রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

এই ভোটে কার সঙ্গে কার যুদ্ধ

মাহমুদ আজহার ও রফিকুল ইসলাম রনি

এই ভোটে কার সঙ্গে কার যুদ্ধ

ফাইল ছবি

ভোটের বাকি ২৭ দিন। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ক্ষণ গণনা। এবার আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলই ভোটের মাঠে। সুষ্ঠু ভোট হলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। কোথাও কোথাও হেভিওয়েটের সঙ্গে হেভিওয়েট আবার কোথাও কোথাও নবীন প্রার্থীর সঙ্গে লড়ছেন হেভিওয়েট প্রার্থী। গুটিকয়েক আসন বাদে আওয়ামী লীগে একক প্রার্থী থাকলেও বিএনপিতে প্রায় সব আসনেই একাধিক প্রার্থী। কোথাও কোথাও তিনজন বা ততোধিক প্রার্থীও ভোটযুদ্ধে মাঠে রয়েছেন। বৃহৎ দুই জোটের বাইরেও বাম দল, ইসলামী দলগুলোসহ বেশ কিছু আসনে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীও। 

নির্বাচন কমিশন আজ যাচাই-বাছাই করে নির্বাচনের জন্য যোগ্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে। এ কারণে জোট-মহাজোটের প্রার্থী তালিকাও এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সব প্রার্থীর চোখ আজ রিটার্নিং অফিস কার্যালয়ে। তবে আওয়ামী লীগ-বিএনপি জোটের যেখানে একাধিক প্রার্থী রয়েছেন সেখানে আসল প্রার্থী কে তা জানা যাবে প্রতীক বরাদ্দের পর। এ জন্য প্রার্থীকে অপেক্ষা করতে হবে ৯ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা পর্যন্ত। 

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবার দুটি আসনে লড়বেন। এর একটি হচ্ছে গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া)। আরেকটি হচ্ছে রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ)। গোপালগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির উল্লেখযোগ্য কোনো প্রার্থী নেই। এর মধ্যে বিএনপির এক প্রার্থী এস এম জিলানী কারাগারে রয়েছেন। আরেকজন হলেন আফজাল হোসেন। তবে এ আসনে জাতীয় পার্টির জেড এম অপু ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার মো. মারুফ শেখও মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। আরও দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন এ আসনে। রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বিএনপি থেকে দুজন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তারা হলেন সাইফুল ইসলাম ও খলিলুর রহমান সরকার। এ ছাড়াও ২০-দলীয় জোটের শরিক দল ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এনপিপি) হুমায়ুন ইজাজ লেভিনও মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন।

কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও তিনটি আসনে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এগুলো হলো বগুড়া-৬ ও ৭ এবং ফেনী-১ আসন থেকে। আইনি জটিলতায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচন তিনি নাও করতে পারেন। সেক্ষেত্রে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে লড়তে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তিনজন। এর মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল তার নিজের আসন ঠাকুরগাঁও-১ এর পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়ার আসন বগুড়া-৬ (সদর) এর জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আর খালেদার বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে বিকল্প প্রার্থী হয়েছেন গাবতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মোরশেদ মিল্টন। ফেনী-১ (পরশুরাম-ফুলগাজী-ছাগলনাইয়া) আসনে খালেদা জিয়ার পাশাপাশি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মজনুর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বগুড়া-৬ আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী না দিলেও বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর বিএনপির সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বগুড়া-৭ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. মোস্তফা আলম নান্নু থাকলেও শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির প্রার্থীই মহাজোটের মনোনয়ন পাবেন বলে জানা গেছে। এ আসনে জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। একজন হলেন বর্তমান এমপি আলতাফ আলী আরেকজন আমিনুল ইসলাম সরকার পিন্টু।  জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ দুটি আসনে লড়বেন। একটি হলো রংপুর-৩ আরেকটি ঢাকা-১৭। এর মধ্যে রংপুর-৩ আসনে এরশাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপিতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন মোজাফফর হোসেন ও রিটা রহমান। ঢাকা-১৭ আওয়ামী লীগের দুজন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন চিত্রনায়ক ফারুক ও আবদুল কাদের খান। শেষ পর্যন্ত মহাজোটকে এ আসন ছেড়েও দিতে পারে আওয়ামী লীগ। এ আসনে বিএনপির তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে রয়েছেন। তারা হলেন মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, শওকত আজিজ রাসেল ও ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার। ময়মনসিংহ-৪ আসনে মহাজোটের প্রার্থী রওশন এরশাদ। ওই আসনে বিএনপির তিনজন প্রার্থী এখনো ভোটযুদ্ধে মাঠে রয়েছেন। তারা হলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাবেক এমপি দেলোয়ার হোসেন দুলু ও আবদুল ওয়াহাব আকন্দ। এর মধ্যে আইনি জটিলতায় শেষ পর্যন্ত জাহিদ হোসেন নির্বাচন করতে না পারলে দেলোয়ার হোসেন দুুলুই বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের লড়ছেন নোয়াখালী-৫ আসনে (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট।) ওই আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। ঠাকুরগাঁও-১ আসনে (সদর) প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন।

 

 

সর্বশেষ খবর