সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

এলাকায় গেলেই মামলা হয় নাদিম মোস্তফার নামে

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

এলাকায় গেলেই মামলা হয় নাদিম মোস্তফার নামে

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনটি থেকে দুইবার এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা। তখন আসনটি রাজশাহী-৪ হিসেবে পরিচিত ছিল। এমপি হয়ে দুই উপজেলা ছিল তার নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু এখন এলাকায় গেলেই মামলা হয় নাদিম মোস্তফার নামে। গত ৯ বছরে নাদিম মোস্তফার নামে মামলা হয়েছে ১১টি। মামলার কারণেই এলাকা ছাড়া তিনি। ফলে শহরে বসেই সক্রিয় জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা। তবুও হাল ছাড়ছেন না।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এ আসনের এমপি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৮৬ সালে এ আসনের এমপি ছিলেন স্বাধীনতাবিরোধী মুসলিম লীগ নেতা প্রয়াত আয়েন উদ্দিন। এরপর ১৯৮৬ সালে এমপি হন জাতীয় পার্টির নেতা মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আবুল হোসেন।

১৯৯১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুক এমপি ছিলেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তাজুল ইসলাম ফারুককে পরাজিত করে এমপি হন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা।

২০০১ সালের নির্বাচনেও নাদিম মোস্তফা পুনর্নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে নাদিমের স্থলে বিএনপি থেকে পুঠিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মণ্ডলকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এ নির্বাচনে নজরুলকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ নেতা শিল্পপতি কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনেও দারা পুনর্নির্বাচিত হন। তবে আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় সক্রিয় হয়েছেন নাদিম মোস্তফা। একাধিক নেতা জানিয়েছেন, এলাকায় না আসলেও শহরে থেকেই কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন নাদিম মোস্তফা। তবে দলের একটি গ্রুপের বিরোধিতার মুখেও আছেন তিনি। সদ্য শেষ হওয়া সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দলের প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় ছিলেন নাদিম মোস্তফা। ফলে আগামী নির্বাচনে তিনি আবারও দলের মনোনয়ন পেতে পারেন—এমনটা ধরে মাঠে সক্রিয় হতে শুরু করেছেন নাদিমের সমর্থকরা। 

সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা বলেন, ‘পুঠিয়া এবং দুর্গাপুরে বিএনপি শক্তিশালী। ইতিমধ্যে আমরা দুই উপজেলায় প্রায় ৫২ হাজার বিএনপির সদস্য অন্তর্ভুক্ত করেছি। নেতা-কর্মীরা আমার পাশে আছেন। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছি।’

জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফা জানান, তিনি পুঠিয়া-দুর্গাপুরবাসীর জন্য যা করেছেন তা আর কোনো এমপি করতে পারেননি, পারবেনও না। তিনি বলেন, ‘মানুষ এখনো আমার সঙ্গেই আছেন। এখনো কোথাও গেলে কর্মী-সমর্থকরা জড়ো হয়। নির্বাচনে অংশ নিতে যে প্রস্তুতি থাকা দরকার তা আমার আছে। দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে বলে বিশ্বাস করি।’

নাদিম মোস্তফা বলেন, ‘আমি এলাকায় গেলেই বর্তমান এমপি মামলা দেন। আমার নামে মামলা দিলে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু অনেক নিরীহ কর্মীকেও আসামি করা হয়। কর্মীদের হয়রানি থেকে রক্ষা করতেই এলাকায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।’ এই আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সবাই যখন পলাতক, তখন আমি নেতা-কর্মীদের পাশে থেকে নির্বাচন করেছি। সামান্য ভোটে পরাজিত হয়েছিলাম। সেই থেকে জনগণের সঙ্গেই আছি। এবারও দল আমার প্রতি আস্থা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।’

সর্বশেষ খবর