সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রধান দুই দলেই সম্ভাব্য প্রার্থী হাফ ডজন করে

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

প্রধান দুই দলেই সম্ভাব্য প্রার্থী হাফ ডজন করে

যশোরের সীমান্তবর্তী দুটি উপজেলা ঝিকরগাছা ও চৌগাছা নিয়ে যশোর-২ সংসদীয় আসন গঠিত। এ দুই উপজেলায় রয়েছে দুটি পৌরসভা ও ২২টি ইউনিয়ন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ দুই উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন প্রধান দুই জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীরা  জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ আসন থেকে আওয়ামী লীগ পাঁচবার, জামায়াতে ইসলামী তিনবার, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা একবার করে বিজয়ী হয়েছেন। ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনে যশোর-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবুল ইসলাম। তিনি বর্তমান সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের বাবা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে মনিরুল ইসলাম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপি-জামায়াত জোট এ নির্বাচন বর্জন করলেও মনিরুল ইসলামের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলেন ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। ১৯৯৬-এর নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তিনি তখনকার আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বহুদিন ধরেই প্রকট আকার ধারণ করে আছে। মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়াকে কেন্দ্র করে এখানে দলের মধ্যে এ কোন্দল বিদ্রোহের সৃষ্টি করতে পারে বলে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা আশঙ্কা করছেন। বর্তমান সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম আবারও মনোনয়ন চাইবেন। নৌকা প্রতীক পেতে অনেক আগে থেকেই উঠেপড়ে লেগেছেন আগের দুই বারের সংসদ সদস্য সাবেক বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। গতবার দলীয় মনোনয়ন না পেলেও তিনি তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেছেন। গত কয়েক মাস ধরে তিনি দুই উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে, গ্রামে গ্রামে একের পর এক কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহসানুল হক আহসান। মাঠে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী রায়হান, মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন, চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম হাবিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ার হোসেন, যশোর উপশহর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধা হারুন-অর-রশিদ।

সর্বশেষ দুটি নির্বাচনে যশোর-২ আসনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী ছিলেন জামায়াতের আবু সাঈদ মোহাম্মদ শাহাদাৎ হুসাইন। এবারও এ আসনটি শরিকদের ছেড়ে দিলে স্থানীয় বিএনপিতে বিদ্রোহের সৃষ্টি হতে পারে। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, বারবার এ আসনটি জামায়াতকে ছেড়ে দেওয়ায় ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলায় বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। এবারও আসনটি শরিকদের ছেড়ে দিয়ে এ দুই উপজেলায় বিএনপি সাংগঠনিকভাবে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। এখন পর্যন্ত এ আসন থেকে বিএনপির দলীয় মনোনয়নের জন্য অনেক দিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা বিএনপিতে চৌগাছার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা শিল্পপতি আলহাজ মিজানুর রহমান খান। গত ১০ বছরে এ দুই উপজেলার দলীয় নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন আপদে-বিপদে তিনি সবরকম সহযোগিতা দিয়ে আসছেন। ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল মুন্নী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইসহাকও এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। এ ছাড়া এ আসনে জাতীয় পার্টি নেতা মুফতি ফিরোজ ও চৌগাছা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরুল কদর দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে সক্রিয় আছেন।

সর্বশেষ খবর