রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

এবার কী হচ্ছে বরিশালে

রাহাত খান, বরিশাল

এবার কী হচ্ছে বরিশালে

জাতীয় রাজনীতিতে বরিশাল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার ছয়টি আসনে দুই বড় জোটের প্রার্থী হয়েছেন একাধিক জাতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবার দৃষ্টি বরিশালে।

বরিশাল-১ আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। গত ১০ বছরে এলাকায় অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করার পাশাপাশি শক্তিশালী করেছেন স্থানীয় সংগঠন। অপরদিকে ছন্নছাড়া স্থানীয় বিএনপি। ১০ বছরে তারা বলতে গেলে মাঠেই নামতে পারেনি। ভোটের মাঠেও তাদের তেমন তৎপরতা নেই। এ অবস্থায় বিরোধী জোটের দুই প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন এবং ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবহানের মধ্য থেকে শেষ পর্যন্ত কে মাঠে থাকবেন আর কে মন জয় করবেন ভোটারদের, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

বরিশাল-২ আসনে মহাজোটের দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগের মো. শাহে আলম ও জাতীয় পার্টির মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা।  শেষ পর্যন্ত এ আসনে জাতীয় পার্টির সোহেল রানা মহাজোটের প্রার্থী হবেন বলে স্থানীয়ভাবে আলোচনা রয়েছে। অপরদিকে বিএনপির দুই প্রার্থীর মধ্যে সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু প্রতিষ্ঠিত গুঠিয়ার বায়তুল আমান মসজিদ কমপ্লেক্স বরিশালের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন দর্শনীয় স্থান। এ মসজিদ কমপ্লেক্সের কারণে অধিক আলোচিত সান্টু। এদিকে হেভিওয়েট হলেও ১০ বছরেরও অধিক সময় ধরে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ নেই সাবেক হুইপ সংস্কারপন্থি নেতা সৈয়দ শহীদুল হক জামালের। বরিশাল-৩ আসনে বিএনপির দুই হেভিওয়েট প্রার্থী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন এবং বেগম সেলিমা রহমান। ২০০৮ সালে সেলিমা রহমান চার-দলীয় জোটের মনোনয়নে ৬ হাজার ৪১২ ভোটে হেরেছিলেন মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপুর কাছে। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ওই নির্বাচনে প্রায় ৩০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন। এবার জয়নুলকেই শেষ পর্যন্ত দলের মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে বলে আলোচনা রয়েছে। এ আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী না দিলেও মনোনয়ন নিয়ে টানাটানি চলছে মহাজোটভুক্ত জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু এবং ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতানের মধ্যে। বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী পংকজ দেবনাথ। ওই আসনে আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ থাকলেও গত ২৭ নভেম্বর উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসন করে দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। অপরদিকে সরকারি দলের কাছে পদে পদে বাধা পাচ্ছেন বিএনপি প্রার্থী মেজবাহউদ্দিন ফরহাদ। নাগরিক ঐক্যের ব্যানারে ঐক্যফ্রন্টের আরেক প্রার্থী জে এম নূরুর রহমান বলেছেন, তিনি বিএনপির জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তার মতো বঞ্চিতদের বিএনপি ঐক্যবদ্ধ করতে না পারলে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব নয় বিএনপির।

বরিশাল-৫ আসনে বিএনপির দুই প্রার্থীর মধ্যে দলের যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার ও এবায়দুল হক চাঁনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত সরোয়ারকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে আশা তৃণমূলের। তিনি এ আসনের চারবারের সাবেক এমপি এবং সিটি করপোরেশনের প্রথম সাবেক মেয়র। এ আসনে বিএনপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের ক্লিন ইমেজের নেতা কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম। ২০০৮ সালে রাজনীতিতে নবাগত শামীম সরোয়ারের কাছে হেরেছিলেন মাত্র ৬ হাজার ভোটে। তার দাবি, এবারকার শামীম অনেক পরিণত। তার সততা এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে মানুষ নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করবে। বরিশাল-৬ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী না দিলেও মহাজোটভুক্ত জাতীয় পার্টির নাসরিন জাহান রত্না, জাসদ-ইনুর মো. মোহসীন এবং জাতীয় পার্টি-জেপির খন্দকার মাহাতাবউদ্দিন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্য থেকে জাপার রত্নাই শেষ পর্যন্ত মহাজোটের চূড়ান্ত প্রার্থী হবেন বলে আলোচনা রয়েছে। অপরদিকে এ আসন বিএনপির দুই প্রার্থী আবুল হোসেন খান এবং অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ খানের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি আবুলের নিয়ন্ত্রণে। দীর্ঘদিন দলের বাইরে থাকায় সাবেক এমপি রশিদ খানের মনোনয়ন পাওয়া কঠিন হবে বলে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর