১৬ জুলাই, ২০১৮ ১০:৪৫

ক্রোয়েশিয়ার হার ও কাঠগড়ায় এক আর্জেন্টাইন...

অনলাইন ডেস্ক

ক্রোয়েশিয়ার হার ও কাঠগড়ায় এক আর্জেন্টাইন...

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ক্রোয়েশিয়া। স্বপ্ন ছিল আরও দূরে। কিন্তু সেটা আর হলো না মদরিচ-পেরিসিচদের। তবে হারলেও বিশ্বের কোটি কোটি ফুটবল প্রেমিকের মন জয় করে নিয়েছেন তারা। পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছে ক্রোটরা। ট্রফিটা ফ্রান্সের চেয়ে তাদের হাতেই বেশি শোভা পেতো। এখন আনন্দ-উল্লাসে মেতে থাকার কথা ৪২ লাখ জনসংখ্যার দেশটির। কিন্তু নিয়তির কি পরিহাস তারাই এখন কাঁদছে। আর কাঁদার পেছনে হাত রয়েছে এক আর্জেন্টাইনের।

ভাবছেন, আর্জেন্টিনা তো অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে। তাহলে তাদের নাম কেন আসছে? আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়রা বাড়ি ফিরলেও এই ম্যাচে প্রধান রেফারির ভূমিকায় যিনি ছিলেন তিনিও তো একজন আর্জেন্টাইন। নাম নেস্তর পিতানা। রাশিয়া বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ও ফাইনালে মূল রেফারির দায়িত্ব পালন করে ইতোমধ্যে একটা রেকর্ড বুকে ঢুকে পড়েছেন তিনি। ফাইনালে আগে যেটিকে তিনি স্বপ্ন বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু সেটাই আজ ক্রোয়েশিয়ার জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়ালো।

প্রশ্ন উঠছে ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নেস্তর পিতানার কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে। বিশেষ করে ম্যাচের ৩৫ মিনিটের মাথায় রেফারির ডাকা পেনাল্টির সিদ্ধান্ত ঘিরে। যা নিয়ে ইতোমধ্যে কথা বলা শুরু করে দিয়েছেন ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তিরা। 

সংবাদ মাধ্যমের পাশাপাশি সমালোচনা করছেন ব্রাজিলিয়ান লিজেন্ড রিভালদো, স্প্যানিশ লিজেন্ড ইকার ক্যাসিয়াস এবং উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজরাও। তাদের অভিমত, ফাইনালের মতো শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে এই পেনাল্টি না দিলেও চলতো। ক্রোয়েশিয়ার কোচ জ্লাতকো দালিচও ম্যাচ শেষে সেই পেনাল্টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি রেফারির বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তবে এটুকু বলব, ফাইনাল ম্যাচে এরকম একটি বিতর্কিত পেনাল্টি আপনি দিতে পারেন না

ম্যাচের ৩৫ মিনিটে কর্নার কিক থেকে আসা বল ক্রোয়েশিয়ার তারকা ইভান পেরেসিচ ক্লিয়ার করতে গেলে তার হাতে লেগে যায়। তখন ফরাসি খেলোয়াড়দের আবেদন শুনে আর্জেন্টিনার রেফারি নেস্তর পিতানা ভিএআর প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। আর ৩৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সফলভাবে গোলটি আদায় করে নেন আঁতোয়া গ্রিজমান।

ম্যাচের প্রথম থেকে ক্রোয়েশিয়া দারুণ গোছানো ফুটবল খেললেও এই গোলটির পরই তাদের ছন্নছাড়া দেখা যায়। সমালোচকরা বলছেন, অনিচ্ছাকৃতভাবে বল হাতে লাগায় পেনাল্টির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ থাকলেও ফাইনালের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তা না হওয়ায় ক্রোয়েটরা পিছিয়ে গেছে। ওই পেনাল্টির সিদ্ধান্তই ক্রোয়েশিয়াকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে। মনোবল ভেঙে গেছে তাদের। যেখান থেকে আর বের হতে পারেনি তারা। ফলে ম্যাচে ৪-২ গোলে হারতে হয়েছে মদরিচ-রাকিটিচদের।

ব্রাজিলিয়ান সাবেক তারকা রিভালদো তার ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বলেন, ‘ফ্রান্স এমন এক গোলে লিড পেয়েছে, যেটা না দিলেও চলতো, কারণ ওটা ফাউল ছিল না। বিশ্বকাপের ফাইনালে রেফারির কাছ থেকে এ ধরনের ভুল আশা করা যায় না। এটা ক্রোয়েশিয়ানদের শেষ করে দিয়েছে বলে আমার মনে হয়।’

টুইটারে প্রায় একই সুরে পোস্ট দিয়েছেন স্পেনের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইকার ক্যাসিয়াস। তিনি বলেন, ‘সত্যিই আমি ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়টি বুঝি না। রেফারি গ্রিজমানের সঙ্গে ফাউলের জন্য বাঁশি বাজালেন, অথচ তা তেমন ছিল না। ফ্রান্সের গোল সেখান থেকেই এসেছে এবং এটা কিছুই হলো না।’

ক্যাসিয়াসের এই পোস্ট রিটুইট করে উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজ বলেন, ‘তুমি ঠিক বলেছো ক্যাসিয়াস এবং ওই সময় পল পগবার অফসাইডও খেলায় ‘অবদান’ রেখেছে।
 
বিডি-প্রতিদিন/১৬ জুলাই, ২০১৮/মাহবুব

সর্বশেষ খবর