রবিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিলেট-১

সিলেটে মনোনয়ন লড়াইয়ে একডজন হেভিওয়েট প্রার্থী

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে মনোনয়ন লড়াইয়ে একডজন হেভিওয়েট প্রার্থী

দেশজুড়ে বইছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ভোটগ্রহণ আগামী ৩০ ডিসেম্বর এবং মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৮ নভেম্বর। সে হিসেবে মনোনয়ন জমার আর মাত্র দিনকয়েক বাকি। তবে এখন পর্যন্ত দেশের বড় দুই দল প্রার্থী ঘোষণা করায় চলছে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ। সিলেটের ছয়টি আসনে অর্ধশতাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্টের প্রায় একডজন হেভিওয়েট নেতাও রয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে তারাও কেন্দ্রে চালিয়ে যাচ্ছেন লবিং। এসব হেভিওয়েটকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদেরও আগ্রহের কমতি নেই।

দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সংসদীয় আসন হিসেবে পরিচিত সিলেট-১ (সিটি করপোরেশন-সদর)। বলা হয়, এ আসনে বিজয়ী প্রার্থীর দলই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করে। এ জন্য এ আসনে বিজয়ী হতে বরাবরই হেভিওয়েট প্রার্থী দিয়ে থাকে রাজনৈতিক দলগুলো। সব দলই চায় এ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী দিয়ে আসনটি নিজেদের দখলে রাখতে। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। আওয়ামী লীগ থেকে এবারও মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। দলের পছন্দের শীর্ষে থাকা অর্থমন্ত্রী মুহিত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও তার আগ্রহ ছোট ভাই জাতিসংঘের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে এ আবদুল মোমেনকে নিয়ে। তিনি নির্বাচন না করলে এ আসনে মোমেনকে প্রার্থী চান তিনি। ইতিমধ্যে তিনি সিলেট ও ঢাকায় বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে তার এ আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেছেন। এ দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী ছাড়াও আসনটিতে হেভিওয়েটদের মধ্যে আওয়ামী  লীগের মনোনয়ন লড়াইয়ে রয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন। এ ছাড়া এ আসনে দলের মনোনয়ন চেয়েছেন সাবেক সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। হেভিওয়েটদের তালিকায় তিনি না পড়লেও জনবান্ধব এবং কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে তাকে হেভিওয়েট হিসেবে বিবেচনা করেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।

এ ছাড়া বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট থেকে সিলেট-১ আসনেও আলোচনায় আছেন একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী। তাদের মধ্যে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের নাম আলোচিত হচ্ছে। শিগগিরই দেশে ফেরা সম্ভব হলে এ আসন থেকে তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমানও প্রার্থী হতে পারেন এমন গুঞ্জনও রয়েছে নেতা-কর্মীদের মাঝে।

তবে পাসপোর্ট সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তার সহসা দেশে ফেরা সম্ভব নাও হতে পারে। হেভিওয়েটের তালিকায় না থাকলেও প্রায় ৭-৮ বছর ধরে এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আবদুল মালিকের ছেলে ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির।

সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য, পূবালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও রেডক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান হাফিজ আহমদ মজুমদার। হেভিওয়েট এ প্রার্থী রয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকার শীর্ষে। মজুমদার মনোনয়ন পেলে আসনটি আওয়ামী লীগের পক্ষে ধরে রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করেন সাধারণ ভোটাররাও। গতবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ না নিলেও এবার তিনি দলটির মনোনয়ন চেয়েছেন। এ ছাড়া সিলেট-৬ আসনের হেভিওয়েট প্রার্থীর তালিকায় আওয়ামী লীগ থেকে আলোচনায় আছেন বর্তমান এমপি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তবে এ আসনে এবার মহোজোট থেকে সাবেক বিএনপি নেতা ও সদ্য বিকল্পধারায় যোগ দেওয়া শমসের মবিন চৌধুরী প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।  তবে সেক্ষেত্রে বিকল্পধারা মহাজোটে যোগ দেওয়ার ওপর নির্ভর করবে বিষয়টি। বিকল্পধারা মহাজোটে যোগ না দিলে এ আসনে নুরুল ইসলাম নাহিদ বা কানাডা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরওয়ার হোসেনের মধ্যে একজন হবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী— এমনটা মনে করছেন  স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

সর্বশেষ খবর