শুক্রবার, ২ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মহাজোটে একাধিক, জোটেও প্রার্থীর ছড়াছড়ি

সাইফুর রহমান রানা, বদরগঞ্জ (রংপুর)

মহাজোটে একাধিক, জোটেও প্রার্থীর ছড়াছড়ি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রংপুর-২ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচনী তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। এতদিন পোস্টার ব্যানার ফেস্টুনের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তারা নিজেকে প্রার্থী হিসেবে জানান দিচ্ছেন মোটরসাইকেল শো-ডাউন আর জনসভা করে। রংপুর-২ আসনটি বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১২ হাজার ৭৭৫।

স্বাধীনতার পর হতে এই আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত হলেও ৯০ দশকের পর হতে এ আসনটি চলে যায় জাতীয় পার্টির দখলে। এ কারণে এ আসনটি জাতীয় পার্টির দুর্গ হিসেবে পরিচিতি পায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পার্টির ঘন ঘন সিদ্ধান্ত বদলসহ প্রার্থী বদলের কারণে জাতীয় পার্টির কর্মীদের মধ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় দলীয় জনপ্রিয়তা অনেকটা ম্লান হতে চলেছে। যদিও এখনো গ্রামেগঞ্জে রয়েছে তাদের ভোটব্যাংক।

গ্রামেগঞ্জে ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ আসনটিতে আগে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে লড়াই চললেও এবার আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির মধ্যে হবে ত্রিমুখী লড়াই। আর যদি এখানে শুধু মহাজোটের প্রার্থী হয় তবে লড়াই হবে মহাজোট ও জোটের মধ্যে।

এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের সারিতে আছেন— বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. এম শাহ্  নেওয়াজ আলী, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু, সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী আনিছুল হক চৌধুরীর ছেলে বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান টুটুল চৌধুরী। ১৪ দলের প্রার্থী হতে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন রংপুর জেলা জাসদ (ইনু) এর সাধারণ সম্পাদক কুমারেশ রায়। জাতীয় পার্টি তথা মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বদরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলু। এ ছাড়াও সাবেক এমপি আনিছুল ইসলাম মণ্ডল, মোকাম্মেল হক চৌধুরী।

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন, সাবেক এমপি অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী, সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার, সুপ্রিম কোর্ট জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম রসুল বকুল ও বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান ও তরুণ বিএনপি নেতা সাইদুল ইসলাম। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান লিটন।

আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই আসনের এমপি হওয়ায় আমি বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। দল যদি আবারও আমাকে মনোনয়ন দেয় তবে আমি এই আসনটি নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে পারব ইনশা আল্লাহ।  

বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু জানান, ছাত্রজীবন থেকে সুখে-দুখে এলাকার মানুষের পাশে আছি। আমি আশা করছি দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. এম শাহ্ নেওয়াজ আলী জানান, দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি অবশ্যই নির্বাচন করব।

টুটুল চৌধুরী জানান, নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নৌকার জয় উপহার দেব। কুমারেশ রায় জানান, ১৪ দল যদি আমাকে নমিনেশন দেয় তাহলে আমি অবশ্যই নির্বাচন করব। অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলু জানান, জাতীয় পার্টিতে আমি একক প্রার্থী। পার্টি চেয়ারম্যানের নির্দেশেই দীর্ঘদিন ধরে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। সাবেক এমপি ও বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি সভাপতি অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী জানান, দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি অবশ্যই নির্বাচন করব। দল যদি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকেও নমিনেশন দেয় তবুও আমি তার পক্ষে কাজ করব। সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার জানান, বিএনপি যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তবে আমি অবশ্যই নির্বাচন করব।

সর্বশেষ খবর