরুদ্ধার করে চেয়ারপারসনকে উপহার দিব।’ মাগুরা-২ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মহম্মদপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক খসরুর আলমের নাম শোনা যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর