বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
সিলেট-১

মুহিতে আস্থা আ.লীগের ঐক্যফ্রন্টে তাকিয়ে বিএনপি

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

মুহিতে আস্থা আ.লীগের ঐক্যফ্রন্টে তাকিয়ে বিএনপি

নির্বাচনের আর মাত্র ৩৮ দিন বাকি। কিন্তু দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দল বা জোটই এখনো পর্যন্ত তাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেনি। ফলে কোন আসনে কোন দল থেকে প্রার্থী কে হচ্ছেন— এ নিয়ে সর্বস্তরে রয়েছে আগ্রহ। বিশেষ করে দেশে রাষ্ট্রক্ষমতায় কে বসবে, এটার ‘নির্ধারক’ হওয়ায় সিলেট-১ আসন নিয়ে সারা দেশেই আগ্রহ রয়েছে। মর্যাদাপূর্ণ এই আসনটিতে কে হচ্ছেন দল বা জোটের প্রার্থী, তা জানতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায়। আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা জয়ের জন্য এ আসনে আবুল মাল আবদুল মুহিতের ওপরই সবচেয়ে বেশি আস্থাশীল। অন্যদিকে প্রার্থীর জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে আছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা।

স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে দেশে যত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সবগুলোতে সিলেট-১ আসনে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন, সে দলই সরকার গঠন করেছে। এমন সমীকরণের ফলে এ আসনটি সব সময় সব দলের কাছে বাড়তি গুরুত্ব পায়। গ্রহণযোগ্য, বিতর্কহীন ও সেরা প্রার্থীই এ আসনে দেওয়ার চেষ্টা করে রাজনৈতিক দলগুলো। একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও এর ব্যত্যয় ঘটবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিলেট-১ আসনের বর্তমান সাংসদ আবুল মাল আবদুল মুহিত। সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা মুহিত এবার ‘অবসরে যেতে চান’। তিনি একাধিকবার বলেছেন, আর নির্বাচন করবেন না, এ আসনে নির্বাচন করবেন তার ছোট ভাই জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে এ মোমেন। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য তারা দুজনই আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন এবং সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানও এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। ড. মোমেন ও মিসবাহ সিরাজ দীর্ঘদিন ধরে এ আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তৎপর রয়েছেন। রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সব অনুষ্ঠানেই অংশগ্রহণ করে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছার বিষয়টি জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, দলে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও এ আসনে আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিকল্প এখনো নেই। সিলেটে সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে এখনো তার গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি। ফলে মুহিত আবারও প্রার্থী হলে এ আসনে জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে। নেতা-কর্মীরা বলছেন, এবার নির্বাচনে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটও অংশগ্রহণ করছে। ফলে নির্বাচন হবে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। এ জন্য সিলেট-১ আসনে সর্বজনের কাছে গ্রহণযোগ্য মুহিতকেই প্রার্থী করা হলে দল লাভবান হবে। অবশ্য, কেন্দ্র থেকে যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পক্ষেই কাজ করার কথা বলছেন তারা।

এদিকে সিলেট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির মাঠে কাজ করলেও সম্প্রতি এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় যোগ হয়েছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরীর নামও। গুঞ্জন আছে তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে ঘিরেও। এ ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরীও এ আসনে লড়তে চেয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন।

স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, ভিআইপি এ আসনে কে প্রার্থী হচ্ছেন, তা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর নির্ভর করছে।

 

সর্বশেষ খবর