রবিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার

উন্নয়নের অঙ্গীকার শেখ তন্ময়ের

বাগেরহাট-২

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

উন্নয়নের অঙ্গীকার শেখ তন্ময়ের

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট-২ (সদর ও কচুয়া) আসনে মহাজোট থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম শেখ সারহান নাসের তন্ময় এলাকায় তারুণ্যের আইকন হিসেবে পরিণত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই ও বাগেরহাট-১ আসনের এমপি শেখ হেলালের ছেলে শেখ তন্ময় শুধু তার সংসদীয় এলাকায়ই নন, দেশের সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর নাতি তরুণ সুদর্শন শেখ সারহান নাসের তন্ময় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসায় দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা যেমন উজ্জীবিত, তেমনি বাগেরহাটের সাধারণ মানুষও দারুণ উৎফুল্ল। আসন্ন নির্বাচনে শেখ পরিবারের সদস্য শেখ তন্ময় অংশ নেওয়ায় তিনি যেখানেই যাচ্ছেন দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে সবাই তাকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করছেন। প্রথমবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে শেখ তন্ময় হেভিওয়েট প্রার্থীর তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার আগেই দলীয় সভা, ধর্মীয় ও সামাজিক কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাগেরহাট শহরের বাসা থেকে বের হলেই শেখ তন্ময়কে ঘিরে ধরে সাধারণ মানুষ। তার সঙ্গে ছবি তুলতে ভিড় জমে যায়। কোনো রকম বিরক্ত না হয়ে খুব সহজেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে একাকার হয়ে যান তিনি। তরুণ-তরুণীসহ সবশ্রেণির ভোটারদের মুখে মুখে এখন শেখ তন্ময়ের জয়গান। প্রতিদিন নতুন নতুন ভিডিও ও ছবি আপ হওয়ায় তন্ময় রীতিমতো ভাইরাল হচ্ছেন। তার রাজনীতিতে আসা, ভবিষ্যতে দেশ নিয়ে তার ভাবনা কী তা জানতে বাংলাদেশ প্রতিদিন একান্তে মুখোমুখি হয়েছিল তরুণ প্রজন্মের প্রার্থী শেখ তন্ময়ের।

পারিবারিক সিদ্ধান্তেই কি রাজনীতিতে এসেছেন? : এমন প্রশ্নের উত্তরে শেখ তন্ময় বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে বড় হয়েছি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (বড় ফুফু) অনুপ্রেরণায় রাজনীতি করতে আগ্রহী হয়েছি। তাছাড়া আমার ছোট ফুফু শেখ রেহানা রাজনীতিতে আসতে আমাকে সাহস জুগিয়েছেন। আর বাবা শেখ হেলাল উদ্দীন তো রাজনীতিতে দুই যুগ থেকে আছেনই। শৈশব থেকে পরিবারের মধ্যে দেখে আসা রাজনীতির চর্চা আমাকে রাজনীতিতে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে। প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর দলের মধ্যে একতা শক্তিশালী হয়েছে। আমি নিজে যে কোনো দিন রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়ব বুঝতে পারিনি। রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এসে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ভালোবাসা পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত। আমাকে পেয়ে তারা অনেক প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করছেন। আমি রাজনীতিতে এই বাগেরহাটে সুস্থ, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে পারি এমনটাই আমার অঙ্গীকার থাকবে। রাজনীতিতে যেটা হয় তা হলো নির্বাচন এলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ভয়ভীতি কাজ করে। ২০০১ সালের পয়লা অক্টোবরের নির্বাচনে জামায়াত-বিএনপি জোট বিজয়ের পর দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করা, দলীয় নেতা-কর্মীদের হত্যা, নির্যাতন করাসহ জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঠে ঠিকমতো কাজ করতে দেওয়া হয়নি। তবে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ গত কয়েকটি নির্বাচনের থেকে অনেক ভালো দাবি করে বলেন, বর্তমান সরকার নির্বাচনের জন্য সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি করেছে। উদাহরণ হিসেবে যদি বলি আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা আসন্ন নির্বাচনে নির্বিঘেœ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন, জনসংযোগ করছেন। তাদের আমরা কোনো বাধা দিচ্ছি না।

নির্বাচিত হলে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী হবে?  : শেখ তন্ময় বলেন, আমি তরুণ প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি। প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগ আমাকে বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া) আসনে মনোনয়ন দিয়েছে। তরুণ প্রজন্মের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের কিশোর তরুণীরা যাতে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে পারে সেজন্য আগামীতে প্রত্যেক জেলায় একটি করে বিশ^বিদ্যালয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। আগামীতে এই সরকার আবার ক্ষমতায় গেলে অর্থনীতির অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে তরুণদের বেকারত্ব ঘুচাতে তাদের নতুন নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমি ছাত্রজীবনে সাংবাদিকতা বিভাগের একজন ছাত্র ছিলাম। আমি সাংবাদিকতা বিভাগে ছাত্র থাকা অবস্থায় কলাম লিখতাম। আমার উচ্চতর ডিগ্রিটাও সাংবাদিকতার ওপর করেছি। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণমাধ্যম জাতির চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। রাষ্ট্র পরিচালনার  ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের (মিডিয়া) গুরুত্ব অপরিসীম।  তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমে যারা কাজ করেন তাদের সবারই একটি দায়িত্ব আছে, আমি যদি ভুল করি তা ধরিয়ে দেওয়া। ভালো কাজ জনগণের মাঝে তুলে ধরা। আজকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমাদের কিছু মতপার্থক্য থাকতে পারে, বিরোধী দল আছে, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আছে। আজকে দেশকে সাম্প্রদায়িক শক্তি থেকে বের করে নিয়ে এসে তরুণদের সঙ্গে নিয়ে সুন্দর সম্ভাবনাময় দেশ উপহার দিতে চাই। আমাকে দল এখানে মনোনয়ন দিয়েছে। আমার দায়িত্ব কীভাবে বাগেরহাটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় এবং এখানকার মানুষ শান্তিতে থাকতে পারে। তাছাড়া কীভাবে নির্বাচিত হয়ে তরুণ প্রজন্মের জন্য বাংলাদেশের ভালো প্রতিনিধি হতে পারি। আমার এই পথচলায় কিছু ভুলত্রুটি হতে পারে, হবে। তাই আমি চাই আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন। সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা বিগত দিনে যেমন কাজ করেছেন, আমিও নির্বাচিত হয়ে সেই সব ভালো কাজে নিজেকে যুক্ত করতে। আমার পরিবারের সদস্যরা রাজনীতির বাইরে এসে সাংবাদিকতা, খেলাধুলায় অবদান রেখেছেন। রাষ্ট্র পরিচালনা বা ভালো সমাজ গড়তে গুণাবলি প্রয়োজন। আমি হয়তো রাজনীতি করি না বা মাঠে ভালো স্লোগান-বক্তব্য দিতে পারি না। কিন্তু আমার পরিবার থেকে শেখানো হয়েছে যে, যা জান তা দিয়ে তুমি তোমার দায়িত্ব পালন কর। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয়ভাবে দলের নেতা-কর্মীরা মনে করেছেন আমার রাজনীতিতে আসা উচিত, তাই আমি রাজনীতিতে এসেছি। রাজনীতিতে না এলে হয়তো আমি সাংবাদিকতায় থাকতাম অথবা ক্রিকেটার বা সংগীতশিল্পী হতে পারতাম। যেহেতু আমি রাজনীতিতে এসেছি আমার ভুলত্রুটি হলে তা ধরিয়ে দেবেন, আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে যাব। বাগেরহাটের মানুষ কীভাবে শান্তিতে থাকতে পারে, স্থানীয় জনগণ যেন তাদের উন্নয়নটা বুঝে নিতে পারে তার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা নিয়ে সামনে এগোতে চাই। আপনারা বাগেরহাটের মানুষ আপনারা জানেন এখানকার মানুষের কী প্রয়োজন আছে কী প্রয়োজন নেই।  আমি আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হই বা না হই আপনাদের সঙ্গে নিয়ে আগামীতে বাগেরহাটবাসীর পাশে থাকতে চাই।

সর্বশেষ খবর