বুধবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিএনপিতে ব্যারিস্টার আওয়ামী লীগে গৃহদাহ

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

বিএনপিতে ব্যারিস্টার আওয়ামী লীগে গৃহদাহ

রাজশাহী-১ আসনটি গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলা নিয়ে। এ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা আগাম মাঠে নেমে পড়েছেন। শুরু করেছেন গণসংযোগ। লোকজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। চাইছেন ভোটারদের সমর্থন। তবে এ আসনে আওয়ামী লীগে আছে গৃহদাহ। আর বিএনপির প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক।

বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী ছাড়াও এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মতিউর রহমান, তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুণ্ডমালা পৌরসভার মেয়র গোলাম রাব্বানী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বদরুজ্জামান রবু মিয়া, মকবুল হোসেন, প্রচার সম্পাদক ও গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু, গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান এবং জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল ওহাব জেমস।

বিএনপিতে ব্যারিস্টার আমিনুল হক ছাড়াও মনোনয়নপ্রত্যাশী দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত সচিব জহুরুল ইসলাম।

তবে এ আসনটি থেকে ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী জামায়াতের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মজিবুর রহমান ২০ দলীয় জোট থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এমপি ফারুক চৌধুরীর বিরোধী মনোনয়নপ্রত্যাশীরা একাট্টা হয়েছেন। তারা ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় সমাবেশ করছেন। মনোনয়নপ্রত্যাশী গোলাম রাব্বানীর অভিযোগ, এমপি হিসেবে ফারুক চৌধুরী এলাকার উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখেননি। তাই আগামী নির্বাচনে তারা প্রার্থীর বদল চান।

তবে এমপি ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। মানসিক চাপ সৃষ্টি করার জন্য কিছু নেতা-কর্মী আমার বিরুদ্ধে বলছেন। সাধারণ মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু আছে, তা নির্বাচন আসলে বোঝা যাবে।’ তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়লেও আপাতত ওই আসনে ফারুক চৌধুরীর বিকল্প প্রার্থী দেখছেন না গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. বদিউজ্জামান। তিনি বলেন, দলকে আজকের অবস্থানে নিয়ে আসতে ফারুক চৌধুরী অনেক কাজ করেছেন। এক সময় যারা সুবিধা নিয়েছে, তারাই এখন বিরোধিতা করছেন।’ তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে মোকাবিলা করতে হলে শক্তিশালী প্রার্থী দরকার। এক্ষেত্রে আপাতত যারা মনোনয়ন চাচ্ছেন, তাদের দলের ভিতরে ও বাইরে সেই গ্রহণযোগ্যতা নেই।’

বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার আমিনুল হক দীর্ঘ সময় থেকে মাঠে আছেন। ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এ সময় তিনি দুই দফায় মন্ত্রীও ছিলেন। ব্যারিস্টার আমিনুল হকের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী গোদাগাড়ী পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ব্যারিস্টার আমিনুল হক এ আসনে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। দীর্ঘদিন তিনি মন্ত্রী ছিলেন। এলাকার উন্নয়ন করেছেন। বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এ কারণে এলাকায় তার পরিচ্ছন্ন ইমেজ আছে। আগামীতেও তিনি দলের প্রার্থী।

এ ছাড়া জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক মজিবুর রহমান এ আসনটিতে জোটগতভাবে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন। এ বিষয়টি বিএনপি নেতা-কর্মীদের ভাবিয়ে তুলেছে। কারণ মজিবুর রহমানের কেন্দ্রীয়ভাবে শক্ত প্রভাব আছে। তাই জোটগতভাবে মজিবুর রহমানও মনোনয়ন পেতে পারেন বলে আশা করছেন জামায়াত নেতা-কর্মীরা। তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, ওই আসনটিতে ব্যারিস্টার আমিনুল হকই প্রার্থী হবেন। জোটগত নির্বাচনের ক্ষেত্রে অন্য কোনো আসনে সমঝোতা হতে পারে জামায়াতের সঙ্গে।

সর্বশেষ খবর