সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

তৃণমূলে আওয়ামী লীগের শহীদ মাঠে নেই বিএনপি

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

তৃণমূলে আওয়ামী লীগের শহীদ মাঠে নেই বিএনপি

চা শ্রমিক অধ্যুষিত মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসন। এ আসনে চা শ্রমিক ভোটারই ফ্যাক্টর। তাদের ভোটেই প্রার্থীর জয় পরাজয় নির্ধারণ হয়। স্বাধীনতার পর থেকেই এই আসন আওয়ামী লীগের দখলে আছে। দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখানকার চা শ্রমিকদের ভোটাধিকার দিয়েছিলেন। সেই থেকেই চা শ্রমিকরাও প্রতিদানে নৌকায় ভোট দিয়ে আসছেন। টানা পাঁচবার এই আসন থেকে জয়লাভ করেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আবদুস শহীদ। তিনি বিরোধী দলের হুইপ ও সরকারি দলের চিফ হুইপের দায়িত্বও পালন করেছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি এ আসনে দলের মনোনয়ন চাইবেন। মনোনয়ন পেতে মাঠে আছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান ও মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলের সাবেক ভিপি ও শ্রীমঙ্গল দ্বারিকা পাল মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হক। এদের মধ্যে মাঠে-ময়দানে নৌকা প্রতীকে ভোট চাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন ড. মো. আবদুস শহীদ। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সরকারের গত ১০ বছরের উন্নয়ন বার্তা নিয়ে তিনি শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল চষে বেড়াচ্ছেন। অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচি ও উঠান বৈঠকে। শুধু কমলগঞ্জ উপজেলায় প্রচারণা চালাচ্ছেন অধ্যাপক রফিকুর রহমান। তিনিও কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের (একটি অংশ) সঙ্গে নিয়ে সরকারের সফলতা সভা-সমাবেশে তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট চাইছেন। যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকজন তরুণ নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সৈয়দ মনসুরুল হক শ্রীমঙ্গলে তার প্রচারণা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি শহরের বিভিন্ন দেয়ালে তার ছবিসংবলিত পোস্টার লাগিয়ে নৌকায় ভোট চেয়েছেন। বিলি করছেন উন্নয়নের লিফলেট। উপাধ্যক্ষ ড. মো. আবদুস শহীদ বলেন, গত ২৮ বছরে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, যোগাযোগ, অবকাঠামো, দারিদ্র্য বিমোচনসহ বিভিন্নক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।  জনগণের কাজ করেছি বিধায় জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী এই এলাকা থেকে নির্বাচন করার প্রত্যাশা আছে। আমার এলাকার জনগণ খুব ভালো। তারা যোগ্য প্রার্থী দেখেই ভোট দেন। শেখ হাসিনাও সেই যোগ্যতার নিরিখে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে আসছেন। আগামীতে এটাই আমার আশা। অধ্যাপক রফিকুর রহমান বলেন, ‘এলাকার জনগণ এবার পরিবর্তন চায়। তাদের আশা আকাঙ্ক্ষার জন্যই মনোনয়ন চাইব। নেত্রী অবশ্যই আমাকে মূল্যায়ন করবেন।’ সৈয়দ মনসুরুল হক বলেন, তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীকে যাকে মনোনয়ন দেবেন, তার পক্ষেই কাজ করবেন। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী ছাড়া আর কোনো মনোনয়নপ্রত্যাশী নেই। মুজিবুর রহমান  ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল দলটির পিছু ছাড়ছে না। গত নয় বছর ধরে দলীয় নেতা-কর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির (একাংশ) সভাপতি মো. নূরুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘হাজী মুজিবুর রহমান বিএনপির একক প্রার্থী। আমরা পুলিশি বাধার কারণে গণসংযোগ করতে পারছি না। এরপরও আমরা বসে নেই। ঘরোয়াভাবে প্রচারণা চালাচ্ছি। পাঁচবারের এমপি আবদুস শহীদ। আমাদের পাস করা কষ্টকর হবে। তারপরও আমরা আশাবাদী।’ অপর অংশের সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াকুব আলী বলেন, দল যাকে ধানের শীষ দেবে আমরা তার পক্ষে কাজ করব। হাজী মুজিবুর রহমান বলেন, আমি এবারও মনোনয়ন চাইবো। দলে কোন বিভক্তি নেই।

সর্বশেষ খবর